রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাংক অর্থাৎ সোনালী, জনতা, অগ্রণী ও রূপালী ব্যাংক পাবলিক লিমিটেড কোম্পানী হবার পরে যে সকল কর্মকর্তারা ব্যাংকে নিয়োগ পান তাদেরকে পেনশন সুবিধার আওতার বাইরে রাখা হয়।
অর্থাৎ তারা রিটায়ার করার পরে অন্যান্য সরকারি চাকুরিজিবীদের মত পেনশন সুবিধা পাবেন না। ফলে, তাদের ভবিষ্যত জীবনের অবলম্বনের রাস্তা রুদ্ধ করে ফেলা হয়। বিনিময়ে তাদের জন্য প্রচলন করা হয় গ্রাচুইটি নামক ব্যবস্থা যা অন্যান্য বেসরকারী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে প্রচলিত। ১। একজন সিপিএফ/ গ্রাচুইটি ভোগী কর্মকর্তা ভবিষ্য তহবিলে তার মূল বেতনের ১০% জমা রাখতে পারেন; এক্ষেত্রে ব্যাংকও ১০% অর্থ অনুদান হিসেবে প্রদান করে। ২। একজন সিপিএফ/ গ্রাচুইটি ভোগী কর্মকর্তা সার্ভিস লাইফের দিগুন (২৫ বছর চাকুরী হলে ৫০, ৩০ বছর চাকুরী হলে ৬০) মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ আনুতোষিক বাবদ প্রাপ্ত হবেন। ৩। একজন সিপিএফ/ গ্রাচুইটি ভোগীর ক্ষেত্রে পেনশনের কোন সুবিধাই রাখা হয়নি। ফলে একজন সিপিএফ ভোগী ৪০ মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ কম প্রাপ্ত হবেন। ৪। একজন সিপিএফ/ গ্রাচুইটি ভোগীর ক্ষেত্রে গ্রাচুইটি তহবিলে ১৫% সঞ্চিতি রাখা হয়।
নিচে স্বায়ত্তশাসিত ও সরকারি প্রতিষ্ঠানের একটি তুলনামুলক আলোচনা করা হলো:
২০০৭ সালের পূর্বে এবং পরে যারা ব্যাংকে যোগদান করেছেন এবং বর্তমানে যারা স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত তাদের সুযোগ সুবিধা পাওয়ার ক্ষেত্রে রয়েছে বিভিন্ন আর্থিক ব্যবধান।
মূল পার্থক্য বা বৈষম্যটি হলো– জিপিএফ এবং সিপিএফ বৈষম্য।
জিপিএফ হলো- জেনারেল প্রোভিডেন্ট ফান্ড ( পেনশন সুবিধার আওতাধীন কর্মকর্তা) এবং সিপিএফ হলো-কন্ট্রিবিউটরি প্রোভিডেন্ট ফান্ড ( গ্রাচুইটির আওতাধীন কর্মকর্তা) ।
এই দুই নিয়মের মাঝে আর্থিক ব্যবধান মোটামুটিভাবে নিচে উল্লেখ করা হলো-
১। একজন জিপিএফ/ পেনশন ভোগী মূল বেতনের ১০-৩০ শতাংশ ভবিষ্য তহবিলে জমা করতে পারেন, এখানে ব্যাংক কোন অনুদান প্রদান করে না। কিন্তু কর্তৃপক্ষ চাকুরী শেষে তাকে সমুদয় অর্থ মুনাফাসহ প্রদান করে থাকে। অন্যদিকে একজন সিপিএফ/ গ্রাচুইটি ভোগী কর্মকর্তা ভবিষ্য তহবিলে তার মূল বেতনের ১০% জমা রাখতে পারেন; এক্ষেত্রে ব্যাংকও ৮-১০% অর্থ অনুদান হিসেবে প্রদান করে (এবং এক্ষেত্রে ব্যাংক কর্তৃক প্রদত্ত ইন্টারেস্ট মাঝে মাঝেই কমানো হয়!)।
২। ২৫ বছর নিয়মিত চাকুরী শেষে একজন জিপিএফ/ পেনশন ভোগী কর্মকর্তা আনুতোষিক বাবদ ৮০ মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ প্রাপ্ত হন। অন্যদিকে একজন সিপিএফ/ গ্রাচুইটি ভোগী কর্মকর্তা সার্ভিস লাইফের দিগুন (২৫ বছর চাকুরী হলে ৫০, ৩০ বছর চাকুরী হলে ৬০) মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ আনুতোষিক বাবদ প্রাপ্ত হবেন। যা একজন জিপিএফ/ পেনশন ভোগী কর্মকর্তা তুলনায় অনেক কম। অর্থাৎ একজন সিপিএফ/ গ্রাচুইটি ভোগী কর্মকর্তা ২০-৩০ মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ কম প্রাপ্ত হবেন।
আরও দেখুন: স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান মাসিক পেনশনের আওতায় নেই।
৩। একজন জিপিএফ/ পেনশন ভোগী তার প্রাপ্ত মাসিক পেনশন যা এককালীন জমা করলে ৪০ মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ প্রাপ্ত হন। অন্যদিকে একজন সিপিএফ/ গ্রাচুইটি ভোগীর ক্ষেত্রে পেনশনের কোন সুবিধাই রাখা হয়নি। ফলে একজন সিপিএফ ভোগী ৪০ মাসের মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ কম প্রাপ্ত হবেন।
৪। একজন জিপিএফ/ পেনশন ভোগীর ক্ষেত্রে সুপার এনুয়্যেশন তহবিলে ৩০% সঞ্চিতি রাখা হয়। অন্যদিকে একজন সিপিএফ/ গ্রাচুইটি ভোগীর ক্ষেত্রে গ্রাচুইটি তহবিলে ১৫% সঞ্চিতি রাখা হয়। এক্ষেত্রে ১০% অনুদান সহ হিসেব করলে মোট ৫% সঞ্চিতি কম রাখা হয়।
সার্বিক বিবেচনায় দেখা যায় যে, একজন সিপিএফ/ গ্রাচুইটি ভোগী একজন জিপিএফ/ পেনশন ভোগীর তুলনায় ২৫-৩০ বছর চাকুরী শেষে দেড়গুণ কম আর্থিক সুবিধা প্রাপ্ত হন যা প্রত্যক্ষ বৈষম্য।আরও বিস্তারিত জানতে পড়ুন বিস্তারিতআর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রবিধান দেখুন
পল্লীসঞ্চয় ব্যাংকের কর্মচারী ও কর্মকর্তারা কি পেনসনের আওতায় আছে? যদি থাকে তাদের পেনসন কিভাবে হিসাব করা হবে?
এটি একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান আমার জানা মতে পেনশন সুবিধা চালু নাই। প্রবিধানমালা ২০১৬ দেখে নিতে পারেন http://pallisanchaybank.portal.gov.bd/sites/default/files/files/pallisanchaybank.portal.gov.bd/page/9908cfbf_c648_42e8_828c_e1c4de2eb94c/psb_employment_regulations_2016.pdf
ভাইয়া আমার একটি প্রশ্ন ছিলো। একটু জানাবেন প্লিজ
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের চাকরিটা কি রাজস্ব…?
এবং এটা পেনশন ভুক্ত কিনা। জানাবেন…?
না। বোর্ডের মাধ্যমে চলে। একটি স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান।
ভাই,বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক, বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিং কর্পোরোশন, আইসিবি তে পেনশন সুবিধা আছে?
না। এগুলো স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান।