চাকরির বিধানাবলীর ৯৪ পৃষ্ঠার চাকরি পদত্যাগ সংক্রান্ত বিধান মোতাবেক পদত্যাগপত্র প্রত্যাহারের আবেদনের প্রেক্ষিতে পদত্যাগপত্র গ্রহণ করা বা না করার বিষয়টি নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের প্রশাসনিক সিদ্ধান্তের বিষয়।

একজন কর্মকর্তার পক্ষে খেয়ালবসে পদত্যাগপত্র দাখিল করা এবং তাহা প্রত্যাহারের আবেদন করা শোভনীয় নয়। পদত্যাগপত্র গ্রহণ না করার ক্ষেত্রে এইরূপ আবেদন করার জন্য কৈফিয়ত চাওয়া যথাযথ হইবে এবং জবাব সন্তোষজনক না হওয়ার ক্ষেত্রে  অসদাচরণের জন্য বিভাগীয় মামলা রুজু করা যুক্তিযুক্ত।

পদত্যাগ অর্থ স্বত:স্ফুর্তভাবে অধিকার ত্যাগ করা এবং চাকরির ক্ষেত্রে কর্মত্যাগ করা বা ছাড়িয়া দেওয়া। পদত্যাগ সম্পূর্ণ ও কার্যকর হওয়ার জন্য অবশ্যই কর্মত্যাগ বা ছাড়িয়া দেওয়ার অভিপ্রায় থাকিতে হইবে এবং কর্মত্যাগের ঘটনা সংঘটিত হইতে হইবে। সংশ্লিষ্ট বিধি বিধানের প্রেক্ষিতে পদত্যাগ একতরফা অথবা দুই তরফা অর্থাৎ দ্বিপাক্ষিক প্রকৃতির হইতে পারে। এক তরফার প্রকৃতির ক্ষেত্রে কর্মচারী যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট পদত্যাগপত্র দাখিল করিলেই তাহা কার্যকর হয়। অপরদিকে দুইতরফা প্রকৃতির ক্ষেত্রে পদত্যাগপত্র দাখিলেই তাহা কার্যকর হয়। অপরদিকে দুই তরফা প্রকৃতির ক্ষেত্রে পদত্যাগপত্র দাখিলের পর তাহা গ্রহণের প্রশ্ন জড়িত এবং এইক্ষেত্রে পদত্যাগপত্র গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত তাহা কার্যকর হয় না। চুক্তিভিত্তিক নিয়োগের ক্ষেত্রে পদত্যাগ দুই তরফা প্রকৃতির। এই ক্ষেত্রে নিয়োগকর্তা কর্তৃক পদত্যাগপত্র দাখিলের পর তাহা গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত পদত্যাগ কার্যকর হয় না।

পদ ত্যাগ অর্থ স্বেচ্ছায় মৃুক্তভাবে এবং কোন চাপের ভিত্তিতে নয়, চাকরি ত্যাগ। পদত্যাগ দ্বারা দাবী, অধিকার ও পদ ত্যাগ করা হয়।

পদত্যাগ নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষের উদ্দেশ্যে লিখিত আবেদনের মাধ্যতে করিতে হয়। পদ ত্যাগের আবেদনে পদত্যাগের তারিখ অবশ্যই উল্লেখ করিতে হইবে।

অভিপ্রায়কৃত পদত্যাগের তারিখ হইতে পদত্যাগ কার্যকর হয় এবং ইহার অপ্রত্যাহারযোগ্য হয়। অভিপ্রায়কৃত পদত্যাগের তারিখের পূর্বে পদত্যাগত্র প্রত্যাহারের আবেদন করা হইলে তিনি আদৌ পদত্যাগ করিয়াছেন মর্মে গণ্য হইবে না।

পদত্যাগকারী কর্মচারীকে যথাযথ কর্তৃপক্ষ আইনের কোন বিধান ভঙ্গ না করিয়া পুর্নবহাল করিতে পারে। পুনর্বহালের সুষ্পষ্ট কোন নিষেধাজ্ঞা না থাকিলে কোন পদত্যাগপত্র দাখিলকারী কর্মচারী আন্তুরিকভাবে পুন:পুন: পদত্যাগপত্র প্রত্যাহারের আবেদন জানানোর ক্ষেত্রে ইহা বলা যথাযথ হইবে না যে কর্তৃপক্ষ পুনর্বহালের ক্ষমতাবিহীন।

কর্মরত থাকাকালীন অন্য কোন চাকরিতে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদন করিতে হয়। কোন কর্মকর্তা/ কর্মচারী ইস্তফা প্রদান করিলে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ তাহার ইস্তফাপত্র গ্রহণ করা বা না করার ক্ষমতা সংরক্ষণ করেন। ইস্তফাপত্র গৃহীত না হওয়া পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা/ কর্মচারী কর্মস্থল হইলে অনুপস্থিত থাকিতে পারেন না। যদি তিনি অনুপস্থিত থাকেন সেই ক্ষেত্রে তাহার বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায়।

ইস্তফাপত্র গ্রহণের পূর্বে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষকে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা/ কর্মচারীর নিকট হইতে সরকারের সকল প্রকার পাওনা আদায় করিতে হইবে।

পদত্যাগ অর্থ জবরদস্তি বা ভয় দেখাইয়া নয় সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে নিজের ইচ্ছায় পদ বা পদবী সমর্পণ করা । পদত্যাগের অর্থ পদ, পদবী, অবস্থান বা দাবী ত্যাগ করা বা ছাড়িয়া দেওয়া।

পদ ত্যাগ প্রত্যাহার ও পদত্যাগ সংক্রান্ত বিধি বিধান। : ডাউনলোড

admin

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ৮ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে বিস্তারিত জানতে admin@bdservicerules.info ঠিকানায় মেইল করতে পারেন।

admin has 2985 posts and counting. See all posts by admin

2 thoughts on “পদ ত্যাগ প্রত্যাহার ও পদত্যাগ সংক্রান্ত বিধি বিধান।

  • এই ধারা টি কোন আইনে আছে ? ধারা নাম্বার কতো ?

  • চাকরির বিধানাবলীর ৯৪ পৃষ্ঠার চাকরি পদত্যাগ সংক্রান্ত বিধান
    সরকারি চাকরি আইন ২০১৮ তেও এ বিষয়ে সন্নিবেশিত রয়েছে। বাংলাদেশ সার্ভিস রুলস এ বিষয়ে বর্ণনা করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *