সরকারি কর্মচারী (চিকিৎসা সুবিধা) বিধিমালা, ১৯৭৪ মোতাবেক বিনা মূল্যে চিকিৎসা সুবিধা পাওয়ার কথা বলা হয়েছে।

সারসংক্ষেপ:

  • অনুমোদিত সরকারি হাসপাতাল বা প্রতিষ্ঠান হতে বিনা খরচে চিকিৎসা সেবা পাবেন।
  • শুধু চিকিৎসা সেবা নয় ঔষধপত্র পাওয়ার বিধানও রয়েছে।
  • শুধু নিজে নয় পরিবারও এ সুবিধা ভোগ করতে পারবে।
  • দুঃখের বিষয় আজ পর্যন্ত বিধিমালাটি আপডেট করা হয়নি।

সরকারি কর্মচারী (চিকিৎসা সুবিধা বিধিমালা, ১৯৭৪

১। এই বিধিমালা সরকারী কর্মচারী (চিকিৎসা সুবিধা) বিধিমালা, ১৯৭৪ নামে অভিহিত হইবে।

২। রেলওয়ে বিভাগের কর্মচারী ব্যতীত সকল কর্মরত, ছুটি ভোগরত এবং সাময়িক বরখাস্তকৃত সরকারী কর্মচারীদের ক্ষেত্রে এই বিধিমালা প্রযোজ্য হইবে।

৩। সংজ্ঞা।-(এ) অনুমোদিত চিকিৎসক বলিতে বুঝাইবে (কর্পোরেশন ও জাতীয়করণকৃত প্রতিষ্ঠানসহ) সরকার কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত সকল প্রকার মেডিকেল অফিসার অথবা চিকিৎসক, যাহারা প্রাইভেট প্র্যাকটিসের জন্য অনুমতিপ্রাপ্ত।

(বি) জেলা বলিতে যে জেলায় সরকারী কর্মচারী অসুস্থ্য হইয়া পড়েন, সেই জেলাকে বুঝাইবে।

(সি) পরিবার বলিতে বুঝাইবে কর্মচারীর সহিত বসবাসরত এবং তাঁহার উপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল তাঁহার স্ত্রী (একের অধিক নহে), বৈধ সন্তান, সৎসন্তান, পিতা-মাতা, বোন এবং অপ্রাপ্ত বয়স্ক ভাই। আইনগতভাবে বিচ্ছেদপ্রাপ্ত না হইলে এবং নিজে সরকারী কর্মচারী হওয়া সত্ত্বেও, সরকার কর্মচারী হিসাবে নিজের অধিকার দাবী না করিলে স্ত্রী সম্পূর্ণ নির্ভরশীল বলিয়া গণ্য হইবেন। সন্তান এবং সৎ সন্তানগণের বয়স ১৮ বৎসর পূর্ণ না হওয়া পর্যন্ত এবং কন্যা, সৎকন্যা ও বোনের বিবাহ না হওয়া পর্যন্ত তাঁহারা সম্পূর্ণ নির্ভরশীল হিসাবে গণ্য হইবে। তবে সন্তানদের বয়স ১৮ বৎসর পূর্ণ হইলে এবং কন্যা ও বোন বিবাহিতা হইলে, সরকারী কর্মচারীর প্রত্যয়নের ভিত্তিতে নির্ভরশীল বলিয়া গণ্য হইবেন। পিতা-মাতার নিজস্ব আয় না থাকিলে বা তাহা অপর্যাপ্ত হইলে এবং সরকার কর্মচারী  প্রত্যয়ন করিলে নির্ভরশীল বলিয়া গণ্য হইবেন। পরিবারের সদস্যগণ লেখাপড়া বা অন্য কোন কারণে প্রকৃতপক্ষে সরকারী কর্মচারীর সহিত সদর দপ্তরে বসবাস না করিলেও যদি তাঁহার উপর সম্পূর্ণ নির্ভরশীল হইয়া থাকেন, তাহা হইলে কর্মচারীর সহিত বসবাসরত হিসাবে গণ্য হইবেন।

(ডি) সরকার বলিতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার বুঝাইবে এবং কর্মচারী বলিতে কর্পোরেশন, জাতীয়করণকৃত প্রতিষ্ঠান ইত্যঅদিতেসহ সরকার কর্তৃক নিয়োজিত কর্মচারীদের বুঝাইবে।

(ই) হাসপাতাল বলিতে বুঝাইবে সরকারী হাসপাতাল /ডিসপেনসারী/ডেন্টাল হাসপাতাল অথবা স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক নিয়ন্ত্রিত হাসপাতাল অথবা অন্য যে হাসপাতালে সরকার কর্তৃক সরকারী কর্মচারীদের চিকিৎসার বন্দোবস্ত রাখা হইয়াছে।

(এফ) মেডিকেল এ্যাটেডেন্ট বলিতে বুঝাইবে হাসপাতালে বা সরকারী কর্মচারীর বাস ভবনে বা সাক্ষাতের সময় পূর্ব নির্ধারণক্রমে অনুমোদিত চিকিৎসকের চেম্বারে চিকিৎসা সুবিধা। সরকারী হাসপাতাল বা ল্যাবরেটরীতে বিদ্যমান রোগ নির্ণয়ের পূর্বে গ্রহণ করিতে হইবে) রুগীকে অন্য কোন সরকারী চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞের নিকট প্রেরণ করিবেন। এইক্ষেত্রে উক্ত যাতায়াতের জন্য অনুমোদিত চিকিৎসকের প্রত্যয়ন সাপেক্ষে রুগী ভ্রমণ ভাতা পাইবেন। রুগীর অবস্থা গুরুতর হওয়ার কারণে স্থানান্তরের অযোগ্য হইলে অনুমোদিত চিকিৎসক রুগীর চিকিৎসার জন্য অন্য কোন চিকিৎসক বা বিশেষজ্ঞকে তলব করিতে পারিবেন। এইক্ষেত্রে তলবকৃত চিকিৎসক অনুমোদিত চিকিৎসকের লিখিত প্রত্যয়ন সাপেক্ষে যাতায়াতের জন্য ভ্রমণ ভাতা পাইবেন।

৭। একজন সরকারী কর্মচারী বিনা খরচে নিম্নোক্ত স্থানে চিকিৎসা সুবিধা পাইবেন:-

(এ) যে জেলায় সরকারী কর্মচারী অসুস্থ্য হইয়া পড়েন উক্ত জেলায় যে সরকারী হাসপাতালে চিকিৎসার প্রয়োজন এবং সুবিধাজনক বলিয়া অনুমোদিত চিকিৎসক মনে করেন;

(বি) উপরোক্ত সরকারী হাসপাতালের অবর্তমানে উক্ত জেলার অন্য যে কোন হাসপাতালে চিকিৎসা প্রয়োজন ও সুবিধাজনক বলিয়া চিকিৎসক মনে করেন;

(সি) উপরের (এ) ও (বি) অনুচ্ছেদে উল্লিখিত হাসপাতালের অর্বমানে বা দূর্গমতার কারণে বা ক্লেশকর অসুস্থ্যতার কারণে বিধি-৭ তে উল্লেখিত হাসাপাতালে চিকিৎসা করানো সম্ভবপর নয়, তাহা হইলে সরকারী কর্মচারী তাঁহার বাসভবনে চিকিৎসার সুবিধা পাইবেন এবং এই ক্ষেত্রে অনুমোদিত চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী যে কোন হাসপাতাল/ডিসপেনসারী/ক্লিনিক হইতে ঔষধ পত্রাদিও পাইবেন।

৯। ভ্রমণ ভাতার ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রকারী কর্মকর্তা প্রয়োজন মনে করিলে মেডিকেল অফিসার কর্তৃক প্রত্যয়নপত্র সিভিল সার্জন কর্তৃক এবং সিভিল সার্জন কর্তৃক প্রদত্ত প্রত্যয়নপত্র স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের বিভাগীয় উপ-পরিচালক কর্তৃক প্রতিস্বাক্ষরিত হওয়ার শর্ত আরোপ করিতে পারেন।

১০। এই বিধিমালাতে যাহাই বর্ণিত থাকুক না কেন দন্তচিকিৎসক ও অকালিষ্ট কর্তৃক বা দেশের বাহিরে চিকিৎসার জন্য ভ্রমণের ক্ষেত্রে ভ্রমণ ভাতা পাইবেন না।

১১। সংশ্লিষ্ট সরকারী কর্মচারী যেইরূপ মেডিকেল এ্যাটেডেন্স এবং চিকিৎসার সুবিধা প্রাপ্য তাঁহার পরিবারের সদস্যগণও তদ্রুপ সুবিধা পাইবেন। কর্মচারীর স্ত্রী হাসপাতালে সন্তান প্রসবকালীন চিকিৎসারও সুবিধা পাইবেন। তবে সন্তান ভূমিষ্ট হওয়ার আগে ও পরে কর্মচারীর বাস ভবনে চিকিৎসা সুবিধা পাইবেন না।

১২। বিদেশে সরকারী কাজে অবস্থাকালে অসুস্থ্য হইলে উক্ত দেশে চিকিৎসার ব্যয়ভার সরকার বহন করিবে। তবে রুটিন মাফিক চেক আপের জন্য এবং যে রোগে বাংলাদেশে অবস্থাকালেও ভুগিতেছিনে এবং বিদেশে অবস্থানকালে উক্ত রোগের চিকিৎসার সুযোগ গ্রহণ করিয়াছেন, সেইক্ষেত্রে উক্ত ব্যয়ভার সরকার বহন করিবে না।

১৩। (১) অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী চকিররত থাকিলে যেইরূপ মেডিকেল এ্যাটেনডেন্সের সুবিধা পাইতেন, অবসরকালেও উক্তরূপ সুবিধা পাইবেন। 

(২) অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী বিনা খরচে হাসপাতালের আউট ডোরে অথবা ইনডোরে চিকিৎসার সুবিধা পাইবেন। অবসরপ্রাপ্ত গেজেটেড অফিসার হাসপাতালেও কেবিনের সুবিধাও পাইবেন। তবে তাঁহাকে ডাইট চার্জ প্রদান করিতে হইবে।

(৩) অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা যেইরূপ সুবিধা পাইবেন, তাঁহার স্ত্রী বা স্ত্রী এবং অপ্রাপ্ত বয়স্ক সন্তানও অনুরূপ সুবিধাদি পাইবেন।

১৪। সরকার ব্যতিক্রমধর্মী ক্ষেত্রে রুগীর বিপক্ষে নয়, এইরূপভাবে এই বিধিমালার বিধান শিথিল করার জন্য ক্ষমতাবান।

—-

সরকারি কর্মচারী (চিকিৎসা সুবিধা) বিধিমালা, ১৯৭৪ দেখুন: ডাউনলোড

admin

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ৮ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে বিস্তারিত জানতে admin@bdservicerules.info ঠিকানায় মেইল করতে পারেন।

admin has 2983 posts and counting. See all posts by admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *