সরকারি কর্মচারীদের বিদেশ ভ্রমণের নিয়ম ২০২২ । বহি: বাংলাদেশ ভ্রমণের রীতি নীতি

সরকারি কর্মচারীদের ব্যক্তিগত ভ্রমণের ক্ষেত্রে এনওসি দিয়ে করা পাসপোর্ট ব্যবহার করা যাবে – শুধুমাত্র জিও জারি করে কিছু দেশে ভ্রমণ করা যাবে – সরকারি কর্মচারীদের বিদেশ ভ্রমণের নিয়ম ২০২২

এনওসি দিয়ে কি বিদেশ ভ্রমণ করা যাবে?– এনওসি মূলত জারি করা হয় পাসপোর্ট করার অনাপত্তি পত্র হিসেবে। সরকারি কর্মচারীকে ব্যক্তিগত বা সরকারি কাজে বিদেশ ভ্রমণ করতে হলে জিও বা সরকারি আদেশ বা বহি: বাংলাদেশ ছুটির আদেশ জারি করতে হবে। সরকারি জিও বা বহি: বাংলাদেশ ছুটি ব্যতিত ব্যক্তিগত কাজে ভ্রমণ সরকারি আইনের লঙ্গন হয়। এতে বিভাগীয় মামলা রূজু হতে পারে। অফিসিয়াল পাসপোর্ট ইস্যু’র বিধি বিধান (প্রশ্নোত্তর সহ)।

সকল মন্ত্রণালয়/বিভাগের দায়িত্ব সরাসরি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অধীনে ন্যস্ত এ আদেশের ১নং অনুচ্ছেদে বর্ণিত কর্মকর্তাগণ ছাড়াও সে। সকল মন্ত্রণালয়/বিভাগের এবং এদের অধীন অধিদপ্তর/ পরিদপ্তর/পশাসিত/স্বায়ত্বশাসিত সংস্থার জাতীয় বেতনস্কেলের ৩নং স্কেলভুক্ত সকল কর্মকর্তার ভ্রমণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এবং ৪নং ও ৫নং স্কেলভুক্ত সকল কর্মকর্তার ভ্রমণে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের/বিভাগের সচিবগণের (প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ক্ষেত্রে মুখ্য সচিব) অনুমােদন আবশ্যক হবে। বহিঃ বাংলাদেশ ছুটি মঞ্জুরীর আবেদনপত্র (নমুনা সংযুক্ত)।

অর্থায়নের উৎস নির্বিশেষে জাতীয় সংসদের মাননীয় স্পীকার, সুপ্রীম কোর্টের মাননীয় প্রধান বিচারপতি, প্রধান নির্বাচন কমিশনার, দুর্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান, মহা হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক (C & AG) পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান তাদের নিজেদের এবং অধীনস্থ কর্মকর্তা/কর্মচারীদের সরকারী বা ব্যক্তিগত কাজে বিদেশ ভ্রমণে অনুমােদন প্রদান করবেন; ডেপুটি গভর্নরগণ ব্যতীত বাংলাদেশ ব্যাংকের অধীন সকল কর্মকর্তা/কর্মচারীর ভ্রমণে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্ণর অনুমােদন প্রদান করবেন। ভাতা ছাড়া শ্রান্তি ও বিনোদন ছুটি মঞ্জুরীর সুযোগ নাই।

সিটি কর্পোরেশনের মেয়র, পাবর্ত্য চট্টগ্রাম স্থানীয় সরকার পরিষদের চেয়ারম্যান এবং পার্বত্য জেলা পরিষদ সমূহের চেয়ারম্যানদের বিদেশ ভ্রমণে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর অনুমােদন আবশ্যক হবে; পার্বত্য চট্রগ্রাম স্থানীয় সরকার পরিষদ/পার্বত্য জেলা পরিষদসমূহের সদস্যবৃন্দ, সিটি কর্পোরেশনের কমিশনারগণ এবং পৌরসভার মেয়রগণের বিদেশ ভ্রমণে স্থানীয় সরকার বিভাগের দায়িত্বে নিয়ােজিত মাননীয় মন্ত্রী অনুমােদন দিবেন; পৌরসভার কাউন্সিলর, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের বিদেশ ভ্রমণে বিভাগীয় কমিশনার অনুমােদন প্রদান করবেন।

উপরের অনুচ্ছেদসমূহে যা কিছুই উল্লেখ থাকুক না কেন বাংলাদেশ সরকার/ বিশ্ববিদ্যালয়/ বৈদেশিক ঋণের অর্থের সংশ্লেষ না থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলরগণ তার অধীন সকল শিক্ষক/কর্মকর্তা/কর্মচারীর অনধিক তিন মাসের বিদেশ ভ্রমণে অনুমােদন প্রদান করবেন। দলগতভাবে বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে দলের সর্বোচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তা/কর্মচারীর ভ্রমণ অনুমােদনকারী কর্তৃপক্ষের নিকট থেকে সকলের ভ্রমণে অনুমােদন প্রয়ােজন হবে। সকল অনুমােদনকারী কর্তৃপক্ষের নিকট কর্মকর্তাকর্মচারীদের বিদেশ ভ্রমণের প্রস্তাব পেশকালে নিমের তথ্যাদি প্রদান করতে হবে ? (ক)’ ভ্রমণের প্রয়োজনীয়তা এবং ভ্রমণের উদ্দেশ্যের সাথে মনােনীত কর্মকর্তার উপযােগিতা। ভ্রমণকাল (বিদেশে অবস্থান এবং যাতায়াতের সময় পৃথকভাবে উল্লেখ করতে হবে);

(গ) ব্যয়ের উৎস এবং ভ্রমণে বাংলাদেশ সরকারের অর্থের সংশ্লেষ থাকলে বাজেটে (বৈদেশিক মুদ্রার বাজেটসহ) মােট বরাদ্দ, হালনাগাদ ব্যয়িত অর্থ, প্রস্তাবিত ভ্রমণের পর স্থিতি অবস্থার বিবরণী ও খাতওয়ারী: ব্যয়ের বিভাজন; ঋণ চুক্তির অন্তর্ভুক্ত ভ্রমণের ক্ষেত্রে ভ্রমণের মেয়াদ ১৫ দিনের অধিক হলে ভ্রমণের ফলে সরকার যেভাবে লাভবান হবে, তার বর্ণনা; প্রকল্পে নিয়ােজিত কর্মকর্তাগণের ক্ষেত্রে অনুমােদিত প্রকল্প ছকে বিদেশ ভ্রমণ এবং এ সংক্রান্ত ব্যয়ের সুনির্দিষ্ট অর্থের সংস্থান; বিগত এক বছরের ভ্রমণ বিবরণী (ভ্রমণের তারিখ থেকে পূর্ববর্তী এক বছরের)। বিদেশে প্রতিনিধি প্রেরণের ক্ষেত্রে যে পর্যায়ের কর্মকর্তাকে প্রেরণের অনুরােধ করা হয়েছে তার উল্লেখ। অনুমােদনের পূর্বে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন বিদেশ ভ্রমণ/প্রশিক্ষণের বিষয়ে জারীকৃত সড়ল নীতিমালা (যেখানে যা প্রযােজ্য) অনুসৃত হয়েছে এ মর্মে প্রত্যয়ন প্রদান করবেন । সরকারের শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ/কর্মকর্তাগণের বিদেশ ভ্রমণে নিমােক্ত নির্দেশনাসমূহ বিশেষভাবে অনুসরণ করতে হবেঃ

সরকারি আদেশগুলো অবশ্যই মেনে চলতে হবে / নীল বা সবুজ পাসপোর্ট কোন ব্যাপার নয়, ব্যাপার হচ্ছে সরকারি আদেশ জারিকরণ।

মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী ও সচিব/ভারপ্রাপ্ত সচিবগণের একত্রে বিদেশ ভ্রমণ সাধারণভাবে পরিহার করা হবে। জাতীয় স্বার্থে বিশেষ ক্ষেত্রে (যেমন-বিশ্বব্যাংক, আই.এম.এফ, ইত্যাদির: বার্ষিক সভা, দাতা গােষ্ঠীর সভা ইত্যাদি) একত্রে বিদেশ ভ্রমণ। অপরিহার্য হলে অত্যন্ত সীমিত ক্ষেত্রে এর ব্যত্যয় করা যেতে পারে। বিদেশে শিক্ষা সফর/সেমিনার/সিম্পােজিয়াম/ওয়ার্কসপ/Familiarization Programme-এ সচিব/ ভারপ্রাপ্ত সচিবগণের। পরিবর্তে কনিষ্ঠ কর্মকর্তা, মাঠ পর্যায়ে কর্মরত কর্মকর্তা ও মধ্য সোপানের কর্মকর্তাদের অগ্রাধিকার দিতে হবে।

বিদেশ ভ্রণের অনুমতি ও অনুসরণীয় আনুষঙ্গিক বিষয়াদি সম্পর্কিত পরিপত্র সংগ্রহ করুন: ডাউনলোড

বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে করণীয় । যে সকল বিষয় মেনে চলতে হবে

  1. সচিব/ভারপ্রাপ্ত সচিবের বিদেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে আয়ােজক সংস্থা কর্তৃক Business Class-এর টিকেটের প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে হবে;
  2. মন্ত্রণালয়ের সচিব/ডারপ্রাপ্ত সচিব এবং মন্ত্রণালয়/বিভাগের যুগ্ম-সচিব ও অধীনস্থ সংস্থা প্রধানের একত্রে বিদেশ ভ্রমণ শুধুমাত্র জাতীয় স্বার্থে অপরিহার্য ক্ষেত্র ছাড়া পরিহার করতে হবে। সেক্ষেত্রে অনুরূপ ভ্রমণ অনুমােদনের জন্য প্রেরিত প্রস্তাবে সুনির্দিষ্ট কারণ ও যৌক্তিকতা উল্লেখ করতে হবে।
  3. মন্ত্রণালয়ের সচিব/ভারপ্রাপ্ত সচিবগণ সরকারী কাজে বিদেশ ভ্রমণ বছরে সর্বোচ্চ ৪ (চার) বারের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখবেন। জাতীয় স্বার্থে, অপরিহার্য ক্ষেত্রে যেমন ৪ পদাধিকার বলে Negotiation, সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর, চুক্তি স্বাক্ষর, আন্তর্জাতিক চিবের জন্য বাধ্যতামূলক এমন ক্ষেত্রে এর ব্যত্যয় করা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে অনুরূপ ভ্রমণ অনুমােদনের জন্য প্রেরিত প্রস্তাবে সুনির্দিষ্ট কারণ ও যৌক্তিকতা উল্লেখ করতে হবে;
  4. বিভিন্ন সেমিনার/ওয়ার্কশপে অংশ গ্রহণের জন্য সরকারের সচিব/ভারপ্রাপ্ত সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তাগণের বিদেশ ভ্রমণের প্রস্তাব প্রেরুণকালে আমন্ত্রণকারী সংস্থা কর্তৃক কোন পর্যায়ের কর্মকর্তাকে আমন্ত্রণ জানানাে হয়েছে এবং অন্যান্য অংশগ্রহণকারী দেশ থেকে কোন পর্যায়ের কর্মকর্তা আমন্ত্রিত হয়েছেন ও অংশগ্রহণ করবেন তা সংগ্রহ করে সংযুক্তি হিসেবে সন্নিবেশ করতে হবে;
  5. সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগের সচিব/ভারপ্রাপ্ত সচিবগণ বিদেশ ভ্রমণ শেষে দেশে প্রত্যাবর্তনের পর এতদসংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীর নিকট পেশ করবেন। প্রত্যেক মন্ত্রণালয়/বিভাগকে সকল বৈদেশিক ভ্রমণ সংক্রান্ত ত্রৈমাসিক প্রতিবেদন পরবর্তী মাসের ১৫ তারিখের মধ্যে যথাযথ কর্তৃপক্ষের নিকট পেশ করতে হবে।
  6. বিদেশ ভ্রমণকালে স্বামী/স্ত্রী (স্পাউস) সহগামী/অনুগামী হলে তার ক্ষেত্রেও একই কর্তৃপক্ষের অনুমােদন প্রয়োজন হবে। এ সংক্রান্তি প্রস্তাবে ব্যয়ের উৎস বর্ণনা করতে হবে এবং কোনক্রমেই এই ভ্রমণে বাংলাদেশ সরকার/সংস্থা/ঋণের অর্থ ব্যয় করা যাবে না।
  7. স্বশাসিত সংস্থাকে অর্পিত (ডেলিগেটেড) ক্ষমতা প্রেষণে নিয়ােজিত কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারীদের ক্ষেত্রেও প্রযোভ্য হবে, তবে এপ বিদেশ ভ্রমণের অনুমতি প্রদানের বিষয় মূল নিয়ােগকারী কর্তৃপক্ষকে অবহিত করতে হবে।

ছুটি শেষ হওয়ার পূর্বেই যদি দেশে ফিরে তাহলে কি ছুটি শেষ করে যোগদান করতে হবে?

না। সরকারি ভ্রমণ বা ব্যক্তিগত বিদেশ ভ্রমণ শেষে অবশ্যই দ্রুত কাজে যোগদান করতে হবে। বহি: বাংলাদেশ ছুটি দেশে ফিরে ভোগ করা যাবে না। ভিসা হচ্ছে একটি অনুমতি পত্র মাত্র যা একটি দেশ কোন ভিন্ন দেশের নাগরিককে সংশ্লিষ্ট দেশে প্রবেশের ও অবস্থানের জন্য সরবরাহ করে থাকে। ভিসা ছাড়া যদি কোন নাগরিক অন্য কোন দেশে প্রবেশ করে বা অবস্থা বা বসবাস করে তাদের বলা হয় অবৈধ অভিবাসী।

সরকারি চাকরিজীবীর বিদেশ ভ্রমনে ভিসা লাগবে কিনা বিস্তারিত।

admin

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ৮ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে বিস্তারিত জানতে admin@bdservicerules.info ঠিকানায় মেইল করতে পারেন।

admin has 2985 posts and counting. See all posts by admin

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *