চাকরি এখন গলার কাঁটা ২০২৫ । সরকারি চাকরি না পারছি করতে না পারছি ছাড়তে?
সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীদের বেতন এতই কম যে, এখন ৬ সদস্যের পরিবার যাদের তারা না পারছে সৎ ভাবে চাকরি করতে না পারছে ছাড়তে– চাকরি এখন গলার কাঁটা ২০২৫
চাকরি কি এখন গলার কাটা? হ্যাঁ। সরকারি চাকরির বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে অনেকেই হতাশ ও শঙ্কিত। নতুন সরকারি চাকরি (সংশোধন) অধ্যাদেশ, ২০২৫-এ কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে, যা অনেকের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে। বিশেষ করে, চাকরি থেকে অব্যাহতি এবং বরখাস্তের মতো শাস্তির বিষয়ে কিছু ধারা নিয়ে কর্মচারীরা অসন্তুষ্ট। এই পরিস্থিতিতে, অনেকে চাকরি ছাড়তে বা ছাড়তে না পারার দ্বিধায় ভুগছেন। নতুন অধ্যাদেশ অনুযায়ী, কিছু ক্ষেত্রে তদন্ত ছাড়াই কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করা বা অব্যাহতি দেওয়ার বিধান রাখা হয়েছে। এর মধ্যে, কর্মস্থলে অনুপস্থিতি বা সরকারের প্রতি আনুগত্যের অভাবের মতো বিষয়গুলি অন্তর্ভুক্ত। কিছু কর্মচারী মনে করছেন, এই ধারাগুলি তাদের স্বাধীনতা খর্ব করছে। অন্যদিকে, সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এই পরিবর্তনগুলি প্রশাসনকে আরও কার্যকরভাবে চালানোর জন্য প্রয়োজন। তবে, কর্মচারীরা বলছেন, এই পরিবর্তনগুলি তাদের জন্য একটি বোঝা হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে, সরকারি চাকরিজীবীরা তাদের অধিকার এবং সুরক্ষার বিষয়ে সচেতন হচ্ছেন এবং অনেকে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছেন।
এত কম বেতনে সরকারি কর্মচারীদের সংসার চলছে না? হ্যাঁ, অনেক সরকারি কর্মচারীই বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে তাদের কম বেতনে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন। তাদের অনেকেরই মাস ফুরানোর আগেই বেতন শেষ হয়ে যায় এবং ধার-কর্জ করে চলতে হয়। কেউ কেউ আবার সংসার চালানোর জন্য অতিরিক্ত আয়ের পথ খুঁজছেন। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকারি কর্মচারীদের এই সমস্যা নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। অনেক কর্মচারীই তাদের এই সমস্যার কথা তুলে ধরেছেন এবং বেতন বৃদ্ধির জন্য কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম অনেক বেড়ে যাওয়ায় সীমিত আয়ের সরকারি কর্মচারীদের সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে বেতন-ভাতা না বাড়ায় এই সমস্যা আরও প্রকট হয়েছে। কিছু কর্মচারী তাদের দাবি আদায়ের জন্য কর্মবিরতি পালন করছেন। বিভিন্ন গ্রেডের কর্মচারীদের মধ্যে বেতন বৈষম্যও একটি বড় সমস্যা, যা অনেকের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি করেছে। কিছু কর্মচারী সংসার চালানোর জন্য অন্য পথ যেমন- টিউশনি, ছোট ব্যবসা বা অন্য কোনো কাজ করার চেষ্টা করছেন। সরকারি কর্মচারীদের কম বেতন এবং দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি তাদের জীবনযাত্রাকে কঠিন করে তুলেছে, যা তাদের মধ্যে হতাশা তৈরি করেছে এবং এ থেকে উত্তরণের জন্য তারা বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়ার চেষ্টা করছেন।
১১ থেকে ২০ গ্রেডের কর্মচারীদের সর্বমোট বেতন কত? ১১ থেকে ২০ গ্রেডের সরকারি কর্মচারীদের বেতন গ্রেড এবং অন্যান্য ভাতার উপর নির্ভর করে। সাধারণত, এই গ্রেডের কর্মচারীদের মূল বেতন ৮,২৫০ টাকা থেকে শুরু করে ২০,০১০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে। এছাড়া, তারা বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা, পরিবহন ভাতা, এবং অন্যান্য ভাতা পেয়ে থাকেন। বিভিন্ন গ্রেডের জন্য এই ভাতার পরিমাণ ভিন্ন হতে পারে। জাতীয় বেতন স্কেল, ২০১৫ অনুযায়ী, ১১ থেকে ২০ গ্রেড পর্যন্ত সরকারি কর্মচারীদের বেতন বিভিন্ন গ্রেডে বিভক্ত। ২০তম গ্রেডের বেতন স্কেল ৮,২৫০ টাকা থেকে শুরু হয়ে ১৮ বছর চাকরি করার পর ইনক্রিমেন্ট পেয়ে ২০,০১০ টাকায় পৌঁছায়। ১১ থেকে ২০ গ্রেড পর্যন্ত বেতন কাঠামোতে মূল বেতন, বাড়িভাড়া ভাতা, চিকিৎসা ভাতা, পরিবহন ভাতা এবং অন্যান্য ভাতা অন্তর্ভুক্ত থাকে।
১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীদের যে বেতন, বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা দেওয়া হয় তা দিয়ে ২ সদস্যের সংসারও পুরো মাস চলতে পারে না। সেখানে সরকার বলছে ৬ সদস্যের জন্য বেতন ভাতাদি দিচ্ছে সরকার।
নতুন অধ্যাদেশ এবং এতে কী কী পরিবর্তন আনা হয়েছে, তা বিস্তারিতভাবে জানুন। সরকারি কর্মচারী হিসেবে আপনার কী কী অধিকার রয়েছে এবং এই পরিস্থিতিতে আপনি কী করতে পারেন, তা জেনে নিন। যদি আপনি মনে করেন যে আপনার অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে, তাহলে অন্যদের সাথে কথা বলুন এবং একসাথে এই সমস্যার সমাধানে কাজ করুন।
Caption: Govt. Job
পিওন ঝাঁড়ুদার গার্ড এর চাকরিতে যোগদানকালীন মূল বেতন ২০২৫ । মূল বেতনের সাথে বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা, বিশেষ সুবিধা, টিফিন ভাতা ও অন্যান্য ভাতা যুক্ত হয়ে মোট বেতন ১৫-১৭ হাজারের বেশি হয় না
- মূল বেতন ৮২৫০ টাকা।
- বাড়ি ভাড়া ৪৫% হারে সর্বনিম্ন রেট ৪৫০০ টাকা প্রযোজ্য।
- বিশেষ সুবিধা সর্বনিম্ন রেট ১৫০০ টাকা।
- চিকিৎসা ভাতা ১৫০০ টাকা।
- টিফিন ২০০ টাকা।
- যাতায়াত ৩০০ টাকা (উপজেলায় প্রাপ্য নয়)।
- অন্যান্য ভাতা ১০০ টাকা।
- শিক্ষা ভাতা ৫০০-১০০০ টাকা। (৫ বছর বয়সী সন্তান থাকলে প্রাপ্য)।
নিম্নগ্রেডের কর্মচারীদের বেতনে কি সংসার চালানো যাচ্ছে না?
না। ১১-১৬ গ্রেড (তৃতীয় শ্রেণি) এই গ্রেডের কর্মচারীরা সাধারণত অফিস সহকারী, কম্পিউটার মুদ্রাক্ষরিক ইত্যাদি পদে কাজ করেন। তাদের বেতন গ্রেড অনুযায়ী ৯,৩০০ থেকে ২২,৪৯০ টাকা পর্যন্ত হতে পারে।এই গ্রেডের কর্মচারীরা সাধারণত পরিচ্ছন্নতা কর্মী, নিরাপত্তা প্রহরী ইত্যাদি পদে কাজ করেন। তাদের বেতন গ্রেড অনুযায়ী ৮,২৫০ টাকা থেকে শুরু হয়। কর্মচারীরা মূল বেতনের পাশাপাশি বাড়িভাড়া ভাতা (বেতনের একটি অংশ), চিকিৎসা ভাতা (বেতন স্কেলের ভিত্তিতে), এবং পরিবহন ভাতা পেয়ে থাকেন। এছাড়া, কিছু কিছু ক্ষেত্রে অন্যান্য ভাতাও প্রদান করা হয়। ১১ থেকে ২০ গ্রেডের কর্মচারীদের সর্বমোট বেতন তাদের গ্রেড, চাকরির অভিজ্ঞতা, এবং অন্যান্য ভাতার উপর নির্ভর করে। উদাহরণস্বরূপ, কোনো কর্মচারী যদি ১১তম গ্রেডে থাকেন এবং তার মূল বেতন যদি ২০,০০০ টাকা হয়, তবে তিনি বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ও পরিবহন ভাতা সহ সর্বমোট প্রায় ৩০,০০০-৩৫,০০০ টাকা পেতে পারেন। তবে, এই হিসাবটি একটি উদাহরণ, এবং প্রকৃত বেতন ভাতা সহ আরো বেশি বা কম হতে পারে। সরকারি চাকুরীজীবীদের বেতন-গ্রেড বৃদ্ধির সর্বশেষ আপডেট অনুযায়ী, ১১ থেকে ২০ গ্রেডের মূল বেতনের সর্বোচ্চ পার্থক্য সাড়ে ৩ হাজার এবং সর্বনিম্ন ২৫০ টাকা।
কেউ কেউ বলছে চলতে পারে না সরকারি চাকরি ছেড়ে দেয় না কেন? পারিবারিক দায়িত্বের কারণে চাইলেও চাকরি ছাড়তে পারছে না কেউ কেউ। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে কেউ কেউ ঘুষ ও দুর্নীতির রাস্তা বেছে নিচ্ছে। সরকারি চাকরি ছাড়ার সিদ্ধান্তের পেছনে বিভিন্ন কারণ থাকতে পারে। কেউ হয়তো ব্যক্তিগত কারণে, কেউ উন্নত ক্যারিয়ার গড়ার জন্য, আবার কেউ হয়তো বিদ্যমান পরিস্থিতিতে সন্তুষ্ট না হয়ে চাকরি ছাড়তে চান। সরকারি চাকরি ছাড়ার ক্ষেত্রে কিছু নিয়মকানুন অনুসরণ করতে হয় এবং চাকরি ছাড়ার পর অন্যান্য সরকারি চাকরিতে যোগদানে কিছু সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে। সরকারি চাকরির বেতন-ভাতা অনেক সময় কাঙ্ক্ষিত মানের চেয়ে কম থাকে, যা অনেকের জন্য একটি বড় সমস্যা। সহকর্মীদের সাথে সম্পর্ক, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের আচরণ ইত্যাদি বিষয় কারো কারো জন্য অসন্তুষ্টির কারণ হতে পারে। অনেক সময় সরকারি চাকরিতে কাজের চাপ অনেক বেশি থাকে এবং কাজের চাপ সামলাতে গিয়ে ব্যক্তিগত জীবনে প্রভাব পড়তে পারে। সরকারি চাকরির চেয়ে বেসরকারি বা অন্য কোনো ক্ষেত্রে কর্মজীবনের আরও ভালো সুযোগ থাকলে, অনেকে সেই সুযোগ কাজে লাগাতে চান। ব্যক্তিগত কারণ যেমন – পরিবারের সাথে বেশি সময় কাটানো, স্বাস্থ্যগত সমস্যা, বা অন্য কোনো ব্যক্তিগত কারণেও অনেকে চাকরি ছাড়তে পারেন। সরকারি চাকরি ছাড়ার পর নতুন সরকারি চাকরিতে যোগদানে কিছু সীমাবদ্ধতা থাকতে পারে। যদি কেউ কোনো প্রকার ছাড়পত্র বা যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করে চাকরি ছেড়ে দেন, তবে ভবিষ্যতে অন্য কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠানে যোগদানে সমস্যা হতে পারে। কেউ যদি চাকরি ছাড়তে চান, তাহলে তাকে অবশ্যই কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে এবং যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে। অন্যথায়, ভবিষ্যতে সরকারি চাকরিতে যোগদানে সমস্যা হতে পারে।
সরকারি চাকরির বেতন ভাতাদি 2025 । ১৭ তম গ্রেডে সর্বসাকুল্যে বেতন কত পাওয়া যায়?