সার্ভিস রুলস । নীতি । পদ্ধতি । বিধি

প্রশাসনিক কার্যক্রমে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ২০২৫ । সরকারি অফিসে ২২ কোডের ডিজিটাল নথি নম্বর প্রবর্তন করা হয়েছে?

বাংলাদেশ সরকারের সচিবালয় নির্দেশিকা, ২০২৪ এর নির্দেশনা অনুযায়ী সরকারি অফিসগুলোতে পুরাতন ১৮/১৯ ডিজিটের পরিবর্তে ২২ (বাইশ) ডিজিটের নতুন ডিজিটাল নথি নম্বর ব্যবহারের পদ্ধতি কার্যকর করা হয়েছে। এই পদক্ষেপ সরকারি নথি ব্যবস্থাপনাকে আরও স্বচ্ছ, নির্ভুল এবং আধুনিক করে তুলবে বলে আশা করা হচ্ছে। এটি মূলত ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বিনির্মাণের অংশ হিসেবে গৃহীত ই-ফাইলিং ব্যবস্থার একটি অপরিহার্য ধাপ।


🔢 ২২-ডিজিট কোডের কাঠামো ও ব্যাখ্যা

নতুন এই ২২-ডিজিটের ডিজিটাল নথি নম্বরটি মোট ৮টি অবস্থানে বিভক্ত, যেখানে প্রতিটি অবস্থান ডট (.) চিহ্ন দ্বারা আলাদা করা হবে। কোনো অবস্থানের জন্য কোড প্রযোজ্য না হলে তা শূন্য () দ্বারা পূরণ করতে হবে।

অবস্থাননামডিজিট সংখ্যাব্যাখ্যা
প্রথমমন্ত্রণালয়/বিভাগ কোড০২জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দকৃত।
দ্বিতীয়সংযুক্ত দপ্তর/অধিদপ্তর কোড০২সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়/বিভাগ কর্তৃক বরাদ্দকৃত (০১ থেকে ৯৯)।
তৃতীয়জিওগ্রাফিক (জিও) কোড০৪বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (BBS) নির্ধারিত জেলা (প্রথম ০২ ডিজিট) এবং উপজেলা (পরের ০২ ডিজিট) কোড।
চতুর্থঅধস্তন প্রতিষ্ঠান কোড০৩প্রতিটি দপ্তরের অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান নির্ধারণের জন্য ব্যবহৃত।
পঞ্চমশাখা কোড০৩নথি সৃষ্টিকারী দপ্তরের অভ্যন্তরীণ শাখা/অধিশাখা/অনুবিভাগ (যেমন-প্রশাসন, বাজেট, হিসাব)।
ষষ্ঠবিষয়ভিত্তিক শ্রেণিবিন্যাস কোড০২দপ্তরের কার্যক্রমের ভিত্তিতে নির্ধারিত কোড, যা স্থায়ীভাবে সংরক্ষিত থাকবে।
সপ্তমনথির ক্রমিক সংখ্যা কোড০৪প্রতিবছর ১ জানুয়ারি থেকে বিষয়ভিত্তিক নতুনভাবে ০০০১ থেকে শুরু হবে। পুরোনো নথি নম্বর পুনরায় ব্যবহার করা যাবে না।
অষ্টমনথি খোলার সন কোড০২নথি খোলার সনের শেষ দুই ডিজিট (যেমন: ২০২৫ সালের জন্য ২৫)।

🎯 বিশেষ করণীয় বিষয়সমূহ

  • অবস্থান বিভাজন: নথি নম্বরের প্রতিটি কোডের অবস্থানকে অবশ্যই ডট (.) চিহ্ন দ্বারা বিভাজন করে লিখতে হবে।

  • শূন্য দ্বারা পূরণ: যদি চতুর্থ, পঞ্চম এবং ষষ্ঠ অবস্থানের জন্য কোনো কোড নির্ধারণের প্রয়োজন না হয়, তবে সেইক্ষেত্রে অবস্থানটি অবশ্যই শূন্য দ্বারা পূরণ করতে হবে। কোনো অবস্থানকেই বাদ দেওয়া যাবে না।

  • জারি নম্বর: নথি নম্বরের শেষে ডট (.) দিয়ে চিঠির জারি নম্বর ব্যবহার করতে হবে, তবে জারি নম্বরটি ২২ ডিজিটের ডিজিটাল নথি নম্বরের অংশ নয়।

📜 নথি নিবন্ধনবহি ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন

নথি নম্বর সহজে নিরূপণ করার জন্য ‘চলতি নথির বিস্তারিত সূচির নিবন্ধনবহি’ নামে একটি অতিরিক্ত নিবন্ধনবহি রক্ষণাবেক্ষণ করতে হবে। এতে বর্ণানুক্রমিক ধাপ থাকবে এবং প্রতিটি বর্ণের জন্য পৃথক পৃষ্ঠার সংখ্যা নির্ধারিত থাকবে। এই সূচিতে ইঙ্গিত শব্দের অধীনে নথির শিরোনাম ও নথিসংখ্যা লিপিবদ্ধ করে নথি খোঁজার প্রক্রিয়াকে আরও সহজ করা হবে, যা ‘ক্রসসূচিকরণ’ নামে পরিচিত।


এটি নিঃসন্দেহে সরকারের ডিজিটাল কার্যক্রমে একটি গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি। এই নতুন পদ্ধতি সরকারি ফাইল বা নথি ব্যবস্থাপনাকে আরও সুসংগঠিত করবে এবং প্রশাসনিক দক্ষতা বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে।

সচিবালয় নির্দেশমালা ২০২৪

আগে কত ডিজিট কোড ছিল?

নতুন নিয়ম অনুযায়ী নথি নম্বর ২২ (বাইশ) ডিজিটের হবে। নথির প্রথম অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে এই নতুন পদ্ধতি ব্যবহার করতে হবে। এর থেকে বোঝা যায় যে:

  • নতুন কোড সংখ্যা: ২২ ডিজিট।

  • পূর্বের কোড সংখ্যা: নতুন ২২ ডিজিটের আগে সাধারণত ১৮ বা ১৯ ডিজিটের নথি নম্বর ব্যবহৃত হত (যদিও এটি সরাসরি ডকুমেন্টে নেই, তবে প্রচলিত সরকারি ব্যবস্থার পরিবর্তন অনুযায়ী এটিই ছিল পূর্বের ধারা)।

ডকুমেন্টটি শুধুমাত্র ২২-ডিজিটের নতুন পদ্ধতির নিয়মাবলী নিয়ে আলোকপাত করেছে।

Alamin Mia

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে প্রশ্ন থাকলে বা ব্যাখ্যা জানতে পোস্টের নিচে কমেন্ট করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *