জাতীয় পরিচয়পত্র । জন্ম নিবন্ধন

NID Issue For Lost 2025 । নতুন জাতীয় পরিচয়পত্র পেতে জিডি করার নিয়ম বাতিল?

জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) হারিয়ে গেলে বা নষ্ট হয়ে গেলে নতুন কার্ড পাওয়ার প্রক্রিয়া সহজ করেছে নির্বাচন কমিশন। এখন থেকে নতুন কার্ড পেতে হলে পুলিশের কাছে সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করার প্রয়োজন হবে না।– NID Issue For Lost 2025

জিডি লাগবে না এ বিষয়ে কি কোন পরিপত্র জারি হয়েছে? হ্যাঁ। নির্বাচন কমিশন সচিবালয় থেকে সম্প্রতি জারি করা এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এতদিন পর্যন্ত জাতীয় পরিচয়পত্র হারিয়ে গেলে বা নষ্ট হলে থানায় জিডি করে সেই জিডির কপি আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হতো। নতুন নিয়ম অনুযায়ী, এখন থেকে এই বাধ্যবাধকতা থাকছে না। এই পদক্ষেপের ফলে নাগরিকদের ভোগান্তি কমবে এবং নতুন কার্ড পাওয়ার প্রক্রিয়া আরও দ্রুত ও সহজ হবে। নতুন এই নিয়ম অবিলম্বে কার্যকর হয়েছে।

জিডি কি? জিডি-এর পূর্ণরূপ হলো জেনারেল ডায়েরি (General Diary), যার বাংলা অর্থ হলো সাধারণ ডায়েরি। এটি হলো থানায় একটি লিখিত অভিযোগ, যা সাধারণত এমন কিছু ঘটনার ক্ষেত্রে করা হয় যেগুলোর জন্য তৎক্ষণাৎ কোনো মামলা করা হয় না। সাধারণত যেসব কারণে জিডি করা হয়, সেগুলো হলো:

  • কোনো কিছু হারিয়ে গেলে: যেমন – মোবাইল ফোন, আইডি কার্ড, পাসপোর্ট, গুরুত্বপূর্ণ কাগজপত্র, সার্টিফিকেট, লাইসেন্স, দলিল, চেক বই ইত্যাদি।
  • হুমকি বা নিরাপত্তার অভাব বোধ করলে: যদি কোনো ব্যক্তি আপনাকে হুমকি দেয় বা আপনার ওপর হামলা করার আশঙ্কা থাকে।
  • কোনো ব্যক্তি নিখোঁজ হলে: পরিবারের কোনো সদস্য বা পরিচিত কেউ নিখোঁজ হলে।
  • ভবিষ্যতে কোনো অপরাধের আশঙ্কা থাকলে: যদি আপনি মনে করেন আপনার সম্পত্তি বা পরিবারের ওপর কোনো ক্ষতির আশঙ্কা আছে।

জিডি করার প্রধান উদ্দেশ্য হলো, পুলিশকে একটি ঘটনা সম্পর্কে লিখিতভাবে অবগত করা। এর ফলে, পরবর্তীতে কোনো আইনি পদক্ষেপ নিতে হলে জিডির রেকর্ডটি প্রমাণ হিসেবে কাজ করে। যেমন, আপনার হারানো মোবাইল ফোনটি যদি কোনো অপরাধমূলক কাজে ব্যবহৃত হয়, তাহলে জিডি করা থাকলে আপনি দায়মুক্ত থাকবেন। জিডি সাধারণত নিকটস্থ থানায় করতে হয়। এখন বাংলাদেশ পুলিশ অনলাইনে জিডি করার সুবিধাও চালু করেছে।

জাতীয় পরিচয়পত্র রি-ইস্যু ২০২৫ । যদি আঙুলের ছাপ বা ছবি নিয়ে সমস্যা থাকে, তবে স্থানীয় NID অফিসে গিয়ে বায়োমেট্রিক ভেরিফিকেশন দিতে হবে।তথ্য পরিবর্তনের প্রয়োজন হলে (যেমন নাম, জন্ম তারিখ ইত্যাদি), তখন Reissue না করে Correction Application করতে হবে।

অনলাইন ফি পরিশোধ করুন- ফি পরিশোধ করতে পারবেন bKash, Nagad, Rocket অথবা অনলাইন ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে। ফি হার: হারানো/নষ্ট হলে নতুন NID – ২৩৫ টাকা (সাধারণ ডেলিভারি) । জরুরি ডেলিভারি – ৩৪৫ টাকা।

Caption: https://services.nidw.gov.bd/

NID Re-Issue Process 2025 । হারানো বা নষ্ট হওয়া জাতীয় পরিচয়পত্র (NID) পুনরায় পাওয়ার জন্য অনলাইনে আবেদন করার পদ্ধতি নিচে ধাপে ধাপে বর্ণনা করা হলো

  • ধাপ ১: বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনের ওয়েবসাইটে প্রবেশ। প্রথমে এই ওয়েবসাইটে যান: https://services.nidw.gov.bd । যদি আপনার এখানে আগে থেকে অ্যাকাউন্ট খোলা না থাকে, তাহলে “রেজিস্টার করুন” অপশনে ক্লিক করে একটি নতুন অ্যাকাউন্ট তৈরি করুন। যদি আপনার অ্যাকাউন্ট থাকে, তাহলে লগইন করুন।
  • ধাপ ২: অ্যাকাউন্টে লগইন-আপনার এনআইডি নম্বর, জন্মতারিখ এবং ক্যাপচা (captcha) দিয়ে লগইন করুন। যদি আপনার এনআইডি নম্বর মনে না থাকে, তাহলে আপনি ফর্ম নম্বর এবং জন্মতারিখ ব্যবহার করে লগইন করতে পারবেন। লগইন করার পর আপনার মোবাইলে একটি ভেরিফিকেশন কোড আসবে, যা দিয়ে আপনাকে লগইন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে হবে।

     

  • ধাপ ৩: পুনরায় ইস্যু করার আবেদন-লগইন করার পর আপনার প্রোফাইলে প্রবেশ করুন। বাম পাশের মেনু থেকে “রি-ইস্যু (Re-issue)” অপশনে ক্লিক করুন। এখানে আপনি আপনার বর্তমান এনআইডি কার্ডের বিবরণ দেখতে পাবেন। “আবেদন করুন” বাটনে ক্লিক করুন।
  • ধাপ ৪: আবেদনের কারণ ও ফি প্রদান-আবেদনের কারণ হিসেবে “হারিয়ে গেছে (Lost)” অথবা “নষ্ট হয়ে গেছে (Damaged)” অপশনটি নির্বাচন করুন। এরপর, আপনাকে নির্ধারিত ফি পরিশোধ করতে হবে। ফি-এর পরিমাণ নির্ভর করে আপনি সাধারণ নাকি জরুরি ডেলিভারি চান তার ওপর। সাধারণ ডেলিভারির ফি: ২৩০ টাকা। জরুরি ডেলিভারির ফি: ৩৪৫ টাকা। ফি পরিশোধের জন্য অনলাইনে বিভিন্ন পদ্ধতি যেমন – বিকাশ, রকেট, নগদ, বা ডেবিট/ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করতে পারেন। ফি পরিশোধ সম্পন্ন হওয়ার পর প্রাপ্ত রশিদের কপি ডাউনলোড করে রাখুন। 
  • ধাপ ৫: ছবি এবং ফিঙ্গারপ্রিন্ট (প্রয়োজন হলে)- যদি আপনার আগের ছবি বা ফিঙ্গারপ্রিন্ট যথেষ্ট স্পষ্ট না থাকে বা কোনো তথ্য সংশোধন করার প্রয়োজন হয়, তাহলে আপনাকে নির্দিষ্ট নির্বাচন অফিসে গিয়ে ছবি ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিতে বলা হতে পারে। তবে শুধুমাত্র হারানো কার্ডের জন্য সাধারণত এর প্রয়োজন হয় না।
  • ধাপ ৬: আবেদনপত্র জমা দেওয়া- আবেদনপত্রটি পুনরায় ভালোভাবে যাচাই করুন এবং “সাবমিট (Submit)” বাটনে ক্লিক করুন। আবেদন সফলভাবে জমা হলে আপনি একটি ট্র্যাকিং নম্বর পাবেন। এই নম্বরটি সংরক্ষণ করুন, যা দিয়ে আপনি আপনার আবেদনের বর্তমান অবস্থা জানতে পারবেন।
  • ধাপ ৭: কার্ড সংগ্রহ- আবেদন অনুমোদিত হওয়ার পর, আপনি আপনার মোবাইলে এসএমএস পাবেন। এই এসএমএস পাওয়ার পর আপনি আপনার কার্ডটি সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাচন অফিস থেকে সংগ্রহ করতে পারবেন। কার্ড সংগ্রহের সময় আপনার আবেদনের রসিদ এবং মূল পরিচয়পত্র (যদি নষ্ট হয়ে থাকে) সাথে নিয়ে যাবেন।

জাতীয় পরিচয়পত্র বা স্মার্ট কার্ড একবার-ই দেয়?

না, জাতীয় পরিচয়পত্র বা স্মার্ট কার্ড কেবল একবারই দেওয়া হয় না। একজন নাগরিক হিসেবে আপনি জীবনে একবারই ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হন এবং একটি নির্দিষ্ট নম্বর (NID নম্বর) পান, যা আপনার সারা জীবনের জন্য অপরিবর্তিত থাকে। তবে আপনার যদি এনআইডি কার্ড বা স্মার্ট কার্ড হারিয়ে যায়, নষ্ট হয়ে যায়, অথবা আপনি যদি কার্ডের কোনো তথ্য সংশোধন করতে চান, তাহলে আপনি নির্দিষ্ট ফি জমা দিয়ে নতুন কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারেন। এক্ষেত্রে আপনাকে পুরনো কার্ডের পরিবর্তে একটি নতুন কার্ড দেওয়া হবে, কিন্তু আপনার NID নম্বরটি একই থাকবে। অতএব, যদিও আপনি শুধুমাত্র একবারই ভোটার হিসেবে নিবন্ধিত হন, প্রয়োজনে আপনি একাধিকবার নতুন কার্ড পেতে পারেন।

আবেদন করার আগে নিশ্চিত হয়ে নিন যে আপনার অনলাইন অ্যাকাউন্টটি সঠিকভাবে খোলা হয়েছে এবং আপনার মোবাইল নম্বরটি হালনাগাদ আছে।আপনি যদি প্রথমবারের মতো অনলাইনে আবেদন করেন, তাহলে আপনার এনআইডি নম্বর, জন্মতারিখ, এবং একটি সচল মোবাইল নম্বর লাগবে।আবেদন করার পর আপনার আবেদনের অবস্থা নিয়মিত ওয়েবসাইটে যাচাই করতে পারেন।

Alamin Mia

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে প্রশ্ন থাকলে বা ব্যাখ্যা জানতে পোস্টের নিচে কমেন্ট করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *