সার্ভিস রুলস । নীতি । পদ্ধতি । বিধি

২৯টি চাকরি সংক্রান্ত টার্মস জেনে নিন।

সচিবালয় নির্দেশমালা, ২০০৮ এর নির্দেশনা-১৭৩-তে সেবাপ্রদান প্রতিশ্রম্নতি সম্পর্কে যে বিধান বর্ণিত আছে তাহা নিম্নে প্রদত্ত হইল-নির্দেশনা-১৭৩। সেবাপ্রদান প্রতিশ্রম্নতি।- প্রতিটি মন্ত্রণালয়/বিভাগ এবং উহার আওতাধীন দপ্তর, সংস্থা, ব্যুরাে সর্বসাধারণকে আরাে অধিকতর উন্নত সেবাদানসহ সরকারের স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণের জন্য সেবা প্রদান প্রতিশ্রুতি (Citizen’s Charter) প্রণয়ন করিবে এবং তাহা সংশ্লিষ্ট সেবা গ্রহণকারীদের জানাইবার জন্য ওয়েব সাইটে প্রচারসহ প্রকাশ্যে প্রদর্শনের ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।

২। অসাধারণ ছুটি: নির্ধারিত ছুটি বিধিমালা, ১৯৫৯ এর বিধি-৯(৩) দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। এই ছুটি বিশেষ আস্থার প্রেক্ষিতে প্রদান করা হয় (এ) যখন বিধিমতে অন্য কোন প্রকার ছুটি প্রাপ্য নহে; অথবা (বি) যখন অন্য কোন প্রকার ছুটি প্রাপ্য হওয়া সত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট কর্মক লিখিতভাবে অসাধারণ ছুটির জন্য আবেদন জানায়। স্থায়ী কর্মে নিয়ােজিত সরকারী কর্মচারী ব্যতীত অন্যান্যদের ক্ষেত্রে অসাধারন ছুটির মেয়াদ এককালীন ৩ (তিন) মাসের অধিক হইবে না। দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতার ক্ষেত্রে মেডিকেল সার্টিফিকেটের ভিত্তিতে অস্থায়ী সরকারী কর্মচারীকে সর্বাধিক ৬ (ছয়) মাস পর্যন্ত অসাধারণ ছুটি প্রদান করা যাইবে। যক্ষারােগে আক্রান্ত অস্থায়ী সরকারী কর্মচারীকে সর্বাধিক এককালীন ১২ মাস পর্যন্ত অসাধারণ ছুটি প্রদান করা যাইতে পারে। তবে মেডিকেল সার্টিফিকেটে ছটি মেয়াদ উল্লেখপূর্বক সুপারিশ থাকিতে হইবে।

৩। সরকারি হিসাব সংক্রান্ত স্থায়ী কমিটি: গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৭৬ অনুচ্ছেদে সরকারী হিসাব কমিটি গঠন সম্পর্কে বলা আছে এবং তৎপ্রেক্ষিতে সরকারী হিসাব কমিটির কার্যক্রম হইবে নিম্নরূপ : সরকারের বার্ষিক হিসাব, উপযােজন এবং অডিট রিপাের্টসমূহ পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য সংসদ সদস্যগণের মধ্যে হইতে একটি কমিটি গঠন করা হয় যাহা সরকারী হিসাব কমিটি নামে অভিহিত। উক্ত কমিটি কোন নির্বাহী সংস্থা নহে। এই কমিটি উপযােজন হিসাব সম্পর্কিত, অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রেরিত অনুরূপ বিষয়াবলী এবং হিসাব মহা নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক কর্তৃক প্রণীত আর্থিক হিসাব ও উপযােজন হিসাব পর্যালােচনা করেন। এই কমিটি আর্থিক বিষয়গুলি পরীক্ষা নিরীক্ষার পর এবং সুশ্চষ্ট প্রসারের ভিত্তিতে কোন দফা বাতিল করা বা আদেশ জারী করার ক্ষমতাপ্রাপ্ত নহে। শুধুমাত্র কোন অনিয়ম বা সঠিকভাবে আর্থিক নিয়ম পালনে ব্যর্থতার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষন করিতে পারেন এবং তৎপ্রেক্ষিতে ইহার মতামত ব্যক্ত করিতে পারেন এবং প্রাপ্ত তথ্যাদি ও সুপারিশ লিপিবদ্ধ করিতে পারেন।

৪। ঐচ্ছিক অবসর গ্রহণ: গণকর্মচারী (অবসর) আইন, ১৯৭৪ এর ৯ ধারায় এই সংক্রান্ত বিধান বর্ণিত আছে যাহা নিম্নে প্রদত্ত হইল : ধারা-৯ (১) চাকুরীর মেয়াদ পঁচিশ বৎসর পূর্ণ হইবার পর যে কোন সময় একজন গণকর্মচারী অবসর গ্রহণের অভিপ্রায়কৃত তারিখের কমপক্ষে ত্রিশ দিন পূর্বে নিয়ােগকারী কর্তৃপক্ষের নিকট লিখিত নােটিশ প্রদান পূর্বক চাকুরী হইতে অবসর গ্রহণের ইচ্ছা প্রয়ােগ করিতে পারিবেন। তবে বিধান থাকে যে, এই ইচ্ছা একবার প্রয়ােগ করা হইলে চূড়ান্ত বলিয়া গণ্য হইবে এবং তাহা সংশােধন বা প্রত্যাহারের অনুমতি দেওয়া যাইবে না। (২) চাকুরীর মেয়াদ ২৫ বৎসর পূর্ণ হইবার পর যে কোন সময়, সরকার জনস্বার্থে প্রয়ােজন মনে করিলে, কোনরূপ কারণ দর্শানাে ব্যতীত যে কোন যে কোন কর্মচারীকে চাকুরী হইতে অবসর প্রদান করিতে পারিবে।

৫। দায়িত্ব ভাতা: ফান্ডামেন্টাল রুলস এর রুল-৪৯ এবং বাংলাদেশ সার্ভিস রুলস, প্রথম খণ্ডের বিধি-৬৫ অনুযায়ী একজন সরকারী কর্মচারী তাহার নিজ দায়িত্বের অতিরিক্ত দায়িত্ব হিসাবে একই অফিস বা একই সংস্থাপনের সমপদমর্যাদাসম্পন্ন একাধিক পদের অথবা উচ্চতর পদের দায়িত্বে নিয়ােজিত হইলে, তিনি নির্ধারিত হারে দায়িত্ব ভাতা পাইবেন।

৬। পারিবারিক পেনশন: কোন কর্মচারী পেনশন প্রাপ্তির যােগ্যতা অর্জন করিবার পর অর্থাৎ পেনশন প্রাপ্তির জন্য প্রয়ােজনীয় ন্যূনতম চাকুরীকাল পূর্ণ হইবার পর চাকুরীরত অবস্থায় অথবা অবসর গ্রহণের পর মৃত্যুবরণ করিলে উক্ত কর্মচারীর পরিবারের ভরণপােষণের জন্য যে পেনশন দেওয়া হয়, উহাই পারিবারিক পেনশন। ন্যূনতম পেনশযােগ্য চাকুরীকাল ১০ বৎসর হইতে হইবে।

৭। বেতন: বাংলাদেশ সার্ভিস রুলস, পার্ট-১ এর বিধি-৫(৬) অনুযায়ী মূল বেতন (Basic Pay) বলিতে একজন কর্মচারীর বেতনকে বুঝায়। তবে বিশেষ বেতন, ওভারসিস বেতন এবং আর্থিক সুবিধাদি মূল বেতনের অন্তর্ভুক্ত নয় অথবা কর্মচারীর ব্যক্তিগত যােগ্যতা, শিক্ষাগত যােগ্যতা ইত্যাদি বিবেচনা করিয়া যে আর্থিক সুবিধাদি প্রদান করা হয় তাহাও মূল বেতন নহে।

৮। দায়যুক্ত ব্যয়: গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের যে অনুচ্ছেদে দায়যুক্ত ব্যয় সম্পর্কে বিধান আছে তাহা নিম্নে উদ্ধৃত করা হইল : অনুচ্ছেদ-৮৮। সংযুক্ত তহবিলের উপর দায়। সংযুক্ত তহবিলের উপর দায়যুক্ত ব্যয় নিম্নরূপ হইবে :

(ক) রাষ্ট্রপতিকে দেয় পারিশ্রমিক ও তাঁহার দপ্তর-সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ব্যয়;

(খ) (অ) স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকার, সতি

(আ) সুপ্রিম কোর্টের বিচারকগণ, 

(ই) মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক। 

(ঈ) নির্বাচন কমিশনারগণ, চলতি দাহ 

(উ) সরকারি কর্ম কমিশনের সদস্যদিগকে দেয় পারিশ্রমিক।

(গ) সংসদ, সুপ্রিম কোর্ট, মহা হিসাব-নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রণের দপ্তর নিব এবং সরকারি কর্ম কমিশনের কর্মচারীদিগকে দেয় পারিশ্রমিকসহ প্রশাসনিক ব্যয়;

৯। অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটি: গণকর্মচারী অবসর আইন, ১৯৭৪ এর ৭ ধারায় বর্ণিত আছে যে, এই আইনের কোন বিধানের অধীনে কোন গণকর্মচারীর অবসর গ্রহণের বা চাকুরীর অবসানের ক্ষেত্রে ছুটি পাওনা সাপেক্ষে অবসর প্রস্তুতিমূলক ছুটি প্রাপ্য হইবে এবং এই প্রকার ছুটির মেয়াদ অবসর গ্রহণের তারিখকে অতিক্রমপূর্বক বর্ধিত করা যাইবে, তবে তাহা ৫৯ বৎসর বয়সসীমাকে অতিক্রম করিবে না। কোন গণকর্মচারী অবসর গ্রহণের বা চাকুরীর অবসানের তারিখের পূর্বে অবসর প্রস্তুতি ছুটিতে গমন করিলে, উক্ত ছুটি শেষে অবসর গ্রহণ বা চাকুরীর অবসান কার্যকর। হইবে।

১০। প্রজাতন্ত্রের সরকারি হিসাব: গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের যে অনুচ্ছেদে প্রজাতন্ত্রের সরকারি হিসাব সম্পর্কে বিধান আছে তাহার উদ্ধৃতি নিম্নে প্রদত্ত হইল : অনুচ্ছেদ-৮৫। সরকারী অর্থের নিয়ন্ত্রণ।- সরকারি অর্থের রক্ষণাবেক্ষণ, ক্ষেত্রমত সংযুক্ত তহবিলে অর্থ প্রদান বা তাহা হইতে অর্থ প্রত্যাহার কিংবা প্রজাতন্ত্রের সরকারি হিসাবে অর্থ প্রদান বা তাহা হইতে অর্থ প্রত্যাহার এবং উপরিউক্ত বিষয়সমূহের সহিত সংশ্লিষ্ট বা আনুষঙ্গিক সকল বিষয় সংসদের আইন দ্বারা এবং অনুরূপ আইনের বিধান না হওয়া পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি কর্তৃক প্রণীত বিধিসমূহ দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হইবে।

১১। সংযুক্ত তহবিল : গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের যে অনুচ্ছেদে সংযুক্ত তহবিলের বর্ণনা দেওয়া আছে তাহা নিম্নরূপ : অনুচ্ছেদ-৮৪। সংযুক্ত তহবিল ও প্রজাতন্ত্রের সরকারি হিসাব।-(১) সরকার কর্তৃক প্রাপ্ত সকল রাজস্ব, সরকার কর্তৃক সংগৃহীত সকল ঋণ এবং কোন ঋণপরিশােধ হইতে সরকার কর্তৃক প্রাপ্ত সকল অর্থ একটি মাত্র তহবিলের অংশে পরিণত হইবে এবং তাহা “সংযুক্ত তহবিল” নামে অভিহিত হইবে। (২) সরকার কর্তৃক বা সরকারের পক্ষে প্রাপ্ত অন্য সকল সরকারি অর্থ প্রজাতন্ত্রের সরকারি হিসাবে জমা হইবে।

১২। কল্যাণ তহবিল : বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বাের্ড আইন, ২০০৪ এর ১৪ ধারা অনুযায়ী কর্মচারী কল্যাণ তহবিল নামে একটি স্বতন্ত্র তহবিল থাকিবে। উক্ত তহবিলে নিম্নবর্ণিত উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ জমা হইবে(ক) কর্মচারীদের প্রদত্ত চাঁদা;

(খ) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান (গ) সরকারের অনুমােদনসহ কোন বিদেশী সরকার বা সংস্থা বা কোন আন্ত র্জাতিক সংস্থা কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;

(ঘ) কোন স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;

(ঙ) কোন প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তি কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান; (চ) কল্যাণ তহবিলের অর্থ বিনিয়ােগ হইতে প্রাপ্ত মুনাফা; এবং

(ছ) সরকার কর্তৃক অনুমােদিত অন্য কোন উৎস হইতে প্রাপ্ত অর্থ। 

১৩। যৌথবীমা : বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বাের্ড আইন, ২০০৪ এর ১৯ ধারা অনুযায়ী-(১) কর্মচারী যৌথবীমা তহবিল নামে একটি তহবিল থাকিবে। নিম্নবর্ণিত উৎসমূহ হইতে প্রাপ্ত অর্থ উক্ত তহবিলে জমা হইবে, যথা

(ক) কর্মচারীদের প্রদত্ত প্রিমিয়াম; 

(খ) সরকার কর্তৃক প্রদত্ত অনুদান;

(গ) যৌথবীমা তহবিলের সম্পত্তি বা বিনিয়ােগ হইতে প্রাপ্ত আয়, মুনাফা বা সুদ;

১৪। সরকারী হিসাব কমিটি : সরকারের আর্থিক সর্বপ্রকার হিসাব যথা-বার্ষিক হিসাব, উপযােজন হিসাব এবং অডিট রিপাের্ট ইত্যাদি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিবার জন্য সংসদ সদস্যদের মধ্য হইতে সদস্য লইয়া এই কমিটি গঠিত হয়। উক্ত কমিটি যে সকল কার্যাদির দায়িত্ব পালন করেন তাহা হইল-কমিটি সংসদের পক্ষে উপযােজন হিসাব। সম্পর্কিত ও অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক এই কমিটিতে প্রেরিত প্রণীত আর্থিক হিসাব ও উপযােজন হিসাব পর্যালােচনা করেন। এই কমিটি কোন নির্বাহী সংস্থা নহে। এই কমিটি বিষয়গুলি পুক্মখানুপুক্মখভাবে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এবং সুস্পষ্ট প্রমাণের ভিত্তিতে কোন অনিয়ম বা আর্থিক নিয়মনীতি পালনে ব্যর্থতা প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করিতে পারেন এবং তাহাদের মতামত ব্যক্ত করিতে পারেন এবং প্রাপ্ত সকল তথ্যাদি ও সুপারিশ লিপিবদ্ধ করিতে পারেন।

১৫। বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী : প্রত্যেক বৎসর উন্নয়নের নিমিত্ত বাজেটে যে সব উন্নয়ন কর্মসূচী অন্তর্ভুক্ত করত: প্রস্তাব দেওয়া হয় তাহাই বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচী। পরিকল্পনা কমিশন প্রস্তাবিত ও সংশােধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীর এষ্টিমেট তৈরীর দিক নির্দেশনা জারী করিবে। পরিকল্পনা কমিশনে গঠিত কার্যক্রম কমিটি অর্থ বিভাগ, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ এবং বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ণ বিভাগের মিলিত অংশগ্রহণে উন্নয়ন প্রকল্পের প্রস্তাবসমূহ পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও পর্যালােচনান্তে প্রকল্পের অগ্রাধিকার নির্ধারণ এবং এডিপি-তে যে বরাদ্দের সংস্থান রাখা হইবে তাহা স্থির করিবেন। কমিটি প্রতি বৎসর নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ের শুরুতে এডিপি চূড়ান্ত করিবার নিমিত্তি তাহা পর্যালােচনা করত: আগামী বৎসরের এডিপি-র জন্য প্রাথমিক কার্যাদি সমাপ্ত করিবেন। অত:পর প্রতি বৎসর এপ্রিল মাসে কমিটি এডিপি সংক্রান্ত সুপারিশ চূড়ান্ত করিবেন।

১৬। মূখ্য হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা : জেনারেল ফাইনানসিয়াল রুলস্ এর রুল ২ (xvi) অনুযায়ী মুখ্য হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা বলিতে মন্ত্রণালয় অথবা বিভাগের সচিব বা ভারপ্রাপ্ত সচিবকে বুঝাইবে এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট এর রেজিষ্ট্রারারও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে। মূখ্য হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার দায়িত্ব ১। তিনি তাঁহার মন্ত্রণালয়/বিভাগ এবং অধীনস্থ অফিসমূহের জন্য বাজেটের | সংস্থান করিবেন। ২। তিনি তাঁহার অধস্তন নিয়ামক ও ব্যয়ন কর্মকর্তাগণের মধ্যে প্রয়ােজন মােতাবেক মঞ্জুরীকৃত বাজেট বরাদ্দের বিভাজনের ব্যবস্থা করিবেন। ৩। তিনি তাঁহার মন্ত্রনালয়/বিভাগের অধীনস্থ অফিসসমূহের ব্যয় নিয়ন্ত্রণ করিবেন। ৪। তিনি তাঁহার অধিক্ষেত্রে বা আওতাধীনে রাজস্ব সংগ্রহ বা আদায়ের অগ্রগতি তৎসহ ব্যয়ের হিসাব পর্যবেক্ষণ করিবেন।

১৭। উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ : ২ জেনারেল ফাইনানসিয়াল রুলস্-এর রুল-২ (v) অনুযায়ী উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ বলিতে সরকার অথবা এমন কর্তৃপক্ষকে বুঝাইবে যাহাতে সরকার যথাযােগ্য ক্ষমতা অর্পণ করেন। ট্রেজারী রুলস্-এর রুল ২(ঘ) অনুযায়ী উপযুক্ত কর্তৃপক্ষ বলিতে সরকার অথবা এমন কোন কর্তৃপক্ষকে বুঝায় যাহাকে সরকার সংশ্লিষ্ট ক্ষমতা অর্পণ করেন।

১৮। উদ্বৃত্ত বাজেট : উদ্বৃত্ত বাজেট অর্থ কোন নির্দিষ্ট সময়ে সরকারের চলতি আয় রাজস্ব ব্যয় অপেক্ষা অধিক হয়।

১৯। হিসাব মহা নিয়ন্ত্রক : জেনারেল ফাইনানসিয়াল রুলস্ এর রুল-২ (vii) অনুযায়ী “হিসাব মহা নিয়ন্ত্রক” বলিতে বাংলাদেশের হিসাব মহা নিয়ন্ত্রককে বুঝায়।

০। সংশােধিত বাজেট : জেনারেল ফাইনানসিয়াল রুলস এর রুল-৮৯ অনুযায়ী পরিকল্পনা কমিশনে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়/বিভাগসমূহ এবং অর্থ বিভাগের প্রতিনিধি বর্গের সহিত আললাচনা সমাপ্তির পর প্রাক্কলনসমূহ চূড়ান্ত করা হয়। সংশােধিত বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচীতে অন্তর্ভুক্ত প্রত্যেক অনুমােদিত প্রকল্প/স্কিমের তথ্যাদি রাজস্ব ও মূলধনের অংশসমূহের বিভাজন এবং প্রাক্কলিত প্রাপ্তি (যদি থাকে) দেখাইয়া বাজেটে অন্তর্ভুক্তির জন্য অর্থ বিভাগে দাখিল করা হয়।

২১ পিপিআর-২০০৩ : ৩০-৯-২০০৩ তারিখের আইএমডি/সিপিটিইউ/0২০১৩/২৯৩ নম্বর স্মারক বলে জারী করা হয় [Public Procurement Regulation, 2003] এই রেগুলেশন ১৩টি অধ্যায় সম্বলিত এবং ইহাতে সর্বমােট ৫৯টি প্রবিধান রহিয়াছে। এই প্রবিধান নিম্নোক্ত নির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করিবে, যথা(১) সমগ্র কার্যক্রমে স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা, দক্ষতা ইত্যাদির প্রসার ঘটানাে; (২) দরদাতাদের প্রতি সমান আচরণ নিশ্চিতকরণ; (৩) সরকারী খাতে পণ্য, কার্য বা সেবার সংগ্রহকরণ কার্যে দরদাতাগণের মধ্যে প্রতিযােগিতার সুযােগ বৃদ্ধিকরণ; (৪) সংগ্রহকরণ পদ্ধতিতে ন্যায্যতা আনায়ন; (৫) উন্নত ব্যবসা পরিবেশ তৈরী করা; (৬) সরকারী খাতে সর্বপ্রকার সংগ্রহ কার্যে সকলের অংশগ্রহণের জন্য প্রয়ােজনীয় স্বচ্ছ বিধিবিধান প্রণয়ন ও প্রবর্তন করা; (৭) ক্রয় ও সংগ্রহ সংক্রান্ত প্রশাসনে গতিশীলতা আনায়ন ও দক্ষতা বৃদ্ধি; ইত্যাদি।

২২। পিআরএসপি : ইহার মূল উদ্দেশ্য হইল দারিদ্র বিমােচন প্রকল্প। ইহা পৃথিবীর সমস্ত দেশের সরকারের অংশীদারীত্বের ভিত্তিতে জনগণ ও উন্নয়ন সহযােগী সংস্থা সম্মিলিতভাবে প্রণয়ন করে। প্রাথমিক পর্যায়ে প্রায় দেশেই পিআরএসপি প্রণয়ন/প্রস্তুতের পূর্বে একটি অন্তবর্তীকালীন পিআরএসপি বা ১-পিআরএসপি প্রস্তুত করে। এই ১-পিআরএসপি-র অর্থ হইল কোন একটি দেশের বর্তমান দারিদ্র বিমােচন কর্মসূচী কিরূপ এবং কোন প্রক্রিয়ায় পিআরএসপি তৈরী করা যায়। বাংলাদেশে ২০০৩ সালে ১-পিআরএসপি প্রস্তুত করত: পূণাঙ্গ পিআরএসপি ২০০৫ সনের ১৮ অক্টোবর একনেকে দাখিল করে।

২৩। পেনশনের সমর্পণ মূল্য :  ২৭-১-২০০৯ তারিখের অর্থ বিভাগের অম/অবি/প্রবি-১/৩পি-২/২০০৫ (অংশ ১)/৫ নম্বর স্মারকের পেনশন সহজীকরণ নীতিমালার অনুচ্ছেদ-২.১৩ তে পেনশন সমর্পণ শিরােনামে বর্ণিত আছে যে, “বর্তমানে একজন চাকুরে তাহার এস পেনশনের শতকরা ৫০ ভাগ সমর্পণ করিয়া এককালীন আনুতােষিক প্রাপ্য হন। যে সকল চাকুরে ১-৬-১৯৯৪ তারিখে অথবা তাহার পরে অবসর গ্রহণ করিয়াছেন/করিবেন, তাহারা ইচ্ছা প্রকাশ করিলে অবশিষ্ট গ্রস পেনশনের ৫০ ভাগও একবারে সমৰ্পণ করিয়া ইহার পরিবর্তে প্রচলিত বিনিময় হারের অর্ধেক হারে আনুতােষিক গ্রহণ করিতে পারিবেন। উক্ত অবশিষ্ট ৫০ ভাগ গ্রস পেনশন একবারে সমর্পণের বিষয়টি পেনশনারের প্রথম আবেদনপত্রে সুনির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করিতে হইবে। পরবর্তী সময়ে বা খণ্ড খণ্ডভাবে কোন আবেদন গ্রহণযােগ্য হইবে না।

২৪। শিক্ষা ছুটি : বি, এস, আর, পার্ট-১ এর বিধি-১৯৪ অনুযায়ী সরকারের সাধারণ আদেশ দ্বারা আরােপিত শর্ত মোতাবেক কোন সরকারী কর্মচারীকে বৈজ্ঞানিক, কারিগরী বা অনুরূপ বিষয়ে অধ্যয়নের জন্য অথবা নির্দেশনাগত কোন বিশেষ কোর্সের জন্য অধ্যয়ন ছুটি মঞ্জুর করা যাইবে। এই প্রকার ছুটি ছুটি হিসাব” হইতে বিয়ােগ হইবে না। শিক্ষা ছুটি কেবল সরকার মঞ্জুর করিতে পারেন।

২৫। ক্যাশ বই: ট্রেজারী রুলস্ এর এস, আর-১১ তে “ক্যাশ বহি সংরক্ষণ” শিরােনামে বলা আছে যে, জেলা হিসাবরক্ষণ অফিসার ও উপজেলা হিসাবরক্ষণ অফিসার প্রত্যেক প্রাপ্তি ও পরিশোেধ যে তারিখে সংঘটিত হইয়াছে সেই তারিখে লেনদেন সংঘটনের ক্রমানুসারে ক্যাশ বহিতে লিপিবদ্ধ করিবেন।

২৭। এল, পি, সি: সিনিয়র সিটি এল, পি, সি (শেষ বেতন পত্র) হইল কোন কর্মস্থল হইতে সর্বশেষ যে বেতন উত্তোলন করা হয় তাহার পরিমাণগত একটি বর্ণনা পত্র। যখন প্রজাতন্ত্রের কোন কর্মচারী এক কর্মস্থল হইতে অন্য কর্মস্থলে বদলী হন বা অবসর গ্রহণ করেন তখন তাহার মূল বেতন, বাড়ীভাড়া, অন্যান্য ভাতা, অগ্রিম, অডিট আপত্তি ইত্যাদির পরিমাণগত ও অন্যান্য আনুষাঙ্গিক তথ্যাদি সম্বলিত একটি সার্টিফিকেট এক অডিট অফিসের আওতা হইতে অন্য অডিট অফিসের আওতাধীনে প্রেরণ করা হয় এবং সংশ্লিষ্ট কর্মচারীকেও দেওয়া হয়। ইহাই এল, পি, সি বা শেষ বেতন পত্র।

২৮। জেনারেল প্রভিডেন্ট ফান্ড রুলস, ১৯৭৯ : ভবিষ্য তহবিল আইন, ১৯২৫ এর ২(ঙ) ধারায় বর্ণিত ভবিষ্য তহবিল বলিতে এমন তহবিলকে বুঝাইবে যাহাতে কোন শ্রেণী বা শ্ৰেণীসমূহের চাকুরীজীবীর চাঁদা বা জমা গ্রহণ করা হয় এবং তাহা তাহাদের পৃথক হিসাবে রক্ষিত হয় এবং তহবিলের বিধিমালার অধীনে চাঁদা, জমা বা অনুদানে প্রদত্ত কোন অনুদান, সুদ বা অর্থ বৃদ্ধিও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে। উপরােক্ত উদ্দেশ্য পূরণকল্পে সাধারণ ভবিষ্য তহবিল বিধিমালা, ১৯৭৯ প্রণয়ন করা হয়। সাধারণ ভবিষ্য বিধিমালার৫ নং বিধিতে বর্ণিত আছে যে, সরকারী কর্মচারীর চাকুরীর মেয়াদ দুই বৎসর পূর্ণ হইলে বাধ্যতামূলকভাবে চাঁদাদাতা হিসাবে তহবিলে যােগদান করিতে হইবে। তবে চাকুরীর মেয়াদ দুই বৎসর পূর্ণ হওয়ার পূর্বেও ইচ্ছা করিলে তহবিলে যােগদান করিতে পারিবেন এবং ৫২ বৎসর বয়সে উপনীত হইলে তহবিলে চাঁদা প্রদান বন্ধ করিতে পারিবেন। ১৩(১) বিধিতে বর্ণিত বিধান মােতাবেক তহবিল হইতে অগ্রিম গ্রহণ করিতে পারিবেন। ১৩(৯) বিধিতে বর্ণিত বিধান মােতাবেক চাঁদাদাতার ৫২ বৎসর বয়স পূর্ণ | হইলে কৃষিজমি ক্রয়সহ যে কোন প্রকৃত উদ্দেশ্যে মঞ্জুরকারী কর্তৃপক্ষ অফেরতযােগ্য অগ্রিম মঞ্জুর করিতে পারিবেন। তার চিরদিন

২৯। যােগদানকাল : বাংলাদেশ সার্ভিস রুলস, প্রথম খণ্ডের বিধি-৯৪ অনুযায়ী যােগদানকালীন সময়ের মধ্যে যােগদান না করিলে, যােগদানকাল সমাপ্তির পর হইতে দায়িত্ব গ্রহণের দিন পর্যন্ত, এই মধ্যবর্তী সময়ের জন্য কোন বেতন বা ছুটিকালীন কত বেতন পাইবেন না। এফ, আর, ১০৮ নং বিধি মােতাবেক নির্ধারিত সময়ে যােগদান না করা অসদাচরণ হিসাবে বিবেচিত হইবে।

Alamin Mia

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ৮ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে বিস্তারিত জানতে admin@bdservicerules.info ঠিকানায় মেইল করতে পারেন।

One thought on “২৯টি চাকরি সংক্রান্ত টার্মস জেনে নিন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *