সচিবালয়ের নিরাপত্তা জোরদার ২০২৫ । প্রবেশ পাস দৃশ্যমান রেখে সচিবালয়ে ঢুকতে হবে?
দেশের প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে বাংলাদেশ সচিবালয়ের অভ্যন্তরে প্রত্যেকটি ভবনের নিরাপত্তার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই সচিবালয়ের অভ্যন্তরে অবস্থিত প্রতিটি ভবন/প্রাঙ্গনের সার্বক্ষণিক শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে নিম্নরূপ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে-সচিবালয়ের নিরাপত্তা জোরদার ২০২৫
বাংলাদেশ সচিবালয় কি? বাংলাদেশ সচিবালয় হলো বাংলাদেশ সরকারের প্রশাসনিক সদর দপ্তর। এটি বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকার সেগুন বাগিচাতে অবস্থিত। ১৯৪৭ সালে নির্মিত একগুচ্ছ ভবন নিয়ে এটি গঠিত হয়, যা ১৯৭১ সাল পর্যন্ত পূর্ব পাকিস্তানের প্রাদেশিক সরকারের সচিবালয় হিসেবে ব্যবহৃত হতো। সচিবালয়ে বাংলাদেশ সরকারের সকল নির্বাহী বিভাগীয় কার্যক্রম সম্পন্ন হয়। এখানে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও বিভাগের কার্যালয় এবং অন্যান্য সুবিধাগুলো থাকে। একজন সচিব সাধারণত কোনো মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং তিনি সেই মন্ত্রণালয়ের প্রধান জবাবদিহি কর্মকর্তা। বাংলাদেশের প্রশাসনিক কাঠামোতে সচিবালয় একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে।
সচিবালয়ে মিছিল করা যাবে কি? না। বাংলাদেশ সচিবালয়ের অভ্যন্তরে কোন ধরনের মিছিল, সমাবেশ বা গণজমায়েত বারিত করা হয়েছে। সচিবালয়ের অভ্যন্তরে অবস্থিত বিভিন্ন মন্ত্রণালয়/বিভাগের সম্মেলন কক্ষে অননুমোদিত কোন সভা/সমাবেশ বা কোন পেশাগত সংগঠন/সমিতির সভা/সম্মেলন/বৈঠক করা যাবে না। সন্ধ্যা ৬.০০ টার পর সচিবালয়ের অভ্যন্তরে জরুরি দাপ্তরিক প্রয়োজনে অবস্থান করতে হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অবহিত করতে হবে।
ছুটির দিনে সচিবালয়ে অনুমতি নিয়ে ঢুকতে হবে? হ্যাঁ। সাপ্তাহিক ছুটি কিংবা অন্য কোন ছুটির দিনে সচিবালয়ের অভ্যন্তরে দাপ্তরিক প্রয়োজনে অবস্থান করতে হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্বানুমতি গ্রহণ করতে হবে। সচিবালয়ের অভ্যন্তরে কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারীগণের সচিবালয় প্রবেশ পাস দৃশ্যমান রাখতে হবে। সচিবালয়ের অভ্যন্তরের কোন ভবন বা প্রাঙ্গনে কোনরূপ লিফলেট বিতরণ, ব্যানার বা ফেস্টুন ঝুলানো বা স্থাপন করা যাবে না এবং সচিবালয়ে প্রবেশকালীন গাড়ি/ব্যক্তির নিরাপত্তা তল্লাশি দায়িত্বরত নিরাপত্তা বাহিনী নিশ্চিত করবেন । এমতাবস্থায়, সকলকে বর্ণিত নির্দেশনাসমূহ আবশ্যিকভাবে প্রতিপালনের জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সচিবালয় একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং সুরক্ষিত এলাকা (কি পয়েন্ট ইন্স্টলেশন – কেপিআই)। তাই সেখানে জনসাধারণের প্রবেশাধিকার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রিত। সাম্প্রতিক সময়ে, বিশেষ করে সন্ধ্যার পর প্রবেশ ও অবস্থানের ক্ষেত্রে কঠোর নিয়মকানুন জারি করা হয়েছে।
সন্ধ্যা ৬টার পর জরুরি দাপ্তরিক কাজ ছাড়া সচিবালয়ে কোনো ব্যক্তি অবস্থান করতে পারেন না। যদি কোনো কর্মকর্তা বা কর্মচারী জরুরি প্রয়োজনে সন্ধ্যার পর অবস্থান করতে চান, তবে তাকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানাতে হবে। একইভাবে, সাপ্তাহিক বা সরকারি ছুটির দিনে সচিবালয়ে প্রবেশের জন্যও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্বানুমতি নেওয়া প্রয়োজন। সকল কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং যাদের অস্থায়ী পাস রয়েছে, তাদেরও প্রবেশ পাসের মেয়াদ ও নিয়মাবলী কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হয়।
সচিবালয় নির্দেশনা ২০২৫
সচিবালয় প্রবেশ নিয়ে নতুন নির্দেশনা ২০২৫ । সচিবালয়ের অভ্যন্তরে নিরাপত্তা জোরদার করার জন্য কি কি নির্দেশনা দেয়া হয়েছে? বাংলাদেশ সচিবালয়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এবং শৃঙ্খলা বজায় রাখতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ সম্প্রতি কিছু নির্দেশনা জারি করেছে। এই নির্দেশনার মূল উদ্দেশ্য হলো দেশের প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে এর সার্বিক নিরাপত্তা জোরদার করা। নির্দেশনাগুলো হলো:
১. মিছিল-সমাবেশ নিষিদ্ধ: সচিবালয়ের ভেতরে কোনো ধরনের মিছিল, সমাবেশ বা গণজমায়েত সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ।
২. অননুমোদিত সভা: বিভিন্ন মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সম্মেলন কক্ষে কোনো পেশাজীবী সংগঠন বা সমিতির অননুমোদিত সভা, সম্মেলন বা বৈঠক করা যাবে না।
৩. সন্ধ্যার পর অবস্থান: জরুরি দাপ্তরিক কাজ ছাড়া সন্ধ্যা ৬টার পর সচিবালয়ে কোনো ব্যক্তি অবস্থান করতে পারবেন না। যদি জরুরি প্রয়োজন হয়, তাহলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানাতে হবে।
৪. ছুটির দিনে প্রবেশ: সাপ্তাহিক বা অন্য কোনো সরকারি ছুটির দিনে সচিবালয়ের অভ্যন্তরে দাপ্তরিক প্রয়োজনে অবস্থান করতে হলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পূর্বানুমতি নিতে হবে।
৫. প্রবেশ পাস দৃশ্যমান রাখা: সচিবালয়ে কর্মরত সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তাদের প্রবেশ পাস দৃশ্যমান স্থানে ঝুলিয়ে রাখতে হবে।
৬. প্রচারণা নিষিদ্ধ: সচিবালয়ের কোনো ভবন বা প্রাঙ্গণে কোনো ধরনের লিফলেট বিতরণ, ব্যানার বা ফেস্টুন ঝুলানো বা স্থাপন করা যাবে না।
৭. প্রবেশকালীন তল্লাশি: সচিবালয়ে প্রবেশকালে প্রতিটি গাড়ি এবং ব্যক্তিকে দায়িত্বরত নিরাপত্তা বাহিনীর দ্বারা বাধ্যতামূলকভাবে তল্লাশি করা হবে। এই নির্দেশনাগুলো সবাইকে কঠোরভাবে মেনে চলার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।
সচিবালয়ে সভা সমাবেশ করা যাবে না?
না। না, বাংলাদেশ সচিবালয়ে কোনো ধরনের সভা-সমাবেশ করা যাবে না। এটি দেশের প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র এবং একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা (কেপিআই)। এর নিরাপত্তা এবং শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য সরকার কঠোর পদক্ষেপ নিয়েছে। সম্প্রতি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ থেকে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে, যেখানে বলা হয়েছে: সচিবালয়ের ভেতরে কোনো ধরনের মিছিল, সমাবেশ বা গণজমায়েত সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ। কোনো পেশাজীবী সংগঠন বা সমিতির সভা, সম্মেলন বা বৈঠক অনুমোদিত না হলে তা করা যাবে না। কোনো ব্যানার বা ফেস্টুন ঝুলানো বা স্থাপন করা যাবে না এবং লিফলেট বিতরণও নিষিদ্ধ। এই নিয়মগুলো মূলত সচিবালয়ের সার্বক্ষণিক শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্যই প্রণীত হয়েছে।
গত ১৭-৩-২০০৯ খ্রিঃ তারিখে অনুষ্ঠিতব্য সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক বাংলাদেশ সচিবালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার ও নিশ্চিতকরণের নিমিত্ত আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করার লক্ষ্যে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সচিবালয়ে প্রবেশের “প্রবেশ পত্র” বুকে ঝুলিয়ে প্রদর্শন করার প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদানের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হয়েছে।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিরাপত্তা শাখা-২
নং স্বঃমঃ নিরাপত্তা-২/২০০৮ (নিরাপত্তা-২)/১০১৯ তারিখ: ৩০-৪-২০০৯
বিষয়: বাংলাদেশ সচিবালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার ও নিশ্চিতকরণের লক্ষ্যে সচিবালয়ের প্রবেশের “প্রবেশ পত্র” বুকে ঝুলিয়ে প্রদর্শনকরণ।
সূত্র: স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নিরাপত্তা শাখা-২ এর স্মারক নং নিরাপত্তা-২/২০০৮(নিরা-২)/৭৬৯ তারিখ: ০১-০৪-২০০৯।
উপর্যুক্ত বিষয় ও সূত্রোক্ত স্মারকে গত ১৭-৩-২০০৯ খ্রিঃ তারিখে অনুষ্ঠিতব্য সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক বাংলাদেশ সচিবালয়ের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার ও নিশ্চিতকরণের নিমিত্ত আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে সহযোগিতা করার লক্ষ্যে সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীকে সচিবালয়ে প্রবেশের “প্রবেশ পত্র” বুকে ঝুলিয়ে প্রদর্শন করার প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদানের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হ’ল।
স্বাক্ষরিত ৩০-৪-২০০৯
খান মোহাম্মদ বিলাল
উপ-সচিব।
nice