সরকারি প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন পদে লোকবল নিয়োগ হইয়া থাকে। শূন্যপদে লোক নিয়োগের বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে।
(ক) সরাসরি নিয়োগ
(খ) পদোন্নতির মাধ্যমে নিয়োগ
(গ) প্রেষণে নিয়োগ
(ঘ) এডহক নিয়োগ
(ঙ) সামরিক কর্মকতাদের বেসামরিক পদে নিয়োগ।
(চ) পুন:নিয়োগ
(ছ) চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ
(জ) খন্ডকালীন নিয়োগ
(ঝ) আত্মীকরণের মাধ্যমে নিয়োগ
(ঞ) মৌসুমী নিয়োগ
(ট) ল্যাটারাল এন্ট্রির মাধ্যমে নিয়োগ।
(ঠ) কনটিনজেন্ট এবং ওয়ার্ক চার্জড হিসাবে নিয়োগ।
(ক) ক্যাডার পদে সরাসরি নিয়োগ পদ্ধতি
বি,সি,এস ক্যাডার পদে সরাসরি নিয়োগ পদ্ধতি নিম্নে উল্লেখ করা হলো।
(১) প্রশাসনিক মন্ত্রণালয়/বিভাগ প্রয়োজন অনুযায়ী শুণ্যপদের সংখ্যা উল্লেখপূর্বক সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ে নিজ নিজ চাহিদা প্রেরণ করিবে। সংস্থাপন বা জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সকল মন্ত্রণালয়/বিভাগের চাহিদা এবং নিজস্ব পাবলিক সার্ভিস কমিশনকে অবহিত করিয়া প্রার্থী নির্বাচনপূর্বক সুপারিশ প্রেরণের জন্য অনুরোধ করিবে।
(২) পাবলিক সার্ভিস কমিশন চাহিদা অনুযায়ী পদের বিজ্ঞপ্তি প্রদানের পর পরীক্ষা গ্রহণ এবং যোগ্য প্রার্থীদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক নির্বাচিত প্রার্থীদের ক্যাডারওয়ারী মেধা তালিকা সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ে দাখিল করিবে।
(৩) পি,এস,সি এর সুপারিশ প্রাপ্তির পর সংস্থাপন মন্ত্রণালয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রার্থীদের পুলিশ ভেরিফিকেশনের ব্যবস্থা করিয়া রাষ্ট্রপতির অনুমোদন গ্রহণ করত: প্রার্থীদের নিকট নিয়োগপত্র প্রেরণ করিবে এবং প্রার্থীদের নিকট হইতে চাকুরীতে যোগদানের সম্মতি প্রাপ্তির পর নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি জারী হইবে।
নন-ক্যাডার বা নন গেজেটেড পদে সরাসরি নিয়োগ পদ্ধতি
(১) কোন নন-ক্যাডার গেজেটেড পদে সরাসরি অথবা নন-গেজেটেড কর্মচারীদের মধ্য হইতে পদোন্নতির মাধ্যমে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে নিয়োগ প্রদান করিতে হইবে। এইরূপ নিয়োগের জন্য প্রার্থী নির্বাচন লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে হইবে, না শুধুমাত্র মৌখিক পরীক্ষার মাধ্যমে হইবে তাহা পাবলিক সার্ভিস কমিশন নির্ধারণ করিবে। এই ধরণের নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য সচিব এবং পুলিশ ভেরিফিকেশনের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়/বিভাগ অথবা নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ পালন করিবে।
(২) সচিবালয়, সংযুক্ত অধিদপ্তর এবং অধিনস্ত অফিসসমূহের নন-গেজেটেড পদসমূহের সংশ্লিষ্ট নিয়োগ প্রদান করিবে। এই ধরনের নিয়োগ সংশ্লিষ্ট অফিসের সিলেকশান কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে প্রদান করিতে হইবে।
(৩) সরকারের সর্বশেষ সিদ্ধান্ত অনুযায়ী সরাসরি নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধা কোটা, জেলা কোটা, মহিলা কোটা, মুক্তিযোদ্ধা কোটা, উপজাতি, আনসার ও প্রতিরক্ষা কোটা, শিশু সদনের এতিম কোটা, ব্যাল্যান্স কোটা অনুসরণ করিতে হইবে।
(খ) পদোন্নতির মাধ্যমে নিয়োগ
চাকুরী জীবনে একটি বিরাট আকাঙ্খা। পদোন্নতির জন্যই একজন চাকুরীজীবী সততা, নিষ্ঠা ও ন্যায় পরায়নতার সাথে কাজ করিয়া থাকে। একজন চাকুরীজীবীর পদোন্নতির তাহার এসিআর, জ্যেষ্ঠতা তালিকা, দক্ষতা ইত্যাদির উপর নির্ভর করে। চাকুরির ক্ষেত্রে অনেক পদ পদোন্নতির মাধ্যমে পূরণ হইয়া থাকে।
(গ) প্রেষণে নিয়োগ
বি,এস, আর-এর বিধি ৫(১৬) অনুযায়ী প্রেষনে নিয়োগ বলিতে বাংলাদেশের বাহিরে নিয়োগ বুঝায়। উক্ত বিধি মতে বাংলাদেশের ভিতরে প্রেষণ নিয়োগ নিয়ম সম্মত নয়। কিন্তু সাধারণ অর্থে প্রেষণে নিয়োগ বলিতে নিজস্ব ক্যাডার বা দপ্তরের বাহিরে এই বেতনক্রমে সমপদমর্যাদাসম্পন্ন পদে নিয়োগ বুঝায়। বর্তমানে এই সাধারণ অর্থে কর্মকর্তাগণকে সরকারী দপ্তর হইতে স্বায়ত্তশাসিত/আধা সরকারী বা স্থানীয় প্রতিষ্ঠান হইতে অপর স্থানীয় প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন শর্তে নিয়োগ প্রদান করা হয়ে থাকে।
(ঘ) এডহক নিয়োগ
এডহক নিয়োগ মাত্র ছয় মাসের জন্য প্রদান করা হয়। যে পদে নিয়োগকৃত কর্মকর্তা মাত্র ছয় মাস অধিষ্ঠিত থাকিবেন এবং যে সব ক্ষেত্রে পাবলিক সার্ভিস কমিশনকে প্রার্থী নির্বাচনের জন্য অনুরোধ করা হইলে কমিশন ১৫ দিনের মধ্যে প্রার্থী নির্বাচনপূর্বক সুপারিশ করিতে ব্যর্থ হয় সেই সব ক্ষেত্রে এডহক ভিত্তিতে নিয়োজিত কোন কর্মকর্তা পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সম্মতি ছাড়া উক্ত পদে অথবা উক্ত নিয়োগের ধারাবাহিকতাক্রমে অন্য কোন পদে ছয় মাসের অধিককাল অধিষ্ঠিত থাকিতে পারিবেন না।
(ঙ) সামরিক কর্মকর্তাদের বেসামরিক পদে নিয়োগ
যথাযথ কর্তৃপক্ষে সুপারিশের ভিত্তিতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সার্ভিস হেড কোয়ার্টারের অনুমতিপত্র প্রাপ্তির পর নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ একজন সামরিক অফিসারকে সম পদমর্যাদা সম্পন্ন পদে নিয়োগ করিতে পারিবে।
(চ) পুন: নিয়োগ
সরকারী নিয়ম অনুযায়ী কোন সরকারী কর্মচারী অক্ষমতাজনিত অবসর গ্রহণের পর পরবর্তী পর্যায়ে সুস্থ হইলে অর্থাৎ শারীরিক ও মানসিকভাবে সরকারী কার্য সম্পাদনের সক্ষম হইলে তাহলে সরকারী ও চাকুরী পুন:নিয়োগ করা যাইবে। ইহা ব্যতীয় ক্ষতিপূরণ অবসর ভাতা প্রাপ্ত কোন কর্মচারীকে পরবর্তী পর্যায়ে কোন উপযুক্ত পদে পুন: নিয়োগ করা যাইবে।
(ছ) চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ
সরকারী নিয়মে অথবা বার্ধক্যজনিত কারণে অবসরপ্রাপ্ত কোন কর্মচারীকে যে কোন সরকারী পদে অথবা করপোরেশন, রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান অথবা স্থানীয় সংস্থায় যে কোন পদে বা চাকুরীতে নিয়োগ করা যাইবে। তবে এই ব্যাপারে প্রধান মন্ত্রীর অনুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে। তবে এই ব্যাপারে প্রধান মন্ত্রীর অনুমোদন গ্রহণ করিতে হইবে। অবসরপ্রাপ্ত কোন কর্মচারী চুক্তিভিত্তিক যে পদে নিয়োগ লাভ করেন সেই পদে বেতন ভাতাদি হইতে তাহার প্রাপ্ত অবসর ভাতা বাদ দিয়া বাকী মাসিক বেতন ভাতাদি হইবে বাকী অর্থ প্রাপ্ত হইবে না।
(জ) খন্ডকালীন নিয়োগ
সরকারী বা স্বায়ত্তশাসিত কোন প্রতিষ্ঠান কোন কার্য সম্পাদনের নিমিত্তে সর্বাক্ষনিক কর্মচারীর প্রয়োজন না হইলে উক্ত কার্য সম্পাদনের জন্য খন্ডকালীন কর্মচারী নিয়োগ করা যাইতে পারে। এইরূপ নিয়োগপ্রাপ্ত কর্মচারীকে মাসিক একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ ভাতা প্রদান করা হয়ে থাকে।
(ঝ) আত্মীকরণের মাধ্যমে নিয়োগ
সরকারী সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পদ সংকোচন অথবা পদ বিলুপ্তির কারণে ছাটাইকৃত কর্মচারীগণকে সরকার আত্মীকরণের মাধ্যমে অন্যত্র নিয়োগের ব্যবস্থা করিয়া থাকে। সাধারণত সমমর্যাদা সম্পন্ন পদে অথবা সমপদ মর্যাদা সম্পন্ন পদের অবর্তমানে অর্ধ:স্তন পদে আত্মীকরণের মাধ্যমে নিয়োগ করা হয়।
(ঞ) মৌসুমী নিয়োগ
মৌসুমীভিত্তিক কাজের জন্য মৌসুমী নিয়োগ প্রদান করা হয়। বিশেষত পাখা পুলারের কাজে এবং ভূমি রেকর্ড ও জরিপকালীন সময়ে সংশ্লিষ্ট অফিস বা প্রতিষ্ঠান ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীর পদে মৌসুমী নিয়োগ প্রদান করিয়া থাকে।
(ট) ল্যাটারাল এন্টির মাধ্যমে নিয়োগ
বি,সি,এস ক্যাডারসমূহের মধ্যে যে সমস্ত ক্যাডার ল্যাটারাল এন্টির বিধান রহিয়াছে, উক্ত ক্যাডারসমূহের মধ্যবর্তী পদসমূহে নিয়োগ প্রদান করা যায়। পার্সোনাল ম্যানুয়াল ৭.০১ ও ৭.০২।
(ঠ) কনটিনজেন্ট এবং ওয়ার্ক চার্জড হিসাবে নিয়োগ
বর্তমানে কনটিনজেন্ট বা ওয়ার্ক চার্জ পদে নিয়োগ নিষিদ্ধ।