স্বামী বিদেশ থাকা মহিলাদের জন্য ১২% মুনাফার পাওয়া যায় এমণ স্কীমের জন্য সঞ্চয় পরিদপ্তরের ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ড। এটি ভাল মুনাফা ছাড়াও বিদেশে স্বামী মারা গেলে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ক্ষতিপূরণ পাওয়া যাবে। চাইলে স্বামী বিদেশে অবস্থান করা বাংলাদেশী ব্যাংকের নিকট হতেও এ সঞ্চয় স্কীম গ্রহণ করতে পারে। এছাড়া স্ত্রী চাইলে পরিবার সঞ্চয়পত্রও করে নিতে পারেন এতে ১১.৫২% মুনাফা। তাই ব্যাংকগুলো ৫-৬% সুদের ডিপিএস না করে সরকারি প্রতিষ্ঠানের উপরস্থ দুটি সঞ্চয় স্কিম গ্রহণ করতে পারেন।
ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ড চালু হয় ১৯৮১ সালে, এটি শুধুমাত্র বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশী নাগরিকদের জন্য প্রযোজ্য। বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশী ওয়েজ আর্নার নিজ নামে অথবা; আবেদনপত্রে উল্লিখিত তার মনোনীত ব্যক্তির নামে অথবা প্রেরিত বৈদেশিক মুদ্রার বেনিফিসিয়ারী এর নামে এ বন্ড ক্রয় করা যায়; বিদেশের ব্যাংক শাখা হতেও ক্রয় করা যায়। বিদেশী আয়ের টাকায় ডিপিএস না করে ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ড ক্রয় করে লাভবান হতে পারেন। এতে বিমার মত ৫ লক্ষ টাকা ঝুঁকি সুবিধা বিদ্যামন রয়েছে কোন অতিরিক্ত বিনিয়োগ ছাড়াই।
মেয়াদ:
০৫ বছর মেয়াদী স্কিম।
বন্ডের মূল্যমান:
২৫,০০০ টাকা, ৫০,০০০ টাকা, ১,০০,০০০ টকা, ২,০০,০০০ টাকা, ৫,০০,০০০ টাকা, ১০,০০,০০০ টাকা মাত্র।
মুনাফা:
মেয়াদান্তে মুনাফা ১২%। বন্ড ধারক ১২% হারে প্রত্যেক বছরে ষান্মাসিক (ছয় মাসে একবার) ভিত্তিতে মুনাফা উত্তোলন করতে পারবেন। তবে ষান্মাসিক ভিত্তিতে মুনাফা উত্তোলন না হলে, মেয়াদপূর্তিতে মূল অংকের সাথে ষান্মাসিকভিত্তিতে ১২% চক্রবৃদ্ধি হারে উক্ত মুনাফা প্রদেয় হবে। অর্থাৎ মুনাফা উত্তোলন না করিলে মুনাফার উপর মুনাফা পাওয়া যাবে।
মৃত্যু ঝুঁকি সুবিধা:
ক) একজন ওয়েজ আর্নার প্রাথমিকভাবে ন্যূনতম টাকা ২৫,০০০/- বা ততোধিক মূল্যের বন্ড ক্রয় করলে নির্ধারিত হারে মৃত্যু ঝঁুকি সুবিধা পাবে। তবে উক্ত ক্রয় সংশ্লিষ্ট ওয়েজ আর্নারের মৃত্যুর পূর্বেই সংঘটিত হতে হবে।
খ) ওয়েজ আর্নারের মৃত্যুর পূর্বেই যদি বন্ডের মেয়াদপূর্ণ হয়, তা হলে মৃত্যু ঝুঁকি সুবিধা প্রাপ্য হবে না;
গ) বন্ড ধারকের মৃত্যুর ৬ মাসের মধ্যে মৃত্যু সুবিধা দাবী করতে হবে। এরপর মৃত্যু ঝুঁকি সুবিধার বিপরীতে কোন দাবী গ্রহণযোগ্য হবে না।
ঘ) মৃত্যু ঝুঁকি সুবিধার পরিমাণ ৫,০০,০০০ টাকার অধিক হবে না;
ঙ) ওয়েজ আর্নারের বয়স ৫৫ বছরের অধিক হলে মৃত্যু ঝুঁকি সুবিধা প্রাপ্য হবে না। সি.আই.পি সুবিধা: এ বন্ডে টাকা ৮০ (আশি) মিলিয়ন বা ততোধিক বিনিয়োগকারী সি.আই.পি সুবিধা প্রাপ্য হবেন; তবে নগদায়নের কারণে বিনিয়োগ টাকা ৮০ (আশি) মিলিয়ন এর নীচে নেমে যায় এবং প্রয়োজনীয় বিনিয়োগের মাধ্যমে ৩ মাসের মধ্যে তিনি উক্ত সীমা অর্জন করতে ব্যর্থ হন, তা হলে তিনি সি.আইপি. সুবিধা হতে বঞ্চিত হবেন।
কারা ক্রয় করতে পারবেন?
- বিদেশে কর্মরত বাংলাদেশী ওয়েজ আর্নার নিজ নামে অথবা; আবেদনপত্রে উল্লিখিত তার মনোনীত ব্যক্তির নামে অথবা প্রেরিত বৈদেশিক মুদ্রার বেনিফিসিয়ারী এর নামে এ বন্ড ক্রয় করা যায়;
- বিদেশে লিয়েনে কর্মরত বাংলাদেশী সরকারী, সংবিধিবদ্ধ সংস্থা, স্বায়ত্তশাসিত ও আধা স্বায়ত্তশাসিত সংস্থার কর্মকর্তা ও কর্মচারীবৃন্দ;
- বিদেশে বাংলাদেশী দূতাবাসে কর্মরত বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তা ও কর্মচারী, যারা বৈদেশিক মুদ্রায় বেতন ভাতাদি পেয়ে থাকেন, তারা এ বন্ড ক্রয় করতে পারবেন।
কোথায় পাওয়া যাবে?
বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক তফসিলী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়সহ ঐ সকল শাখা, যারা ওয়েজ আর্নারদের বৈদেশকি মুদ্রা হিসাব পরিচালনা করে থাকেন; বিদেশস্থ বাংলাদেশী ব্যাংকসমূহ ও তাদের প্রতিনিধিত্বকারী ব্যাংক সমূহ হতেও ক্রয় করা যাবে।
ক্রয় পদ্ধতি:
বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক তফসীলি ব্যাংকের অথরাইজড ডিলার (এ.ডি) শাখা সমূহে এবং বাংলাদেশী কোন ব্যাংকের বিদেশস্থ শাখা অথবা তাদের আওতাধীন বিদেশে কার্যরত এক্সচেঞ্চ কোাম্পানিসমূহে বন্ড ক্রয়ের আবেদনপত্র ডি.বি-১ ফরম পূরণ ও স্বাক্ষর করে বন্ড ক্রয়ের আবেদন করা যায়। ওয়েজ আর্নারের আবেদনের সূত্রে অনুমতি প্রাপ্ত হয়ে, ব্যাংক ওয়েজ আর্নার কর্তৃক পরিচালিত বৈদেশিক মুদ্রা হিসাবে জমাকৃত অর্থ বিকলন করে বন্ড ইস্যু করতে পারে; কোন বেনিফিশিয়ারী ওয়েজ আর্নারের নিকট হতে প্রাপ্ত রেমিট্যান্সের বিপরীতে দালিলিক প্রমানাদি উপস্থাপন সাপেক্ষে বন্ড ক্রয় করতে পারেন।
মূল্য পরিশোধ পদ্ধতি:
নগদ বৈদেশিক মুদ্রুায় অথবা রেমিট্যান্স হিসেবে প্রাপ্ত বেদেশিক মুদ্রা হতে রুপান্তরিত বাংলাদেশি টাকায়। ওয়েজ আর্নার কর্তৃক বিদেশ হতে প্রেরিত এবং তাঁর এফ.সি একাউন্ট এ জমাকৃত অর্থ দ্বারা অথবা; বৈদেশিক মুদ্রার চেক, ড্রাফট বা প্রেরিত বৈদেশিক মুদ্রার বিপরীতে টাকা ড্রাফট এর মাধ্যমে;
বিদেশ হতে প্রাপ্ত রেমিটেন্স দিয়ে ডিপিএস বা ব্যাংক সঞ্চয় না করে ওয়েজ আর্নার ডেভেলপমেন্ট বন্ড ক্রয় করাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।
Qatar wage earner development bond kotei paoa jabei
কাতারে বাংলাদেশের যে কোন তফসীলি ব্যাংক হতে পাওয়া যাবে।