কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারীর নিজে কোন জটিল রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা করালে জটিল ও ব্যয়বহুল রোগের দেশে বিদেশে চিকিৎসা সাহায্য তহবিল হতে চাকরি জীবনে এক বা একাধিকবারে সর্বোচ্চ ২ (দুই) লাখ টাকা অনুদান প্রদান করা হয়– BKKB চিকিৎসা অনুদান
চিকিৎসা অনুদানের জন্য কি কি রোগ অন্তর্ভূক্ত? – ক্যান্সার, হ্নদরোগ, কিডনি-ব্যাধি, হেপাটাইটিস, ডায়াবেটিস-মেলিটাস, পক্ষাঘাত, বক্ষব্যাধি, কৃত্রিম অঙ্গপ্রত্যঙ্গ-সংযোজন সংক্রান্ত রোগ ও দুর্ঘটনায় মারাত্নকভাবে আহত হওয়া এবং এ সংক্রান্ত মেডিকেল বোর্ড কর্তৃক জটিল ও ব্যয়বহুল রোগ বলে চিহ্নিত যে কোন রোগও এর অর্ন্তভূক্ত হবে।
বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড আইন, ২০০৪ কিছুটা পরিবর্তন করে বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড (সংশোধন) আইন, ২০১৮ প্রণীত হয়। তদুপরি আইনটি যুগপোযোগীকরণসহ বর্তমান বাস্তবতায় কর্মচারীগণের সার্বিক কল্যাণার্থে আরো কিছু ধারা-উপধারা পরিবর্তন, পরিমার্জন ও সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়, যেমন ধারা-৫ এ উল্লিখিত বোর্ডের গঠন পরিবর্তন/পরিবর্ধন, ধারা-৬ এ জটিল ও ব্যয়বহুল রোগের চিকিৎসা অনুদান প্রদানের ক্ষেত্রে কর্মরত অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারী এবং স্পাউস (স্বামী/স্ত্রী) ও নির্ভরশীল ছেলে-মেয়ে-কে অন্তর্ভুক্তকরণ, সরকারি কর্মচারীগণের অধিকতর কল্যাণ সাধনের জন্য বোর্ডের অধীন একটি স্বতন্ত্র বীমা কোম্পানী গঠণের বিষয়টি অন্তর্ভুক্তকরণ ইত্যাদি সংশোধন হতে যাচ্ছে।
কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড থেকে গঠিত কমিটি কর্তৃক বিদ্যমান আইনটি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে আইনের একটি খসড়া প্রস্তাব প্রণয়ন করা হয়। উক্ত খসড়া সংশোধনী প্রস্তাবটি গত ১৭/04/2023 তারিখে অনুষ্ঠিত ৩৬ তম বোর্ড সভায় উপস্থাপন করা হলে পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পর্যালোচনাপূর্বক নিম্নরূপ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়: “সিদ্ধান্ত: বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড আইন, ২০০৪ সংশোধনের বিষয়ে প্রণীত খসড়া পরীক্ষান্তে নীতিগত অনুমোদন প্রদান করা হয়। প্রস্তাবিত খসড়াটি আইনে পরিণত করার লক্ষ্যে পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রেরণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়” (৩৬তম বোর্ড সভার কার্যবিবরণীর আলোচ্য বিষয়-৩)”। বোর্ড সভার উপরোক্ত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড থেকে বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড আইনের খসড়া সংশোধনী প্রস্তাব সূত্রোক্ত পত্রের মাধ্যমে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়। উল্লেখ্য, প্রস্তাবিত বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড আইন সংশোধনের বিষয়টি কেন্দ্রীয় ও মাঠ পর্যায়ের সকল সরকারি কর্মকর্তা/কর্মচারীদের জন্য প্রযোজ্য বিধায় Rules of Business, 1996 (Revised up to April 2017 ) – এর 31A, অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট সকল মন্ত্রণালয়/বিভাগ তথা সকল স্টেকহোল্ডারদের মতামত প্রয়োজন।
আবেদনের শর্তাবলী কি? নির্ধারিত আবেদন ফরম নং ০৮ পূরণ করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রাদি প্রতিস্বাক্ষর করে সংযুক্ত করে মহাপরিচালক, বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড, প্রধান কার্যালয়, ১ম ১২তলা সরকারি অফিস ভবন, সেগুনবাগিচা, ঢাকা বরাবরে একটি ফরওয়ার্ডিং চিঠির মাধ্যমে প্রেরণ করতে হয়। কর্মরত সরকারি কর্মকর্তা, কর্মচারীর নিজের চিকিৎসার জন্য চাকরি জীবনে এক বা একাধিকবারে সর্বোচ্চ ২ (দুই) লাখ টাকা আর্থিক অনুদান প্রদান করা হয়। ফরমের নির্ধারিত স্থানে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার কর্তৃক প্রত্যয়ন এবং মৃত কর্মকর্তা কর্মচারীর অফিস কর্তৃপক্ষের স্বাক্ষরসহ নামযুক্ত সিল প্রদান করা হয়।জটিল ও ব্যয়বহুল রোগঃ হার্ট ষ্ট্রোক, ব্রেইন ষ্ট্রোক, বাইপাস সার্জারী, হার্টে রিং পড়ানো, ক্যান্সার, কিডনী ডায়ালাইসিস, কিডনী ট্রান্সফার, মারাত্মক দূর্ঘটনাজনিত কারণে অঙ্গহানি আবেদন করা যায়।
বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড (সংশোধন) আইন ২০২৩ শিরোনামে প্রস্তাবিত খসড়া সংশোধনী আইন এবং বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডের বিদ্যমান আইন ও প্রস্তাবিত আইনের খসড়া সংশোধনী ২০২৩
চলতি বছরই চূড়ান্ত হতে পারে সংশোধনীটি। যদি চূড়ান্ত হয় তবে জটিল ও ব্যয় বহুল রোগের ক্ষেত্রে পরিবারের চিকিৎসা অনুদানের জন্যও আবেদন করা যাবে।
Caption: BKKB Rules Edition PDF Download
জটিল রোগের আবেদনের প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টস । চিকিৎসা অনুদানের জন্য আবেদন পত্রের সাথে কি কি কাগজপত্র দিতে হয়?
- হাসপাতালে ভর্তি হয়ে থাকলে মূল ছাড়পত্র (অফিস কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রতিস্বাক্ষরিত);
- চিকিৎসা সংক্রান্ত বিল ভাউচার এর মূলকপি (অফিস কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রতিস্বাক্ষরিত);
- চিকিৎসা সংক্রান্ত ব্যবস্থাপত্র ও রিপোর্ট (অফিস কর্তৃপক্ষ কর্তৃক প্রতিস্বাক্ষরিত);
- চিকিৎসা সংক্রান্ত খরচের হিসাববিবরণী (কর্মচারীর স্বাক্ষর সহ);
- জাতীয় বেতনস্কেল, ২০১৫-এ বেতননির্ধারণ (Payfixation) ফরমের সত্যায়িত ফটোকপি;
- নূন্যতম জেলা পর্যায়ে কর্মকর্তা কর্তৃক প্রত্যয়ন ও অগ্রায়ন হতে হবে।
জটিল রোগের চিকিৎসা অনুদানের আবেদন কি অনলাইনে করা যায়?
না। অফলাইনে হার্ড কপিতে আবেদন করতে হয়। আবেদনসমূহ প্রাপ্তির পর সফটওয়্যারে এন্ট্রি করে তালিকা তৈরি এবং SMS এর মাধ্যমে আবেদনের ডিজিটাল ডায়েরী নম্বর, তারিখ ও আবেদনে কোন ত্রুটি থাকলে তা জানিয়ে দেয়া হয়। বাছাই কমিটিতে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দ্বারা রোগের সঠিকতা নিরুপন, কাগজপত্রসমূহ পরীক্ষা নিরীক্ষা এবং অর্থ সুপারিশ করা হয়। পরবর্তীতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মহোদয়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ব্যবস্থাপনা কমিটির সভায় চূড়ান্ত অর্থ মঞ্জুরি প্রদান করা হয় এবং SMS এর মাধ্যমে মঞ্জুরিকৃত অর্থের পরিমাণ জানিয়ে দেয়া হয়। সেবাপ্রার্থীর নামে মঞ্জুরিকৃত অর্থ সেবাপ্রার্থীর ব্যাংক হিসাবে EFT এর মাধ্যমে পৌঁছে দেয়া হয় এবং অগ্রায়নপত্রের মাধ্যমে এডভাইস লেটার জনতা ব্যংকে প্রেরণ করা হয়। এ সংক্রান্ত সকল তথ্য বোর্ডের ওয়েবসাইট (www.bkkb.gov.bd) থেকে জানা যায়।