বর্তমানে অনেকেই বিভিন্ন কারণেই TIN সার্টিফিকেট নিয়ে থাকেন। কেউ প্রথমবার সঞ্চয়পত্র কিনতে, কেউ বা ব্যাংক লোন নিতে, কেউ বা ভিসা কার্ড সংগ্রহ করতে, আবার কেউ জমি কিনতে, এদের অনেকেরেই আয় করযোগ্য সীমা অতিক্রম করে না। তাই সবারই একটা সাধারণ প্রশ্ন থাকে, TIN থাকলেই কি রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক কিনা?
এ প্রশ্নের জবাবে বলা যায় যে, আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ৭৫ ধারায় বলা হয়েছে, কাদের জন্য রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক। আপনি যদি সেই বাধ্যতামূলক তালিকার অন্তর্ভুক্ত হন তো আপনাকে ৩০শে নভেম্বরের মধ্যে রিটার্ন দাখিল করতে হবে।
আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ৭৫(২) ধারা অনুযায়ী নিম্নোক্ত ব্যক্তিদের আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক নয়।
(ঘ) আয় বছরে করদাতার আয় কর অব্যাহতি প্রাপ্ত বা হ্রাসকৃত হারে করযোগ্য হয়ে থাকে;
যাদের জন্য রিটার্ণ দাখিল বাধ্যতামূলক
আয়কর আইন অনুযায়ী যাদের করযোগ্য আয় রয়েছে অথবা গত তিন করবর্ষে যারা রিটার্ন দাখিল করেছেন তাদের জন্য রিটার্ন দাখিল করা বাধ্যতামূলক। আয়কর অধ্যাদেশ, ১৯৮৪ এর ৭৫(১) ধারা অনুযায়ী নিম্নোক্ত ব্যক্তিদের আয়কর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
ক) যদি আয় বছরে করদাতার মোট আয় করমুক্ত সীমা অতিক্রম করে
খ) আয় বছরেরর পূর্ববর্তী তিন বছরের যে কোন বছর করদাতার কর নির্ধারণ হয়ে থাকে তার আয় করযোগ্য হয়ে থাকে
গ) করদাতা যদি-
(১) কোন কোম্পানি;
(২) এনজিও এ্যাফেয়ার্স ব্যুরোতে নিবন্ধিত কোন এনজিও;
(৩) কোন সমবায় সমিতি;
(৪) কোন ফার্ম;
(৫) কোন ব্যক্তি সংঘ;
(৬) কোন কোম্পানির শেয়ারহোল্ডার পরিচালক বা শেয়ারহোল্ডার বসঢ়ষড়ুবব হন;
(৭) কোন ফার্মের অংশীদার হন;
(৮) সরকার অথবা সরকারের কোন কর্র্তৃপক্ষ, কর্পোরেশন, সত্তা বা ইউনিটের বা প্রচলিত কোন আইন আদেশ বা দলিলের মাধ্যমে গঠিত কোন কর্তৃপক্ষ, কর্পোরেশন, সত্তা বা ইউনিটের কর্মচারী হয়ে আয় বছরের যে কোন সময় ১৬,০০০ টাকা বা তদূর্ধ্ব পরিমাণ মূল বেতন আহরণ করে থাকেন;
(৯) কোন ব্যবসায় বা পেশায় নির্বাহী বা ব্যবস্থাপনা পদধারী ব্যক্তিবর্গ;
(১০) মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটির লাইসেন্সপ্রাপ্ত মাইক্রো ক্রেডিট প্রতিষ্ঠান;
(১১) বাংলাদেশে স্থায়ী স্থাপনা আছে এমন অনিবাসী ব্যক্তি।
(ঘ) আয় বছরে করদাতার আয় কর অব্যাহতি প্রাপ্ত বা হ্রাসকৃত হারে করযোগ্য হয়ে থাকে;
(ঙ) যদি আয় বছরের কোন এক সময়ে নিম্নবর্ণিত শর্তের যে কোনটি করদাতার জন্য প্রযোজ্য হয়-
(১) মোটর গাড়ির মালিকানা থাকা (মোটর গাড়ি বলতে জীপ বা মাইক্রোবাসকেও বুঝাবে);
(২) মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১ এর অধীন নিবন্ধিত কোন ক্লাবের সদস্যপদ থাকা;
(৩) কোন সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদ হতে ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ করে কোন ব্যবসা বা পেশা পরিচালনা;
(৪) চিকিৎসক, দন্ত চিকিৎসক, আইনজীবী, চার্টার্ড একাউন্টেন্ট, কস্ট এন্ড ম্যানেজমেন্ট একাউন্টেন্ট, প্রকৌশলী, স্থপতি অথবা সার্ভেয়ার হিসেবে বা সমজাতীয় পেশাজীবী হিসেবে কোন স্বীকৃত পেশাজীবী সংস্থার নিবন্ধন থাকা;
(৫) আয়কর পেশাজীবী হিসেবে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের নিবন্ধন থাকা;
(৬) কোন বণিক বা শিল্প বিষয়ক চেম্বার বা ব্যবসায়িক সংঘ বা সংস্থার সদস্যপদ থাকা;
(৭) কোন পৌরসভা বা সিটি করপোরেশনর কোন পদে বা সংসদ সদস্য পদে প্রার্থী হওয়া;
(৮) কোন সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্বশাাসিত সংস্থা বা কোন স্থানীয় সরকারের কোন টেন্ডারে অংশগ্রহণ করা;
(৯) কোন কোম্পানির বা কোন গ্রুপ অব কোম্পানিজের পরিচালনা পর্ষদে থাকা;
(১০) রাইড শেয়ারিং ব্যবস্থায় মোটরযান প্রদান করা;
(১১) যদি কারও ১৮৪ এ ধারা অনুযায়ী যে ৩৩টি খাত বলা হয়েছে তার কোনটির একটির ক্ষেত্রে টিআইএন (TIN) দরকার হয়। তবে ২ টি ক্ষেত্রকে এই করবর্ষের জন্য অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে যা পরবর্তী স্তবকে উল্লেখ করা হয়েছে।
সাধারণভাবে, কোন ব্যক্তি-করদাতার আয় যদি বছরে ৩,০০,০০০ টাকার বেশি হয় তবে তাকে রিটার্ন দাখিল করতে হবে। মহিলা এবং ৬৫ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সের করদাতার আয় যদি বছরে ৩,৫০,০০০ টাকার বেশি, প্রতিবন্ধী করদাতার আয় যদি বছরে ৪,৫০,০০০ টাকার বেশি এবং গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা করদাতার আয় যদি বছরে ৪,৭৫,০০০ টাকার বেশি হয় তাহলে ঐ করদাতাকে আয়কর রিটার্ন দাখিল করতে হবে। এছাড়াও কোনো প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পিতামাতা বা আইনানুগ অভিভাবকের প্রত্যেক সন্তান/ পোষ্যেও জন্য করমুক্ত আয়ের সীমা ৫০,০০০/- টাকা বেশী হবে; তবে প্রতিবন্ধী ব্যক্তির পিতা ও মাতা উভয়েই করদাতা হন তাহলে এই সুবিধা যে কোন একজন নিতে পারবেন।