বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি । উচ্চতর গ্রেড

উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্যতা নিয়ে নতুন রায় ২০২৫ । ইতিমধ্যে টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্তরাও ২টি উচ্চতর গ্রেড পাবেন?

সরকারি চাকরিজীবীদের মধ্যে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্তরাও উচ্চতর গ্রেড পাবেন বলে রায় দিয়েছেন আপিল বিভাগ। ৩০ এপ্রিল ২০২৫ সকালে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ রায় দেন। এর ফলে প্রায় ১৫ লাখ সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই সুবিধা পাবেন-উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্যতা নিয়ে নতুন রায় ২০২৫ 

সরকারি কর্মচারীগণ টাইম স্কেল সিলেকশন পেলেও উচ্চতর গ্রেড পাবেন? হ্যাঁ। এখন আপীল বিভাগের রায় হওয়ার কারণে পাবেন। সরকারি চাকরির ক্ষেত্রে টাইম স্কেল এবং সিলেকশন গ্রেড ছিল পূর্ববর্তী বেতন কাঠামোতে প্রচলিত দুটি ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে কর্মচারীরা নির্দিষ্ট সময় অন্তর বা শর্ত পূরণ সাপেক্ষে উচ্চতর বেতন গ্রেড পেতেন পদোন্নতি না হোক। তবে, জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ কার্যকর হওয়ার পর থেকে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড প্রথা বাতিল করা হয়েছে। এর পরিবর্তে, একই পদে কর্মরত সরকারি কর্মচারীদের জন্য আর্থিক সুবিধা নিশ্চিত করতে নতুন নিয়ম চালু করা হয়েছে। নতুন নিয়ম অনুযায়ী (জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ এর অনুচ্ছেদ ৭(১) অনুযায়ী): কোনো কর্মচারী একই পদে ১০ বছর সন্তোষজনকভাবে চাকরি পূর্ণ করলে এবং এর মধ্যে কোনো পদোন্নতি না পেয়ে থাকলে, তিনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে পরবর্তী উচ্চতর গ্রেড (১১তম গ্রেড) প্রাপ্ত হবেন। একইভাবে, প্রথম উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির পর আরও ৬ বছর অর্থাৎ মোট ১৬ বছর একই পদে সন্তোষজনকভাবে চাকরি পূর্ণ করলে এবং এর মধ্যে কোনো পদোন্নতি না পেয়ে থাকলে, তিনি দ্বিতীয় উচ্চতর গ্রেড (১০ম গ্রেড বা প্রযোজ্য ক্ষেত্রে পরবর্তী গ্রেড) প্রাপ্ত হবেন। এই বিধিটি-ই কেবল অবৈধ ঘোষনা করা হয়েছে।

পূর্বে কি সিলেকশন গ্রেড পেতেন? হ্যাঁ। যারা পূর্বের নিয়মে টাইম স্কেল বা সিলেকশন গ্রেড পেয়েছিলেন, তারা সেই সময়ে অবশ্যই উচ্চতর গ্রেড লাভ করেছিলেন। বর্তমান নিয়মে (২০১৫ সালের বেতন স্কেল অনুযায়ী), যদিও টাইম স্কেল বা সিলেকশন গ্রেড নামে কোনো সুবিধা নেই, এর পরিবর্তে নির্দিষ্ট মেয়াদ (১০ বছর ও ১৬ বছর) পূর্তিতে স্বয়ংক্রিয়ভাবে উচ্চতর গ্রেড পাওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। তাই এই সুবিধা যারা পান, তারাও উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্ত হন। সংক্ষেপে, টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড প্রথা বাতিল হলেও, নির্দিষ্ট সময় পর উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির সুযোগ বর্তমানে স্বয়ংক্রিয় উচ্চতর গ্রেড প্রাপ্তির মাধ্যমে বহাল আছে। হ্যাঁ, টাইম স্কেল বা সিলেকশন গ্রেড প্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীরা উচ্চতর গ্রেড পাবেন। জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ কার্যকর হওয়ার আগে, সরকারি কর্মচারীদের জন্য নির্দিষ্ট সময় পর পর (যেমন ৮, ১২, ১৫ বছর চাকরি পূর্তিতে) পদোন্নতি না পেলেও আর্থিক সুবিধা হিসেবে টাইম স্কেল এবং সিলেকশন গ্রেড (সাধারণত ৪ বা ৫ বছর পূর্তিতে প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) দেওয়ার ব্যবস্থা ছিল। এই সুবিধা পাওয়ার অর্থই হলো তৎকালীন বেতন কাঠামো অনুযায়ী উচ্চতর বেতন গ্রেডে বেতন প্রাপ্তি। জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫: এই বেতন স্কেলে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড প্রথা বাতিল করে দেওয়া হয় (১৫ ডিসেম্বর ২০১৫ থেকে কার্যকর)। এর পরিবর্তে একই পদে পদোন্নতি ছাড়া ১০ বছর চাকরি পূর্তিতে ১১তম বছরে একটি এবং ১৬ বছর পূর্তিতে ১৭তম বছরে আরও একটি স্বয়ংক্রিয় উচ্চতর গ্রেড দেওয়ার নিয়ম চালু করা হয়।

এখন কি তাহলে সিলেকশন গ্রেড ও টাইমস্কেল প্রাপ্তদের কপাল খুলছে? সাম্প্রতিক আদালতের রায় (এপ্রিল ২০২৫): সম্প্রতি বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ একটি গুরুত্বপূর্ণ রায় দিয়েছেন। এই রায় অনুযায়ী, যে সকল সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারী জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ কার্যকর হওয়ার আগে একটি টাইম স্কেল বা সিলেকশন গ্রেড পেয়েছিলেন, তারাও বর্তমান বেতন স্কেলের অধীনে পরবর্তী উচ্চতর গ্রেড (সাধারণত ১৬ বছর পূর্তিতে প্রাপ্য দ্বিতীয় উচ্চতর গ্রেড) পাওয়ার অধিকারী হবেন। পূর্বে একটি সুবিধা পাওয়ার কারণে তারা নতুন বেতন স্কেলের স্বয়ংক্রিয় উচ্চতর গ্রেড সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবেন না। এই রায়ের ফলে প্রায় ১৫ লক্ষ সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারী উপকৃত হবেন বলে সংবাদ মাধ্যম সূত্রে জানা গেছে। সুতরাং, যারা আগে টাইম স্কেল বা সিলেকশন গ্রেড পেয়েছেন, তারা সেই সময়ে উচ্চতর গ্রেডের আর্থিক সুবিধা লাভ করেছেন এবং সাম্প্রতিক আদালতের রায়ের আলোকে তারা বর্তমান বেতন স্কেল অনুযায়ী পরবর্তী উচ্চতর গ্রেড পাওয়ারও অধিকারী হবেন।

টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড ২০০৯

উচ্চতর গ্রেড প্রজ্ঞাপন ২০২৫ । স্বয়ংক্রিয় উচ্চতর গ্রেড নিয়ম কি?

  • স্বয়ংক্রিয় উচ্চতর গ্রেড মানে হল, একই পদে কোনো সরকারি কর্মচারী ১০ বছর কাজ করার পর পদোন্নতি না পেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে দুটি উচ্চতর গ্রেড পাবেন। প্রথমটি পাবে ১০ বছর চাকরি পূর্তির পর, এবং দ্বিতীয়টি পাবে ১৬ বছর পর।
  • টাইম স্কেল/সিলেকশন গ্রেড: যারা আগে টাইম স্কেল বা সিলেকশন গ্রেড পেয়েছেন, তারাও এই সুবিধা পাবেন।
  • দুটো উচ্চতর গ্রেড: যারা আগে কোনো ধরনের উচ্চতর স্কেল বা সিলেকশন গ্রেড পাননি, তারা ১০ বছর চাকরি পূর্তির পর একটি উচ্চতর গ্রেড পাবেন। এরপর যদি ৬ বছর পদোন্নতি না হয়, তাহলে ৭ম বছরে আরেকটি উচ্চতর গ্রেড পাবেন।
  • চাকরির শর্ত: এই সুবিধা পাওয়ার জন্য চাকরিরত অবস্থায় সন্তোষজনক কর্মের প্রমাণ থাকতে হবে।
  • বেতনস্কেল: এই সুবিধা বেতন স্কেলের ৪র্থ গ্রেড পর্যন্ত প্রযোজ্য।
  • অন্যান্য নিয়ম: এর আগে কোনো পরিপত্রে বলা হয়েছিল যে, যদি কোনো কর্মচারী দুই বা তার বেশি টাইম স্কেল বা সিলেকশন গ্রেড পেয়ে থাকেন, তাহলে তিনি নতুন স্কেলে উচ্চতর গ্রেড পাবেন না। কিন্তু আপিল বিভাগের রায়ে সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত চাকরিজীবীদের জন্য উচ্চতর গ্রেড পাওয়ার সুযোগ নিশ্চিত করা হয়েছে।

টাইমস্কেল সিলেকশন গ্রেড কি বকেয়া মঞ্জুর হয়?

হ্যাঁ।  চাকরি (বেতন ও ভাতাদি) আদেশ ২০১৫ গেজেট প্রকাশের তারিখ (অর্থাৎ ১৫ ডিসেম্বর, ২০১৫) হইতে সিলেকশন গ্রেড স্কেল ও উচ্চতর স্কেল (টাইমস্কেল) বা কোন স্কেলের সর্বোচ্চ সীমায় পৌছাইবার ১ (এক) বৎসর পর পরবর্তী উচ্চতর বা টাইম স্কেল প্রদান সংক্রান্ত বিধানাবলী বিলুপ্ত করা হয়েছে। বকেয়া টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড মঞ্জুরী এখনও হচ্ছে। ১৫ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখের পূর্ব পর্যন্ত বকেয়া সিলেকশন গ্রেড ও উচ্চতর গ্রেড প্রদান করা হচ্ছে এখনও।

  • মঞ্জুরকৃত এ রকম একটি আদেশ এর কপি প্রদান করা হলো: ডাউনলোড
  • বকেয়া টাইমস্কেল ও সিলেকশন গ্রেড মঞ্জুরী সংক্রান্ত আদেশের কপি: ডাউনলোড

Alamin Mia

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ৮ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে বিস্তারিত জানতে admin@bdservicerules.info ঠিকানায় মেইল করতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *