(১) এই বিধি সরকারী কর্মচারী (মুক্তিযোদ্ধাদের জ্যেষ্ঠতা) বিধিমালা, ১৯৭৯ বলিয়া অভিহিত হইবে।
(২) আপাতত: বলবৎসরকারী কর্মচারীদের চাকুরীর অন্যাণ্য শর্তাবলীতে অথবা জ্যেষ্ঠতা সংক্রান্ত কোন আইন, আদেশ বা নির্দেশে অন্য কোন কিছু উল্লেখ থাকা সত্ত্বে এই বিধিমালা কার্যকর হইবে।
(৩) এই বিধিমালার কোন বিষয় বা প্রসঙ্গে যদি কোন কিছু পরিপন্থী না থাকে তাহা হইলে মুক্তিযোদ্ধা বলিতে নিম্নোক্ত অনেকের মধ্যে সেই ব্যক্তিগণকে বুঝাইবে যাহারা ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ তারিখে তাদানীন্তন পাকিস্তান সরকার, পূর্ব /পশ্চিম পাকিস্তান সরকারের চাকুরীতে নিয়োজিত থাকিয়া স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণ করিয়াছেন:
(ক) যাহারা মুজিবনগরস্থ বাংলাদেশ সরকারের নিকট আনুষ্ঠানিকভাবে রিপোর্ট করিয়াছিলেন এবং বাংলাদেশ সরকার যাহাদিগকে গ্রহণ করিয়াছিলেন।
(খ) যাহারা বাংলাদেশের ভিতরে বা বাহিরে থাকিয়া স্বাধীনতা সংগ্রামে অংশগ্রহণের উদ্দেশ্যে ৩রা ডিসেম্বর, ১৯৭১ সালের পূর্ববর্তী তিন মাসের কম নয় এমন সময়ের জন্য দখলদার বাহিনীর অধীনে চাকুরী করা হইতে বিরত ছিলেন এবং দখলদার বাহিনীর নিকট হইতে কোন বেতন ভাতাদি গ্রহণ করেন নাই এবং যাহারা অন্য কোন বিদেশী সরকারী বা ঐ বিদেশী সরকারের অধীনস্ত কোন প্রতিষ্ঠানের অধীনে চাকুরী করেন নাই কিন্তু কোন কারণে বাংলাদেশ সরকারের নিকট আনুষ্ঠানিকভাবে রিপোর্ট করেন নাই।
(গ) যাহারা বিদেশ হইতে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি আনুগত্যপ্রকাশ করিয়াছিলেন এবং যদ্বারা তাহারা ৩১ শে অক্টোবর ১৯৭১ সালের পূর্বে তদানীন্তন কেন্দ্রীয় অথবা প্রাদেশিক সরকারের চাকুরী পরিত্যাগ করিয়াছিলেন।
(ঘ) যাহারা স্বাধীনতা সংগ্রামের জন্য কাজ করিয়াছিলেন এবং ১৭ই এপ্রিল, ১৯৭১ সাল হইতে ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১ সাল পর্যন্ত মুবিনগরস্থ বাংলাদেশ সরকারের নির্দেশাবলী মানিয়া চলিয়াছিলেন কিন্তু বিদেশ হইতে কোন কৌশলগত কারণের জন্য এবং মুজিবনগরস্থ বাংলাদেশের নিকট হইতে সুস্পষ্ট ও রেকর্ডের নির্দেশের আওতায় খোলাখুলিভাবে বাংলাদেশ সরকারের প্রতি কোন অনুগত্য প্রকাশ করিতে পারেন নাই।
(ঙ) যাহারা দখলদার বাহিনীর কর্তৃক কারাদন্ডে দন্ডিত হইয়াছেন বা দখলদার বাহিনীর নিকট অন্তরীণ (Detention) ছিলেন এবং মুক্তি পাওয়ার পর ১৬ ডিসেম্বর, ১৯৭১ সালের পূর্বে চাকুরীতে তাহাদের পুর্নবহাল করা হয় নাই অথবা চাকুরী বরখাস্ত বা বহিস্কার করা হইয়াছিল অথবা যাহারা স্বেচ্ছায় যোগদান করেন নাই।
(৪) একজন মুক্তিযোদ্ধা কর্মচারী ২৫ শে মার্চ , ১৯৭১ সালে যে পদে বহাল ছিলেন অথবা যে চাকুরীতে নিয়োজিত ছিলেন সেই পদে বা চাকুরীতে দুই বৎসর ভূতাপেক্ষ জ্যেষ্ঠতা (Antedated Seniority) পদোন্নতি ও বেতন নির্ধারণে সুবিধা পাইবেন।
উদাহরণ: (ক) ১৯৬০ সালে নিয়োগপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা কর্মচারীকে ১৯৫৮ সালে নিয়োগপ্রাপ্ত বলিয়া ধরা হইবে এবং ১৯৫৮ সালের স্বাভাবিক নিয়োগপ্রাপ্তদের নিয়োগ তালিকার সর্বনিম্ন তাহাদের স্থান হইবে। ক্যাডার সার্ভিসের সদস্যদের ক্ষেত্রে যদি একই ব্যাচে দুই বা ততোধিক মুক্তিযোদ্ধা কর্মচারী থাকেন তাহা হইলে, তাহারা তাহাদের নিজস্ব ব্যাচের আপেক্ষিক জ্যেষ্ঠতা সংরক্ষণ করিবেন।
(খ) এই বিধির আওতায় তদানীন্তন পূর্ব পাকিস্তান সিভিল সার্ভিসের কোন মুক্তিযোদ্ধা সদস্য যদি তাহার দুই বৎসরের ভূতাপক্ষে জ্যেষ্ঠতা বা এন্টিডেটেড সিনিয়রিটির কারণে সিনিয়র স্কেলে পদোন্নতি পাইয়া থাকেন, তবে তিনি তাহার মূল ব্যাচের স্বাভাবিকভাবে পদোন্নতি প্রাপ্তদের হইতে দুই বৎসর জ্যেষ্ঠতা পাইবেন।
(৫) এই বিধির আওতায় একজন মুক্তিযোদ্ধাকে দুই বৎসরের ভূতাপেক্ষ জ্যেষ্ঠতা মঞ্জুর করার ফলে এই জ্যেষ্ঠতার আলোকে তাহার বেতন পুন:নির্ধারণ করা হইবে কিন্তু পুন:নির্ধারণের কালে তিনি বেতনের কোন বকেয়া প্রাপ্য হইবেন না।
(৬) শুধুমাত্র স্বাধীনতা সংগ্রামের অংশগ্রহণের পুরস্কার হিসাবে একজন মুক্তিযোদ্ধা কর্মচারীকে যদি এমন কোন পদোন্নতি প্রদান করা হয় যাহা আপেক্ষিক জ্যেষ্ঠতার বিচারে তিনি কখনো প্রাপ্য হইতেন না, সেই ক্ষেত্রে উক্ত মুক্তিযোদ্ধা এই বিধির আওতায় দুই বৎসরের ভূতাপেক্ষ জ্যেষ্ঠতা বা এন্টিডেটেড সিনিয়রিটির সুবিধা প্রাপ্য হইবেন না।
সরকারী কর্মচারী (মুক্তিযোদ্ধাদের জ্যেষ্ঠতা) বিধিমালা-১৯৭৯: ডাউনলোড