সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে ১১-২০ গ্রেড খুবই শোচনীয় অবস্থা পার করছে। প্রতিবছর মূল্যস্ফিতির হার গড়ে প্রায় ১০% যেখানে সরকারি কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধি পায় মাত্র ৫% ফলে প্রতিবছর প্রায় ৫% ঘাটতি থাকায় গত ৮ বছরে বড় ধরনের নেগেটিভে চলে গেছে কর্মচারীদের বেতন ভাতা-জাতীয় বেতন স্কেল ১০টি গ্রেড ২০২৪
নতুন পে স্কেল কেন? নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী ও বাড়িভাড়া মূল্যের সাথে বেতন ভাতা দিন দিন অসামঞ্জস্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বাজারের সাথে কোনভাবে ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীদের বেতন ভাতা দৌড়ে পেরে উঠছে না। তাছাড়া জীবন যাত্রার মান বৃদ্ধির সাথে সাথে মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণে অক্ষম হয়ে পড়ছে কর্মচারীদের আয়। তবে পদোন্নতি বৈষম্য, টাইমস্কেল, সিলেকশন গ্রেড বহাল, গ্রেড ব্যবধান কমালে অবশ্যই কর্মচারীদের মৌলিক চাহিদাগুলো মেটাতে ঋণের বোঝা মাথায় নিতে হতো না। ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীগণ যে পরিমান বেতন পান তাতে সংসার চালাতে রীতিমত হিমশিম খেতে হচ্ছে, প্রয়োজন মেটাতে তাদের ঋণের দারস্থ হতে হচ্ছে। পে স্কেলের সংস্কারের জন্য ২০১৭ সালে কমিটি গঠন করা হলেও তা আলোর মূখ দেখেনি। জাতীয় বেতন স্কেল সংস্কার করে ১০টি গ্রেডে আনয়ন করা হলে, গ্রেড ব্যবধানে সমতা আনয়ন করা হলে মোট কথা কর্মচারীদের দাবীগুলো পূরণ করা হলে তাদের ব্যাংক বা এনজিওগুলোর দারস্থ হয়ে ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে দুশ্চিন্তায় রাত পার করতে হতো না।
এখন মহার্ঘ ভাতা নাকি জাতীয় পে স্কেল? ৯ম পে-স্কেল প্রদানের পূর্ব পর্যন্ত দ্রব্য মূল্যের লাগামহীন উর্দ্ধোগতির বিষয় বিবেচনা করে ৫০% মহার্ঘ ভাতা অবিলম্বে দিতে হবে। প্রশাসন ক্যাডারে কর্মরত কর্মচারীদের ন্যায় ১১তম থেকে ২০তম গ্রেডের সরকারি কর্মচারিদের বিনা সুদে ৩০ লক্ষ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা গৃহনির্মাণ ঋণ দিতে হবে ও উন্নয়ন খাতের কর্মচারীদের যোগদানের দিন থেকে সিনিয়রিটি পাওয়ার জন্য করা রীট মামলার মহামান্য হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে জারীকৃত আদেশ অনতিবিলম্বে বাতিল করতে হবে। চাকুরীতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩২ বছর এবং অবসর গ্রহণের বয়সসীমা ৬২ বছর করতে হবে।
আগে কেন দাবীগুলো উঠেনি? অবশ্যই বিগত সরকারের আমলেও দাবীগুলো করা হয়েছে তবে তা আমলে নেয়া হয়নি। সরকারের নিকট বারবার উপস্থাপন করা হয়েছে এবং সংসদে এ বিষয়ে বারংবার আলোচনা হলেও সরকার সে বিষয়ে কোন বক্তব্যই পরিস্কার করেনি। জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ বাস্তবায়নের ৬ বছর পূর্ণ হয়ে গেলেও নতুন পে স্কেল বা ৯ম পে স্কেলের কোন ঘোষনার আভাস পাওয়া যায়নি। অন্যদিকে ফেসবুক বা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীদের হাহাকার বা কান্নার শব্দই কেবল ভেসে বেড়াচ্ছে। জাতীয় সংসদে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর উপস্থতিতে সংসদ সদস্য কর্তৃক আপত্তি বা বৈষম্যগুলো তুলে ধরা হলেও সরকারের উর্ধ্বতন মহল বা মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বা কর্তৃপক্ষের নিকট হতে ৯ম পে স্কেল ঘোষনা বা ৭ দফা দাবীর কোন একটিও আমলে নেয় নি। তবে কর্মচারীদের ৭ দফা দাবী আদায়ে তারা তাদের ফেসবুক গ্রুপগুলোতে সক্রিয়া আছেন এবং ফিজিক্যাল আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন এবং আশা করছেন নতুন সরকার কোন একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ নিবে।
সরকারি কর্মচারীদের বেতন স্কেল ২০২৪ । একজন কর্মচারী জীবন ধারনের জন্য যেমন পে স্কেল আশা করে
১১-২০ গ্রেডের সরকারি চাকুরিজীবীদের সম্মিলিত অধিকার আদায় ফোরাম দাবী আদায়ে আন্দোলন সক্রিয় রাখছেন এবং সংগঠনগুলো দাবী আদায়ে কঠোর কর্মসূচীর ঘোষনাও শিগ্রই দিবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকার কর্মচারীদের দাবীগুলো মেনে নিবেন এমনটি আশা করা হচ্ছে।
জাতীয় পে স্কেল রূপকল্প ২০২৪ । সরকারি কর্মচারীদের মনের পে স্কেল কাঠামো দেখে নিন
- গ্রেড-১ = ৮০,০০০ টাকা– পূর্বের গ্রেড ১,২ মার্জ করা উচিৎ।
- গ্রেড-২ = ৭০,০০০ টাকা– পূর্বের ৩,৪ মার্জ করা উচিৎ
- গ্রেড-৩ = ৬০,০০০ টাকা– পূর্বের ৫,৬ মার্জ করা উচিৎ
- গ্রেড-৪ = ৫০,০০০ টাকা– পূর্বের ৭,৮ মার্জ করা উচিৎ
- গ্রেড-৫ = ৪৫,০০০ টাকা– পূর্বের ৯,১০ মার্জ করা উচিৎ
- গ্রেড-৬= ৪০,০০০ টাকা– পূর্বের ১১,১২ মার্জ করা উচিৎ
- গ্রেড-৭= ৩৫,০০০ টাকা– পূর্বের ১৩,১৪ মার্জ করা উচিৎ
- গ্রেড-৮= ৩০,০০০ টাকা– পূর্বের ১৫,১৬ মার্জ করা উচিৎ
- গ্রেড-৯= ২৫,০০০ টাকা– পূর্বের ১৭,১৮ মার্জ করা উচিৎ
- গ্রেড-১০= ২০,০০০ টাকা– পূর্বের ১৯,২০ মার্জ করা উচিৎ
বাড়ি ভাড়া ফিক্সড নাকি শতাংশ থাকা উচিৎ?
বাড়ি ভাড়া গ্রেড ভিত্তিক নয় বরং উপজেলা, জেলা ও বিভাগীয় শহর ভেদে ৪টি ক্যাটাগরিতে হওয়া উচিৎ যেখানে প্রতিবছর মূল্যস্ফিতি সমন্বয় করার ব্যবস্থা থাকতে হবে। এছাড়া চিকিৎসা ভাতা -৩০০০ টাকা করা যায় তবে একটি নির্দিষ্ট সীমায় বয়স পৌছানোর পর বৃদ্ধি করা যেতে পারে। শিক্ষাভাতা ২০০০/৩০০০ টাকা করা যেতে পারে কিন্তু এগুলোতেও মূল্যস্ফিতি সমন্বয়ের ব্যবস্থা রাখতে হবে।যাতায়াত ২০০০ টাকা করা যেতে পারে মূল্যস্ফিতির ব্যবস্থা না করলে এই টাকায় যাতায়াত করা কিছুদিন পরই কষ্টকর হয়ে যাবে। টিফিন ভাতা ৩০০০ টাকা করা যেতে পারে তবে কমিশনের হাতে এগুলো রিভাইজ করার ক্ষমতা থাকা জরুরি।
১৯৭৩ এর পে স্কেল কি বেষ্ট?
না। তবে এটিকে ভিত্তি ধরে প্রস্তাবিত জাতীয় পে স্কেল কাঠামো তৈরি করা যেতে পারে। জাতীয় স্থায়ী বেতন কমিশন গঠন পূর্বক বঙ্গবন্ধু ঘোষিত ১৯৭৩ সনের ১০ ধাপে ৯ম পে-স্কেল বাস্তবায়ন করতে হবে। সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ বেতনের পার্থক্য ১:৫ হতে হবে। পূর্বের ন্যায় শতভাগ পেনশন প্রথা পূনঃবহাল করতে হবে। এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি চালুসহ সচিবালয়ের ন্যায় সচিবালয়ের বাহিরের সরকারী কর্মচারীদের পদ ও বেতন বৈষম্য দুর করতে হবে। ব্লক পোষ্টধারীদের পদোন্নতির সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।
আউটসোর্সিং পদ কি রাজস্বখাতে আসবে? আউটসোর্সিং পদ্ধতি বাতিল পূর্বক উক্ত পদ্ধতিতে নিয়োগকৃত কর্মচারীদের রাজস্ব খাতে হস্থান্তর করতে হবে। বিভিন্ন দপ্তর/প্রতিষ্ঠানে উন্নয়ন খাতে কর্মরত কর্মচারীদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করতে হবে। ডাক বিভাগের প্রার্থী প্রথা চালুসহ মাস্টার রোল ও অন্যান্য দপ্তররে কর্মরত মাস্টার রোল, কন্টিজেন্স ও ওয়ার্কচার্জ কর্মচারীদের রাজস্ব খাতে স্থানান্তর করতে হবে। সরকারি কর্মচারিদের পূর্বের ন্যায় ৩টি টাইমস্কেল, সিলেকশন গ্রেড ও বেতন সমতাকরণ পূনঃবহাল করতে হবে। জীবন যাত্রার মান সমুন্নত রাখার স্বার্থে ও টাকার অবমূল্যায়নের কারণে এবং দ্রব্যমূল্যের উর্দ্ধোগতির বিষয় বিবেচনা করে পেনশনের হার ৯০% থেকে ১০০% ও গ্রাইচ্যুইটির হার ১ টাকায় ২৩০ টাকার স্থলে ৪০০ টাকায় উন্নীত করণ করতে হবে।
সূত্র: ১১-২০ গ্রেডের সরকারি চাকুরিজীবীদের সম্মিলিত অধিকার আদায় ফোরাম
সরকারী বেসরকারী সকল কর্মকর্তা কর্মচারী বৃন্দের বেতন ভাতা যাই হৌক যদি :১- বিনা ঘুষে চাকুরী নিশ্চিত করন ২- যে কেহ আয় বহির্বুত সম্পদশালী হয়, স্বজন-প্রিতীর প্রমানিত হলে এক থেকে দশ বছরের সশ্রম কারাদন্ড দেওয়ার বিধান রাখা (অপরাধ অনুযায়ী)। এবং কোটি টাকার উপর অবৈধ উপায়ে আ্য় করলে মৃত্যু দন্ডে দন্ডিত করা। এরাই দেশের মেরুদণ্ড, এদের প্রশ্রয়ের কারনে দেশ রসাতলে যায়।মৌম
জি। আইন কঠোর করা যেতেই পারে।
আমি বাংলাদেশ বিমানবাহিনী হতে ২০০০ সালে অবসরে আছি। বর্তমানে আমার পেনশন সর্বসাকুল্যে ৭৪৬৭ টাকা প্রায় (মেডিক্যাল ভাতা+রেশন ভাতা সহ)। আমি ননকমিশন ফ্লাইট সার্জেন্ট (বর্তমানে ওয়ারেন্ট অফিসার) প্রথমশ্রেণী অফিসার। বর্তমানে এই পদে যিনি অবসরে যাচ্ছেন তিনি মাসিক পেনশন ২৫/৩০০০০/= টাকা পেয়ে থাকেন সাথে মেডিকেল +রেশন ভাতা পাচ্ছেন। কিন্তু আমিও আমার স্ত্রী এবং ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া সবার ছোট ছেলে নিয়ে কি এই পেনশন দিয়ে জীবন চলা চলে? আপনাদের মাধ্যমে আগামী পে স্কেলে আমাদের জন্যে বিবেচনা করতে সবিনয়ে অনুরোধ রইলো।
দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারনে সরকারি চাকরীজীবিদের আজ চরম দুরবস্থা। অচিরেই এ সমস্যার সমাধান করা প্রয়োজন।
জি। পূর্বের সরকার বিষয়টি আমলে না নিলেও বর্তমান সরকার অবশ্যই নিবে।
11-20 গ্রেডে ব্যবধান ৫০০০ টাকা করেছেন। আর
1-9 গ্রেডে ১০০০০ টাকা প্রতি গ্রেডে ব্যবধান।
সরকার এত টাকা কোথা থেকে দিবে।
আমার মতে, যেহেতু দেশের আর্থিক পরিস্থিতি ভালোনা তাই ১১-২০ গ্রেড ঠিক রেখে ১-৯ গ্রেড পর্যন্ত বেসিক কমানো দরকার
এই আইনটি বাস্তবায়ন হলে দুর্নীতি। থাকবে না দেশে। সহমত এই আইনটি বাস্তবায়ন হোক
সহমত। এক দূর্নীতিবাজদের ধরা যাবে।
এখন উদ্যোগ নিলেও ১ এক বছর লাগবে বাস্তবায়ন করতে। সেটিও ঠিক এত টাকা কোথায় পাবে কিন্তু জীবন যাত্রার মানের সাথে বেতন ভাতাদি সঙ্গতিপূর্ণ হতে হবে।
হ্যাঁ। ঠিকই বলেছেন। পেনশনারদের বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি মূল্যস্ফীতির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হওয়া উচিৎ।
very nice.
সহমত পোষন করছি। ১১- ২০ গ্রেডে পিট ঠেকে গেছে ওয়ালে। বর্তমান বাজারে সাথে। না পারে সইতে আর না পারে বলতে। বোবা হয়ে গেছে। আমরা বাচঁতে চাই।🙏
জি। ঠিকই বলেছেন।
Right
১০টি গ্রেড যা সাজানো হয়েছে তা সম্পূর্ণ ঠিক এবং অন্যান্য ভাতা ও টাইম স্কেল ঠিক দাবি আছে।
ধন্যবাদ