বৈষম্য । দাবীর খতিয়ান । পুন:বিবেচনা

৯ম পে স্কেলে ১২টি গ্রেড করার দাবি ২০২৫ । সরকারি কর্মচারীদের সর্বনিম্ন ৩০,০০০ টাকা বেতন ধরে একটি বেতন কাঠামো?

২০২৫ সালে সরকারি কর্মচারীদের জন্য একটি নতুন বেতন কাঠামো (৯ম পে স্কেল) প্রস্তাব করা হয়েছে, যেখানে গ্রেড সংখ্যা কমানো এবং সর্বনিম্ন বেতন ৩০,০০০ টাকা করার দাবি উঠেছে। বর্তমানে, সরকারি কর্মচারীরা ২০১৫ সালের ৮ম পে স্কেল অনুযায়ী বেতন পাচ্ছেন- নতুন বেতন কাঠামোতে গ্রেড সংখ্যা ২০টি থেকে কমিয়ে ১০ থেকে ১২টি করার প্রস্তাব করা হয়েছে। সর্বনিম্ন বেতন ৮,২৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ২৫,০০০ থেকে ৩০,০০০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে– ৯ম পে স্কেলে ১২টি গ্রেড করার দাবি ২০২৫

জাতীয় পে স্কেল ১২টি গ্রেডে হতে হবে? হ্যাঁ। সরকারি চাকরিতে বর্তমান ২০টি গ্রেড ভেঙে ১২টি গ্রেডে রূপান্তরের দাবি উঠেছে। নবম পে কমিশন গঠনের পর থেকেই এই দাবিটি জোরালো হয়েছে। বিভিন্ন সরকারি কর্মচারী সংগঠন এবং ফোরাম এই প্রস্তাব নিয়ে সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। সরকারি চাকরির বেতন কাঠামোতে ২০টি গ্রেড থাকায় বিভিন্ন গ্রেডের মধ্যে বেতন বৈষম্য অনেক বেশি। বিশেষ করে ১১ থেকে ২০ গ্রেডের কর্মচারীরা মনে করেন, তাদের বেতন জীবনযাত্রার ব্যয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। গ্রেড সংখ্যা কমালে এই বৈষম্য অনেকটা কমে আসবে বলে তারা মনে করেন।

সহজ ও যৌক্তিক কাঠামো করতে হবে? হ্যাঁ। ২০টি গ্রেডের পরিবর্তে ১২টি গ্রেড হলে বেতন কাঠামো আরও সহজ ও যৌক্তিক হবে। এতে বেতন নির্ধারণ, পদোন্নতি এবং অন্যান্য প্রশাসনিক কাজ সহজ হবে। নতুন পে-স্কেল বাস্তবায়নের আগ পর্যন্ত তারা মূল্যস্ফীতির কারণে তাদের ক্রয়ক্ষমতা কমে যাওয়ার ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৫০% মহার্ঘ ভাতা/বিশেষ সুবিধা কার্যকরের দাবি জানিয়েছেন। নবম পে কমিশন এই দাবিগুলো পর্যালোচনা করছে। তারা শুধু বেতন বৃদ্ধি নয়, বরং পুরো বেতন কাঠামোকে আধুনিক এবং কার্যকর করার চেষ্টা করছে। বেতন কমিশনের একটি প্রধান কাজ হলো বেতন বৈষম্য দূর করা এবং একটি এমন কাঠামো তৈরি করা যা বর্তমান অর্থনৈতিক বাস্তবতার সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। ২০টি গ্রেড ভেঙে ১২টি গ্রেড করার প্রস্তাবটি সেই লক্ষ্যেরই একটি অংশ।

এবারও কি কর্মচারীরা হারবে? হারতে পারে কারণ পে কমিশনে কর্মচারী প্রতিনিধি করা হয়নি। যদি এই প্রস্তাবটি গৃহীত হয়, তবে তা নিম্ন গ্রেডের কর্মচারীদের জন্য একটি বড় স্বস্তি হবে। এটি সরকারি চাকরিতে মেধাবী ও দক্ষ কর্মীদের আকর্ষণ করতেও সহায়তা করবে। তবে, এই ধরনের পরিবর্তন বাস্তবায়নে সরকারের ওপর আর্থিক চাপও বাড়তে পারে। বর্তমানে, এই প্রস্তাবটি শুধুমাত্র একটি দাবি। চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত সরকারের পক্ষ থেকে আসবে, যা নবম পে কমিশনের সুপারিশের ওপর ভিত্তি করে নেওয়া হবে।

৯ম পে স্কেল ২০২৫ । ১২টি গ্রেডে (সর্বনিম্ন ৩০,০০০ — সর্বোচ্চ ১,২০,০০০) একটি প্রস্তাবিত/উদাহরণধর্মী বেতন কাঠামো দিলাম। প্রতিটি গ্রেডে ১০টি ধাপ ধরা হয়েছে—ধাপবৃদ্ধি (ইনক্রিমেন্ট) সমান। কর্মচারীদের জন্য ভাল পে স্কেল পেতে হলে গ্রেড সংখ্যা কমাতে হবে।

বেতন কাঠামোতে গ্রেড কতটি হওয়ার দরকার? গ্রেড সংখ্যা ২০টির পরিবর্তে ১০ থেকে ১২টি গ্রেড করার প্রস্তাব করা হয়েছে কর্মচারীদের পক্ষ থেকে। সর্বনিম্ন বেতন ২৫,০০০ থেকে ৩০,০০০ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। সর্বোচ্চ বেতন ১,০০,০০০ টাকার ওপরে করার প্রস্তাব করা যেতে পারে। বেতন বৃদ্ধি ন্যূনতম ১০ করা যেতে পারে। পদোন্নতির ক্ষেত্রে মূল বেতনের ২০% এর উপরে বেতন বৃদ্ধির প্রস্তাব যেতে পারে। নতুন বেতন কাঠামোতে বৈষম্য কমানো এবং জীবনযাত্রার মান উন্নত করার দিকে মনোযোগ দেওয়া হচ্ছে। বিভিন্ন মহল থেকে এই বেতন কাঠামো নিয়ে আলোচনা ও প্রস্তাবনা চলছে এবং চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনো আসেনি।

ব্যাখ্যা- এই টেবিলটি নীতিগত/খসড়া কাঠামো—বাস্তব প্রণয়নে গ্রেডের পরিসর, ধাপ সংখ্যা বা ধাপবৃদ্ধি পরিবর্তিত হতে পারে।

প্রস্তাবিত ৯ম পে স্কেল খসড়া ২০২৫ । গ্রেড ব্যবধান যদি সমান না হয় তবে সবক্ষেত্রে বৈষম্য সৃষ্টি হয়।

  1. 100,000- 120,000
  2. 93,600- 119,600
  3. 87,300- 113,300
  4. 80,900- 104,900
  5. 74,500- 96,500
  6. 68,200- 88,200
  7. 61,800- 79,800
  8. 55,500- 72,500
  9. 49,100– 64,100
  10. 42,700 55,700
  11. 36,400- 47,400
  12. 30,000- 39,000

গ্রেড সংখ্যা না কমালে কর্মচারীরা লাভবান হবে কি?

জি।কথাটা একদম যথার্থ 👍 👉 বর্তমানে (২০ গ্রেড ভিত্তিক) বেতন কাঠামোতে সমস্যা হলো— একই ধরণের যোগ্যতা ও দায়িত্বের মানুষ ভিন্ন ভিন্ন গ্রেডে ছড়িয়ে থাকেন। গ্রেড যত বেশি, তত বেশি বৈষম্য ও সঙ্কীর্ণ ধাপের বৃদ্ধি হয়। তাই কর্মচারীরা বাস্তবে ইনক্রিমেন্ট বা গ্রেড-জাম্প থেকে যথেষ্ট সুবিধা পান না।গ্রেড সংখ্যা কমালে (যেমন ১০ → ১২ গ্রেড) বেতন ব্যবধান কমবে → নিচের দিকের কর্মচারীরা তুলনামূলক বেশি লাভবান হবেন। প্রোমোশন/ধাপ উন্নয়ন সহজ হবে → কম গ্রেড মানে দ্রুত উচ্চতর গ্রেডে ওঠা সম্ভব। ন্যায্যতা ও স্বচ্ছতা বাড়বে → একই দায়িত্বের কাজে ভিন্ন ভিন্ন গ্রেডের অযৌক্তিক বিভাজন কমে যাবে। ৯ম পে স্কেলের আলোচনায় তাই মূল দাবি হচ্ছে গ্রেড সংখ্যা কমানো, না হলে বেতন বাড়লেও নিচের দিকের কর্মচারীরা বাস্তব সুবিধা পাবেন না।

সরাসরি তুলনা — (২০-গ্রেড → ১২-গ্রেড সমতুল্য) এবং পার্থক্য । (প্রতিটি লাইনে: ২০-গ্রেড, ২০-গ্রেড স্যালারি → ১২-গ্রেড (সমতুল্য), ১২-গ্রেড স্যালারি, পরিবর্তন = (১২−২০) )

২০-গ্রেড২০-গ্রেড (টাকা)১২-গ্রেড সমতুল্য১২-গ্রে (টাকা)পার্থক্য (টাকা)
G1 →30,000 →G130,0000
G2 →34,737 →G238,182+3,445
G3 →39,474 →G238,182−1,292
G4 →44,211 →G346,364+2,153
G5 →48,947 →G346,364−2,583
G6 →53,684 →G454,545+861
G7 →58,421 →G454,545−3,876
G8 →63,158 →G562,727−431
G9 →67,895 →G562,727−5,168
G10 →72,632 →G670,909−1,723
G11 →77,368 →G670,909−6,459
G12 →82,105 →G779,091−3,014
G13 →86,842 →G779,091−7,751
G14 →91,579 →G887,273−4,306
G15 →96,316 →G887,273−9,043
G16 →101,053 →G995,455−5,598
G17 →105,789 →G995,455−10,334
G18 →110,526 →G10103,636−6,890
G19 →115,263 →G11111,818−3,445
G20 →120,000 →G12120,0000

 

নবম পে স্কেল ২০২৫ । সর্বনিম্ন বেতন ৩০ হাজার টাকা চায় সরকারি কর্মচারীরা?

 

Alamin Mia

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে প্রশ্ন থাকলে বা ব্যাখ্যা জানতে পোস্টের নিচে কমেন্ট করুন।

2 thoughts on “৯ম পে স্কেলে ১২টি গ্রেড করার দাবি ২০২৫ । সরকারি কর্মচারীদের সর্বনিম্ন ৩০,০০০ টাকা বেতন ধরে একটি বেতন কাঠামো?

  • মোঃ আফজাল মিয়া

    ২০ তম গ্রেডের চাকরিজীবীরা টিক মত তাদের পরিবার , মা, বাবা,ছেলে , মেয়ের, খরচ চালানো খুবই কটিন হচ্ছে মাস যাওয়ার আগেই টাকা খরচ হয়ে যায় এবং ঋণের বোঝা বইতে হচ্ছে , তাই সরকারের প্রতি আকুল আবেদন ২০তম গ্রেডের চাকরিজীবীদের সাথে যেন বৈষম্য না করা হয় ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *