বিবিএস কর্মচারী কেন্দ্রীয় পরিষদের প্রস্তাবিত বেতন কাঠামো ২০২৫ । জীবনযাত্রার ব্যয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে যুগোপযোগী করার দাবি?
বিবিএস কর্মচারী কেন্দ্রীয় পরিষদের পক্ষ থেকে বেতন কাঠামো পরিবর্তনের এক যুগোপযোগী প্রস্তাবনা পেশ করা হয়েছে। ‘জাতীয় বেতন কমিশন-২০২৫’-এর গাইডলাইন অনুযায়ী প্রস্তুত করা এই কাঠামোতে পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য বর্তমান প্রেক্ষাপট ও জীবনযাত্রার ক্রমবর্ধমান ব্যয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বেতন বৃদ্ধির দাবি জানানো হয়েছে।
প্রস্তাবের মূল বিষয়বস্তু ও যৌক্তিকতা: বিবিএস কর্মচারী কেন্দ্রীয় পরিষদ তাদের প্রস্তাবনার ভূমিকাতে উল্লেখ করেছে যে বর্তমান মুদ্রাস্ফীতি, ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি এবং সরকারি কর্মচারীদের আর্থ-সামাজিক বাস্তবতাকে বিবেচনায় নিয়ে এই নতুন বেতন কাঠামো তৈরি করা হয়েছে, যা অত্যন্ত সময়োপযোগী।
প্রস্তাবিত বেতন কাঠামো:
- গ্রেড ও বেতন বৃদ্ধি: ছবিতে দেওয়া সারণি অনুযায়ী, প্রস্তাবিত বেতন কাঠামোতে গ্রেড-১ থেকে গ্রেড-২০ পর্যন্ত বর্তমান ও প্রস্তাবিত বেতন স্কেল দেখানো হয়েছে। এই কাঠামোতে, সর্বনিম্ন গ্রেড-২০-এর বর্তমান বেতন স্কেল ৮,২৫০ টাকা থেকে বাড়িয়ে প্রস্তাবিত গ্রেড-১২-এ ২৫০০০ টাকা করার কথা বলা হয়েছে। অন্যদিকে, সর্বোচ্চ গ্রেড-১-এর বর্তমান বেতন স্কেল ৭৮,০০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে প্রস্তাবিত গ্রেড-১-এ ১,৫০,০০০ টাকা নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে।
- বেতন বৃদ্ধির হার: গ্রেডভেদে মূল বেতনের বৃদ্ধির হার ৯২% থেকে ২০৩% পর্যন্ত প্রস্তাব করা হয়েছে, যা জীবনযাত্রার ব্যয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখার জন্য যৌক্তিক বলে দাবি করা হয়েছে।
- ভাতা বৃদ্ধি: প্রস্তাবিত কাঠামোতে বাড়ি ভাড়া, চিকিৎসা ভাতা, যাতায়াত ভাতা, টিফিন ভাতা, এবং শিক্ষা (সন্তান) ভাতার পরিমাণও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। বিশেষত, চিকিৎসা, যাতায়াত এবং টিফিন ভাতার ক্ষেত্রে প্রায় সব গ্রেডের জন্য একটি নির্দিষ্ট হারে বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, চিকিৎসা ভাতা বর্তমান ১,৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩,০০০ টাকা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, যা আধুনিক চিকিৎসাব্যয়ের সাথে কিছুটা সামঞ্জস্যপূর্ণ।
অন্যান্য সুবিধা ও দাবি: পরিষদের পক্ষ থেকে বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট পদ্ধতি এবং অন্যান্য ভাতাও পুনর্বিবেচনার প্রস্তাব করা হয়েছে।
- বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট: দেশের বার্ষিক মূল্যস্ফীতির সমতুল্য বা তার চেয়ে বেশি হারে বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট নিশ্চিত করার দাবি জানানো হয়েছে।
- টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড: মূল্যস্ফীতির বিপরীতে কর্মচারীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহাল বা সমতুল্য সুবিধা প্রদানের দাবি জানানো হয়েছে।
- সার্ভিস বেনিফিট: সার্ভিস বেনিফিট বৃদ্ধি করারও দাবি করা হয়েছে।
বিবিএস কর্মচারী কেন্দ্রীয় পরিষদ আশা করছে যে তাদের এই সুচিন্তিত প্রস্তাবনা ও যৌক্তিকতা পে-কমিশনের মাধ্যমে সরকারের কাছে গ্রহণযোগ্য হবে এবং তা বাস্তবায়িত হলে কর্মচারীদের জীবনযাত্রার মান উন্নত হবে। এটি কর্মচারীদের মনোবল বৃদ্ধি এবং জাতীয় প্রশাসনের সামগ্রিক উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে বলেও পরিষদে মনে করছে।




