জাতীয় পরিচয়পত্র । জন্ম নিবন্ধন

জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কপি ডাউনলোড ২০২৫ । সন্তানের জন্ম নিবন্ধনের জন্য পিতা-মাতার জন্ম নিবন্ধন ইংরেজী করা থাকতে হয়?

জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কপি ডাউনলোড করার জন্য, প্রথমে bdris.gov.bd ওয়েবসাইটে যেতে হবে। এরপর, “জন্ম নিবন্ধন” অপশনটিতে ক্লিক করে “জন্ম নিবন্ধন সনদ পুনঃ মুদ্রণ” অপশনটি নির্বাচন করতে হবে। প্রয়োজনীয় তথ্য (যেমন জন্ম নিবন্ধন নম্বর এবং জন্ম তারিখ) দিয়ে “অনুসন্ধান” বাটনে ক্লিক করলে আপনি আপনার জন্ম নিবন্ধন সনদের অনলাইন কপি দেখতে পারবেন এবং ডাউনলোড করতে পারবেন– জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কপি ডাউনলোড ২০২৫

জন্ম নিবন্ধন কি? জন্ম নিবন্ধন হলো একজন ব্যক্তির জন্ম ও পরিচয়-সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি দলিল। এটি ব্যক্তির নাগরিকত্ব ও বয়সের প্রমাণ হিসেবে কাজ করে। জন্ম নিবন্ধন কার্ড প্রাপ্ত বয়স্কদের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র বা অন্যান্য সেবা পাওয়ার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। শিশুর জন্মের ৪৫ দিনের মধ্যে জন্ম নিবন্ধন করালে কোনো ফি লাগে না। ৪৫ দিনের পর থেকে ৫ বছর পর্যন্ত জন্ম নিবন্ধনের জন্য ২৫ টাকা ফি দিতে হয়। যদি বয়স ৫ বছরের বেশি হয়, তাহলে ৫০ টাকা ফি দিতে হয়। জন্ম তারিখ সংশোধন করার জন্য ১০০ টাকা ফি লাগে। অন্য কোনো তথ্য (যেমন- নাম, বাবা-মায়ের নাম, ঠিকানা) সংশোধন করতে ৫০ টাকা ফি লাগে। বাংলা ও ইংরেজিতে জন্ম নিবন্ধন সনদের মূল কপি বা সংশোধনের পর কপি পেতে কোনো ফি লাগে না। তবে নকল কপি নিতে হলে ৫০ টাকা ফি দিতে হয়। বিদেশে বাংলাদেশ দূতাবাস থেকে জন্ম নিবন্ধনের ক্ষেত্রে ফি-এর হার ভিন্ন। এই ফিগুলো সরকারের নির্ধারিত, তবে অনেক ক্ষেত্রে দালাল বা মধ্যস্থতাকারীর মাধ্যমে আবেদন করলে অতিরিক্ত অর্থ নেওয়া হয়। তাই সরাসরি সংশ্লিষ্ট সরকারি কার্যালয় (যেমন- ইউনিয়ন পরিষদ, পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন) থেকে আবেদন করা উচিত।

সন্তানের জন্ম নিবন্ধনের জন্য পিতা-মাতার জন্ম নিবন্ধন ইংরেজী করা থাকতে হয়? হ্যাঁ, সন্তানের জন্ম নিবন্ধন করার জন্য পিতা-মাতার জন্ম নিবন্ধন (যদি থাকে) ইংরেজিতে করা থাকতে হয়। যদি পিতা-মাতার জন্ম নিবন্ধন না করা থাকে, তাহলে তাদের জন্ম নিবন্ধন নম্বর দেওয়ার প্রয়োজন নেই, তবে তাদের নাম সংশোধনের জন্য আবেদন করার প্রয়োজন হতে পারে। যদি পিতা-মাতার জন্ম নিবন্ধন করা থাকে, তবে সন্তানের জন্ম নিবন্ধনের সময় তাদের জন্ম নিবন্ধন নম্বর প্রদান করতে হবে। যদি পিতা-মাতার জন্ম নিবন্ধন না করা থাকে, তবে তাদের নাম সংশোধনের জন্য আবেদন করে, তাদের নাম জন্ম নিবন্ধন রেকর্ডে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। বর্তমানে, জন্ম নিবন্ধন অনলাইন করার জন্য পিতা-মাতার জন্ম নিবন্ধন নম্বর প্রদান করা বাধ্যতামূলক নয়, তবে এটি সন্তানের জন্ম নিবন্ধন প্রক্রিয়াকে সহজ করে। যদি পিতা-মাতার জন্ম নিবন্ধন নম্বর দেওয়া না হয়, তবে পরবর্তীতে সন্তানের জন্ম নিবন্ধন সনদে তাদের নাম সংশোধনের প্রয়োজন হতে পারে, যা জন্ম নিবন্ধন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করে করতে হবে। আপনি যদি জন্ম নিবন্ধন অনলাইন কপি ডাউনলোড করতে চান, তাহলে bdris.gov.bd ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন করতে পারেন।

পিতা মাতার জন্ম নিবন্ধন ছাড়া কি সন্তানের জন্ম নিবন্ধন হয় না? সাধারণত পিতা মাতার জন্ম নিবন্ধন থাকা বাধ্যতামূলক। তবে যাদের পিতা-মাতার তথ্য নাই- মা-বাবার জন্ম নিবন্ধন না থাকলেও এখন সন্তানের জন্ম নিবন্ধন করা সম্ভব। তবে, এটি আগে বাধ্যতামূলক ছিল। ২০২২ সালের আগস্ট মাসে রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয় (জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন) এই নিয়মটি তুলে নেয়। 📢 এই সিদ্ধান্তের ফলে এখন মা-বাবার জন্মসনদ ছাড়াই সন্তানের জন্ম নিবন্ধনের আবেদন করা যায়।

বাংলাদেশী জন্ম নিবন্ধন ২০২৫ । নতুন শিশুর জন্ম নিবন্ধনের জন্য অনলাইনে আবেদন করতে হয় / জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের জন্য সময় লাগলেও নতুন নিবন্ধন দ্রুততর সময়ে সম্পন্ন হয়ে যায়। 

জন্ম নিবন্ধনের জন্য কোথায় যেতে হয়? জন্ম নিবন্ধনের জন্য আপনাকে আপনার সংশ্লিষ্ট এলাকার নিবন্ধকের কার্যালয়ে যেতে হবে। আপনি কোথায় থাকেন তার উপর নির্ভর করে এটি পরিবর্তিত হয়- ইউনিয়ন পরিষদ: আপনি যদি গ্রামাঞ্চলে থাকেন, তাহলে আপনার এলাকার ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে যেতে হবে। পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন: যদি আপনি কোনো পৌরসভা বা সিটি কর্পোরেশন এলাকায় থাকেন, তাহলে আপনার জন্য নির্ধারিত ওয়ার্ড কাউন্সিলরের কার্যালয় বা সিটি কর্পোরেশনের প্রধান কার্যালয়ে যেতে পারেন। ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড: ক্যান্টনমেন্ট এলাকার বাসিন্দাদের জন্য ক্যান্টনমেন্ট বোর্ডের কার্যালয়। বিদেশ: যদি আপনি বিদেশে থাকেন, তাহলে আপনার নিকটস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস বা কনস্যুলেট অফিসে জন্ম নিবন্ধনের জন্য যোগাযোগ করতে হবে। বর্তমানে, অনলাইনে জন্ম নিবন্ধনের আবেদন করার সুযোগ আছে। আপনি প্রথমে অনলাইনে bdris.gov.bd/br/application এই ওয়েবসাইটে গিয়ে আবেদন ফর্ম পূরণ করতে পারেন। আবেদনপত্র জমা দেওয়ার পর একটি প্রিন্ট কপি সংগ্রহ করে প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আপনার এলাকার নিবন্ধকের কার্যালয়ে জমা দিতে হবে।

Caption: everify.bdris.gov.bd

জন্ম নিবন্ধন ই-ভেরিফাইড কপি সংগ্রহের প্রক্রিয়া  ২০২৫ । জন্ম নিবন্ধন ই ভেরিফাইড কপি সংগ্রহ করার নিয়ম কি? জন্ম নিবন্ধনের একটি ই-ভেরিফাইড কপি সংগ্রহ করা খুবই সহজ। এটি মূলত একটি ডিজিটাল কপি, যা আপনি অনলাইনে যাচাই করতে এবং প্রিন্ট করতে পারবেন।

  1. জন্ম নিবন্ধনের ই-ভেরিফাইড কপি সংগ্রহ করার জন্য আপনাকে কোনো সরকারি অফিসে যেতে হবে না। আপনি শুধু নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন: 
  2. অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে প্রবেশ: প্রথমে, জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধনের অফিসিয়াল যাচাইকরণ ওয়েবসাইট everify.bdris.gov.bd-এ যান। 
  3. তথ্য প্রদান: ওয়েবসাইটে দুটি খালি ঘর দেখতে পাবেন। 
  4. প্রথম ঘরে আপনার ১৭-সংখ্যার জন্ম নিবন্ধন নম্বরটি লিখুন। 
  5. দ্বিতীয় ঘরে আপনার জন্ম তারিখ লিখুন। জন্ম তারিখ লেখার সময় অবশ্যই YYYY-MM-DD (অর্থাৎ, বছর-মাস-দিন) ফরম্যাট অনুসরণ করতে হবে। যেমন, যদি আপনার জন্ম তারিখ ১০ জানুয়ারি ১৯৯০ হয়, তাহলে লিখুন ১৯৯০-০১-১০। 
  6. ক্যাপচা পূরণ: এরপর একটি সহজ গণিত সমস্যা দেওয়া থাকবে (যেমন: ৫+৩)। এর সমাধান করে উত্তরটি খালি ঘরে লিখুন। এটি নিশ্চিত করে যে আপনি একজন মানুষ, কোনো স্বয়ংক্রিয় সফটওয়্যার নন। 
  7. অনুসন্ধান: সব তথ্য সঠিকভাবে পূরণ করার পর “Search” বাটনে ক্লিক করুন। 
  8. যদি আপনার দেওয়া তথ্য সঠিক হয়, তাহলে স্ক্রিনে আপনার জন্ম নিবন্ধনের বিস্তারিত তথ্য দেখতে পাবেন। এই তথ্যগুলোই হলো আপনার ই-ভেরিফাইড কপি। আপনি চাইলে এটি প্রিন্ট করে বা স্ক্রিনশট নিয়ে সংরক্ষণ করতে পারেন। মনে রাখবেন, এই ডিজিটাল কপিটি আইনিভাবে বৈধ এবং বিভিন্ন সরকারি বা বেসরকারি কাজে ব্যবহার করা যায়।

জন্ম নিবন্ধনের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র কি?

বর্তমানে সন্তানের জন্ম নিবন্ধনের জন্য সাধারণত নিচের কাগজপত্রগুলো প্রয়োজন হয়- হাসপাতালের ছাড়পত্র বা টিকার কার্ড: এটি শিশুর জন্মের প্রমাণ হিসেবে কাজ করে। আবেদনকারীর (পিতা/মাতা) মোবাইল নম্বর। আবেদনকারীর (পিতা/মাতা) জাতীয় পরিচয়পত্রের ফটোকপি। বাসার হোল্ডিং ট্যাক্সের রশিদ বা ইউপি ট্যাক্স পরিশোধের রশিদ (ঠিকানার প্রমাণ হিসেবে)। উল্লেখ্য, অনলাইনে আবেদনের সময় কিছু ক্ষেত্রে মা-বাবার জন্ম নিবন্ধন নম্বর বা জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর দেওয়ার অপশন থাকে। তবে, এটি বাধ্যতামূলক নয়।

সব কাজে তো জন্ম নিবন্ধন লাগে না-আপনি ঠিকই বলেছেন, সব কাজে জন্ম নিবন্ধন লাগে না। কিন্তু জন্ম নিবন্ধন অনেক গুরুত্বপূর্ণ একটি দলিল, যা বিভিন্ন জরুরি ও আইনি প্রয়োজনে দরকার হয়। এটা শুধু জন্ম তারিখ বা পরিচয় প্রমাণের জন্য নয়, বরং কিছু কিছু ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলক। এখানে কিছু প্রধান ক্ষেত্র উল্লেখ করা হলো, যেখানে জন্ম নিবন্ধন প্রয়োজন হয়:

পাসপোর্ট তৈরি: পাসপোর্ট তৈরির জন্য জন্ম নিবন্ধন একটি আবশ্যকীয় নথি।শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি: সাধারণত স্কুলে বা কলেজে ভর্তির সময় জন্ম নিবন্ধন জমা দিতে হয়।বিবাহ নিবন্ধন: বিবাহের সময় ছেলে ও মেয়ের বয়স প্রমাণের জন্য জন্ম নিবন্ধন দরকার হয়।
জাতীয় পরিচয়পত্র: ১৮ বছর বয়স হওয়ার পর জাতীয় পরিচয়পত্রের জন্য আবেদন করতে হলে জন্ম নিবন্ধন দেখাতে হয়।ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খোলা: কিছু ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে জন্ম নিবন্ধন চাওয়া হয়, বিশেষ করে নাবালকদের জন্য।ড্রাইভিং লাইসেন্স: ড্রাইভিং লাইসেন্সের আবেদন করার সময়ও জন্ম নিবন্ধনের প্রয়োজন হতে পারে।
এইসব ক্ষেত্রে জন্ম নিবন্ধন না থাকলে অনেক সময়ই সমস্যার মুখে পড়তে হয়। তাই, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব জন্ম নিবন্ধন করিয়ে রাখা বুদ্ধিমানের কাজ।

Alamin Mia

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে প্রশ্ন থাকলে বা ব্যাখ্যা জানতে পোস্টের নিচে কমেন্ট করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *