বাংলাদেশে ধূমপান নিষিদ্ধ নয় তবে পাবলিক প্লেসে যেন সেটি না করা হয় সেজন্য বিধিমালা রয়েছে-এ দেশে নারীরা সাধারণ ধূমপান করেন না– ধূমপান ও জরিমানা ২০২৫
পাবলিক প্লেসে ধূমপান করলে কি হয়? পাবলিক প্লেসে ধূমপান করলে বিভিন্ন ধরনের শারীরিক ও সামাজিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। নিচে সেগুলো উল্লেখ করা হলো- পরোক্ষ ধূমপানের কারণে আশপাশের মানুষের শ্বাসকষ্ট, হাঁপানি, হৃদরোগ ও ফুসফুসের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে। শিশুদের ক্ষেত্রে নিউমোনিয়া ও অ্যাজমার ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়। গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে গর্ভের শিশুর ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
সাধারণ মানুষের কি সমস্যা হয়? পাবলিক প্লেসে ধূমপান করলে অন্যদের বিরক্তির কারণ হতে পারে। এটি সামাজিক পরিবেশ দূষিত করে এবং অস্বাস্থ্যকর পরিস্থিতি তৈরি করে। পাবলিক প্লেসে ধূমপান আইনের চোখে অপরাধ বলে বিবেচিত হয়ে থাকে। পাবলিক প্লেসে ধূমপান করা অনেক দেশে আইনত নিষিদ্ধ। ধূমপান নিয়ন্ত্রণ আইন অনুসারে পাবলিক প্লেসে ধূমপান করলে জরিমানা হতে পারে। তাই, নিজের এবং অন্যের স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে পাবলিক প্লেসে ধূমপান করা থেকে বিরত থাকা উচিত।
ধুমপান করলে কত টাকা জরিমানা? ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্যের ব্যবহার নিরুৎসাহিত এবং ধূমপানমুক্ত স্থান নিশ্চিতকরণের জন্য ‘ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) (সংশোধন)’ আইনে পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহন বলতে কি বোঝানো হয় সেটার বিশদ বিবরণ দেওয়া হয়েছে।ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০০৫ এ পাবলিক প্লেসের আওতা কম থাকায় ২০১৩-এর সংশোধিত আইনে এর পরিধি অনেক বিস্তৃত করা হয়েছে বলে মত দিয়েছেন তামাক নিয়ন্ত্রণে কাজ করা বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষ। একই সঙ্গে এ আইনে পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে ধূমপানমুক্ত সাইন স্থাপন ও নোটিশ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ আইন অমান্য করলে বিধান রাখা হয়েছে ১০০০ টাকা জরিমানার।
ধূমপান ও তামাকজাত দ্রব্য ব্যবহার (নিয়ন্ত্রণ) আইন ২০০৫ এ পাবলিক প্লেসের আওতা কম থাকায় ২০১৩-এর সংশোধিত আইনে এর পরিধি অনেক বিস্তৃত করা হয়েছে বলে মত দিয়েছেন তামাক নিয়ন্ত্রণে কাজ করা বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষ। একই সঙ্গে এ আইনে পাবলিক প্লেস ও পাবলিক পরিবহনে ধূমপানমুক্ত সাইন স্থাপন ও নোটিশ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এ আইন অমান্য করলে বিধান রাখা হয়েছে ১০০০ টাকা জরিমানার।
বাংলাদেশের নারীরা কি ধূমপান করে? হ্যাঁ, বাংলাদেশের নারীরাও ধূমপান করে থাকেন। তবে, পুরুষদের তুলনায় নারীদের মধ্যে ধূমপানের হার এখনও কম। এখানে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য তুলে ধরা হলো: বিভিন্ন সমীক্ষায় দেখা গেছে, বাংলাদেশের প্রায় ১৭.৭০ শতাংশ নারী ধূমপান করেন। পুরুষদের তুলনায় নারীদের মধ্যে ধূমপানের হার কম হলেও, এটি ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে।
Caption: Dhumpan Fine Bangladesh
ধূমপানের ক্ষতিকর দিক কি কি? ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। এর ফলে শরীরের প্রায় প্রতিটি অঙ্গের মারাত্মক ক্ষতি হয়। ধূমপানের কিছু প্রধান ক্ষতিকর দিক নিচে উল্লেখ করা হলো
- ফুসফুসের ক্যান্সার: ধূমপান ফুসফুসের ক্যান্সারের প্রধান কারণ।
- ক্রনিক অবস্ট্রাকটিভ পালমোনারি ডিজিজ (সিওপিডি): এটি ফুসফুসের একটি গুরুতর রোগ, যা শ্বাসকষ্টের কারণ হয়।
- ব্রঙ্কাইটিস এবং নিউমোনিয়া: ধূমপায়ীদের এই রোগগুলো হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি।
- হৃদরোগ এবং স্ট্রোক: ধূমপান রক্তনালীগুলোকে ক্ষতিগ্রস্ত করে, যার ফলে হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের ঝুঁকি বাড়ে।
- উচ্চ রক্তচাপ: ধূমপান রক্তচাপ বাড়ায়, যা হৃদরোগের অন্যতম কারণ।
- ফুসফুসের ক্যান্সার ছাড়াও, ধূমপান মুখ, গলা, কিডনি, মূত্রাশয়, অগ্ন্যাশয় এবং জরায়ুর ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায়।
- প্রজনন স্বাস্থ্য: পুরুষদের মধ্যে বন্ধ্যাত্ব এবং নারীদের মধ্যে গর্ভপাতের ঝুঁকি বাড়ায়।
- গর্ভবতী মহিলাদের ধূমপান গর্ভের শিশুর জন্য ক্ষতিকর।
- দাঁত ও মাড়ির রোগ: ধূমপান দাঁত ও মাড়ির ক্ষতি করে এবং মুখের দুর্গন্ধের কারণ হয়।
- রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া: ধূমপায়ীদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়, ফলে তারা সহজে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়।
- ত্বকের ক্ষতি: ধূমপান ত্বককে দ্রুত বুড়িয়ে দেয় এবং ত্বকের বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি করে।
- ধূমপান শুধু ধূমপায়ীর নয়, তার আশেপাশের মানুষেরও ক্ষতি করে। পরোক্ষ ধূমপানের কারণেও বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই, সুস্থ জীবনের জন্য ধূমপান ত্যাগ করা অত্যন্ত জরুরি।
সমাজ নারীদের ধুমপানকে কিভাবে দেখে?
বাংলাদেশের সমাজে নারীদের ধূমপান করা এখনও অনেক ক্ষেত্রেই ট্যাবু হিসেবে বিবেচিত হয়। নারীদের ধূমপানকে নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখা হয় এবং এর ফলে সামাজিক প্রতিক্রিয়ার সম্মুখীন হতে হয়। কিছু কিছু ক্ষেত্রে, নারীদের ধূমপান করাকে ‘শালীনতার অভাব’ হিসেবেও দেখা হয়। পুরুষদের মতো নারীদের ক্ষেত্রেও ধূমপান বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকির কারণ হতে পারে, যেমন: ফুসফুসের ক্যান্সার, হৃদরোগ, শ্বাসকষ্ট, গর্ভবতী মহিলাদের ক্ষেত্রে গর্ভের শিশুর ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। বাংলাদেশে পাবলিক প্লেসে ধূমপান করা আইনত নিষিদ্ধ। এই আইন নারী পুরুষ উভয়ের জন্য সমানভাবে প্রযোজ্য।যদিও পুরুষদের তুলনায় বাংলাদেশের নারীদের মধ্যে ধূমপানের হার কম, তবুও এই বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করা অত্যন্ত জরুরি।