ইত্যাদি । বিবিধ । ক্যাটাগরী বিহীন তথ্য

“ডাঃ” পদবী ব্যবহার নির্দেশনা ২০২৫ । MBBS এবং BDS ডিগ্রি ছাড়া ডাক্তার (ডা.) পদবী ব্যবহার করা যাবে না?

মহামান্য সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রীট পিটিশন নং-৫৩৫/২০১৯ মােকদ্দমার রায় অনুসারে বিকল্প ধারার চিকিৎসা পদ্ধতির পেশাধারীরা নামের পূর্বে- ডাক্তার লিখতে পারবেন না। বিএমডিসি আইন। ২০১০ এর ২৯ ধারা মােতাবেক নিবন্ধনচুক্ত মেডিকেল বা ডেন্টাল ইনষ্টিটিউট কর্তৃক এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রীধারী ছাড়া কেউ (ডাঃ) পদবী ব্যবহার করতে পারবেন না-“ডাঃ” পদবী ব্যবহার নির্দেশনা ২০২৫

ডাক্তার কে? ডাক্তার হলেন এমন একজন ব্যক্তি যিনি স্বাস্থ্যসেবা পেশার সাথে যুক্ত। তিনি রোগ নির্ণয়, চিকিৎসা এবং স্বাস্থ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে মানুষকে সাহায্য করেন। ডাক্তাররা কঠোর প্রশিক্ষণ এবং পড়াশোনা করে এই পেশায় আসেন। একজন ডাক্তারের প্রধান কাজগুলো হলো:

  • রোগ নির্ণয়: রোগীর লক্ষণ, শারীরিক পরীক্ষা এবং বিভিন্ন টেস্টের ফলাফলের উপর ভিত্তি করে রোগ খুঁজে বের করা।
  • চিকিৎসা প্রদান: ওষুধ, থেরাপি বা অন্যান্য পদ্ধতি ব্যবহার করে রোগের নিরাময় করা।
  • পরামর্শ দেওয়া: রোগ প্রতিরোধের জন্য স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের পরামর্শ দেওয়া।
  • অপারেশন করা: সার্জারি বা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে জটিল রোগের সমাধান করা।

ডাক্তারদের বিভিন্ন ধরনের বিশেষত্ব থাকে, যেমন—শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ (Pediatrician), হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ (Cardiologist), চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ (Dermatologist) ইত্যাদি।

ড. এবং ডা. এর মধ্যে পার্থক্য কি? সাধারণত, বাংলা ভাষায় ‘ড.’ এবং ‘ডা.’-এর মধ্যে একটি স্পষ্ট পার্থক্য রয়েছে। ড. (ডক্টর): এই সংক্ষিপ্ত রূপটি সাধারণত সেই সব ব্যক্তির নামের আগে ব্যবহার করা হয়, যারা কোনো বিষয়ে পিএইচডি (Ph.D.) ডিগ্রি অর্জন করেছেন। অর্থাৎ, যারা চিকিৎসা বিজ্ঞান ছাড়া অন্য কোনো বিষয়ে ডক্টরেট করেছেন, যেমন—অর্থনীতি, সাহিত্য, বিজ্ঞান, দর্শন, বা অন্য কোনো একাডেমিক ক্ষেত্রে। এরা কোনো রোগী দেখেন না, বরং গবেষণা, শিক্ষকতা বা অন্য কোনো পেশার সাথে জড়িত। ডা. (ডাক্তার): এই সংক্ষিপ্ত রূপটি বিশেষভাবে চিকিৎসকদের জন্য ব্যবহার করা হয়। যারা চিকিৎসা বিজ্ঞান (যেমন: এমবিবিএস) পড়েছেন এবং রোগীর রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা প্রদান করেন, তাদের নামের আগে এটি ব্যবহার করা হয়।

সংক্ষেপে,

ড. = ডক্টর (সাধারণত পিএইচডি ডিগ্রিধারীদের জন্য)।

ডা. = ডাক্তার (শুধুমাত্র চিকিৎসকদের জন্য)। এই পার্থক্যটি বাংলা ভাষাভাষী অঞ্চলে প্রচলিত, যদিও ইংরেজিতে উভয় ক্ষেত্রেই “Dr.” ব্যবহার করা হয়।

বাংলাদেশে, “ডাক্তার” বা “ডাঃ” পদবি ব্যবহার করার অনুমতি শুধুমাত্র সেই ব্যক্তিদের আছে যারা এমবিবিএস (MBBS) বা বিডিএস (BDS) ডিগ্রিধারী এবং বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (BMDC) এর সাথে নিবন্ধিত। অন্যথায়, এটি একটি বেআইনি কাজ এবং “ভূয়া পদবি ব্যবহার” হিসেবে গণ্য হবে।

ডা. পদবী ব্যবহার নিয়ে নতুন নির্দেশনা কি?

ডাক্তার (ডা.) পদবী ব্যবহারের ক্ষেত্রে সম্প্রতি বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল (বিএমডিসি) এবং হাইকোর্ট থেকে নতুন নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। এমবিবিএস ও বিডিএস ডিগ্রিধারীরাই কেবল ‘ডাক্তার’ পদবী ব্যবহার করতে পারবেন: হাইকোর্টের রায়ে বলা হয়েছে যে, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল আইন-২০১০ অনুযায়ী, শুধুমাত্র এমবিবিএস (ব্যাচেলর অফ মেডিসিন, ব্যাচেলর অফ সার্জারি) এবং বিডিএস (ব্যাচেলর অফ ডেন্টাল সার্জারি) ডিগ্রিপ্রাপ্ত ব্যক্তিরাই তাদের নামের আগে ‘ডাক্তার’ বা ‘ডা.’ পদবী ব্যবহার করতে পারবেন। অন্যান্য ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীদের জন্য নিষেধাজ্ঞা: ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল ফ্যাকাল্টি (DMF), মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট এবং অন্যান্য ডিপ্লোমা ডিগ্রিধারীরা এখন থেকে তাদের নামের আগে ‘ডাক্তার’ পদবী ব্যবহার করতে পারবেন না। এই নির্দেশনা জনগণের মধ্যে ভুল ধারণা দূর করতে এবং স্বাস্থ্যসেবার মান নিশ্চিত করতে দেওয়া হয়েছে। আইন অমান্য করলে শাস্তির বিধান: আদালত নির্দেশ দিয়েছেন যে, এখন থেকে যদি কোনো ব্যক্তি এমবিবিএস বা বিডিএস ডিগ্রি না থাকা সত্ত্বেও ‘ডাক্তার’ পদবী ব্যবহার করেন, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এক্ষেত্রে তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড অথবা এক লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানা বা উভয় দণ্ড হতে পারে। যদি এই অপরাধ চলতে থাকে, তাহলে প্রতিদিনের জন্য ৫০ হাজার টাকা করে অতিরিক্ত জরিমানা করা হবে। এই নির্দেশনাটি মূলত চিকিৎসা ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনা এবং সাধারণ মানুষকে অপচিকিৎসার হাত থেকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে জারি করা হয়েছে।

পূর্বের আদেশ ২০২২

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর

আইন শাখা মহাখালী, ঢাকা-১২১২।

তারিখঃ ৫/০১/২০২২খ্রি

স্বারক নং-ডিজিএইচএস/এল.এ-১২৫/২১/ ৭ প্রাপক,

সিভিল সার্জন (সকল)।

বিষয়ঃ মহামান্য সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রীট পিটিশন নং-৫৩৫/২০১৯ মামলার রায় প্রসংগে।

উপযুক্ত বিষয়ের প্রেক্ষিতে জানানাে যাচ্ছে যে, মহামান্য সুপ্রীম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রীট পিটিশন নং-৫৩৫/২০১৯ মােকদ্দমার রায় অনুসারে বিকল্প ধারার চিকিৎসা পদ্ধতির পেশাধারীরা নামের পূর্বে- ডাক্তার লিখতে পারবেন না। বিএমডিসি আইন। ২০১০ এর ২৯ ধারা মােতাবেক নিবন্ধনচুক্ত মেডিকেল বা ডেন্টাল ইনষ্টিটিউট কর্তৃক এমবিবিএস অথবা বিডিএস ডিগ্রীধারী ছাড়া কেউ (ডাঃ) পদবী ব্যবহার করতে পারবেন না। তবে, বিকল্প ধারার চিকিত্সা পদ্ধতির পেশাধারীরা নামের পূর্বে০১। ইন্টিগ্রেটেড ফিজিশিয়ান ০২। কমপ্লিমেন্টারী ফিজিশিয়ান ০৩। ইন্টিগ্রেটেড মেডিসিন প্রাকটিশনার। ০৪। কন্সিমেন্টারী মেডিসিন প্রাকটিশনার- পদবী ব্যবহার করতে পাৱেন ।

এমতাবস্থায়, আপীল মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বর্তমান রীট মামলা নং ৫৩৫/২০১১ এর রায় বহাল থাকবে মর্মে প্রতীয়মান হয়।

ডাঃ পরিমল কুমার পাল

উপ-পরিচালক (আইন শাখায় দায়িত্বপ্রাপ্ত) 

মহাপরিচালক মহােদয়ের পক্ষে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর, মহাখালী, ঢাকা।

 

MBBS ছাড়া কেউ “ডাঃ” পদবী ব্যবহার করতে পারবেন না: ডাউনলোড

Alamin Mia

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে প্রশ্ন থাকলে বা ব্যাখ্যা জানতে পোস্টের নিচে কমেন্ট করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *