বৈষম্য । দাবীর খতিয়ান । পুন:বিবেচনা

অযৌক্তিক বেতন ভাতা ২০২৫ । তিন জনের সংসারে কাটছাঁটেও ২৫ হাজারে মাস চলে না

বর্তমান বাজারের যে মূল্য পরিস্থিতি সেটি নিয়ে আজকে মূলত আলোচনা করব যে সরকারি কর্মচারীগণ তাদের বেতন ভাতা দিয়ে স্বল্প বেতন ভাতা দিয়ে কিভাবে এই উচ্চ মূল্যের বাজারে তাদের সংসার চালাচ্ছেন সেটা নিয়ে মূলত আজকার আলোচনা করব –সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন ভাতা ২০২৫

সরকারি কর্মচারীদের বেতন কত এখন কেমন? – ১১ থেকে ২০ গ্রেডের কর্মচারীদের বেতন ভাতা খুবই খারাপ সেটা হচ্ছে দেখা যাচ্ছে ১৪ থেকে ২৪/২৪ হাজার টাকা সর্বোচ্চ বেতন পেয়ে থাকে। বিশ গ্রেডের কর্মচারীদের যে বেতন শুরু সেটি কিন্তু ৮২৫০ টাকা সেখান থেকে বাড়িভাড়া, শিক্ষা ভাতা, চিকিৎসা সমস্ত কিছু যুক্ত করে দেখা যাচ্ছে ১৪ হাজার টাকার বেতন পাচ্ছে। বেশ কিছুদিন ধরে বা কয়েক বছর যেতে চাকরি করেছেন তাদের বেতন ভাতা দেখা যাচ্ছে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকার মধ্যে তো এই যে যে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা বেতন এখানে কিন্তু দেখা যাচ্ছে যে তারা জিপিএফ কর্তন করছে তিন থেকে পাঁচ হাজার টাকা। মোটকথা নিম্নগ্রেডের সব কর্মচারী মূলত হাতে পায় ১২ থেকে ২০ হাজার টাকার মধ্যে এবং এই টাকা দিয়েই তাদের মূলত মাস পাঠিয়ে দিতে হয় সংসারের কেনাকাটা, পরিবারের চিকিৎসা, কাপড় চোপড়, বাচ্চা কাচ্চার লেখাপড়া সমস্ত খরচ-ই এর মধ্যেই চালিয়ে নিতে হয়।

প্রতিবছর বেতন বাড়ছে এটি বলতে চাচ্ছেন? মূল্যস্ফীতি যখন ১০ থেকে কি করবেন ১১% এর ঘরে সেখানে প্রতিবছর সরকারি কর্মচারীদের বেতন বাড়ে মাত্র ৫% হারে। বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি মাত্র ৫ পার্সেন্ট হওয়ার ফলে প্রতি বছরই তাদের ফাইভ শতাংশ থেকে ৬ পার্সেন্ট এর মত ঘাটতি থেকে যাচ্ছে তো এই যে যে ঘাটতি এটা কিন্তু তারা কোনভাবেই পূরণ করতে পারছে না কেউ কেউ দেখা যাচ্ছে অসৎ পথ বেছে নিচ্ছে কেউবা ধার দেনা করে সংসার চালাচ্ছে। এই রাস্তার শেষ কোথায় এবং নতুন পে স্কেল না আসা পর্যন্ত তাদের কিন্তু আসলে চলা কষ্ট হয়ে যাবে। একপর্যায়ে দেখা যাবে যখন কোনভাবেই তারা পের উঠছে না তখনই কিন্তু তারা রাস্তায় নেমে যাবে নতুন পে স্কেলের দাবিতে।

মূল্যস্ফীতি কি কমবে? এ প্রশ্নের জবাব দেওয়া খুবই কষ্টকর কারণ যে হারে মূল্যস্ফিতি বাড়ছে এবং টাকার মান কমে যাচ্ছে সেই হারে আসলে মূলুষ স্মৃতি নিয়ন্ত্রণ হচ্ছে না। সরকারও বলছে আসলে একটু সময় লাগবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে আসতে এবং খুব একটা নিয়ন্ত্রণেও আসবে বলে সাধারণ জনগণ মনে করছে না। তাছাড়া ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট বাজার হতে কোটি কোটি টাকা তুলে নিচ্ছে অতি মুনাফা করে। জনসাধারণের দৈনন্দিন জীবন যাপনের জিনিস কেনাকাটা করা দুঃসাধ্য হয়ে পড়ছে। বাজারের সিন্ডিকেট ব্যবস্থা ভাঙতে না পারলে, সুদের হার আরো বৃদ্ধি করতে না পারলে, বাজার মনিটরিং করতে না পারলে, মূল্য স্মৃতি সহসায় কমবে না।

গরুর মাংস বা মাছ দিয়ে পরিবারের পুষ্টির চাহিদা পূরণ করা এখন প্রায় দুঃসাধ্য হয়ে পড়েছে সরকারি কর্মচারীদের জন্য / গরুর মাংস প্রতি কেজি ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে

প্রতিদিনের বাজার তালিকায় আপনি যদি একটু ঘাঁটাঘাটি করেন দেখা যাচ্ছে যে চাল শুরু চাল কিন্তু ৬৮ হাজার টাকা থেকে সর্বোচ্চ ৮০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। গরুর মাংস ৭৫০ টাকা থেকে ৮০০ টাকা খাসির মাংস ৯৫০ টাকা থেকে ১১৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা থেকে ৩০ টাকা। যেখানে ডালের কেজি ১৩০ টাকা সেখানে আসলে সাধারণ জনগণ তাদের পুষ্টির চাহিদা পূরণে ব্যর্থ হচ্ছে  ।

প্রতিদিনের খুচরা বাজার দর

আজকের বাজার দর ২০২৫ । যে সকল পণ্যের দাম নিয়মিত উঠানামা করছে তার তালিকা

  1. ময়দা (প্যাকেট) প্রতি কেজি প্যাঃ ৬৫
  2. সয়াবিন তেল (লুজ) প্রতি লিটার ১৭০
  3. সয়াবিন তেল (বোতল) ২ লিটার ৩৪৫
  4. সয়াবিন তেল (বোতল) ১ লিটার ১৭৪
  5. পাম অয়েল (লুজ) প্রতি লিটার ১৫৬
  6. রাইস ব্রান তেল (বোতল) ৫ লিটার ৯৮০
  7. ছোলা (মানভেদে) প্রতি কেজি ১২০
  8. আলু (মানভেদে) প্রতি কেজি ২৫
  9. পিঁয়াজ (আমদানি) প্রতি কেজি ৫৫
  10. রসুন (দেশী) প্রতি কেজি ২৪০
  11. শুকনা মরিচ (দেশী) প্রতি কেজি ২৫০
  12. হলুদ (দেশী) প্রতি কেজি ৩২০
  13. জিরা প্রতি কেজি ৬৭৫
  14. এলাচ(ছোট) প্রতি কেজি ৪,০০০
  15. মুরগী(ব্রয়লার) প্রতি কেজি ১৯০
  16. চিনি প্রতি কেজি ১২০
  17. ডিম (ফার্ম) প্রতি হালি ৪৪

২১ টাকায় আমদানি করা আলু ৭৫ টাকা বিক্রি করেছে?

হ্যাঁ। যুগান্তর পত্রিকায় এমন একটি সুনামে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছে যেখানে দেখা গেছে ২১ টাকায় যে আলো আমদানি করা হচ্ছে সেই আলোই বাজারে ৭৫ টাকা বিক্রি করেছে অর্থাৎ বাজারে যে সিন্ডিকেট সক্রিয় আছে সেটি কিন্তু সাধারণ জনগন বুঝতে পারছে সরকারও বুঝতে পারছে কিন্তু কোন ভাবেই সরকার এটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। রাষ্ট্রযন্ত্র যদি যুগান্তকারী কোন পদক্ষেপ না নিতে পারে তাহলে কিন্তু এই বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে না এবং জনগণের জীবনে স্বস্তি ফিরিয়ে নাও সম্ভব হবে না। যদিও বর্তমানে আলুর আমদানি এবং উৎপাদনের ফলে ২৫-৩০ টাকায় নেমে এসেছে।

বেতন কাঠামোতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসা উচিৎ? হ্যাঁ। Pinaki Bhattacharya – পিনাকী ভট্টাচার্য  এর ফেসবুক পোস্টে বলেছেন যে, ১১-২০ গ্রেডের সরকারি কর্মচারীদের বেতন নিয়ে আমি আর ইলিয়াস কাজ করবো। আমাদের একটু রিসার্চ করার টাইম দেন মেহেরবানী করে। আমি আর ইলিয়াস সবসময় বাংলাদেশের সুবিধাবঞ্চিত দরিদ্র নিম্নবিত্ত মানুষের পক্ষের মানুষ। আমরা আমাদের সাধ্যের সর্বোচ্চটা দিয়ে আপনাদের জন্য চেষ্টা করবো। কামিয়াব হবো কিনা জানিনা কিন্তু আওয়াজ তুলবো জোরে।

১৭ থেকে বিশ গ্রেট কর্তন বাদে ১১ থেকে ১৪000 টাকা বেতন পায়১৬ থেকে ১৩ গ্রেডে কর্মচারী ১৪ থেকে ২০ হাজার টাকার মত বেতন হাতে পায়।১১ থেকে ১২ গ্রেডের কর্মচারী ২২ থেকে ২৪ হাজার টাকার মধ্যে বেতন হাতে পায়।
একজন কর্মকর্তা ৪০ থেকে ৫০ হাজার পায় মোট বেতনউচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ৬০ থেকে ৮০ হাজার টাকা পায় হাতে পায়কর্মকর্তাদের মোট বেতন ৪০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে এক লক্ষ বিশ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে
   
শ্রেণী ভেদাভেদ
https://youtu.be/dNnBS9ecVPc

Alamin Mia

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ৮ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে বিস্তারিত জানতে admin@bdservicerules.info ঠিকানায় মেইল করতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *