ঢাকা মেডিকেল কলেজের অনেক নারী শিক্ষার্থী ধর্মীয় অনুশাসনের কারণে হিজাব/নিকাব পরিধান করে ক্লাস ও পেশাগত পরীক্ষাসহ বিভিন্ন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে। এমতাবস্থায়, তাদের চেহারা শনাক্ত করার প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে ধর্মীয় অনুভূতির প্রতি সম্মান জানিয়ে নারী শিক্ষক দ্বারা চেহারা শনাক্ত করতে হবে– হিজাব/ নেকাব পরিধানে পরীক্ষা ২০২৫

বাংলাদেশে হিজাব পড়ে কি পরীক্ষা দেয়া যায় না? বাংলাদেশে হিজাব পরে সাধারণত পরীক্ষা দেওয়া যায়। হিজাব পরা কোনো বাধা নয়। তবে, কিছু ক্ষেত্রে, বিশেষ করে কিছু পরীক্ষা বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে, হিজাব পরার কারণে পরীক্ষার্থীদের সমস্যা হতে পারে। সাধারণত, বাংলাদেশে হিজাব একটি ধর্মীয় পোশাক হিসেবে পরিচিত, এবং অনেকেই এটি ব্যক্তিগত পছন্দ হিসেবে পরে। তবে, কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বা পরীক্ষা কেন্দ্র তাদের নিজস্ব নিয়ম অনুযায়ী হিজাব পরার অনুমতি নাও দিতে পারে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মত প্রতিষ্ঠান হিজাব পরিধান করে পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি দেয়।

হিজাব না খুলে বায়োমেট্রিক যাচাই করে ব্যক্তি শনাক্ত করা যায় না? হ্যাঁ, হিজাব বা নেকাব না খুলে বায়োমেট্রিক যাচাই করে ব্যক্তি শনাক্ত করা সম্ভব। বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সাধারণত মুখ, আঙুল বা চোখের আইরিসের মতো বৈশিষ্ট্য ব্যবহার করা হয়। তবে, কেউ যদি হিজাব পরে থাকে, তবে তার মুখ বা চোখের আইরিস দৃশ্যমান না থাকতে পারে। এক্ষেত্রে, কিছু প্রযুক্তিগত সমাধান ব্যবহার করা যেতে পারে, যেমন: হিজাব সহ মুখ শনাক্তকরণ উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে হিজাব বা নেকাবের আড়ালে মুখ শনাক্ত করা সম্ভব। আঙুলের ছাপ হিজাব পরিধানকারীর আঙুলের ছাপও বায়োমেট্রিক শনাক্তকরণের জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে। দৃষ্টি-সংবেদী ক্যামেরা কিছু ক্ষেত্রে, দৃষ্টি-সংবেদী ক্যামেরা ব্যবহার করে শুধুমাত্র মুখ বা চোখের আইরিস দৃশ্যমান অংশ শনাক্ত করা যেতে পারে। এই পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করে, হিজাব বা নেকাব পরিধানকারীদের বায়োমেট্রিক শনাক্তকরণ করা সম্ভব, যা ব্যক্তি শনাক্তকরণের একটি নির্ভরযোগ্য উপায় হতে পারে।

হিজাব কি? হিজাব হলো মুসলিম নারীদের দ্বারা পরিধান করা একটি মাথার আবরণ, যা চুল এবং ঘাড় ঢেকে রাখে। এটি একটি পোশাক যা বিনয়ের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়। হিজাব শব্দটি আরবি থেকে এসেছে, যার অর্থ হলো ঢেকে রাখা বা পর্দার রাখা। হিজাব ইসলাম ধর্ম পালনের একটি অংশ, যেখানে নারীদেরকে তাদের শরীরকে অ-মুসলিম পুরুষদের থেকে ঢেকে রাখার কথা বলা হয়েছে। হিজাব শব্দটি সাধারণভাবে মুসলিম নারীদের দ্বারা পরিধান করা স্কার্ফ বা আব্রতকে বোঝায়। তবে, এর অর্থ কেবল একটি পোশাক নয়, বরং এটি একটি ধারণা যা মুসলিম নারীদের জন্য শরীরের নির্দিষ্ট অংশ ঢেকে রাখার নিয়ম নির্দেশ করে, যা “পর্দা” নামেও পরিচিত। ইসলামে হিজাব পরার বিধান সম্পর্কে ভিন্ন মত রয়েছে। কিছু ইসলামি অনুসারীর মতে, হিজাব পরা বাধ্যতামূলক, যেখানে আবার কিছু অনুসারীর মতে এটি ব্যক্তিগত পছন্দ। তবে, সাধারণভাবে মুসলিম নারীদের মধ্যে হিজাব পরার প্রবণতা বেশি দেখা যায়। হিজাব পরার কারণগুলো হলো: ইসলামের অনুশাসন পালন, বিনয়িতা ও শালীনতা বজায় রাখা, নিজেকে বাইরের মানুষের দৃষ্টি থেকে রক্ষা করা, ধর্মীয় ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির প্রতি সম্মান। হিজাব বিভিন্ন ধরনের হতে পারে, যেমন স্কার্ফ, বোরকা, নিকাব ইত্যাদি। মুসলিম নারীরা তাদের নিজেদের পছন্দ ও প্রয়োজন অনুসারে হিজাব পরতে পারেন।

ব্যক্তি শনাক্তের ক্ষেত্রে চেহারা চেক না করে বায়োমেট্রিক যাচাই করা যেতে পারে। তবে নারীদের মাধ্যমে চেহারা শনাক্ত কিছুটা হলেও উন্নত সিদ্ধান্ত বটে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন এত গুরুত্বপূর্ণ? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, যা ঢাবি নামে পরিচিত, বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এটি বাংলাদেশের প্রাচীনতম ও সবচেয়ে বড় বিশ্ববিদ্যালয়। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা যুদ্ধ পর্যন্ত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহাসিক ভূমিকা রয়েছে। এখানে প্রচুর জ্ঞানী ও প্রভাবশালী ব্যক্তি শিক্ষকতা করেছেন ও ছাত্র ছিলেন। ১৯২১ সালে ব্রিটিশ রাজত্বকালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের আধুনিক ইতিহাসের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এটি কেবল একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নয়, এটি বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনেরও একটি কেন্দ্রবিন্দু ছিল।