সরকারি ছুটি বিধিমালা pdf 2025 । সরকারী চাকুরীতে কি কি ধরনের ছুটি ভোগ করা যায়?
নির্ধারিত ছুটি বিধিমালা, ১৯৫৯ (The Prescribed Leave Rules, 1959) সরকারী কর্মচারীদের ছুটিসম্পর্কিত বিধানাবলী নির্ধারণ করে। এটি ১ জুলাই, ১৯৫৯ থেকে কার্যকর হয়েছে এবং বাংলাদেশ সরকারের স্থায়ী ও অস্থায়ী সকল সরকারি কর্মচারীদের জন্য প্রযোজ্য। এই বিধিমালা বাংলাদেশ সার্ভিস রুলস ও অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিধিমালার পাশে বিকল্প বা অতিরিক্ত বিধান হিসাবে বিবেচিত হয়।-সরকারি ছুটি বিধিমালা pdf 2025
গড় বেতনে ও অর্ধ গড় বেতনে ছুটি- স্থায়ী সরকারী কর্মচারীরা গড় বেতনে ছুটি কর্মকালের ভাগ হারে অর্জন করবেন যেখানে সর্বোচ্চ ৪ মাস একত্রে জমা হবে। অতিরিক্ত ছুটি পৃথক হিসাব সদস্য হিসাবে জমা হয়। গড় বেতনে ছুটি একবারে সর্বোচ্চ ৪ মাস (ব্যাপক ক্ষেত্রে ৬ মাস) ভোগ করা যাবে। অর্ধ-গড় বেতনের ছুটি সীমাহীনভাবে জমা হয় এবং প্রয়োজনে মেডিকেল সার্টিফিকেট হলে সর্বোচ্চ ১২ মাস পর্যন্ত গড় বেতনে রূপান্তর সম্ভব।
ছুটি ভোগের সময় বেতন ও অন্যান্য সুবিধাসমূহ– ছুটিকালীন বেতন গড় বেতনের ছুটিতে পূর্ণ বেতন এবং অর্ধ-গড় বেতনে অর্ধ বেতন হিসেবে প্রদান করা হবে। সরকারি কর্মচারী যে দেশেই ছুটি কাটান না কেন, ছুটিকালীন বেতন বাংলাদেশী মুদ্রায় বাংলাদেশে প্রদান নিশ্চিত থাকে। গড় বেতনে ছুটি ভোগের সময় বাড়িভাড়া, চিকিৎসা ভাতা, সংবাদপত্র সুবিধা পাওয়ার যোগ্য, তবে ভ্রমণ ভাতা, যাতায়াত ভাতা ও আপ্যায়ন ভাতা প্রযোজ্য হবে না।
বিশেষ ধরণের ছুটি ও বিধান- প্রসূতি ছুটির মেয়াদ ৬ মাস নির্ধারিত এবং এটি কর্মচারীর “ছুটি হিসাব” থেকে বাদ যাবে না। অধ্যয়ন ছুটি সর্বোচ্চ ২ বছর পর্যন্ত দেওয়া যাবে যা কর্মকাল হিসাবে গণ্য হবে তবে ছুটি হিসাবের জন্য নয়। অসাধারণ ছুটি বেতনহীন, বিশেষ অবস্থায় অনুমোদিত, স্থায়ী কর্মচারীদের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৩ মাস। বিশেষ অক্ষমতাজনিত ছুটি (যেমন দুর্ঘটনা, কাজের সময় আঘাত) মঞ্জুর করা হয় মেডিকেল বোর্ডের দ্বারা প্রত্যয়িত সময়ের জন্য, যার সর্বোচ্চ মেয়াদ ২৪ মাস পর্যন্ত হতে পারে। সংগনিরোধ ছুটি সংক্রামক রোগে অফিসে অনুপস্থিতির জন্য, সর্বাধিক ২১ থেকে ৩০ দিন পর্যন্ত মঞ্জুর।
ছুটির হিসাব ও কর্মকাল গণনা- ছুটির হিসাবের জন্য প্রকৃত কর্মকাল, যোগদানকাল, প্রশিক্ষণকাল, দেশের অভ্যন্তরে বা বাইরে সরকারী কাজের সময়, নৈমিত্তিক ও সংগনিরোধ ছুটির সময় গণনায় অন্তর্ভুক্ত থাকবে। অন্যান্য প্রকার ছুটির সময় শ্রমকাল হিসেবে গণনা হবে না।
ছুটি অনুমোদনের নিয়মাবলী- ছুটি অনুমোদনকারী কর্তৃপক্ষ ছুটি আবেদন, মেডিকেল সার্টিফিকেট যাচাই, এবং অতিরিক্ত বা বিশেষ ছুটি অনুমোদনের জন্য দায়িত্বশীল থাকবেন। ছুটির মেয়াদ ও শর্ত অনুযায়ী বিভিন্ন প্রকার ছুটির ব্যবস্থাপনা করা হবে। এই বিধিমালা বাংলাদেশ সরকারের সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ছুটির নিয়ম, শ্রেণীবিন্যাস, বেতন ও অন্যান্য সুবিধাদি নির্ধারণ করে সরকারের বিভিন্ন বিভাগের মধ্যে ছুটি সম্পর্কিত অনিয়ম ও জটিলতা হ্রাসে সহায়তা করে। প্রয়োজন অনুযায়ী ১৯৫৯ সাল থেকে বিগত সময়ে আনীত সংশোধনী ও আধুনিক নিয়মাবলীও এতে প্রতিফলিত রয়েছে।
নির্ধারিত ছুটি বিধিমালা, ১৯৫৯ ফান্ডামেন্টাল রুলস, বাংলাদেশ সার্ভিস রুলস এবং সরকার কর্তৃক সময়ে সময়ে জারীকৃত আদেশ দ্বারা ছুটিসমূহ নিয়ন্ত্রিত হয়। ছুটিসমূহ হইতেছে-
১। অর্জিত ছুটি
২। অক্ষমতাজনিত বিশেষ ছুটি
৩। অসাধারণ ছুটি
৪। সঙ্গনিরোধ ছুটি
৫। অধ্যয়ন ছুটি
৬। হাসপাতাল ছুটি বা চিকিৎসালয় ছুটি
৭। প্রসূতি ছুটি
৮। অবকাশ বিভাগের ছুটি
৯। বিশেষ অসুস্থ্যতাজনিত ছুটি
১০। প্রাপ্যতা বিহীন বা অপ্রাপ্য ছুটি
১১। বিভাগীয় ছুটি
১২। বাধ্যতামূলক ছুটি
১৩। অবসর প্রস্তুতি ছুটি বা অবসর উত্তর ছুটি
১৪। বিনা বেতনে ছুটি
১৫। নৈমিত্তিক ছুটি
১৬। সাধারণ বা সরকারি ছুটি
১৭। শ্রান্তি বিনোদন ছুটি

এসব ছুটি বিভিন্ন কারণ বশত প্রদান করা হয় বা নেয়া যায়। সাধারণত নৈমিত্তিক ছুটি পারিবারিক বা ব্যক্তিগত কাজ সারতে নেয়া হয়। ১০ দিনের অধিক ছুটির প্রয়োজন হলে অর্জিত ছুটি নিতে হয়। অন্যান্য ছুটিগুলোর উপযুক্ত কারণ প্রযোজ্য হয়।
ছুটির ধরন ও শর্তাবলী । বিধিমালায় মোট ১৭টি ছুটির ধরন উল্লেখ রয়েছে, যেমন—
অর্জিত ছুটি (Earned Leave)
অসাধারণ ছুটি (Extraordinary Leave)
অধ্যয়ন ছুটি (Study Leave)
প্রসূতি ছুটি (Maternity Leave)
প্রাপ্যতাবিহীন ছুটি (Leave not due)
অবসর উত্তর ছুটি (Post Retirement Leave)
নৈমিত্তিক ছুটি (Casual Leave)
সাধারণ ও সরকারী ছুটি (Public and Government holiday)
শ্রান্তি বিনোদন ছুটি (Rest and Recreation Leave)
বিশেষ অক্ষমতাজনিত ছুটি (Special Disability Leave)
চিকিৎসালয় ছুটি (Hospital Leave)
বাধ্যতামূলক ছুটি (Compulsory Leave)
বিনা বেতনে ছুটি (Leave without pay) ইত্যাদি।



