সর্বশেষ প্রকাশিত পোস্টসমূহ

নবম পে-স্কেল ২০২৫ । সচিবদের ‘বাস্তবসম্মত’ সুপারিশের দিকে নজর কমিশনের, চূড়ান্ত প্রতিবেদন আসছে শিগগিরই

নবম পে-স্কেল কার্যকর হওয়ার সময়কাল ও রূপরেখা নিয়ে সরকারি কর্মচারী মহলে এখনও অনিশ্চয়তা থাকলেও, পে-কমিশনের কাজ এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে। অন্তর্বর্তী সরকারের সময়কালে এই স্কেল চালু হবে কি না—সেই জল্পনার মধ্যেই কমিশন জানিয়ে দিয়েছে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই তারা তাদের চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেবে

কমিশন সূত্রে জানা যায়, চূড়ান্ত সুপারিশ প্রণয়নের আগে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও সরকারি দপ্তরের ৭০ জনেরও বেশি সচিবের মতামত চার দফায় সংগ্রহ করা হয়েছে। প্রতিটি সভায় ১৭ বা তার বেশি সচিব অংশ নেন এবং তারা বেশিরভাগই ‘বাস্তবসম্মত সুপারিশ’-এর পক্ষে মত দিয়েছেন।


সচিবদের মতামত: আর্থিক সক্ষমতা ও ভবিষ্যৎ ব্যয় বিবেচনায় গুরুত্ব

পে-কমিশনের সঙ্গে যুক্ত এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, কর্মচারী সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে বর্তমান বেতনের ৩ থেকে ৪ গুণ বৃদ্ধির যে দাবি তোলা হয়েছিল, সচিবরা সেই ধরনের অতিরিক্ত প্রস্তাবকে সমর্থন করেননি

তাদের মূল বক্তব্য হলো:

  • দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি বিবেচনায় বেতন বৃদ্ধি প্রয়োজন।

  • তবে সরকারের আর্থিক সক্ষমতা অবশ্যই মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

  • আগামী ৫ থেকে ১০ বছরে জীবনযাত্রার ব্যয় কতটা বাড়তে পারে, সেই বিষয়গুলোও সুপারিশের মধ্যে রাখার পরামর্শ দিয়েছেন তারা।


কমিশনের অগ্রগতি: জোর দেওয়া হচ্ছে গ্রেড ও ন্যায্য সমন্বয়ে

পে-কমিশন ইতোমধ্যে তাদের অর্ধেকের বেশি কাজ শেষ করেছে। তারা জানিয়েছে, সচিবদের দেওয়া মতামতগুলো বর্তমানে পর্যালোচনা করা হচ্ছে। আগামী মাসেই চূড়ান্ত সুপারিশ জমা দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

কমিশন বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে নিম্নলিখিত বিষয়গুলোতে:

  • সর্বনিম্ন বেতন নির্ধারণ।

  • গ্রেড পুনর্বিন্যাস

  • কর্মচারীদের জন্য ন্যায্য সমন্বয়

চূড়ান্ত প্রতিবেদনে সচিবদের এই মতামতগুলো গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করা হবে বলেও কমিশন নিশ্চিত করেছে। নবম পে-স্কেল প্রণয়নের এই প্রক্রিয়ায় আগে অনলাইনে মতামত নেওয়ার পাশাপাশি প্রায় আড়াই শ সংগঠনের সঙ্গেও আলোচনা করেছে পে-কমিশন।

৩ বা ৪ গুণ বেতন বৃদ্ধি সম্ভাবনা নাই?

পে-কমিশনের সঙ্গে যুক্ত কর্মকর্তা ও সচিবদের মতামতের ভিত্তিতে ৩ বা ৪ গুণ বেতন বৃদ্ধির সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। এর কারণগুলো হলো:

  • সচিবদের অসমর্থন: কমিশন সূত্র জানিয়েছে যে কিছু সংগঠন ৩-৪ গুণ বেতন বৃদ্ধির দাবি জানালেও, সচিবরা সেই ধরনের অতিরিক্ত প্রস্তাবকে সমর্থন করেননি

  • আর্থিক সক্ষমতা: সচিবরা স্পষ্ট করে বলেছেন যে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে বেতন বাড়ানো দরকার হলেও, সরকারের আর্থিক সক্ষমতা মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। ৩ বা ৪ গুণ বেতন বৃদ্ধি সরকারের কোষাগারের ওপর বিশাল চাপ সৃষ্টি করবে, যা সচিবরা ‘বাস্তবসম্মত’ মনে করছেন না।

  • বাস্তবসম্মত সুপারিশের গুরুত্ব: কমিশন এবং সচিব উভয় পক্ষই ‘বাস্তবসম্মত সুপারিশ’-এর ওপর জোর দিচ্ছে, যা সাধারণত বিপুল পরিমাণ বেতন বৃদ্ধির পক্ষে থাকে না।

সুতরাং, নবম পে-স্কেলে বেতন বাড়বে, তবে তা সরকারের আর্থিক সক্ষমতা এবং জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে। ৩ বা ৪ গুণ বৃদ্ধির মতো বড় উল্লম্ফনের সম্ভাবনা কম।

Alamin Mia

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে প্রশ্ন থাকলে বা ব্যাখ্যা জানতে পোস্টের নিচে কমেন্ট করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *