১৬টি গ্রেড ও প্রত্যাশিত বেতন ২০২৫ । সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচিত পে-স্কেল নিয়ে সরকারি কর্মচারীদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া?
সম্প্রতি সোশ্যাল মিডিয়া এবং বিভিন্ন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে ‘পে-কমিশন/২৫’-এর নাম দিয়ে একটি কথিত বেতন কাঠামোর সুপারিশ ছড়িয়ে পড়েছে, যা সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এই অফিসিয়ালভাবে নিশ্চিত না হওয়া কাঠামোর মূল বৈশিষ্ট্য হলো ১৬টি গ্রেডে বেতন নির্ধারণ করা এবং গ্রেড সংখ্যা কমানোর বিষয়টি। তবে, ছড়িয়ে পড়া এই স্কেলে প্রস্তাবিত বেতন ও অন্যান্য ভাতার পরিমাণ অনেক কর্মচারীর প্রত্যাশিত স্কেলের চেয়ে কম বলে মনে হওয়ায় তাদের মধ্যে অসন্তোষ ও হতাশা বিরাজ করছে।
আলোচিত স্কেলের প্রধান দিক
ছড়িয়ে পড়া তথ্যে বলা হয়েছে, চলমান ২০টি গ্রেডকে কমিয়ে ১৬টি গ্রেডে নামিয়ে আনা হবে এবং কয়েকটি গ্রেডকে একীভূত করা হবে। প্রস্তাবিত বেতনের কাঠামোতে সর্বোচ্চ বেতন (১ম গ্রেড) ৳১,৪৫,০০০ এবং সর্বনিম্ন বেতন (১৬তম গ্রেড) ৳২৫,০০০ করার সুপারিশ করা হয়েছে।
গ্রেড কমানোর প্রস্তাব (কথিত):
- ৩য় ও ৪র্থ গ্রেড একীভূত হয়ে নতুন ৩য় গ্রেড (৳৯২,০০০)।
- ৫ম ও ৬ষ্ঠ গ্রেড একীভূত হয়ে নতুন ৪র্থ গ্রেড (৳৮৫,০০০)।
- ১৪তম ও ১৫তম গ্রেড একীভূত হয়ে নতুন ১২তম গ্রেড (৳৩৪,০০০)।
- ১৬তম ও ১৭তম গ্রেড একীভূত হয়ে নতুন ১৩তম গ্রেড (৳৩২,০০০)।
অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ও অসন্তোষ
বেতনের পাশাপাশি অন্যান্য ভাতার প্রস্তাবনাগুলোও কর্মচারীদের আশানুরূপ নয়।
সরকারি কর্মচারীদের মনোভাব: “এই পে-স্কেল কাম্য নয়”
বিভিন্ন সরকারি অফিসে কর্মরত কর্মচারীরা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এটি যদি পে-কমিশনের চূড়ান্ত সুপারিশ হয়, তবে এটি তাদের আর্থিক দুর্দশা আরও বাড়িয়ে তুলবে। একজন উচ্চ-মাধ্যমিক স্তরের কর্মচারী বলেন, “গত কয়েক বছরে বাজারের সবকিছুর দাম দ্বিগুণ হয়েছে। যদি ইনক্রিমেন্ট ৫% থাকে এবং অন্যান্য ভাতা সামান্য বাড়ে, তবে এটি কার্যত আমাদের বেতন কমিয়ে দেওয়ার শামিল।”
নিম্ন গ্রেডের কর্মচারীরা বিশেষ করে সর্বনিম্ন গ্রেডে ৳২৫,০০০ করার প্রস্তাবে হতাশা প্রকাশ করেছেন। তারা মনে করেন, বর্তমান জীবনযাত্রার মান অনুযায়ী সর্বনিম্ন বেতন কমপক্ষে ৳৩০,০০০ থেকে ৳৩৫,০০০ হওয়া উচিত।
কর্মচারীরা এখন সরকারের চূড়ান্ত ও আনুষ্ঠানিক ঘোষণার দিকে তাকিয়ে আছেন, যেখানে তারা প্রত্যাশা করেন যে জীবনযাত্রার ব্যয়, মুদ্রাস্ফীতি এবং তাদের শ্রমের ন্যায্য মূল্যের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একটি যুগোপযোগী ও কল্যাণমূলক বেতন কাঠামো ঘোষণা করা হবে।
দ্রষ্টব্য: এই নিউজ আইটেমটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া একটি অসমর্থিত তথ্যের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে এবং এটি পে-কমিশনের চূড়ান্ত বা সরকারিভাবে অনুমোদিত সুপারিশ নয়।
অপ্রত্যাশিত বেতন কাঠামো ২০২৫ । পে-কমিশন নাকি গত মিটিংয়ে এমনটি সুপারিশ করেছে। সোর্সঃ চালাইয়্যা দেন ১৬ টি গ্রেড হিসেবে ৯ম পে-স্কেল সুপারিশ করেছে? না।
- ১ম– ১৪৫০০০৳
- ২য় — ১২০০০০৳
- ৩য়+৪র্থ= ৩য়– ৯২০০০৳
- ৫ম+৬ষ্ঠ =৪র্থ—৮,৫০০০৳
- ৭ম= ৫ম–৭৮০০০৳
- ৮ম= (৬ষ্ঠ)-৭২০০০৳
- ৯ম= ৭ম–৬৬০০০৳
- ১০ম= ৮ম–৫৬০০০৳
- ১১= ৯ম–৪৮০০০৳
- ১২=১০ম–৪২০০০৳
- ১৩=১১তম–৩৮০০০৳
- ১৪+১৫=১২তম–৩৪০০০৳
- ১৬+১৭=১৩তম–৩২০০০৳
- ১৮– ১৪ তম— ৩০০০০৳
- ১৯–১৫তম—২৮০০০৳
- ২০–১৬ তম—২৫০০০৳
অন্যান্য সুযোগ সুবিধা : ইনক্রিমেন্ট : ৫%, বাড়িভাড়া:৪৫%, চিকিৎসা:২০০০৳, শিক্ষাভাতা: ২ সন্তান ১৫০০৳, ১ সন্তান ৭৫০ ৳, টিফিন: ৫০০৳, যাতায়াত:৫০০৳। এমন পে স্কেল সরকারি কর্মচারীদের কাম্য নয়।
সরকারি কর্মচারীদের নতুন বেতন কাঠামোর প্রত্যাশা: সর্বনিম্ন বেতন ৳৩৫,০০০ এবং ১২ গ্রেড
দেশের সরকারি কর্মচারীরা নতুন পে-স্কেল/পে-কমিশনের সুপারিশে প্রত্যাশিত বেতন কাঠামো নিয়ে তাদের সুনির্দিষ্ট দাবি তুলে ধরেছেন। তাদের এই দাবি মূলত তিনটি প্রধান লক্ষ্যের ওপর ভিত্তি করে: গ্রেড সংখ্যা হ্রাস, জীবনযাত্রার ব্যয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ সর্বনিম্ন বেতন, এবং আর্থিক বৈষম্য কমানোর জন্য ১:৪ বেতন অনুপাত।
১. ১২ গ্রেডের বেতন কাঠামো কেন চাওয়া হচ্ছে?
বর্তমানে সরকারি চাকরিতে ২০টি গ্রেড বিদ্যমান। কর্মচারীরা মনে করেন, এই বিপুল সংখ্যক গ্রেড পদোন্নতি এবং আন্তঃবিভাগীয় বৈষম্য তৈরি করে। তারা ১২টি গ্রেডের কাঠামো দাবি করছেন, যার প্রধান সুবিধাগুলো হলো:
- গ্রেড বৈষম্য হ্রাস: কম গ্রেড থাকলে পদোন্নতির জট কমবে এবং একই ধরনের কাজের জন্য বেতন বৈষম্য হ্রাস পাবে।
- কাঠামো সরলীকরণ: বেতন কাঠামো সহজ ও বোধগম্য হবে, যা প্রশাসনিক জটিলতা কমাতে সাহায্য করবে।
- গতিশীলতা বৃদ্ধি: একই গ্রেডে দীর্ঘদিন আটকে থাকার প্রবণতা কমবে।
২. সর্বনিম্ন বেতন ৳৩৫,০০০ এবং ১:৪ অনুপাতের গুরুত্ব
এই দাবির মূল চালিকাশক্তি হলো মুদ্রাস্ফীতি এবং জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি।
- ৳৩৫,০০০ সর্বনিম্ন বেতন: কর্মচারীরা বলছেন, বর্তমান বাজারে নিত্যপণ্য, বাড়িভাড়া এবং চিকিৎসা ব্যয় যে হারে বেড়েছে, তাতে ২০তম গ্রেডের একজন কর্মচারী (যা এখন ১২তম গ্রেড হবে) যদি ৳২৫,০০০ বা ৳২৮,০০০ বেতন পান, তবে তার পক্ষে শহরে জীবনধারণ করা অসম্ভব। এ কারণেই ন্যূনতম ৳৩৫,০০০ টাকা দাবি করা হয়েছে, যা বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতির সঙ্গে কিছুটা হলেও সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে।
- ১:৪ বেতন অনুপাত: এই অনুপাতের অর্থ হলো যদি সর্বনিম্ন বেতন হয় ৳৩৫,০০০, তবে সর্বোচ্চ বেতন হবে এর চার গুণ, অর্থাৎ ৳১,৪০,০০০ টাকা। এই অনুপাত দাবি করার কারণ হলো উচ্চ গ্রেড ও নিম্ন গ্রেডের কর্মচারীদের মধ্যে বেতনের পার্থক্য যৌক্তিক সীমায় রাখা। এটি বৈষম্য কমাতে এবং নিম্ন আয়ের কর্মচারীদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে সহায়ক হবে।
প্রস্তাবিত কাঠামোর সম্ভাব্য দিক
যদি সরকারের কাছে কর্মচারীদের এই দাবিগুলো গৃহীত হয়, তবে পে-স্কেলটি দেখতে মোটামুটি এমন হতে পারে:
(উল্লেখ্য: এটি কেবল ১:৪ অনুপাত এবং ৳৩৫,০০০ সর্বনিম্ন বেতনের ভিত্তিতে একটি উদাহরণমূলক কাঠামো।)
সরকারের বিবেচনার বিষয়
সরকারি কর্মচারীদের এই দাবিগুলো একদিকে যেমন প্রশাসনিক গতিশীলতা ও আর্থিক বৈষম্য কমানোর ইঙ্গিত দেয়, তেমনি অন্যদিকে রাজস্বের ওপর চাপ সৃষ্টির বিষয়টিও সরকারের বিবেচনার কেন্দ্রে থাকবে। পে-কমিশনকে এই দাবির ন্যায্যতা এবং দেশের সার্বিক অর্থনৈতিক সক্ষমতার মধ্যে একটি ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান নিতে হবে।
কর্মচারীরা এখন চূড়ান্ত ঘোষণার অপেক্ষায় আছেন, যেখানে তাদের প্রত্যাশিত এই দাবিগুলো কতটা পূরণ হয়, তা দেখার বিষয়।