বৈষম্য । দাবীর খতিয়ান । পুন:বিবেচনা

১:৪ অনুপাত ও সর্বনিম্ন ৩৫,০০০ টাকা: নবম পে-স্কেলে বৈষম্য দূর করার দাবি

৩০ আগস্ট, ২০২৫ – সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে বিদ্যমান বেতন বৈষম্য দূর করে একটি নতুন ও বৈষম্যহীন বেতন কাঠামো বাস্তবায়নের জন্য জোর দাবি উঠেছে। বিভিন্ন কর্মচারী সংগঠন এবং ফোরামের পক্ষ থেকে সরকারের কাছে জোরালোভাবে আবেদন জানানো হয়েছে যে, নবম পে-স্কেল প্রণয়নকালে সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন বেতনের অনুপাত ১:৪ করা হোক এবং সর্বনিম্ন বেতন ৩৫,০০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। – ১:৪ অনুপাত ও সর্বনিম্ন ৩৫,০০০ টাকা: নবম পে-স্কেলে বৈষম্য দূর করার দাবি

পে-স্কেলে বৈষম্যহীন কাঠামোর দাবি? হ্যাঁ। বর্তমানে প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের বেতন কাঠামোতে গ্রেড অনুসারে ব্যাপক বৈষম্য বিদ্যমান। সর্বনিম্ন গ্রেড থেকে সর্বোচ্চ গ্রেডের বেতনের পার্থক্য অনেক বেশি, যা কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষের প্রধান কারণ। এই বৈষম্য দূর করার জন্য বিভিন্ন কর্মচারী সংগঠন দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছে। তাদের মূল দাবিগুলো হলো: ১:৪ অনুপাত বাস্তবায়ন: সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন গ্রেডের বেতনের অনুপাত ১:৪ করা। অর্থাৎ, যদি সর্বনিম্ন গ্রেডের কর্মচারীর বেতন ৩৫,০০০ টাকা হয়, তবে সর্বোচ্চ গ্রেডের বেতন হবে ১,৪০,০০০ টাকা। এটি একটি ন্যায়সঙ্গত বেতন কাঠামো নিশ্চিত করবে।

গ্রেড সংখ্যা কমানো: বর্তমান ২০টি গ্রেডকে কমিয়ে ১২টি গ্রেডে নিয়ে আসা। এর ফলে বেতন নির্ধারণ প্রক্রিয়া সহজ হবে এবং প্রশাসনিক জটিলতা দূর হবে।

নবম পে কমিশন ও বাস্তবায়ন কি ন্যায়সঙ্গত হবে? সরকার সম্প্রতি নবম জাতীয় পে কমিশন, ২০২৫ গঠন করেছে। এই কমিশন সরকারি কর্মচারীদের বেতন, ভাতা এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা পর্যালোচনা করে নতুন বেতন কাঠামো প্রণয়নের সুপারিশ করবে। কমিশন গঠনের পর থেকেই কর্মচারী সংগঠনগুলো তাদের দাবিগুলো তুলে ধরেছে। তাদের বিশ্বাস, নবম পে কমিশন এই দাবিগুলো বিবেচনা করে একটি যুগোপযোগী এবং বৈষম্যহীন বেতন কাঠামো বাস্তবায়নে সহায়তা করবে। আর্থিক চাপ সত্ত্বেও, কর্মচারী সংগঠনগুলো মনে করে যে এই বিনিয়োগ সরকারি কর্মীদের কর্মস্পৃহা এবং কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি করবে, যা দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। আগামী ছয় মাসের মধ্যে পে কমিশনের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে এই দাবিগুলো কতটা প্রতিফলিত হয়, তা দেখার জন্য সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে। সরকারি কর্মচারীরা আশা করছেন, নবম পে-স্কেল একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে, যেখানে সবার জন্য সমান সুযোগ ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত হবে।

📰 বৈষম্যহীন ৯ম পে-স্কেল বাস্তবায়নের দাবি : সর্বনিম্ন বেতন ৩৫ হাজার, সর্বোচ্চ ১ লাখ ৪০ হাজার- সরকারি চাকরিজীবীদের দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আবারও জোরালোভাবে সামনে এসেছে বৈষম্যহীন ৯ম পে-স্কেল বাস্তবায়নের দাবি। দেশের বিভিন্ন শ্রেণির সরকারি কর্মচারীরা বলছেন, ১ঃ৪ অনুপাতে বেতন নির্ধারণ করে দ্রুত নতুন পে-স্কেল ঘোষণা করা এখন সময়ের দাবি। প্রস্তাবিত কাঠামো অনুযায়ী সর্বনিম্ন বেতন নির্ধারণ করা হবে ৩৫,০০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ১,৪০,০০০ টাকা। এতে করে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা থেকে শুরু করে মাঠপর্যায়ের কর্মচারী—সবার মধ্যে সমতা আসবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন চাকরিজীবীরা।

সরকারি চাকরিজীবীদের একাধিক সংগঠন জানিয়েছে, বিদ্যমান পে-স্কেলে একই গ্রেডের কর্মচারীদের বেতন কাঠামোতেও বৈষম্য রয়েছে। বিশেষ করে মাঠ প্রশাসনের কর্মীরা দাবি করছেন, তাদের বেতন ও সুযোগ-সুবিধা অন্য বাহিনীর তুলনায় অনেক কম।

📌 ইতিহাস ও প্রেক্ষাপট- বাংলাদেশে বর্তমানে কার্যকর রয়েছে ৮ম জাতীয় বেতনস্কেল, যা ২০১৫ সালে ঘোষণা করা হয়েছিল। সেই অনুযায়ী সর্বনিম্ন বেতন ধরা হয়েছিল ৮,২৫০ টাকা এবং সর্বোচ্চ বেতন ৭৮,০০০ টাকা। কিন্তু গত আট বছরে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, জীবনযাত্রার ব্যয় এবং অর্থনৈতিক বাস্তবতা বিবেচনায় অনেকেই মনে করেন যে পুরনো পে-স্কেল এখন আর প্রাসঙ্গিক নয়। সর্বনিম্ন বেতন ৩৫,০০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ বেতন ১,৪০,০০০ টাকা। এই অনুপাত এবং টাকার অঙ্ক ধরে একটি সম্ভাব্য বেতন স্কেল নিচে সাজানো হলো। এই স্কেলটি সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বৈষম্য দূর করার দাবির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

এখানে তুলনামূলক গ্রাফ দেখানো হয়েছে যেখানে ৮ম পে-স্কেলের সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ বেতন এবং প্রস্তাবিত ৯ম পে-স্কেলের বেতন পাশাপাশি দেখানো হয়েছে।

১২ গ্রেডের নতুন বেতন স্কেল (প্রস্তাবিত) । এই প্রস্তাবিত স্কেলটি মূলত গ্রেড ১ থেকে গ্রেড ১২ পর্যন্ত বিন্যস্ত করা হয়েছে। এখানে প্রতিটি গ্রেডের মূল বেতন, এবং সেই অনুযায়ী পরবর্তী বেতন বৃদ্ধির জন্য একটি সম্ভাব্য ধাপ বা ইনক্রিমেন্ট দেখানো হয়েছে। গ্রেড মূল বেতন (টাকা) ইনক্রিমেন্ট (টাকা)

  • গ্রেড ১ ১,৪০,০০০ (স্থির)
  • গ্রেড ২ ১,২০,০০০- ৭,০০০
  • গ্রেড ৩ ১,০০,০০০- ৫,০০০
  • গ্রেড ৪ ৯০,০০০- ৪,০০০
  • গ্রেড ৫ ৮০,০০০- ৪,০০০
  • গ্রেড ৬ ৭০,০০০- ৩,০০০
  • গ্রেড ৭ ৬০,০০০- ৩,০০০
  • গ্রেড ৮ ৫২,০০০- ২,৫০০
  • গ্রেড ৯ ৪৫,০০০- ২,০০০
  • গ্রেড ১০ ৪০,০০০- ১,৫০০
  • গ্রেড ১১ ৩৮,০০০- ১,২০০
  • গ্রেড ১২ ৩৫,০০০- ১,০০০

১:১০ বেতন কাঠামোর পরিবর্তন চান কর্মচারীরা?

প্রজাতন্ত্রের সকল কর্মচারীদের জন্য বৈষম্যহীন বেতন কাঠামো বাস্তবায়নের দাবিতে নতুন করে জোরালো আন্দোলনের ডাক এসেছে। সংশ্লিষ্ট মহল জানিয়েছে, ১ঃ৪ অনুপাতে বেতন নির্ধারণ করে ৯ম পে-স্কেল দ্রুত বাস্তবায়ন করতে হবে।  প্রস্তাবিত কাঠামো অনুযায়ী, সর্বনিম্ন বেতন ধরা হয়েছে ৩৫,০০০ টাকা এবং সর্বোচ্চ ১,৪০,০০০ টাকা। আন্দোলনকারীরা বলছেন, বর্তমান বেতন কাঠামোতে গ্রেডভেদে বড় ধরনের বৈষম্য রয়েছে, যা সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে অসন্তোষ সৃষ্টি করছে। তাদের দাবি, একই প্রশাসনিক কাঠামোতে কর্মরত কর্মকর্তাদের বেতন বৈষম্য দূর না করলে দক্ষ জনবল ধরে রাখা কঠিন হবে। তাই দ্রুত ৯ম পে-স্কেল কার্যকর করে সবার জন্য ন্যায্য বেতন নিশ্চিত করতে হবে। এ প্রসঙ্গে সরকারি চাকরিজীবীদের একাধিক সংগঠন জানিয়েছে, যদি যৌক্তিক দাবি মেনে নেওয়া না হয়, তবে তারা কর্মসূচি ঘোষণা করতে বাধ্য হবে।

একজন প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা বলেন,

“আমরা চাই সবার জন্য ন্যায্য বেতন। ১ঃ৪ অনুপাতে বেতন নির্ধারণ করলে মাঠ পর্যায়ের কর্মীদের মনোবল বাড়বে, দুর্নীতি কমবে এবং কর্মদক্ষতা বৃদ্ধি পাবে।”

 

 

📊 অর্থনীতিবিদদের মতামত- অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, নতুন পে-স্কেল বাস্তবায়ন করলে সরকারকে বাড়তি অর্থ ব্যয় করতে হবে, তবে এটি সরকারি কর্মচারীদের জীবনমান উন্নত করবে এবং অর্থনীতিতে ভোগ চাহিদা বাড়াবে। তবে বাজেট ঘাটতি এড়াতে রাজস্ব আয় বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন তারা।✅ সার্বিক প্রত্যাশা- চাকরিজীবীরা আশা করছেন, সরকার দ্রুত ৯ম পে-স্কেল বাস্তবায়নের ঘোষণা দেবে। তাদের মতে, ন্যায্য বেতন কাঠামো প্রতিষ্ঠা করলে কর্মপরিবেশ উন্নত হবে এবং সরকারি সেবা আরও গতিশীল হবে।

Alamin Mia

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে প্রশ্ন থাকলে বা ব্যাখ্যা জানতে পোস্টের নিচে কমেন্ট করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *