পেনশন । লাম্পগ্র্যান্ট I পিআরএল

পেনশন ও আনুতোষিক ভাগাভাগির নিয়ম ২০২৫ । স্ত্রী ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের পেনশন অনুপাত কত?

সরকারি কর্মচারীর মৃত্যুর পর পারিবারিক পেনশন তাঁর স্ত্রী বা পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা পেয়ে থাকেন। পারিবারিক পেনশন সাধারণত কর্মচারীর মৃত্যুর তারিখ থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত অথবা বিধবা স্ত্রীর ক্ষেত্রে আজীবন (পুনঃবিবাহ না করা সাপেক্ষে), এবং কিছু ক্ষেত্রে বিপত্নীক স্বামীর ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ১৫ বছর পর্যন্ত প্রাপ্য হয়।-পেনশন ও আনুতোষিক ভাগাভাগির নিয়ম (পারিবারিক পেনশন)

পরিবারের সদস্যদের মধ্যে পেনশন বণ্টনের হার বা অনুপাত সংক্রান্ত একটি পুরোনো মেমো অনুযায়ী (ফাইন্যান্স এন্ড রেভিনিউ ডিপার্টমেন্টের অডিট ব্রাঞ্চের মেমো নং- ২৫৬৬(৪০)- এফ, তারিখ: ১৬/০৪/১৯৫৯ খ্রিস্টাব্দ, যা এখনো উদাহরণ হিসাবে ব্যবহৃত হয়):

  • মোট পারিবারিক পেনশন হলো ১৬ আনা
  • যদি কর্মচারীর এক বা একাধিক স্ত্রী এবং সন্তান থাকে, তবে স্ত্রীদের এবং সন্তানদের মধ্যে পেনশন ভাগাভাগি হবে।
  • একাধিক স্ত্রী ও সন্তান থাকলে:
    • স্ত্রীরা: প্রত্যেক স্ত্রী ৪ আনা করে পেনশন পাবেন।
    • সন্তানরা: বাকি পেনশন (১৬ আনা – স্ত্রীদের অংশ) সমান হারে সকল সন্তানের মাঝে বন্টন হবে।

উদাহরণ: ধরা যাক কর্মচারীর ২ জন স্ত্রী এবং ৪ জন সন্তান

  1. প্রথম স্ত্রী: ৪ আনা
  2. দ্বিতীয় স্ত্রী: ৪ আনা
  3. সন্তানদের জন্য বাকি অংশ: ১৬ আনা – (৪ আনা + ৪ আনা) = ৮ আনা
  4. দ্বিতীয় স্ত্রী যদি সন্তানদের অংশসহ পান (যেমন – ঐ মেমোতে উল্লেখ আছে):
    • প্রথম স্ত্রী: ৪ আনা
    • দ্বিতীয় স্ত্রী (সন্তানদের অংশসহ): ৪ আনা + ৮ আনা = ১২ আনা

তবে, বর্তমানে পেনশন মঞ্জুরি কর্তৃপক্ষ সরকারি কর্মচারী (পেনশন সহজীকরণ) আদেশ এবং সময়ে সময়ে অর্থ বিভাগ কর্তৃক জারীকৃত সার্কুলার ও ব্যাখ্যা দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হন। আরও বিস্তারিত জানতে এখানে দেখুন : চাকরিকাল অনুসারে পেনশনের হিসাব

আরও বিস্তারিত এখানে দেখুন –https://www.cafopfm.gov.bd/faq.php

পারিবারিক পেনশন ভাগাভাগির নিয়ম (একাধিক স্ত্রীর ক্ষেত্রে) কি?

পারিবারিক পেনশন বণ্টনের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রায়শ জিজ্ঞাসিত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়েছে। ১৯৫৯ সালের একটি মেমো (ফাইন্যান্স এন্ড রেভিনিউ ডিপার্টমেন্ট, অডিট ব্রাঞ্চের মেমো নং- ২৫৬৬(৪০)- এফ, তারিখ: ১৬/০৪/১৯৫৯) অনুসারে, মোট পেনশন ১৬ আনা হিসেবে ধরে ভাগাভাগি করা হয়: স্ত্রীগণের অংশ: একাধিক স্ত্রী থাকলে প্রত্যেকে সমান হারে ৪ আনা করে পাবেন। সন্তানদের অংশ: অবশিষ্ট পেনশন সন্তানদের মধ্যে সমান হারে বন্টন হবে। বন্টন প্রক্রিয়া: উদাহরণস্বরূপ, যদি ২ জন স্ত্রী এবং ৪ জনের বেশি সন্তান থাকে, তবে প্রথম স্ত্রী ৪ আনা এবং দ্বিতীয় স্ত্রী সন্তানদের অংশসহ (৪ + ৮ = ১২ আনা) পেনশন পাবেন। এই নিয়মটি পারিবারিক পেনশনের জটিল ভাগাভাগি সহজভাবে ব্যাখ্যা করে।

  • বিধবা বা তালাকপ্রাপ্ত কন্যাদের পেনশন প্রাপ্তি
    বিধবা বা তালাকপ্রাপ্ত কন্যাদের পেনশন প্রাপ্তির নিয়মাবলী স্পষ্ট করা হয়েছে। স্বামী-স্ত্রীর অবর্তমানে, তারা সর্বোচ্চ ১৫ বছরের অবশিষ্ট সময়টুকুর জন্য পেনশন পাবেন।
  • দীর্ঘ সময় পেনশন উত্তোলন না করার নিয়ম
    পেনশনারের সুবিধার জন্য একটি প্রশাসনিক নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে। যদি কোনো পেনশনার একটানা ১২ মাস যাবৎ পেনশন উত্তোলন না করেন, তবে পরবর্তীতে পেনশন গ্রহণের জন্য তাঁকে হয় আবেদন দাখিল করতে হবে অথবা সশরীরে উপস্থিত হয়ে পেনশন নিতে হবে।
  • ১০০% পেনশন সমর্পণকারীর উত্তরাধিকারীদের সুবিধা
    যে সকল সরকারি কর্মচারী তাঁদের ১০০% পেনশন সমর্পণ করেছিলেন, তাঁরা পেনশন পুনঃস্থাপিত হওয়ার পূর্বে মারা গেলে উত্তরাধিকারীদের সুবিধা প্রসঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দেওয়া হয়েছে। ১৫ বছর পূর্তিতে তাঁদের বৈধ উত্তরাধিকারীগণ মাসিক পেনশন ব্যতিত অন্যান্য ভাতাদি (যেমন – উৎসবভাতা, চিকিৎসাভাতা, নববর্ষভাতা) পারিবারিক পেনশন সুবিধা হিসেবে প্রাপ্য হবেন।

সরকারি কর্মচারী এবং তাঁদের পরিবারের জন্য পেনশন ও আনুতোষিক সংক্রান্ত প্রধান প্রধান জটিল প্রশ্নগুলোর আইনি ব্যাখ্যা প্রদান করে। বিশেষ করে একাধিক স্ত্রীর ক্ষেত্রে পেনশন বণ্টনের অনুপাত এবং ১০০% পেনশন সমর্পণকারী কর্মচারীর মৃত্যুর পর পরিবারের আর্থিক সুবিধা সংক্রান্ত বিধানগুলো স্পষ্ট হওয়ায়, এটি সংশ্লিষ্ট সুবিধাভোগীদের জন্য একটি অত্যন্ত কার্যকরী ও নির্ভরযোগ্য তথ্যসূত্র হিসেবে কাজ করে। তবে, যেহেতু পেনশন বিধিমালা মাঝে মাঝে সংশোধিত হয়, তাই যেকোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সর্বশেষ জারীকৃত বিধি ও প্রজ্ঞাপন অনুসরণ করা অপরিহার্য।

FAQ পৃষ্ঠার বিষয়বস্তু ও প্রধান প্রশ্ন–উত্তর সংক্ষেপ: উল্লেখিত প্রধান বিষয় ও তাদের উত্তরসমূহ বিশ্লেষণস্বরূপ তুলে ধরা হলো:

প্রশ্ন নম্বরবিষয় / প্রশ্নউত্তর সংক্ষিপ্ত / মূল পয়েন্টলক্ষ্য ও পাঠাবলী
পারিবারিক পেনশন কখন থেকে চালু হবে০১/০৬/১৯৯৪ খ্রি থেকেপারিবারিক পেনশন আইনগতভাবে এই তারিখ থেকে কার্যকর
কে কে আজীবন পেনশন পাবেনমূল পেনশনার, স্ত্রী ও প্রতিবন্ধী সন্তান“আজীবন পেনশন” এই শ্রেণিতে অধিষ্ঠিত
স্ত্রীর পেনশন – স্বামী পাবে কি?হ্যাঁ, তবে শর্ত রয়েছে: অবসর গ্রহণের ১৫ বছরের মধ্যে বিবাহিত হলে নাসুযোগ ও শর্ত নির্ধারণ করা হয়েছে
বিবিধ স্ত্রী ও সন্তান সন্তুষ্টিউদাহরণসহ ভাগাভাগি নির্দেশপেনশন বণ্টন ক্ষেত্রে স্পষ্টতা দেওয়া হয়েছে
শতভাগ পেনশন সমর্পণের বাধা০১/০৭/২০১৭ থেকেআইনগত সময়সীমা প্রযোজ্য
বিধবা / তালাকপ্রাপ্ত কন্যারা পেনশন পাবে কি?স্বামী/স্ত্রীর অনুপস্থিতিতে সর্বোচ্চ ১৫ বছরের অবশিষ্ট সময়ের জন্য পাবেসীমিত সময়সীমার বিধান
শতভাগ সমর্পণকারী পেনশনার মৃত্যু ও উৎসব ভাতাযোগ্য উত্তরাধিকারীদের উৎসব ভাতা দেবে, তবে ০১/০২/২০১৬ খ্রি থেকেনির্ধারিত তারিখ ও শর্ত রয়েছে
সর্বনিম্ন চাকুরীর বছর৫ বছরপেনশন প্রাপ্য হবার জন্য ন্যূনতম সময়সীমা
চিকিৎসা ভাতা সময়৬৫ বছর পূর্ণ হলে পাওয়া যাবেবয়স নির্ধারক শর্ত
১০বিশেষ ক্ষেত্রে সুবিধা (জন্ম, স্কেল: উদাহরণ ০১/০১/১৯৪৮ জন্ম)৫০% পেনশন বৃদ্ধির সুযোগপুরাতন কর্মীদের বিশেষ সুবিধা
১১পেনশনারদের “বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট”০১/০৭/২০১৭ থেকে পাওয়া যাবেনিয়মাবলী নির্ধারিত
১২উৎসব ভাতা০১/০৭/২০০৮ থেকে কার্যকরউদযাপনভিত্তিক সুবিধা
১৩নববর্ষ ভাতাএপ্রিল ২০১৭ থেকে প্রযোজ্যসমসাময়িক নিয়মাবলী
১৪স্বেচ্ছায় অবসর (৬ বছরের কাজ)সাধারণভাবে না, তবে অসুস্থতার ক্ষেত্রে মেডিকেল বোর্ড অনুমোদন থাকতে হবেশর্তাধীণ প্রস্থতি
১৫পেনশন ১২ মাস তোলা না হলেআবেদন করতে হবে বা স্বশরীরে উপস্থিত থাকতে হবেপুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া
১৬গুরুতর অসুস্থ পেনশনার ও EFT প্রক্রিয়াউপস্থিত থাকতে হবে না – পে পয়েন্ট অফিস ব্যবস্থাপন করবেব্যাবহারিক সুষ্ঠু ব্যবস্থা
১৭EFT হলে Accounts অফিসে আগমনপ্রতি ১১ মাস অন্তর একবারনিয়মিত দেখা ও যাচাই
১৮“কল্যাণ কর্মকর্তা” এবং কাজপেনশন কেইস প্রক্রিয়াকরণে সহায়তা ও সমন্বয়দাপ্তরিক প্রতিনিধিত্ব
১৯প্রত্যাশিত শেষ বেতনপত্র (ELPC)অবসর-উত্তর ছুটির ১১ মাস পূর্বে জারিপ্রক্রিয়াগত সময়সীমা
২০সাময়িক পেনশনদাবি দাখিল বা কাগজপত্র অসম্পূর্ণ হলে ৮০% প্রদানঅস্থায়ী রূপে সহায়তা প্রদান
২১পেনশন পুনঃস্থাপন১৫ বছর পার হলে পুনঃস্থাপিত পেনশন প্রাপ্যমূল পেনশন থেকে পুনরায় সুবিধা
২২মৃত্যু হলে পেনশন পুনঃস্থাপন উত্তরাধিকারীর দাবিপ্রাপ্য হবে নাআইনগতভাবে বাতিল
২৩মৃত্যু পূর্বে পুনঃস্থাপন সুবিধাউত্তরাধিকারীরা পারিবারিক পেনশন ও অন্যান্য ভাতা পাবে (মাসিক পেনশন ছাড়া)সীমাবদ্ধ সুবিধা
২৪জীবন প্রমাণ (Life Verification)প্রতি ১১তম মাসে স্বশরীরে পে পয়েন্টে উপস্থিত থাকতে হবেনিয়মিত যাচাই
২৫প্রাক-অবহিতকরণ১০ মাসে SMS দ্বারা অবহিত করা হবেযোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার
২৬Life Verification না করলেপেনশন বন্ধ হবে স্বয়ংক্রিয়ভাবেশৃঙ্খলা ও নিয়মাবলীর গুরুত্ব
২৭যে কোনো পে পয়েন্টে যাচাইনির্দিষ্ট পে পয়েন্ট আবশ্যক নয়সুবিধাজনক ব্যবস্থা
২৮পুনরায় “বাৎসরিক ইনক্রিমেন্ট”(আবার উল্লেখ) হ্যাঁ, ০১/০৭/২০১৭ থেকেনিয়মাবলীর পুনরাবৃত্তি

Alamin Mia

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে প্রশ্ন থাকলে বা ব্যাখ্যা জানতে পোস্টের নিচে কমেন্ট করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *