সরকার ইতিপূর্বে সরকারি কর্মকর্তাদের ব্যক্তিগত গাড়ি কেনার জন্য সুদ মুক্ত গাড়ি কেনার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন-এখন জুডিশিয়াল বিভাগ এর সুবিধা ভোগ করবে– ব্যক্তিগত গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় ২০২৪
গাড়ি রক্ষণাবেক্ষন বাবদ এত টাকা ব্যয় কেন? বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদেরও সুদমুক্ত ঋণ নিয়ে গাড়ি কেনার সুযোগ দিয়েছে সরকার। গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রতি মাসে ৫০ হাজার টাকা করে পাবেন তারা। বিচারকদের সুদমুক্ত ঋণ নিয়ে গাড়ি কেনার সুযোগ দিতে ‘বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিসের সদস্যদের সুদমুক্ত ঋণ এবং গাড়িসেবা নগদায়ন নীতিমালা-২০২৪’ জারি করেছে আইন ও বিচার বিভাগ। এ নীতিমালার আওতায় সর্বোচ্চ কত টাকা ঋণ পাওয়া যাবে এবং গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য মাসে কত টাকা করে দেওয়া হবে; সে বিষয়ে দুটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন ও বিচার বিভাগের বাজেট শাখা।
উপসচিব কি ব্যক্তিগত গাড়ি কিনতে পারে? হ্যাঁ। প্রশাসন ক্যাডারের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সরকারের উপসচিবেরা উপসচিব হিসেবে চাকরি দুই বছর পূরণ করার জন্য সর্বোচ্চ ৩০ লাখ টাকা সুদমুক্ত ঋণ নিয়ে গাড়ি কিনতে পারেন। গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য মাসে ৫০ হাজার করে টাকা পান তারা। বিচার বিভাগের কর্মকর্তা হিসেবে চাকরিকাল ১৫ বছর পূর্ণ হওয়া যুগ্ম জেলা জজ, অতিরিক্ত জেলা জজ, জেলা জজ পদমর্যাদার সদস্য, বিচার বিভাগের কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে আইন ও বিচার বিভাগের সচিব বা সিনিয়র সচিব হিসেবে নিয়োজিতরা সুদমুক্ত ঋণ নিয়ে গাড়ি কিনতে পারবেন। এ জন্য ১ শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জ কাটা হবে।
বিচার বিভাগের কর্মকর্তারা কত পাবেন? সুদমুক্ত ঋণে গাড়ি কেনার পর বিচার বিভাগের কর্মকর্তারা গাড়ি মেরামত, সংরক্ষণ, জ্বালানি, ড্রাইভারের বেতন বাবদ মাসে ৫০ হাজার টাকা করে পাবেন। ঋণ নিয়ে গাড়ি কেনার পরেও যারা সরকারি গাড়ি ব্যবহার করবেন তাদের গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণের জন্য মাসে ২৫ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। নীতিমালায় বলা হয়েছে, সুদমুক্ত ঋণ পেতে অবসরোত্তর ছুটি শুরুর তারিখ পর্যন্ত চাকরির মেয়াদ কমপক্ষে এক বছর থাকতে হবে। লিয়েন বা চুক্তিতে চাকরিতে নিয়োজিতরা এই সুবিধা পাবেন না।
সরকারি আমলা হলেই গাড়ি বাড়ি সহ নানা সুবিধা উপভোগ করা যাবে/ সরকারি আমরারা কি এ যুগের জমিদার তেমন প্রশ্নই জনগণে ঘুরে বেড়াচ্ছে
সরকারি চাকরি মানেই সোনার হরিণ এবং এই সোনার হরিণটি যেন শুধু কর্মকর্তাদের জন্যই এবং দেখা যাচ্ছে যে তারা বাড়ি গাড়িসহ বিভিন্ন ধরনের সুযোগ-সুবিধা ভোগ করছে এবং সরকার জনমতামত ছাড়াই তাদেরকে সব সুযোগ সুবিধা দিচ্ছে। কমচারীদের মাসিক বেতন ১৭/১৮ হাজার টাকা আর এরা বিলাসী জীবন জাপান করার জন্য মাসে ভাতা পায় ৫০/৬০ হাজার টাকা।
সুদমুক্ত ঋণ এবং গাড়ি সেবা নগদায়ন নীতিমালা-২০২৪
১০। গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়। ব্যক্তিগতভাবে গাড়ি কেনা সুদমুক্ত ঋণের গাড়ি মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ নীতিমালায় কি আছে?
- (১) বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিসের সদস্য সরকারের নিকট হতে সুদমুক্ত ঋণ গ্রহণ করলে তিনি গাড়ি ক্রয়ের পর আইন ও বিচার বিভাগ হতে ছাড়পত্র গ্রহণপূর্বক পরিশিষ্ট-“গ” ফরম স্বাক্ষরের তারিখ হতে গাড়ি মেরামত/সংরক্ষণ, জ্বালানি, ড্রাইভারের বেতন ইত্যাদি বাবদ প্রাপ্য মাসিক রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়ের অর্থ প্রাপ্য হবেন, তবে এ রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়ের জন্য মাসিক অর্থের পরিমাণ অর্থ বিভাগের পূর্বানুমোদনক্রমে সরকার কর্তৃক সময়ে সময়ে নির্ধারণপূর্বক প্রজ্ঞাপন আকারে জারি করা হবে। মাসিক রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়ের পরিমাণ ‘প্রাধিকারপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের সুদমুক্ত ঋণ এবং গাড়ি সেবা নগদায়ন নীতিমালা, ২০২০ (সংশোধিত)’ বা পরবর্তীতে প্রণীতব্য অনুরূপ নীতিমালার অধীন প্রদানকৃত মাসিক রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়ের সমপরিমাণ হবে। নির্ধারিত রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিসের উক্ত সদস্য মাসিক বেতন বিলের সাথে উত্তোলন করবেন। তিনি চুক্তি (পরিশিষ্ট- “গ” ফরম) স্বাক্ষরের তারিখ হতে উক্ত মাসের অবশিষ্ট সময়ের জন্য আংশিক রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় প্রাপ্য হবেন। স্বাক্ষরিত পরিশিষ্ট-“গ” ফরমের প্রমাণক ছাড়া কোনো ক্রমেই গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় প্রাপ্য হবেন না। এর ব্যত্যয় হলে রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় বাবদ উত্তোলিত অর্থ শতকরা ১৫ (পনের) টাকা হারে জরিমানাসহ প্রদান করতে হবে।
- (২) নীতি ৮ এর অধীন সম্পাদিত চুক্তির কোনো শর্তের বরখেলাপ বা সরকারের অনুমতি ব্যতিরেকে ক্রয়কৃত গাড়ি বিক্রয় করলে এ নীতিমালার অধীনে কোনো গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় পাবেন না।
- (৩) বিদেশে অধ্যয়নরত সংযুক্ত কর্মকর্তা এবং বিদেশে বাংলাদেশ সরকারের কোনো মিশন/সংস্থায় কর্মরত অবস্থায় রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয়ের ৫০% প্রাপ্য হবেন।
- (৪) বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিসের সদস্য পি.আর.এল. সময়ে গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় প্রাপ্য হবেন।
- (৫) আইন ও বিচার বিভাগের সচিব তাঁর পদমর্যাদা অনুসারে গাড়ি সংক্রান্ত অন্যান্য সুবিধা প্রাপ্য হবেন।
- (৬) নীতি-১০ (৪) ও (৫) এ যা কিছুই থাকুক না কেন, বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিসের কোনো সদস্য অবসর উত্তর ছুটি (পি.আর.এল.) কালে অভোগকৃত অবসর উত্তর ছুটি (পি.আর.এল.) বাতিলের শর্তে চুক্তিভিত্তিক বা অন্য কোনো ব্যবস্থাপনায় সাংবিধানিক/রাষ্ট্রের/সরকারের কোনো পদে নিয়োজিত হলে এ নীতিমালা অনুযায়ী গাড়ি রক্ষণাবেক্ষণ ব্যয় এবং অন্য কোনো আর্থিক সুযোগ-সুবিধা প্রাপ্য হবেন না।
- (৭) সুদমুক্ত ঋণ গ্রহণকারী বাংলাদেশ জুডিসিয়াল সার্ভিসের সদস্য সরকারের নিকট হতে গাড়িচালক, জ্বালানি, গাড়ি ব্যবহারজনিত ক্ষয়, রক্ষণাবেক্ষণ বা কোনো প্রকার মেরামতের জন্য পৃথক কোনো রকম আর্থিক সুযোগ-সুবিধা, প্রকৃত ব্যয় যা খরচ দাবি করতে পারবেন না এবং উক্ত গাড়ির জন্য কার সেন্ট, এয়ার ফ্রেশনার, টিস্যু পেপার ও এ্যারোসল ইত্যাদি কোনো প্রকার সুবিধা পাবেন না।
কর্মকর্তা দন্ড প্রাপ্ত হলে গাড়ি পাবে না??
না। শৃঙ্খলা ভঙ্গজনিত বিভাগীয় মামলা বা ফৌজদারি মামলা চলমান থাকলে, বিভাগীয় মামলায় গুরুদণ্ড হলে সেই দণ্ডভোগের দুই বছর পার না হলে এবং লঘুদণ্ড হলে সেই দণ্ডভোগের এক বছর পার না হলে ঋণ পাওয়া যাবে না। এ ছাড়া পদের স্থায়ীত্ব বা যথার্থতা নিয়ে আদালতে মামলা বিচারাধীন থাকলেও এই ঋণ দেওয়া হবে না। কিভাবে সুদমুক্ত ঋণ নিয়ে গাড়ি কেনা যাবে, গাড়ি হারিয়ে গেলে বা চুরি হলে কি হবে, কিভাবে ঋণ পরিশোধ করতে হবে সেসব বিষয়ে নীতিমালায় বিস্তারিত বর্ণনা দেওয়া আছে। সরকারের উপসচিব তার ওপরের স্তরের কর্মকর্তা এবং সশস্ত্র বাহিনীর মেজর জেনারেল ও তদূর্ধ্ব পর্যায়ের কর্মকর্তারা সুদমুক্ত ঋণ নিয়ে গাড়ি কিনতে পারেন।
সরকারি চাকরি মানেই | শুধু সুযোগ সুবিধা | তবে সেটা শুধু |
কর্মকর্তা লেভেলের জন্যই | নিম্ন গ্রেডের কর্মচারীগণ | খেয়ে পড়ে বাঁচতে পারছে না |
সেখানে বিলাসবহুল গাড়ি | খরচসহ দৌড়ে বেড়াচ্ছে | কর্মকর্তাগণ |