আয়কর রিটার্ন জমা না দেয়ার শাস্তি কি? করদাতাকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেয়ার লক্ষ্যে আবশ্যিকভাবে ধারা-১৩০ মোতাবেক নোটিশ প্রদান সাপেক্ষে খেলাপী করদাতার সর্বশেষ আরোপিত আয়করের ১০% অথবা কমপক্ষে ১,০০০.০০ টাকা ও পরবর্তী প্রতি খেলাপী দিবসের জন্য ৫০.০০ টাকা, উপ-কর কমিশনার জরিমানা আরোপ করতে পারবেন। তবে অর্থ আইন ২০১৫ এর মাধ্যমে সংযোজিত প্রভাইসো মোতাবেক -Personal Income Tax Submission bd
(১)কোন ব্যক্তি-করদাতা, যাহার আয়ের উপর ইতোপূর্বে কখনো করারোপিত হয় নাই, তাঁহার ক্ষেত্রে আরোপযোগ্য মোট জরিমানা পরিমান ৫,০০০/- টকার বেশি হইবে না;
(২)কোন ব্যক্তি-করদাতা, যাহার আয়ের উপর ইতোপূর্বে করারোপিত হইয়াছে এমন কোন পুরোনো ব্যক্তি-করদাতার ক্ষেত্রে এইরূপ জরিমানার পরিমাণ তাঁহার সর্বশেষ নিরূপিত আয়ের উপর ধার্যকৃত করের ৫০% বা ১,০০০/- টাকা, দু’টির মধ্যে যেটি বেশি, তাহার বেশি হইবে না|
সূত্র: জাতীয় রাজস্ব বোর্ড, বাংলাদেশ
রিটার্ন জমা না দিলে সুদসহ জরিমানা
নির্ধারিত সময়ে কর রিটার্ন জমা না দিলে বিলম্ব সুদসহ জরিমানা দিতে হবে। এক্ষেত্রে উপকমিশনারের কাছ থেকে সময় নিলে সুদ দিতে হবে। আর সময় না নিলে সুদ ও জরিমানা দুটিই দিতে হবে। প্রতি বছর কর রিটার্ন জমা দেয়ার সর্বশেষ সীমা ৩০ নভেম্বর। এ সময়কে কর দিবস বলা হয়। এ সময়ের মধ্যে করদাতাদের আয়কর রিটার্ন জমা দিতে হয়। কেউ এ সময়ের মধ্যে রিটার্ন জমা দিতে না পারলে লিখিত আবেদন করে সময় নেয়া যায়। এক্ষেত্রে নির্ধারিত করের সঙ্গে প্রতি মাসে আরও ২ শতাংশ সুদ দিতে হয়। কিন্তু সময়ের আবেদন না করে কেউ রিটার্ন না নিলে সুদের পাশাপাশি আইন লংঘনের দায়ে তাকে জরিমানা দিতে হয়। ১ ডিসেম্বর থেকে এ জরিমানার তারিখ গণনা শুরু হয়। আয়কর অধ্যাদেশের ১২৪ ধারায় বলা আছে, করদাতা যদি কোনো কারণ ছাড়াই নির্দিষ্ট সময়ে রিটার্ন দাখিল না করেন, আবার এজন্য অনুমোদনও না নেন, সে জন্য তার পূর্ববর্তী বছর প্রদেয় করের ১০ শতাংশ বা ১ হাজার টাকার মধ্যে যেটি বড় অংক ওই পরিমাণ অর্থ জরিমানা হবে। সেই সঙ্গে যতদিন দেরি হবে, প্রতিদিনের জন্য ৫০ টাকা হারে বাড়তি মাশুলও গুণতে হবে।
৭৩এ ধারায় বলা আছে, ৩০ নভেম্বর পর কর কর্মকর্তাদের অনুমতি নিয়ে দেরিতে রিটার্ন জমা দিলেও ২ শতাংশ বিলম্ব সুদ দিতে হবে। উদাহরণ স্বরূপ, ২০১৭ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত সমাপ্ত বছরে করিম সাহেবের আয় ছিল ৬ লাখ টাকা। এতে তার বার্ষিক করের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩০ হাজার টাকা। এর মধ্যে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে তিনি ১২ হাজার টাকা অগ্রিম এবং ৪ হাজার টাকা উৎসে কর দিয়েছেন। করিম সাহেব রিটার্ন দাখিলের জন্য সময় আবেদন করলে কমিশনার তাকে দুই মাস সময় দেন। ২০১৮ সালের ১৫ জানুয়ারি তিনি ডে-অর্ডারের মাধ্যমে ১৪ হাজার টাকা জমা দেন। এতে তার ৩০ হাজার টাকা কর পরিশোধ হয়েছে। কিন্তু বিলম্বের জন্য দুই হিসাবে তাকে আরও ৪১৫ টাকা দিতে হবে।
প্রশ্নোত্তর পর্ব:
- প্রশ্ন: কর প্রদানের যোগ্য নয় কিন্তু করের আওতায় আসছে সে রিটার্ণ দাখিল না করলেও জরিমানা দিতে হবে?
- উত্তর: হ্যাঁ।
- প্রশ্ন: আবেদন করে সময় নিলেও সুদ দিতে হবে?
- উত্তর: জি সর্বশেষ প্রদত্ত করের ২% হারে সুদ দিতে হবে।
আরও বিস্তারিত জানতে এখানে দেখুন
রিটার্ন জমা না দিলে সরকারি বিভিন্ন সেবাও গ্রহণ করা যাবে না।
Return Submission 2024 । যে সব সেবা পেতে আয়কর রিটার্ন জমার রশিদ বা প্রমাণক দেখাতে হবে
- পাঁচ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্র বা পোস্টাল সেভিংস কিনতে হলে আয়কর জমার প্রমাণ দেখাতে হবে। যেখানে তিনি সঞ্চয়পত্র কেনার আবেদন করবেন, সেখানেই প্রমাণ জমা দিতে হবে।
- পাঁচ লাখ টাকার বেশি ব্যাংক ঋণ নেয়ার আবেদন করলে;
- ব্যাংক জমার সুদ আয় থেকে উৎস কর কর্তনে রিটার্ণ সনদ থাকলে ১০ শতাংশ কাটা হবে অন্যথায় ১৫%;
- ১০ লাখ টাকা বেশি মূল্যের জমি বা ফ্ল্যাট রেজিস্ট্রি, বিক্রি, দলিল হস্তান্তর, পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দিতে হলে ক্রেতাকে রেজিস্ট্রি অফিসে রিটার্ন জমার স্লিপ জমা দিতে হবে।
- যেকোনো ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে ক্রেডিট কার্ড নিতে হলে;
- দুই বা তিন চাকা ছাড়া যেকোনো মোটরগাড়ি নিবন্ধন, মালিকানা পরিবর্তন বা ফিটনেস নবায়ন করতে;
- সিটি করপোরেশন বা জেলা সদর, পৌরসভায় সন্তান বা পোষ্যদের আন্তর্জাতিক পাঠ্যক্রমের আওতায় ইংরেজি মিডিয়াম স্কুল বা জাতীয় পাঠ্যক্রমের আওতায় ইংরেজি ভার্সনে ভর্তি করাতে;
- দেশের যেকোনো স্থানে বাণিজ্যিক বা শিল্প কারখানায় গ্যাসের সংযোগ নিতে হলে এবং সিটি করপোরেশন এলাকায় বাসা বাড়ির গ্যাসের সংযোগ নিতে বা আগের সংযোগ বজায় রাখতে;
- সিটি করপোরেশন বা সেনানিবাস এলাকায় নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ নিতে হলে;
- জমি বা বাড়ি ভাড়া আয়ের ক্ষেত্রে;
- সরকার বা সরকারি কোনো সংস্থা, করপোরেশন থেকে বেতন হিসেবে মূল বেতন ১৬ হাজার টাকা বা বেশি হলেই;
- বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন নেয়ার সময়;
- শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সরকারি অংশ বা এমপিওভুক্ত শিক্ষকদের আয় মাসে ১৬ হাজার টাকার বেশি হলেই;
- ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী শহরে ভবন নির্মাণের অনুমোদন চাইলে;
- জাতীয় সংসদ, সিটি করপোরেশন, জেলা পরিষদ, পৌরসভা, উপজেলায় কোনো নির্বাচনে প্রার্থী হতে হলে;
- পেনশন ফান্ড, অনুমোদিত গ্র্যাচুইটি ফান্ড, স্বীকৃত প্রভিডেন্ট ফান্ড, অনুমোদিত সুপারএন্যুয়েশন ফান্ড এবং শ্রমিক অংশগ্রহণ তহবিল ছাড়া অন্যান্য ফান্ডের রিটার্ন;
- সিটি করপোরেশন বা পৌর এলাকায় ট্রেড লাইসেন্স প্রাপ্তি ও নবায়ন করতে হলে;
- ডিজিটাল প্লাটফর্মে কোনো পণ্য বা সেবা বিক্রি করতে হলে;
- মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে অথবা ইলেকট্রনিক উপায়ে অর্থ হস্তান্তরে কমিশন, ফি জাতীয় অর্থ পেতে হলে;
- সোসাইটি রেজিস্ট্রেশন অ্যাক্টের আওতায় কোন সমিতি বা ক্লাব গঠিত হলে বা এ ধরনের ক্লাবের সদস্য হলে;
এছাড়া আরও সেগুলোর ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হইবে
- ডাক্তার, আইনজীবী, চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট, প্রকৌশলী, স্থপতি ইত্যাদি পেশাজীবী সংগঠনের সদস্য হলে বা সদস্য হতে চাইলে;
- পরামর্শক, ক্যাটারিং, ইভেন্ট ম্যানেজমেন্ট, জনবল বা নিরাপত্তা সেবা দিয়ে অর্থ গ্রহণ করতে;
- বিবাহ নিবন্ধক বা কাজী হিসেবে লাইসেন্স পেতে চাইলে;
- আমদানি-রফতানির সনদ পেতে চাইলে;
- আমদানির এলসি খুলতে চাইলে;
- কোম্পানি পরিচালক বা শেয়ারহোল্ডার পদ পেতে হলে;
- ব্যবসা বা বাণিজ্য সংগঠনের বা সমিতির সদস্যপদ গ্রহণ;
- বীমা কোম্পানির এজেন্ট হিসেবে তালিকাভুক্তি বা নবায়ন করতে হলে;
- বীমা বা সার্ভেয়ার হিসেবে নিবন্ধন নিতে হলে;
- অস্ত্রের লাইসেন্স নেয়ার আবেদন করলে;
- ওষুধ ব্যবসার জন্য ড্রাগ লাইসেন্স থাকলে বা করাতে চাইলে, অগ্নি-নিরাপত্তা লাইসেন্স, পরিবেশ ছাড়পত্র, বিএসটিআই লাইসেন্স পেতে চাইলে;
- লঞ্চ, স্টিমার, ট্রলার, কার্গো, বার্জ ইত্যাদি নৌযানের সার্ভে সার্টিফিকেটের জন্য;
- ইটভাটার অনুমোদন নিতে হলে;
- পরিবহন সেবার ব্যবসা করলে;
- কোনো কোম্পানির ডিস্ট্রিবিউটর বা এজেন্টশিপ চাইলে;
- পণ্য সরবরাহের ঠিকাদারি কাজে টেন্ডার জমা দিতে হলে আয়কর রিটার্ন জমার প্রমাণ দিতে হবে। তাতে ব্যর্থ হলে ৫০ শতাংশ হারে উৎসে কর কর্তন করার প্রস্তাব করা হয়েছে;
- এনজিও বা মাইক্রো ক্রেডিট সংস্থার জন্য বিদেশি অনুদানের ছাড় দেয়ার ক্ষেত্রে রিটার্ন জমার স্লিপ লাগবে।
Ami bikas sim er jonno tin korese bikas sim paini Amar ki korte hobe plz bolben ki
রিটার্ণ জমা দিতে হবে তবুও।
আমি অক্টোবর ২০২২ মাসের জিরো ভ্যাট জমা দিতে পারি নাই, এখন জরিমানা না দিয়ে কিভাবে সমাধান করা যায়।
কথায় কিভাবে আবেদন করতে হবে।
আপনি অনলাইনে বা অফলাইনে সময় চেয়ে আবেদন করুন। সময় মঞ্জুর করলে দেরিতেও দিতে পারবেন।
টিন সার্টিফিকেট করেছি অনলাইনে। তবে আয় কর তেমন কিছু নেই।কর প্রদান এর যোগ্য না।এবং করের অধীনেও নেই।সেই ক্ষেত্রে কি জিরো রিটার্ন জমা দেয়া লাগে? আর না দিলে কি কোনো সমস্যা হয়।
জিরো রিটার্ন জমা দিবেন।