সর্বশেষ প্রকাশিত পোস্টসমূহ

প্রাইমারি শিক্ষক নিয়োগ কমিটি ২০২৫ । প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে নতুন কমিটি কি কি কাজ করবে?

সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়াকে আরও কার্যকর করতে একটি নতুন কেন্দ্রীয় কমিটি গঠন করেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। ২০১৯ সালের সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০১৯ এর বিধি ৫ এর ক্ষমতা বলে এই কমিটি গঠন করা হয়।– প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগে নতুন কমিটি গঠন

প্রাথমিক বিদ্যালক শিক্ষক নিয়োগে কি পিএসসি’র প্রতিনিধি থাকবে? হ্যাঁ, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের জন্য গঠিত কেন্দ্রীয় প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ কমিটিতে বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন (পিএসসি)-এর একজন প্রতিনিধি সদস্য হিসেবে থাকবেন। বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, সম্প্রতি গঠিত ৮ সদস্যের এই কমিটিতে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালককে চেয়ারম্যান করা হয়েছে। কমিটির সদস্যদের মধ্যে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধির পাশাপাশি পিএসসির একজন প্রতিনিধিকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও মান নিশ্চিত করা হয়।

নিয়োগ কমিটির কার্যপরিধি কি? শিক্ষক নিয়োগ কমিটির কার্যপরিধি (Terms of Reference) সাধারণত সুনির্দিষ্ট নীতিমালা দ্বারা নির্ধারিত হয়। পূর্ববর্তী উত্তর থেকে প্রাপ্ত এবং প্রাসঙ্গিক তথ্য বিশ্লেষণ করে এই কমিটির প্রধান কার্যপরিধিগুলো নিচে তুলে ধরা হলো:

১. নিয়োগের সুপারিশ করা: কমিটির মূল এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হলো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য যোগ্য প্রার্থী বাছাই করে সরকারের কাছে সুপারিশ করা।

২. নিয়োগ বিধিমালা অনুসরণ: এই কমিটি “সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০১৯” এর বিধি ৫ এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক বিধিবিধান কঠোরভাবে অনুসরণ করে তার কার্যক্রম পরিচালনা করে। অর্থাৎ, নিয়োগের প্রতিটি ধাপে বিধিমালা মেনে চলা তাদের জন্য বাধ্যতামূলক।

৩. প্রয়োজনীয় কার্যক্রম সম্পন্ন করা: নিয়োগ বিজ্ঞপ্তির প্রস্তুতি থেকে শুরু করে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশ পর্যন্ত যাবতীয় কার্যক্রম এই কমিটির তত্ত্বাবধানে সম্পন্ন হয়। এর মধ্যে রয়েছে লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা আয়োজন, ফলাফল মূল্যায়ন এবং মেধাতালিকা প্রণয়ন।

৪. স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা: যেহেতু কমিটিতে বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও দপ্তরের (যেমন: জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশন) প্রতিনিধিরা থাকেন, তাই নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্রতিটি ধাপে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা তাদের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব।

৫. প্রয়োজনে সিদ্ধান্ত গ্রহণ: নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোনো ধরনের জটিলতা বা সমস্যা দেখা দিলে কমিটি সম্মিলিতভাবে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ও যৌক্তিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে।

সংক্ষেপে বলা যায়, এই কমিটি হলো প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের একটি কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংস্থা, যা নিয়োগ প্রক্রিয়ার সুষ্ঠু পরিচালনা, স্বচ্ছতা রক্ষা এবং যোগ্য ও উপযুক্ত প্রার্থী নির্বাচন নিশ্চিত করার জন্য কাজ করে।

প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া সাধারণত কয়েকটি ধাপে সম্পন্ন হয়। এটি একটি দীর্ঘ এবং প্রতিযোগিতামূলক প্রক্রিয়া যা স্বচ্ছতা নিশ্চিত করার জন্য কেন্দ্রীয়ভাবে পরিচালিত হয়।

নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ কি প্রথম ধাপ? হ্যাঁ। নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ হলো প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (DPE) কর্তৃক শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ। এই বিজ্ঞপ্তিতে শূন্য পদের সংখ্যা, শিক্ষাগত যোগ্যতা, বয়সসীমা, আবেদনের সময়সীমা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনাবলী উল্লেখ থাকে।

Caption: Primary teacher recruitment policy

গত ৩১ আগস্ট, ২০২৫ তারিখে মন্ত্রণালয়ের বিদ্যালয়-২ শাখা থেকে জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এই তথ্য জানানো হয়েছে। এই কমিটি সরকারি শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করবে। নবগঠিত এই কমিটির প্রধান (চেয়ারম্যান) হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক। কমিটির অন্য সদস্যরা হলেন:

  1. প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (বিদ্যালয়)। 
  2. প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (প্রশাসন)। 
  3. উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর মহাপরিচালক। 
  4. প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের যুগ্মসচিব (বিদ্যালয়-২)। 
  5. জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি। 
  6. বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের প্রতিনিধি।
  7. কমিটির সদস্য-সচিবের দায়িত্ব পালন করবেন প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের পরিচালক (পলিসি ও অপারেশন)। মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এই নতুন কমিটি পূর্বে গঠিত একটি নিয়োগ কমিটিকে প্রতিস্থাপন করবে। নতুন কমিটি গঠনের ফলে শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় আরও গতি আসবে এবং শূন্যপদ পূরণের কাজ দ্রুত এগিয়ে যাবে বলে সংশ্লিষ্টরা আশা করছেন।

নিয়োগ কমিটির কাজ কি?

এই নিয়োগ কমিটির মূল কাজ হলো সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য যোগ্য প্রার্থী বাছাই এবং সুপারিশ করা অর্থাৎ, এই কমিটি শিক্ষক নিয়োগের পুরো প্রক্রিয়াটি তত্ত্বাবধান করে। এটি মূলত নিয়োগ প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে এবং যথাযথ যাচাই-বাছাইয়ের পর চূড়ান্তভাবে নির্বাচিত প্রার্থীদের তালিকা সরকারের কাছে সুপারিশের জন্য পাঠায়। এই কমিটির সব কার্যক্রম ‘সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষক নিয়োগ বিধিমালা, ২০১৯’ অনুযায়ী পরিচালিত হয়।

১. নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ
নিয়োগ প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপ হলো প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর (DPE) কর্তৃক শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ। এই বিজ্ঞপ্তিতে শূন্য পদের সংখ্যা, শিক্ষাগত যোগ্যতা, বয়সসীমা, আবেদনের সময়সীমা এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় নির্দেশনাবলী উল্লেখ থাকে।
২. অনলাইনে আবেদন
বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর আগ্রহী ও যোগ্য প্রার্থীরা একটি নির্দিষ্ট সরকারি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে অনলাইনে আবেদন করেন। আবেদনের সময় প্রার্থীকে তার ব্যক্তিগত তথ্য, শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ, ছবি এবং স্বাক্ষর আপলোড করতে হয়।
৩. প্রবেশপত্র প্রদান
আবেদন প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার পর যাচাই-বাছাই শেষে যোগ্য প্রার্থীদের লিখিত পরীক্ষার জন্য প্রবেশপত্র (Admit Card) ইস্যু করা হয়। এই প্রবেশপত্র সাধারণত অনলাইনে ডাউনলোড করার ব্যবস্থা থাকে।
৪. লিখিত পরীক্ষা
এটি নিয়োগ প্রক্রিয়ার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। সাধারণত, একটি বহু-নির্বাচনী (MCQ) পদ্ধতির লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়। এই পরীক্ষায় বাংলা, ইংরেজি, গণিত এবং সাধারণ জ্ঞান বিষয়ে প্রশ্ন থাকে। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হলে প্রার্থী পরবর্তী ধাপের জন্য যোগ্য বিবেচিত হন।
৫. মৌখিক পরীক্ষা (ভাইভা)
লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীরা মৌখিক পরীক্ষার (Viva-Voce) জন্য মনোনীত হন। এই ধাপে প্রার্থীদের ব্যক্তিত্ব, সাধারণ জ্ঞান, শিক্ষাগত যোগ্যতা, এবং শিক্ষকতার পেশার প্রতি তাদের আগ্রহ যাচাই করা হয়। এই সময় প্রার্থীদের সকল মূল একাডেমিক সনদপত্র ও প্রয়োজনীয় কাগজপত্র যাচাই করা হয়।
৬. চূড়ান্ত মেধা তালিকা ও নিয়োগ
লিখিত এবং মৌখিক পরীক্ষার ফলাফলের উপর ভিত্তি করে একটি চূড়ান্ত মেধা তালিকা (Final Merit List) প্রস্তুত করা হয়। এই তালিকা থেকে শূন্য পদের সংখ্যা অনুযায়ী নির্বাচিত প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হয়। এরপর নির্বাচিত প্রার্থীদের মেডিকেল পরীক্ষা এবং পুলিশ ভেরিফিকেশনের পর নিয়োগপত্র প্রদান করা হয়।

Alamin Mia

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে প্রশ্ন থাকলে বা ব্যাখ্যা জানতে পোস্টের নিচে কমেন্ট করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *