নিয়োগ । বদলি । পদোন্নতি । জ্যেষ্ঠতা

রেলওয়ে কোটা সংস্কার ২০২৫ । চাকরিতে পোষ্য কোটা ৪০% কি এখনও কার্যকর?

বাংলাদেশ রেলওয়ের পোষ্যদের ৪০ (চল্লিশ) ভাগ কোটা সংরক্ষণের বিষয়ে মতামত প্রদান এবং কর্তব্যরত অবস্থায় মৃত্যুবরণকারী বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্মচারীদের পোষ্যকে সরাসরি নিয়োগযোগ্য ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণির শূন্য পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে আর পোষ্য কোটা থাকছে না- রেলওয়ে কোটা সংস্কার ২০২৫

কেউ মারা গেলে আর পোষ্য কোটা কার্যকর নাই? নাই। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ২৩ জুলাই ২০২৪ তারিখের ১৪১ নং প্রজ্ঞাপনে নতুনভাবে কোটা নির্ধারণ করার প্রেক্ষিতে এবং উক্ত প্রজ্ঞাপনে পোষা কোটা সংরক্ষণের কোন বিধান না থাকায় বাংলাদেশ রেলওয়ের প্রস্তাবিত “বাংলাদেশ রেলওয়ে ক্যাডার বহির্ভূত গেজেটেড এবং নন-গেজেটেড কর্মচারী নিয়োগ বিধিমালা, ২০২৪ এর বিধিতে পোষা কোটা সংক্রান্ত বিধান [বিধি ৩(৩)] বিলুপ্তির প্রস্তাব করায় রেলওয়েতে কর্মরত অবস্থায় কোন কর্মচারীর মৃত্যু হলে তার পরিবারের একজনকে উপযুক্ত যোগ্যতা থাকা সাপেক্ষে কর্মচারী হিসাবে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে বিধিমালায় অন্তর্ভুক্তির বিধিগত সুযোগ নেই।

বাংলাদেশ রেলওয়ে পোষ্য কোটা কি? বাংলাদেশ রেলওয়েতে কর্মরত বা অবসরপ্রাপ্ত বা চাকরিরত অবস্থায় মৃত কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য সরকারি চাকরির বিধিমালা অনুযায়ী নির্দিষ্ট কোটা সংরক্ষিত থাকে, যা “পোষ্য কোটা” নামে পরিচিত। সাধারণত, এই কোটার উদ্দেশ্য হলো রেলওয়ে পরিবারের সদস্যদের রেলওয়েতে চাকরির সুযোগ তৈরি করে দেওয়া হতো। বাংলাদেশ রেলওয়ের স্থায়ী পদে কর্মরত আছেন, অথবা স্থায়ী পদে কর্মরত থাকা অবস্থায় অবসর নিয়েছেন, অথবা স্থায়ী পদে চাকরিরত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেছেন এমন কর্মচারীদের সন্তানরা এই কোটার জন্য আবেদন করতে পারেন। কিছু ক্ষেত্রে যোগ্যতা নির্দিষ্ট পদের জন্য বা চাকরির ধরনের উপর নির্ভর করতে পারে।

১ম শ্রেণীর পদে কি পোষ্য কোটা ছিল? না। সাধারণত পোষ্য কোটা তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির পদে (বর্তমান বেতন কাঠামো অনুযায়ী সম্ভবত ১১ থেকে ২০ তম গ্রেডের পদে) প্রযোজ্য হয়ে থাকে। প্রথম ও দ্বিতীয় শ্রেণির পদে (১ম থেকে ১০ম গ্রেড) এই কোটা প্রযোজ্য নাও হতে পারে, কারণ সরকারি নীতি অনুযায়ী ৯ম গ্রেড ও তদূর্ধ্ব পদে কোটা পদ্ধতি সংস্কার বা বাতিল করা হয়েছে। তবে রেলওয়ের মতো স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে অভ্যন্তরীণ নীতিমালা ভিন্ন হতে পারে।

বাংলাদেশ রেলওয়েতে নিয়োগে ৪০ শতাংশ পোষ্য কোটা রাখা হয়েছে। রেলওয়ের নন-ক্যাডার নিয়োগ বিধিমালা ২০২০ এর ৩ (ক) ও (খ) ধারায় এই বিধান রয়েছে। সেটি এখন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় বাতিল করিল

রেলওয়ের পোষ্য কোটা কেন বাতিল? বাংলাদেশে কোটা ব্যবস্থা ১৯৭২ সাল থেকেই চলে আসছে। কোটা ব্যবস্থা নিয়ে চার দশক ধরেই আপত্তি উঠে আসছে। কোটা হ্রাস এবং মেধাভিত্তিক নিয়োগের দিকে ঝুঁকতে বাংলাদেশে কোটা সংস্কার আন্দোলন সংগঠিত হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা কোটার মাধ্যমে চাকরির অসম বরাদ্দের বিরোধিতা করেছিল। কোটা পদ্ধতির নতুন নিয়ম প্রয়োগের ফলে পোষ্য কোটা কার্যকর নাই। এই বিধানের বৈধতা নিয়ে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছিল। রিটের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. রোকনুজ্জামান শুনানি করেছিলেন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। রিটের পরিপ্রেক্ষিতে, বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি এসএম মাসুদ হোসেন দোলনের হাইকোর্ট বেঞ্চ একটি রুল জারি করেছে। এই রুলে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ রেলওয়েতে নিয়োগে পোষ্য কোটার বিধান অবৈধ ঘোষণা করা হবে না।

Caption: Bangladesh railway quota

বাংলাদেশ রেলওয়ে কোটা ২০২৫ । পোষ্য কোটায় চাকরির আবেদন প্রক্রিয়া কি ছিল?

  1. পোষ্য কোটায় আবেদনকারীকে সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী আবেদন করতে হয় এবং আবেদনের নির্দিষ্ট স্থানে বা পদ্ধতিতে পোষ্য কোটার প্রার্থী হিসেবে উল্লেখ করতে হয়। এর সাথে সাধারণত পিতার/মাতার চাকরির প্রমাণপত্র, অবসর বা মৃত্যুর প্রমাণপত্র এবং সম্পর্ক প্রমাণের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র (যেমন জন্মসনদ, জাতীয় পরিচয়পত্র) জমা দিতে হয়।
  2. পোষ্য কোটার প্রার্থী হলেও তাকে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট পদের জন্য নির্ধারিত শিক্ষাগত যোগ্যতা, বয়সসীমা এবং অন্যান্য শর্ত পূরণ করতে হবে। কোটা কেবল একটি অগ্রাধিকার প্রদান করে, যোগ্যতার শর্ত শিথিল করে না (বয়সসীমার ক্ষেত্রে কিছু শিথিলতা থাকতে পারে যা বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ থাকে)।
  3. নির্দিষ্ট নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিতে পদের সংখ্যার ভিত্তিতে পোষ্য কোটার হার উল্লেখ করা থাকে। অতীতে বিভিন্ন সময়ে এই হার ৪০% বা তার বেশিও দেখা গেছে, বিশেষ করে নিম্ন বেতন স্কেলের পদগুলোতে। তবে এটি সুনির্দিষ্ট নয় এবং নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী পরিবর্তিত হতে পারে।

এখন সরকারি চাকরি নিয়োগে কোটা পদ্ধতি?

বাংলাদেশে সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে কোটা পদ্ধতি রয়েছে। এই কোটা পদ্ধতির মূল উদ্দেশ্য হলো, সমতার নীতি ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা। সরকারি চাকরিতে নিয়োগের ৯৩ শতাংশ হবে মেধার ভিত্তিতে। বাকি সাত শতাংশের মধ্যে পাঁচ শতাংশ থাকবে মুক্তিযোদ্ধা কোটা। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী এবং প্রতিবন্ধী ও তৃতীয় লিঙ্গের জন্য এক শতাংশ করে কোটা থাকবে। সুপ্রিম কোর্ট এই কোটা পদ্ধতি নির্ধারণ করেছে।

   
   
   

Alamin Mia

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ৮ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে বিস্তারিত জানতে admin@bdservicerules.info ঠিকানায় মেইল করতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *