স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে পেনশন নাই লামাগ্র্যান্ট গ্র্যাচুইটি পাবেন যা রাজস্ব কর্মজীবী পেনশনভোগীদের থেকে অর্ধেক পাবেন-সাধারণ ভবিষ্যৎ তহবিল এর ক্ষেত্রেও ভিন্নতা আছে–Revenue VS Autonomous Job 2025
স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কি মাসিক পেনশন আছে? হ্যাঁ, কিছু স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে মাসিক পেনশন আছে। এছাড়া, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার আওতায় আসছেন। মাসিক পেনশন কিছু স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে রাজস্বের মতো মাসিক পেনশন চালু আছে। চাকরি থেকে অবসর নেওয়ার পর, অবসরপ্রাপ্ত কর্মী প্রতি মাসে মাসে যে টাকা পান, সেটা পেনশন। সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থা- স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থার আওতায় আসছেন। ১ জুলাই, ২০২৪ থেকে স্বায়ত্তশাসিত ও রাষ্ট্রায়ত্ত বিভিন্ন সংস্থার নতুন কর্মকর্তা কর্মচারীদের বাধ্যতামূলকভাবে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। সর্বজনীন পেনশন ব্যবস্থায় এককালীন টাকার থেকে একজন ব্যক্তি সুরক্ষিত থাকে। বিশ্বের অনেক দেশেই এটি চালু রয়েছে।
স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কি সুযোগ সুবিধা বেশি? প্রশাসন, পুলিশ, ফরেন,কাস্টম ইত্যাদি গুটি কয়েক ক্যাডার বাদ দিলে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের সুবিধা অনেক বেশি। স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে সরকারি সকল সুবিধাতো থাকেই আরও বাড়তি নানা সুবিধা থাকে। রাজউক, সোনালী, জনতা,অগ্রনী,সহ সকল সরকারি ব্যাংক,বাংলাদেশ ব্যাংক, পেট্রো বাঙলা, আইসিবি,ঢাকা সিটিকরপোরেশন ইত্যাদির চাকরি স্বায়ত্তশাসিত। নন- ক্যাডার চাকরি মানে জীবন শেষ। প্রমোশন নাই বা খুব কম। স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে প্রচুর প্রমোশন। কোন কোন স্বায়ত্তশাসিত শাসিত চাকরি নিচের ক্যাডার গুলো থেকেও ভালো। তবে ৪০০ টির স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের মধ্য ১২০ টিতে পেনশন সুবিধা পাওয়া যায়। যেমন সরকারি সোনালী অগ্রনী ব্যাংক,বাংলাদেশ ব্যাংক ইত্যাদি। তবে যেসব স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে পেনশন নাই তাদের বেতন সরকারি বেতনের ডাবল। তারা পেনশনের থেকেও সুবিধা বেশি পায়। যেমন বিমান, ডিপিডিসি, বাপেক্স ইত্যাদি। সব কিছু পাবলিকলি বলা যায না এমন সুযোগ সুবিধাও পেয়ে থাকে।
কেউ যে বলেন রাজস্বের সাথে তুলনা হয় না? হ্যাঁ। রাজস্ব খাতের চাকুরির সাথে স্বায়ত্তশাসিত চাকরির তুলনা হয়না। স্বায়ত্তশাসিতের অফিসাররা নিজেকে নন ক্যাডারও বলতে পারেনা, কিছুটা হিজরার মতন।তবে ওরা পেনশন বাদে সব সুযোগ ভোগ করেন, কোন কোন স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের প্রধানরাতো ওই রাজ্যের রাজা। সুবিধা অসুবিধা নির্ভর করে অফিসের বসদের ওপর তারা কর্মী বান্ধব কিনা। অফিস প্রধান বা বসরা কর্মি বান্ধব হলে অনেক সুযোগ সুবিধা এনে দিতে পারে আর যারা সবসময় নিজেদের ষোল আনা নিয়ে পরে থাকে সব জায়গায় ই বাশঁ।
রাজস্ব বাজেটে ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের চাকরি সুযোগ সুবিধা ২০২৫ । স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে রাজস্ব খাতে নিয়োগ হলে, তারা কী রাজস্ব খাতের সকল সুবিধা পাবে?
বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের রাজস্ব বাজেটের সকল কর্মকর্তা কর্মচারী পেনশনভোগী এবং ১০০% ল্যামগ্রান্ড আছে। সাধারণ ভবিষ্য তহবিল প্রতি বছর ১৩% মুনাফা আছে। মোট কথা অধিদপ্তরের মতো সবই আছে। তাই স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান সবগুলো এক পাল্লায় ওজন দিবেন না। কিছু স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে সরকারি প্রতিষ্ঠান বা রেভিন্যিউ এর মত সুযোগ সুবিধা সহ আরও অতিরিক্ত সুবিধা রয়েছে।
বাপেক্স নিয়োগ বিধিমালা ২০২২ পিডিএফ
রাজস্ব ও স্বায়ত্তশাসিত বেসিক পার্থক্য ২০২৫ । মূল পার্থক্য অর্থের সংস্থানে অর্থাৎ কোথা থেকে বেতন ভাতা পরিশোধ করা হচ্ছে
- উদাহরণস্বরূপ, বিসিএস এর চাকুরী রাজস্ব খাতভুক্ত। বিসিএস কর্মকর্তাদের বেতন ওনাদের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় কিংবা বিভাগ থেকে হয় না। বরং , অর্থ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে সরকারি কোষাগার থেকে হয়।
- অন্যদিকে স্বায়ত্তশাসিত (কিংবা, স্বশাসিত) প্রতিষ্ঠানে কর্মরতদের বেতন – ভাতা ওই প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কোষাগার থেকে পরিশোধ করা হয়। যেমন, কেউ চট্টগ্রাম বন্দর – এ কর্মরত আছে। চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ – একটি সরকারি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান। সরকার সরাসরি এটি নিয়ন্ত্রণ করে না। বিভিন্ন খাতে বন্দরের আয় দিয়েই এর সাধারণ ব্যায় ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন – ভাতা পরিশোধ করা হয়।
- সরকারি ও স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের মূল পার্থক্য জিপিএফ এবং সিপিএফ বৈষম্য। জিপিএফ হলো- জেনারেল প্রোভিডেন্ট ফান্ড ( পেনশন সুবিধার আওতাধীন কর্মকর্তা) এবং সিপিএফ হলো-কন্ট্রিবিউটরি প্রোভিডেন্ট ফান্ড (গ্রাচুইটির আওতাধীন কর্মকর্তা) । এছাড়াও এককালীন পাওয়ার ক্ষেত্রে বেশ পার্থক্য রয়েছে-স্বশাসিত প্রতিষ্ঠানের চেয়ে সরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীগণ অধিক গ্র্যাচুইটি বা এককালীন টাকা পেয়ে থাকেন।
- একজন চাকুরিজীবি স্বায়ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠানে চাকুরি করলে সাধারণত মাসিক পেনশন পাবেন না।স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে (যেখানে পেনশন চালু নাই) চাকুরি করলে আনুতোষিকের সুবিধা পাবেন।তবে কিছু প্রতিষ্ঠানে নিজস্ব অর্থায়নে পেনশন চালু রয়েছে। এখন অবশ্য সর্বজনীন পেনশন চালু আছে।
রাজস্ব মানেই কি সরকারি প্রতিষ্ঠান?
হ্যাঁ। রাজস্ব হলো সম্পূর্ণ সরকারি প্রতিষ্ঠান। স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানও সরকারি নিয়মে চলে। তবে কিছু স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান সম্পূর্ণ সরকারি নিয়ম এবং সরকারের নিয়ন্ত্রণে থাকে -আবার কিছু কিছু স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান তাদের নিজস্ব বিধিমালা অনুযায়ী চলে। রাজস্ব খাতের চেয়ে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান স্পেশাল নিয়ম-কানুন সুযোগ-সুবিধা বেশি ভোগ করে আর সরকারি টা তো থাকবি ই। পেনশনটা শুধু ওই সংস্থা থেকে নিতে হয় যা এককালীন। বাংলাদেশের যে কোনো প্রান্ত থেকে টাকা তোলা যায়। স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে মান সম্মত বেতন দেয় যা আপনার পেনশন থেকে অনেক বেশি টাকা পাওয়া যায়। স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠনে জাতীয় পে-স্কেলের বাইরে বেতন দেওয়ার সুযোগ নেই অবশ্য সরকারি কোম্পানিতে স্বতন্ত্র বেতন হতে পারে যেমন- বিমানে বেতন বেশি, সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে বেতন বেশি এমন অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে।
স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান কি সরকারি নিয়মে চলে?
স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো আংশিকভাবে সরকারি নিয়মে চলে। এই প্রতিষ্ঠানগুলো নিজস্ব আইন ও বিধি-বিধান দ্বারা পরিচালিত হয়, তবে সরকারের কিছু নীতি ও নির্দেশনা তাদের মেনে চলতে হয়। স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের অভ্যন্তরীণ কার্যক্রম পরিচালনা এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা ভোগ করে। তাদের নিজস্ব পরিচালনা পর্ষদ থাকে, যারা প্রতিষ্ঠানের নীতি ও কার্যক্রম নির্ধারণ করে। সরকার কিছু ক্ষেত্রে স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের ওপর নিয়ন্ত্রণ রাখে, বিশেষ করে আর্থিক বিষয় এবং জাতীয় নীতিমালার ক্ষেত্রে। সরকার তাদের বাজেট ও ব্যয় পর্যবেক্ষণের অধিকার রাখে। সরকারি বিভিন্ন নীতি যেমন কোটা পদ্ধতি, বেতন ভাতা নির্ধারণের ক্ষেত্রে সরকারী নিয়ম প্রযোজ্য। স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, সংবিধিবদ্ধ সরকারি কর্তৃপক্ষ, পাবলিক নন-ফাইন্যানশিয়াল কর্পোরেশনসহ স্ব-শাসিত সংস্থাসমূহের তহবিলের উদ্বৃত্ত অর্থ সরকারি কোষাগারে জমা প্রদান আইন, ২০২০1 এর মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হয়। প্রতিটি স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব আইন ও বিধি-বিধান থাকে, যা তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে। এই আইন ও বিধি-বিধানগুলো সরকারের প্রণীত আইনের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হতে হয়। সংক্ষেপে, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানগুলো নিজস্ব স্বাধীনতা ভোগ করলেও, সরকারের কিছু নির্দিষ্ট নিয়ম ও নীতির আওতায় তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে হয়। ছুটি ছাটা সরকারি প্রতিষ্ঠানের মতই।