স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান ও ইউনির্ভাসিটি, ব্যাংক বীমার জন্য প্রত্যয় পেনশন স্কীম ২০২৪ সালের ১ জুলাই হতেই কার্যকর হচ্ছে-এরই মধ্যে সরকারি কর্মচারীদের জন্য সেবক পেনশন স্কিম আগামী ১ লা জুলাই ২০২৫ হতে চালু ঘোষণা দিয়েছে–সেবক পেনশন স্কিম ২০২৫
রাজস্বখাতেও পেনশন থাকবে না? না। ২০২৫ সাল হতে গতানুগতিক পেনশন থাকবে না। সরকারি রাজস্বখাতগুলোর প্রতিষ্ঠানেরও গ্র্যাচুইটি, মাসিক পেনশন নিশ্চিত ভাবে সর্বজনীন পেনশনের অধীনে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। জিপিএফ ও লাম্পগ্র্যান্ট এগুলো থাকবে কিনা এ ব্যাপারে এখনও কোন নির্দেশনা আসে নি। সরকারি অর্থ সাশ্রয়ের জন্যই এমন সিদ্ধান্ত নিচ্ছে বলে মনে করছে বিশেষজ্ঞগণ। তবে বর্তমানে যারা কর্মরত আছেন তারা প্রচলিত নিয়মেই পেনশন, গ্র্যাচুইটি, লাম্পগ্র্যান্ট, জিপিএফ ইত্যাদি পাবেন। তবে নতুন স্কীম কার্যকর হওয়ার পর নতুন যোগদানকারীগণ আর প্রচলিত পেনশন স্কীমে থাকবে না। মোটকথা নতুন নিয়ম নতুন যোগদানকারী সরকারি কর্মচারী/কর্মকর্তাদের জন্যও প্রযোজ্য হইবে।
সরকারি কর্মচারীদের স্কিমটি আরও উন্নত হতে পারে? না। সেটি মনে হচ্ছে না। একই ধারায় হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। যেহেতু প্রগতি ও প্রত্যয় পেনশন স্কিমে কোন পরিবর্তন পাওয়া যায় নি। তাই সেটি আশা করাটা বোকামী হতে পারে। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও বেশ কিছু স্বশাসিত প্রতিষ্ঠান প্রত্যয় পেনশন স্কিম নিয়ে আপত্তি তুলে মানববন্ধন এবং কর্মবিরতি পালন করছে। তারা আগামী ১লা জুলাই হতে পূর্ণ দিবস কর্মবিরতির ঘোষনাও দিয়েছে। দেখা যাক সরকার তাতে টনক নড়ে কিনা।
একজন কর্মচারী মাসিক ৩০০০ টাকা কাটালে ২৫ বছর পর স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়ে দিলে কত টাকা পেনশন পাবেন? এককালীন কোন টাকা পাবেন না। ২৫ বছর পূর্তিতে চাকরি ছাড়লে ৩০০০ টাকা হারে ২৫ বছর কর্তন করলে সরকারও সেই পরিমাণ অর্থ জমা করবে। সুদাসলে সরকার প্রতি মাসে ২৫ বছর পর ২৩,৮৬৪ টাকা প্রদান করবে। প্রদত্ত অর্থের উপর প্রতি বছর ইনক্রিমেন্ট বা মূল্যস্ফিতি সমন্বয় হবে কিনা সে বিষয়ে কোন নির্দেশনা জারি করেনি। তাই একই হারে পেতে থাকবে আমরণ।
প্রত্যয় এবং প্রগতি পেনশন স্কিমের মধ্যে পার্থক্য কি? শুধুমাত্র নাম ও শর্তগত কিছু পরিবর্তন রয়েছে। আর্থিক কোন সুবিধার তারতম্য নেই ।
দুটি পেনশন স্কিম পাশাপাশি দেখলেই আপনি বুঝতে পারবেন যে, এদের মধ্যে কোন তফাৎ নেই। শুধুমাত্র নাম ও প্রয়োগ ক্ষেত্র ব্যতীত।
Caption: info source
সর্বজনীন পেনশন ২০২৪ । ৫০% ঋণ হিসেবে উত্তোলন করা যাবে?
- সর্বজনীন পেনশন স্কিমে ১৮ থেকে ৫০ বৎসর বয়সী একজন সুবিধাভোগী ৬০ বৎসর বয়স পর্যন্ত এবং ৫০ বৎসরের ঊর্ধ্ব বয়স্ক একজন সুবিধাভোগী ন্যূনতম ১০ বছর চাঁদা প্রদান সাপেক্ষে আজীবন পেনশন সুবিধা ভোগ করবেন। বিদেশে কর্মরত বা অবস্থানকারী যে কোন বাংলাদেশী কর্মীগণও এই স্কিমে অংশগ্রহণ করতে পারবেন।
- পেনশনে থাকাকালীন ৭৫ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ার পূর্বে মৃত্যুবরণ করলে পেনশনারের নমিনি ৭৫ বৎসর পূর্ণ হওয়ার অবশিষ্ট সময় পর্যন্ত পেনশন প্রাপ্য হবেন।
- চাঁদাদাতা কমপক্ষে ১০ বৎসর চাঁদা প্রদান করার পূর্বেই মৃত্যুবরণ করলে জমাকৃত অর্থ মুনাফাসহ তার নমিনিকে ফেরত দেয়া হবে।
- চাঁদাদাতা তার জমাকৃত অর্থের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ঋণ হিসাবে উত্তোলন করতে পারবে।
- পেনশনের জন্য নির্ধারিত চাঁদা বিনিয়োগ হিসাবে গণ্য করে কর রেয়াত পাওয়ার যোগ্য হবেন এবং মাসিক পেনশন বাবদ প্রাপ্ত অর্থ আয়কর মুক্ত থাকবে।
- নিম্ন আয়সীমার নিচে থাকা নাগরিকগণের অথবা অস্বচ্ছল চাঁদাদাতার ক্ষেত্রে পেনশন তহবিলে মাসিক চাঁদার একটি অংশ সরকার অনুদান হিসাবে প্রদান করবে।
- আপাততঃ সরকারি এবং স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারীগণ সর্বজনীন পেনশনের আওতা বহির্ভূত হবেন। তবে ক্রমান্বয়ে তাদেরকে এ ব্যবস্থার অধীনে আনয়ন করা হবে।
- সর্বজনীন পেনশন স্কিমে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার পর চাঁদার হার এবং স্কিম পরিবর্তনের সুযোগ রয়েছে।
- পেনশনারদের প্রদত্ত চাঁদার টাকা বিনিয়োগ বিধিমালার আওতায় সর্বোচ্চ নিরাপদ ও লাভজনক খাতে বিনিয়োগের মাধ্যমে প্রাপ্য রিটার্ণের ভিত্তিতে পেনশনের মাসিক পরিমাণ নির্ধারিত হবে
সেবক পেনশন স্কিমে কি স্বামী/ স্ত্রীর আজীবন পেনশন প্রাপ্যতা বহাল থাকবে?
সর্বজনীন পেনশনে এ বিষয়ে কিছু বলা নেই। তবে সেবক পেনশন স্কিম যা সরকারি কর্মচারীদের জন্য জারি করতে যাচ্ছে সরকার সেটি প্রকাশিত হলেই কেবল জানা যাবে যে, উত্তরাধিকার হিসেবে স্ত্রী এবং প্রতিবন্ধী সন্তান আজীবন পেনশন সুবিধা ভোগ করবে কিনা। তবে বিএসআর রুলস মোতাবেক সরকার চাইলে সরকারি সুবিধা সংকোচন করতে পারে না। এক্ষেত্রে যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকতে হয়। তবে সেবক পেনশন স্কিমটি জারি হলেই কেবল আরও বিস্তারিত তুলে ধরতে পারবো। অপেক্ষায় থাকুন…………
পেনশন নিয়ে নতুন আইন ২০২৪ । স্বশাসিত ও সমজাতীয় প্রতিষ্ঠানে চাকরিতে পেনশন থাকছে না?