সরকারি কর্মচারী বা মুসলমানগণ আজকে ঐচ্ছিক ছুটি নিতে পারে – মুসলমানগণ এ দিনটি যথাযোগ্য মর্যাদায় পালন করে থাকে – আখেরি চাহার সোম্বা ২০২২
আখেরি চাহার সোম্বা ২১ সেপ্টেম্বর ২০২২ – আখেরী চাহার শোম্বা হলো ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের পালিত অত্যন্ত মর্যাদাপূর্ণ একটি স্মারক দিবস। আখেরী চাহার শোম্বা একটি আরবী ও ফার্সি শব্দ-যুগল; এর আরবী অংশ আখেরী, যার অর্থ “শেষ” এবং ফার্সি অংশ চাহার শোম্বা, যার অর্থ “বুধবার”।
১১ হিজরির শুরুতে রসূলুল্লাহ (স) গুরতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। ক্রমেই তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। তিনি এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়েন যে, নামাজের ইমামতি পর্যন্ত করতে পারছিলেন না। ২৮ সফর বুধবার মহানবী (স) সুস্থ হয়ে ওঠেন। দিনটি ছিল সফর মাসের শেষ বুধবার।
এই দিন কিছুটা সুস্থবোধ করায় রসূলুল্লাহ (স) গোসল করেন এবং শেষবারের মত নামাজে ইমামতি করেন। মদীনাবাসী এই খবরে আনন্দ-খুশিতে আত্মহারা হয়ে গেলেন এবং দলে দলে এসে নবী (স) কে একনজর দেখে গেলেন। সকলে তাদের সাধ্যমতো দান-সাদকা করলেন, শুকরিয়া নামাজ আদায় ও দোয়া করলেন। নবীর রোগমুক্তিতে তার অনুসারীরা এতটাই খুশি হয়েছিলেন যে, তাদের কেউ দাস মুক্ত করে দিলেন, কেউবা অর্থ বা উট দান করলেন; যেমনঃ আবু বকর সিদ্দিক (রা) ৫ হাজার দিরহাম, উমর (রা) ৭ হাজার দিরহাম, ওসমান ১০ হাজার দিরহাম, আলী (রা) ৩ হাজার দিরহাম, আবদুর রহমান ইবনে আউফ (রা) ১০০ উট দান করেন। উল্লেখ্য যে, ২৯ সফর তিনি আবার অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তার মাত্র কয়েক দিন পর ১২ই রবিউল আউয়াল ইহকাল ত্যাগ করেন মানবতার মুক্তিদূত হযরত মোহাম্মদ (সঃ) ।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কি আজ বন্ধ? / আজ কি সবকিছু বন্ধ থাকবে?
না। অনেকেই আছে যারা আখেরি চাহার সোম্বা কি সরকারি ছুটি? বাংলাদেশ সহ সারা মুসলিম দেশগুলো অনেক আনন্দের সাথে আখেরি চাহার সোম্বা পালন করে থাকেন। এই দিনে আল্লাহ তাআলার ইবাদত এবং শুকরিয়া আদায় করে থাকেন। তাই এই দিনটি বাংলাদেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে সরকারি ছুটির তালিকা রয়েছে। সরকারি অফিস এবং ব্যাংক গুলোর ছুটির তালিকায় নাই। বাংলাদেশের সকল সরকারি প্রতিষ্ঠান, স্কুল কলেজ সবকিছু বন্ধ থাকে। তাহলে আমরা জানলাম যে আখেরি চাহার সোম্বা সরকারি ছুটির দিন।
সূত্র: জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় পবিত্র আখেরি চাহার সোম্বা উপলক্ষে বন্ধ থাকবে।
আখেরি চাহার শোম্বা কিভাবে পালন করবেন? এই দিনে কি নামাজ পড়তে হয়?
- কিছু নির্দিষ্ট বিধি-বিধানের আলোকে ‘আখেরি চাহার শোম্বা’ পালন করা হয়; যদিও ধর্ম-তত্ত্ববিদগণের মধ্যে এই দিবসটি পালন করা নিয়ে কিছুটা মতভেদ রয়েছে।
- দিবসটি মূলতঃ ‘শুকরিয়া দিবস’ হিসাবে পালিত হয়; যাতে সাধারণতঃ গোসল করে দু’রাকাত শোকরানা-নফল নামাজ আদায় শেষে রোগ থেকে মুক্তির দোয়া ও দান-খয়রাত করা হয়।
- বিভিন্ন মসজিদ, মাদরাসা, দরবার, খানকায় ওয়াজ-নসিহত, জিকির-আজকার, মিলাদ মাহফিল, দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয় এই দিনটি পালন উপলক্ষে।
- এদিন বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সরকারিভাবে বন্ধ রাখার পাশাপাশি অফিস-আদালতে ঐচ্ছিকভাবে ছুটির দিন হিসাবে বিবেচনা করা হয়।
বাংলাদেশের ইসলামিক ফাউন্ডেশন এ ব্যাপারে কি বলে?
ঐচ্ছিক ছুটির দিন –ইসলামিক ফাউন্ডেশন জানায়, আখেরি চাহার সোম্বা বলতে আরবি ‘সফর’ মাসের শেষ বুধবার দিনকে বোঝায়। হযরত মুহাম্মদ (সা.) দীর্ঘ অসুস্থতার পর সফর মাসের শেষ বুধবার সাময়িক সুস্থ হয়ে উঠেন। বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশের মুসলিমরা রাষ্ট্রীয় ও ব্যক্তি উদ্যোগে এ উৎসব-ইবাদত যথাযথ ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে খুশির দিন হিসেবে এটি উদযাপন করে থাকেন।