সরকারী অফিস/প্রতিষ্ঠানে মৌখিক সম্বোধনের জন্য “স্যার” শব্দের পরিবর্তে জনাব” ব্যবহারের জন্য সুপারিশ করা হয়েছে সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের পত্রে– সরকারিভাবে সম্বোধনসূচক শব্দ ব্যবহার নির্দেশনা
মৌখিকভাবে কি সম্বোধন ব্যবহার করা হবে?– মৌখিক সম্বোধনে পুরুষের ক্ষেত্রে “স্যার” ও মহিলাদের ক্ষেত্রে “ম্যাডাম” ব্যবহার করা যাইতে পারে মর্মে অবগত করা হয়েছে। এটি ব্যবহার বাধ্যতামূলক কিনা সে সম্পর্কে কোন নির্দশনামূলক পত্র অদ্যবধি জারি করা হয়নি।
মহিলা কর্মকর্তাদেরও কি স্যার বলতে হবে? না। এমন নির্দেশনা নেই। একটি মাত্র নির্দেশনাই সম্বোধন সম্পর্কে জারি করা হয়েছে যেখানে পুরুষদের স্যার এবং মহিলাদের ম্যাডাম বলা যাইতে পারে। তবে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন বলেছেন যে, সরকারি কর্মকর্তাদের সাধারণ জনগণ স্যার বা ম্যাডাম বলা বাধ্যতামূলক নয়। চাইলে তারা ভাই বা আপা বলতে পারেন। সরকারি কর্মচারীরা জনগণের সেবক। তাঁদের স্যার বা ম্যাডাম ডাকার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। ভদ্রতার খাতিরে অনেকে স্যার বা ম্যাডাম ডাকেন।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, সরকারি কর্মচারীরা জনগণের সেবক। তাঁদের স্যার বা ম্যাডাম ডাকার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। ভদ্রতার খাতিরে অনেকে স্যার বা ম্যাডাম ডাকেন। কিন্তু এটি ডাকা বাধ্যতামূলক কিছু নয়। কেউ যদি আপা বা ভাই ডাকেন, তাতে দোষের কিছু নেই। এতে মাইন্ড করারও কিছুই নেই। সরকারি চাকরিজীবীরা জনগণের সেবক—এই চিন্তা থেকেই কাজ করতে হবে।
স্যার বা ম্যাডাম ব্যবহার জনসাধারণের জন্য বাধ্যতামূলক নয় / সরকারি অফিসে মহিলাদের ক্ষেত্রে স্যার নাকি ম্যাডাম ব্যবহার করতে হবে?
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় পরবর্তী আদেশ জারি না করা পর্যন্ত স্যার বা ম্যাডার ব্যবহারের কোন বাধ্যবাধকতা নেই।
Caption: Source of information
স্যার শব্দটি সঠিক অর্থ জেনে নিন। Sir শব্দটি কিভাবে ব্যবহৃত হয়?
“SIR” কথার বাস্তবিক অর্থ হলো “Slave I Remain”. যার বাংলা তরজমা করলে দাঁড়ায় আমি আপনার অনুগত দাস। ব্রিটিশরা খুব চালাকি করে এই পন্থাটি ভারতীয় কর্মচারীদের ওপর ব্যবহার করত। এরা চাইতো ভারতীয়রা সারা জীবন তাদের গোলাম অথবা দাস হয়ে থাকুক। কিন্তু সরাসরি যদি এই কথা ভারতীয়দের বলা হতো তাহলে বিদ্রোহ হবার সম্ভাবনা ছিল। এইজন্য শব্দের মাধ্যমে তারা এই কাজটি করে যেত। ব্রিটিশরা সাধারণত তাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে “Your Excellency”… এই ভাবে সম্বোধন করতো। ব্রিটিশরা চলে গেছে কিন্তু তাদের উচ্ছিষ্ট ভারতবর্ষে রেখে দিয়ে গেছে। আর এই “SIR” কথাটিও তাদের ওই উচ্ছিষ্টের একটি অংশ। যদিও আমরা সকলেই এখনো আমাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে Sir বলেই সম্বোধন করি। কিন্তু সার্ভিস রেগুলেশনে কোথাও লেখা থাকেনা যে আপনার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে Sir বলতেই হবে। কিন্তু বর্তমান সময়ে যেহেতু উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে তেল দেওয়া আমাদের অভ্যাস হয়ে গেছে তাই সবকিছু বুঝেও আমরা না বোঝার ভান করে থাকি। আপনি যদি আপনার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে নামের আগে Mr. যুক্ত করে সম্বোধন করেন তাহলে কোন বাধা নেই এবং আপনার উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ আপনার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারবে না। এখানে সরকারি অথবা প্রাইভেট চাকুরীজীবীর ব্যাপারে তেমন কোন ফারাক নেই। সূত্র
SIR বা স্যার শব্দটির উপরোক্ত ব্যাখ্যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত বা ভাইরাল হলেও এটি সঠিক ব্যাখ্যা নয়। স্যার শব্দটি একটি ফরমাল সম্মানসূচক এড্রেস যা ইংরেজদের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হত। স্যার হল পুরুষদের জন্য ইংরেজিতে একটি আনুষ্ঠানিক সম্মানসূচক সম্বোধন, উচ্চ মধ্যযুগে Sire থেকে উদ্ভূত। উভয়ই পুরানো ফরাসি “সিউর” থেকে উদ্ভূত, যা ফরাসি-ভাষী নর্মানদের দ্বারা ইংল্যান্ডে আনা হয়েছিল, এবং যা এখন ফরাসি ভাষায় শুধুমাত্র “ম্যান্সিউর” এর অংশ হিসাবে বিদ্যমান, ইংরেজিতে “মাই লর্ড” এর সমতুল্য। Sir is a formal honorific address in English for men, derived from Sire in the High Middle Ages. Both are derived from the old French “Sieur” (Lord), brought to England by the French-speaking Normans, and which now exist in French only as part of “Monsieur”, with the equivalent “My Lord” in English.
পত্রে কি সম্বোধন ব্যবহার করতে হবে?
সংস্থাপন মন্ত্রণালয়ের, বাংলা ভাষা বাস্তবায়ন শাখার ১১-১২-১৯৯০ তারিখের সম(বাবাকো)-১০২/৯০-০১৪ নম্বর পত্র মোতাবেক পুরুষ ও মহিলাদের নামের পূর্বে যথাক্রমে “জনাব” ও “বেগম” শব্দ দুইটির সম্মানসূচক বর্তমান ব্যবহার যথারীতি চলিতে পারে। অর্থাৎ কোন সরকারি পত্র লেখার ক্ষেত্রে মহিলা অফিসারের ক্ষেত্রে বেগম ব্যবহার করা যাইবে।
https://youtu.be/5WuDmYrsP1c