ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, ২০১৮ এ কিছু সংশোধনীর মাধ্যমে নাম পরিবর্তন করে সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩ রাখা হয়েছে – সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩
সাইবার অপরাধের যন্ত্র কি?– ডিজিটাল ডিভাইস অর্থ কোনো ইলেকট্রনিক, ডিজিটাল, ম্যাগনেটিক, অপটিক্যাল বা তথ্য প্রক্রিয়াকরণ যন্ত্র বা সিস্টেম, যাহা ইলেকট্রনিক, ডিজিটাল, ম্যাগনেটিক বা অপটিক্যাল ইমপালস ব্যবহার করিয়া যৌক্তিক, গাণিতিক এবং স্মৃতি কার্যক্রম সম্পন্ন করে, এবং কোনো ডিজিটাল বা কম্পিউটার ডিভাইস সিস্টেম বা কম্পিউটার নেটওয়ার্কের সহিত সংযুক্ত, এবং সকল ইনপুট, আউটপুট, প্রক্রিয়াকরণ, সঞ্চিতি, ডিজিটাল ডিভাইস সফটওয়্যার বা যোগাযোগ সুবিধাদিও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে; (ঠ) “ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব” অর্থ ধারা ১০ এ বর্ণিত ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাব; (ড) “পুলিশ অফিসার” অর্থ ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার নিম্নে নহেন, এইরূপ কোনো পুলিশ অফিসার।
অনুপ্রবেশ বলতে কি বুঝায়? বে-আইনি প্রবেশ অর্থ কোনো ব্যক্তি বা কর্তৃপক্ষের অনুমতি ব্যতিরেকে বা উক্তরূপ অনুমতির শর্ত লঙ্ঘনক্রমে কোনো কম্পিউটার বা ডিজিটাল ডিভাইস বা ডিজিটাল নেটওয়ার্ক বা ডিজিটাল তথ্য ব্যবস্থায় প্রবেশ, বা উক্তরূপ প্রবেশের মাধ্যমে উক্ত তথ্য ব্যবস্থার কোনো তথ্য-উপাত্তের আদান-প্রদানে বাধা প্রদান বা উহার প্রক্রিয়াকরণ স্থগিত বা ব্যাহত করা বা বন্ধ করা, বা উক্ত তথ্য-উপাত্তের পরিবর্তন বা পরিবর্ধন বা সংযোজন বা বিয়োজন করা অথবা কোনো ডিজিটাল ডিভাইসের মাধ্যমে কোনো তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ।
মুক্তিযোদ্ধা চেতনা কি? মুক্তিযুদ্ধের চেতনা অর্থ জাতীয়তাবাদ, সমাজতন্ত্র, গণতন্ত্র ও ধর্ম নিরপেক্ষতার সেই সকল আদর্শ যাহা আমাদের বীর জনগণকে জাতীয় মুক্তি সংগ্রামে আত্মনিয়োগ ও বীর শহিদদিগকে প্রাণোৎসর্গ করিতে উদ্বুদ্ধ করিয়াছিল। সাইবার নিরাপত্তা অর্থ কোনো ডিজিটাল ডিভাইস, কম্পিউটার বা কম্পিউটার সিস্টেম এর নিরাপত্তা বজায় রাখা।
সাইবার নিরাপত্তা আইন কবে পাশ হয়? । সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩
ট্রাইব্যুনাল বা আপিল ট্রাইব্যুনাল, বিচারকার্য পরিচালনাকালে, কম্পিউটার বিজ্ঞান, ডিজিটাল ফরেনসিক, ইলেকট্রনিক যোগাযোগ, ডাটা সুরক্ষাসহ অন্যান্য বিষয়ে অভিজ্ঞ কোনো ব্যক্তির মতামত গ্রহণ করিতে পারিবে। ট্রাইব্যুনালের বিচারক এই আইনের অধীন কোনো মামলার অভিযোগ গঠনের তারিখ হইতে ১৮০ (একশত আশি) কার্য দিবসের মধ্যে মামলা নিষ্পত্তি করিবেন।
সাইবার নিরাপত্তা আইন, ২০২৩ পিডিএফ ডাউনলোড
সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩ । কোন অপরাধে কি শাস্তি বিধান রয়েছে?
- কোনো কম্পিউটার, ডিজিটাল ডিভাইস, কম্পিউটার সিস্টেম বা কম্পিউটার নেটওয়ার্কে বে-আইনি প্রবেশ করেন বা প্রবেশ করিতে সহায়তা করেন; বা (খ) কোনো কম্পিউটার, ডিজিটাল ডিভাইস, কম্পিউটার সিস্টেম বা কম্পিউটার নেটওয়ার্কে অপরাধ সংঘটনের উদ্দেশ্যে বে-আইনি প্রবেশ করেন বা প্রবেশ করিতে সহায়তা করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ।
- যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর (ক) দফা (ক) এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনধিক ৬(ছয়) মাস কারাদণ্ডে, বা অনধিক ২(দুই) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন;
- দফা (খ) এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনধিক ৩(তিন) বৎসর কারাদণ্ডে, বা অনধিক ১০(দশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
- যদি উপ-ধারা (১) এর অধীন কৃত অপরাধ গুরুত্বপূর্ণ তথ্য-পরিকাঠামো কর্তৃক সংরক্ষিত কোনো কম্পিউটার, ডিজিটাল ডিভাইস, কম্পিউটার সিস্টেম বা কম্পিউটার নেটওয়ার্কের ক্ষেত্রে সংঘটিত হয়, তাহা হইলে তিনি অনধিক ৩(তিন) বৎসর কারাদণ্ডে, বা অনধিক ১০(দশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
- কোনো কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম বা কম্পিউটার নেটওয়ার্ক হইতে কোনো উপাত্ত, উপাত্ত-ভাণ্ডার, তথ্য বা উহার উদ্ধৃতাংশ সংগ্রহ করেন, বা স্থানান্তরযোগ্য জমাকৃত তথ্য-উপাত্তসহ উক্ত কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম বা কম্পিউটার নেটওয়ার্কের তথ্য সংগ্রহ করেন বা কোনো উপাত্তের অনুলিপি বা অংশবিশেষ সংগ্রহ করেন;
- কোনো কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম বা কম্পিউটার নেটওয়ার্কে উদ্দেশ্যমূলকভাবে কোনো ধরনের সংক্রামক, ম্যালওয়্যার বা ক্ষতিকর সফটওয়্যার প্রবেশ করান বা প্রবেশ করানোর চেষ্টা করেন;
- ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক, উপাত্ত বা কম্পিউটারের উপাত্ত-ভাণ্ডারের ক্ষতিসাধন করেন, বা ক্ষতিসাধনের চেষ্টা করেন বা উক্ত কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম বা কম্পিউটার নেটওয়ার্কে রক্ষিত অন্য কোনো প্রোগ্রামের ক্ষতি সাধন করেন বা করিবার চেষ্টা করেন;
- কোনো কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম বা কম্পিউটার নেটওয়ার্কে কোনো বৈধ বা ক্ষমতাপ্রাপ্ত ব্যক্তিকে কোনো উপায়ে প্রবেশ করিতে বাধা সৃষ্টি করেন বা বাধা সৃষ্টির চেষ্টা করেন;
- ইচ্ছাকৃতভাবে প্রেরক বা গ্রাহকের অনুমতি ব্যতীত, কোনো পণ্য বা সেবা বিপণনের উদ্দেশ্যে, স্পাম উৎপাদন বা বাজারজাত করেন বা করিবার চেষ্টা করেন বা অযাচিত ইলেক্ট্রনিক মেইল প্রেরণ করেন; বা কোনো কম্পিউটার, কম্পিউটার সিস্টেম বা কম্পিউটার নেটওয়ার্কে অন্যায়ভাবে হস্তক্ষেপ বা কারসাজি করিয়া কোনো ব্যক্তির সেবা গ্রহণ বা ধার্যকৃত চার্জ অন্যের হিসাবে জমা করেন বা করিবার চেষ্টা করেন। তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ।
- যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনধিক ৭ (সাত) বৎসর কারাদণ্ডে, বা অনধিক ১০ (দশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
- যদি কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে বা জ্ঞাতসারে কোনো কম্পিউটার প্রোগ্রাম, কম্পিউটার সিস্টেম বা কম্পিউটার নেটওয়ার্কে ব্যবহৃত কম্পিউটার সোর্স কোড গোপন, ধ্বংস বা পরিবর্তন করেন, বা অন্য কোনো ব্যক্তির মাধ্যমে উক্ত কোড, প্রোগ্রাম, সিস্টেম বা নেটওয়ার্ক গোপন, ধ্বংস বা পরিবর্তন করিবার চেষ্টা করেন, এবং উক্ত সোর্স কোডটি যদি সংরক্ষণযোগ্য বা রক্ষণাবেক্ষণযোগ্য হয়, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ।
- যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনধিক ৩ (তিন) বৎসর কারাদণ্ডে, বা অনধিক ৩ (তিন) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
- যদি কোনো ব্যক্তি ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক মাধ্যমে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ, মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, জাতীয় সংগীত বা জাতীয় পতাকা সম্পর্কে বিদ্বেষ, বিভ্রান্তি ও কুৎসামূলক প্রচারণা চালান বা উহাতে মদদ প্রদান করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ। (২) যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনধিক ৫ (পাঁচ) বৎসর কারাদণ্ডে, বা অনধিক ১ (এক) কোটি টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।
- যদি কোনো ব্যক্তি ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক মাধ্যম ব্যবহার করিয়া জালিয়াতি করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ। (২) যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনধিক ২(দুই) বৎসর কারাদণ্ডে, বা অনধিক ৫ (পাঁচ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন। ব্যাখ্যা।—এই ধারার উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, “ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক জালিয়াতি” অর্থ কোনো ব্যক্তি কর্তৃক বিনা অধিকারে বা প্রদত্ত অধিকারের অতিরিক্ত হিসাবে বা অনধিকার চর্চার মাধ্যমে কোনো কম্পিউটার বা ডিজিটাল ডিভাইসের ইনপুট বা আউটপুট প্রস্তুত, পরিবর্তন, মুছিয়া ফেলা ও লুকাইবার মাধ্যমে অশুদ্ধ ডাটা বা প্রোগ্রাম, তথ্য বা ভ্রান্ত কার্য, তথ্য সিস্টেম, কম্পিউটার বা ডিজিটাল নেটওয়ার্ক পরিচালনা।
- যদি কোনো ব্যক্তি ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক মাধ্যম ব্যবহার করিয়া প্রতারণা করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ।
- যদি কোনো ব্যক্তি হ্যাকিং করেন, তাহা হইলে উহা হইবে একটি অপরাধ এবং তজ্জন্য তিনি অনধিক ১৪ (চৌদ্দ) বৎসর কারাদণ্ডে, বা অনধিক ১ (এক) কোটি টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন। ব্যাখ্যা। এই ধারার উদ্দেশ্যপূরণকল্পে, “হ্যাকিং” অর্থ— (ক) কম্পিউটার তথ্য ভাণ্ডারের কোনো তথ্য চুরি, বিনাশ, বাতিল, পরিবর্তন বা উহার মূল্য বা উপযোগিতা হ্রাসকরণ বা অন্য কোনোভাবে ক্ষতিসাধন; বা (খ) নিজ মালিকানা বা দখলবিহীন কোনো কম্পিউটার, সার্ভার, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক বা অন্য কোনো ইলেকট্রনিক সিস্টেমে অবৈধভাবে প্রবেশের মাধ্যমে উহার ক্ষতিসাধন।
বে-আইনি প্রবেশের দন্ড কোটি টাকা?
যদি কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে বা জ্ঞাতসারে কোনো গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোতে— (ক) বে-আইনি প্রবেশ করেন; বা (খ) বে-আইনি প্রবেশের মাধ্যমে উহার ক্ষতিসাধন বা বিনষ্ট বা অকার্যকর করেন অথবা করিবার চেষ্টা করেন, তাহা হইলে উক্ত ব্যক্তির অনুরূপ কার্য হইবে একটি অপরাধ। (২) যদি কোনো ব্যক্তি উপ-ধারা (১) এর (ক) দফা (ক) এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনধিক ৩(তিন) বৎসর কারাদণ্ডে, বা অনধিক ২৫ (পঁচিশ) লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন; এবং (খ) দফা (খ) এর অধীন কোনো অপরাধ সংঘটন করেন, তাহা হইলে তিনি অনধিক ৬(ছয়) বৎসর কারাদণ্ডে, বা অনধিক ১ (এক) কোটি টাকা অর্থদণ্ডে, বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হইবেন।