সরকারি কর্মচারীদের ০৩ বছর অন্তর অন্তর বদলির বিধান রয়েছে। যেখানে প্রতিকুল পরিস্থিতিতে ০২ বছর পরও বদলির কথা বলা হয়েছে। বাস্তবতায় ভিন্ন চিত্র কোন কোন কর্মচারী একই দপ্তরে ৩৫-৪০ বছরও চাকরি করে যাচ্ছে।
আবার কেউ কেউ তার চাকরিকাল তার গ্রামে বা উপজেলায় একই দপ্তরে কাজ করে শেষ করে যাচ্ছে। ক্ষমতা ও দ্যোরাত্ব্যে তাদের এমন চাকরি কাল বিপদে ফেলছে দপ্তরের স্বল্পকাল চাকরি করা কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের। দীর্ঘ সময় চাকরি করা এসব কর্মচারী নতুন বদলি হয়ে আসা কর্মকর্তা বা কর্মচারীদের উপর নিয়ন্ত্রণ ও স্থানীয় প্রভাব খাটানোর চেষ্টা করে। অথচ বিভিন্ন দপ্তর ঘুরে আসলে বাড়তো অভিজ্ঞতা ও সরকারি চাকরি সমন্ধে বাস্তব ধারণা।
পরিপত্র সারসংক্ষেপ:
- একই পদে তিন বছরের অধিক কাল যাবৎ নিয়োজিত কর্মচারীকে বাস্তব অবস্থাভেদে অন্যত্র বদলি করতে হবে।
- দুর্গম অথবা প্রতিকুল যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পন্ন এলাকার ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর মেয়াদ দুই বছর হলেও তাকে অন্যত্র বদলি করা যেতে পারে।
মন্ত্রী পরিষদ বিভাগের ০৮ জুলাই ২০১৫ তারিখের ০৪.০০.০০০০.৫১৩.৩৫.০৩৭.২০১৫-১৯১ নম্বর পরিপত্রের মাঠ পর্যায়ে কর্মরত কর্মচারীদের বদলির কথা বলা হয়েছে।
ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা ও বিভাগ পর্যায়ের সরধারণ ও রাজস্ব প্রশাসনে নিয়োজিত কর্মচারীদের একই পদে কিংবা একই কর্মস্থলে তিন বছর মেয়াদ পূর্ণ হলেই বাস্তব অবস্থা বিবেচনায় সাধারণত অন্যত্র বদলি করার রেওয়াজ রয়েছে। এসব দপ্তরে নিয়োজিত কোন কোন কর্মচারী একই পদে তিন বছরের অধিককাল কর্মরত থাকায় তারা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে অধিক অভিজ্ঞতা অর্জনের সুযোগ পাচ্ছেন, অন্যান্য বিষয়ে অভিজ্ঞতা লাভের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। তা ছাড়া, একই পদে দীর্ঘদিন কর্মরত থাকায় কোন কোন কর্মচারী বিভিন্ন অনিয়মের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ছেন। এ জন্য মাঠ পর্যায়ে নিয়োজিত কর্মচারীদেরকে বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষ করে গড়ে তোলা এবং একই পদে কিংবা কর্মস্থলে তিন বছরের বেশি সময় ধরে কর্মরত কর্মচারীগণকে বাস্তব অবস্থাভেদে অন্যত্র বদলি করার জন্য ইতোমধ্যে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ হতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু লক্ষ্য করা যাচ্ছে যে, কোন কোন ক্ষেত্রে নির্দেশনাটি যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয়নি।
০২। উপযুক্ত প্রেক্ষাপদে ইউনিয়ন, উপজেলা, জেলা ও বিভাগ পর্যায়ের সাধারণ ও রাজস্ব প্রশাসনে নিয়োজিত কর্মচারীদেরকে একই পদ কিংবা কর্মস্থল হতে অন্য বদলির ক্ষেত্রে নিম্নোলিখিত বিষয়গুলি অনুসরণের জন্য অনুরোধ করা হল:
(ক) এই পদে তিন বছরের অধিকাল যাবৎ নিয়োজিত কর্মচারীকে বাস্তব অবস্থাভেদে অন্যত্র বদলি করতে হবে।
(খ) দুর্গম অথবা প্রতিকুল যোগাযোগ ব্যবস্থাসম্পন্ন ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মচারীর মেয়াদ দুই বছর হলেও তাকে অন্যত্র বদলী করা যেতে পারে।
(গ) সাধারণ প্রশাসন ও ভূমি অফিসে কর্মরত কর্মচারীদেরকে পর্যায়ক্রমে সকল বিষয়ে কাজ করার সুযোগ দেওয়া যেতে পারে; এবং
(ঘ) বদলির ক্ষেত্রে বৈষম্য পরিহারের জন্য সচেষ্ট থাকতে হবে।
স্বাক্ষর করেছেন মো: মাকছুদুর রহমান পাটওয়ারী অতিরিক্ত সচিব (জেজলা ও মাঠ প্রশাসন
প্রশ্নোত্তর পর্ব:
- প্রশ্ন: তাহলে ০৩ বছরের পূর্বে কি কোন কর্মচারীকে বদলী করা যাবে না?
- উত্তর: যাবে। জনস্বার্থে যে কোন সময় বদলী করা যাবে।
- প্রশ্ন: দূর্নীতির সাথে কি বদলীর সম্পর্ক রয়েছে?
- উত্তর: হ্যাঁ। একই দপ্তরে দীর্ঘদিন চাকরি করার ফলে স্থানীয় দাপটে দূর্নীতির প্রবনতা বাড়ে।
- প্রশ্ন: প্রকৃত পক্ষে যদি ১১-২০ তম গ্রেডে কর্মচারীদের ০৩ বছর পর পর বদলী করা হয় তাহলে কি হবে?
- উত্তর: জনস্বার্থ রক্ষা হবে কিন্তু বর্তমান বেতন কাঠামোতে তারা আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হবে। পদোন্নতি বা স্বাভাবিক বদলির ফলে তাদের যে আর্থিক সুবিধা বৃদ্ধি পায় তাতে একটি বদলি মানেই ২৫ গুন ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়া। ১১-২০ গ্রেডে বেতন কাঠামোতে পরিবর্তন আনলে ০৩ বছর অন্তর অন্তর বদলি ব্যবস্থা কার্যকর করা সম্ভব।
মাঠ পর্যায়ে কমরত কর্মচারীদের ০৩ বছর পরই বদলির পরিপত্র সংগ্রহ করে রাখতে পারেন: ডাউনলোড
যদি কেউ সাময়িক বরখাস্ত হয়ে থাকে তাকে কি বদলি করতে পারে বা তার স্থানে অন্য কাউকে বদলি দিতে পারে? বিভাগীয় মামলা চলছে।
আমার জানামতে পারবে না। বদলিও একটি শাস্তি। সাময়িক বরখাস্ত সমাধান না হওয়া পর্যন্ত আপনাকে বদলি করা হলে অনিয়ম হবে। বদলি করলে আপনি যোগদান করতেই পারবেন না কারণ এ সময় ছুটি দেওয়া বা কাজে অংশগ্রহণ করা যায় না।