সরকারি কর্মচারীগন বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড হতে প্রতি বছর চিকিৎসা অনুদান গ্রহণ করতে পারে। তবে বাস্তবে দেখা যায় যে, মাত্র ১০% কর্মচারী এবং কর্মকর্তা তাদের চিকিৎসা বাবদ ব্যয়ের অর্থের বিপরীতে চিকিৎসা অনুদান প্রাপ্তির জন্য আবেদন করে থাকে। প্রতি বছর একবার সাধারণ চিকিৎসা বাবদ ব্যয়ের বিপরীতে আর্থিক সহায়তার জন্য আবেদন করতে পারেন। এ অনুদান মূলত দেওয়া হয় প্রতিমাসে সরকারি কর্মচারীদের মাসিক বেতন ভাতা হতে মূল বেতনের ১% তবে সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা কর্তন করা হয়।
কাদের এই চিকিৎসা সহায়তা প্রদান করা হয়?
সরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তা/কর্মচারীগণ বছর শেষে বিভিন্ন অসুখ বিসুখে তার নিজের এবং তার পরিবারের পিছনে যে অর্থ ব্যয় করেন সে সকল হিসাবযুক্ত করে বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডে আবেদন করলে আনুপাতিক হারে বা নির্ধারিত হারের বিপরীতে অনুদান প্রদান করা হয়। আবেদন ম্যানুয়াল হলেও বর্তমানে অনলাইনে ইএফটি’র মাধ্যমে এ অনুদান প্রদান করে থাকে। তবে আধা-সরকারি ও স্বাত্তশাসিত যে সকল প্রতিষ্ঠান শর্তসাপেক্ষে বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ডে নিবন্ধিত বা তালিকাভূক্ত তারাও এ অনুদানের জন্য আবেদন করতে পারেন। তবে বেসরকারি সংস্থাগুলো এ অনুদানের যোগ্য বলে বিবেচিত হবে না।
কেন এ অনুদান দেওয়া হয়?
সরকারি কর্মচারীদের চিকিৎসা অনুদান মূলত তাদের মাসিক বেতন হতে প্রতি মাসে সর্বোচ্চ ১৫০ টাকা এবং সর্বনিম্ন মূল বেতনের ১% কর্তন করা হয়। সাধারণত যাদের বেতন ১৫০০০ টাকার বেশি তাদের বাধ্যতামূলকভাবে ১৫০ টাকা কল্যাণ তহবিলে কর্তন করতে হয়। যতদিন চাকরি করবেন এ অর্থ বেতন থেকে কর্তন করা হবে। একটি হিসাব আপনাদের সামনে উপস্থাপন করছি-ধরুন একটি প্রতিষ্ঠানে ৮০ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী কর্মরত আছে। প্রতিমাসে ১৫০ টাকা করে ৮০ জনের বেতন হতে সর্বমোট ১২,০০০ টাকা কর্তন করা হয়। প্রতি বছরে ১,৪৪,০০০ টাকা কর্তন করা হয় সে হিসাবে ৫ বছরে মাত্র একটি প্রতিষ্ঠান হতে ৭,২০,০০০ টাকা কর্তন করা হয়। এই অর্থের বিপরীতেই মূলত চিকিৎসা অনুদান প্রদান করা হয়।
কি কি কল্যানে এ বিপুল অর্থ ব্যয় করা হয়?
মূলত সরকারি কর্মচারীদের চিকিৎসা এবং আর্থিক সংকটে এ অর্থ ব্যয় করে থাকে কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশ কর্মচারী কল্যাণ বোর্ড সম্মিলিতভাবে সাধারণ চিকিৎসা সাহায্য, মাসিক কল্যাণ ভাতা, কর্মচারীদের দাফন/ অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুদান, মামলাজনিত কারনে সাহায্য, কর্মচারীদের জটিল ও ব্যয়বহুল রোগের চিকিৎসা সাহায্য, কমিউনিটি সেন্টার/ক্লাবকে বার্ষিক অনুদান, কমিউনিটি সেন্টার/ক্লাব নির্মাণ/স্থাপনের জন্য অনুদান, ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরে মিনিবাসে যাতায়াতের জন্য টিকেট ইস্যু বাবদ, বড়বাসে যাতায়াতের জন্য টিকেট ইস্যু বাবদ, মতিঝিল কমিউনিটি সেন্টার মিলনায়তন ব্যবহার বাবদ, কারিগরি প্রশিক্ষণে ভর্তি করে প্রশিক্ষণ প্রদান ইত্যাদি কাজে মোট কথা কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কল্যাণে এ অর্থ ব্যয় করা হয়।
চিকিৎসা অনুদান পাওয়ার নিয়ম কি?
খুবই সহজ নিয়ম, আপনি নিজ এবং পরিবারের জন্য সারা বছর যে অর্থ চিকিৎসা বাবদ ব্যয় করেছেন প্রতিটি খরচের ভাউচার এবং প্রেসক্রিপশন সংগ্রহে রাখবেন। বছর শেষে একটি বিবরণী তৈরি করে সাধারণ চিকিৎসার ফরম পূরণ করে যথাযথ কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আপনি বাংলাদেশ কর্মচারি কল্যাণ বোর্ডে চিকিৎসা অনুদান প্রাপ্তির আবেদন প্রেরণ করবেন। ব্যাস এ টুকুই কাজ, অনেকের কাছেই বিষয়টি জটিল মনে হয় বিধান মাত্র ১০% কর্মচারী চিকিৎসা অনুদানের জন্য আবেদন করে থাকেন। যেহেতু প্রতি বছর আপনিও ১৮০০ টাকা মুল বেতন হতে কর্তন করছেন তাই আপনার সাধারণ চিকিৎসার জন্য চিকিৎসা অনুদানের আবেদন করতেই পারেন।
কি কি রোগের সাধারণ চিকিৎসা অনুদান পাওয়া যায়?
সর্দি, জ্বর, কাশি/ বাতজ্বর, অ্যাজমা, নিউমোনিয়া, ডায়াবেটিস, চোখের চিকিৎসা, সিজার অপারেশন, মুত্রনালী অপারেশন, স্ট্রোক, লিভারসিরোসি, ক্যানসার, কিডনি রোগ ইত্যাদি কারণ ১০ হাজার হতে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থ সহায়তা বা চিকিৎসা অনুদান প্রদান করে থাকেন এ সংস্থা।
আবেদনের সাথে কি কি ডকুমেন্ট যুক্ত করতে হবে এবং ফরম কোথায় পাওয়া যাবে?
আবেদন ফরম অনলাইন হতে সংগ্রহ করে পূরণ পূর্বক প্রেসক্রিপশন এবং ভাউচারের তালিকা মূল কপি, পে ফিক্সেশনের কপি, কর্তৃপক্ষের প্রত্যয়ন নিশ্চিত করে প্রেরণ করতে হবে। আবেদন ফরম সংগ্রহ করুন এখানে থকে
আবেদনের বিস্তারিত নিয়মাবলী দেখে নিন।
সরকারি কর্মচারীদের সর্দি, জ্বর, কাশি/বাত চিকিৎসায় সর্বোচ্চ ১৫,০০০ টাকা অনুদান ২০২২