প্রতিটি মেধাবী ছাত্র -ছাত্রী বি.সি.এস ক্যাডার হয়ে দেশের সেবা করার স্বপ্ন বুনে থাকেন। কেউ কেউ তাদের চেষ্টায় সফল হউন কেউ বা আবার বিফল হউন। সফলতার দৌড়ে সেই টিকে থাকেন যাদের মেধা মনন এবং ধৈর্য্য ধরার মানসিকতা রয়েছে।
কঠোর পরিশ্রম ও প্রিলি, লিখিত এবং ভাইভা পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েই ক্যাডার হওয়ার স্বপ্ন পূরণ করতে হয়। আজ আমরা জানবো বিসিএস ক্যাডার হয়ে ঠিক কত টাকা বেতনে যোগদান করেন একজন কর্মকর্তা। চলুন প্রথমে তার নিয়োগ পত্র দেখে নিই।
বিসিএস ক্যাডারের নিয়োগের প্রজ্ঞাপন মোতাবেক ৩৭তম বি.সি.এস. পরীক্ষা, ২০১৬ এর ফলাফলের ভিত্তিতে বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশনের ১৭-০৭-২০১৮ তারিখের ৮০.২০০.০৬৪.০০.০০.০৩৪.২০১৭-২০৯ নং পত্রের সুপারিশক্রমে এ প্রজ্ঞাপনের ৩ নং অনুচ্ছেদে বর্ণিত ০১ (এক) জন প্রার্থীকে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের বিভিন্ন ক্যাডারের প্রবেশ পদে জাতীয় বেতনস্কেল, ২০১৫ অনুসারে টাকা ২২০০০-৫৩০৬০/- বেতনক্রমে নিম্নবর্ণিত শর্তে নিয়োেগ প্রদান করা হয়েছে-
(ক) তাঁকে লােক প্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে অথবা সরকার নির্ধারিত প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানে বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে; (খ) উক্ত বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ সমাপনান্তে তাঁকে তাঁর চাকরি সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে সরকার যেরূপ স্থির করবে সেরূপ পেশাগত ও বিশেষ ধরনের প্রশিক্ষণ গ্রহণ করতে হবে;
(গ) তাঁকে ০২ (দুই) বছর শিক্ষানবিস হিসেবে কাজ করতে হবে। শিক্ষানবিসকালে যদি তিনি চাকরিতে বহাল থাকার অনুপযােগী বলে বিবেচিত হন, তবে কোন কারণ দর্শানাে ছাড়াই এবং সরকারী কর্ম কমিশনের পরামর্শ ব্যতিরেকে তাকে চাকরি হতে অপসারণ করা যাবে;
(ঘ) উপানুচ্ছেদ (ক) ও (খ) এ উল্লিখিত প্রশিক্ষণ সাফল্যের সাথে সমাপন, বিভাগীয় পরীক্ষায় উত্তীর্ণ এবং শিক্ষানবিসকাল সন্তোষজনকভাবে অতিক্রান্ত হলে তাকে চাকরিতে স্থায়ী করা হবে;
(ঙ) উপানুচ্ছেদ (ক)-এ উল্লিখিত প্রশিক্ষণ শুরু হওয়ার পূর্বে তাকে একজন জামানতদারসহ ৩০০/- (তিনশত) টাকা মূল্যের নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে এ মর্মে একটি বন্ড সম্পাদন করতে হবে যে, যদি তিনি শিক্ষানবিসকালে অথবা শিক্ষানবিসকাল উত্তীর্ণ হওয়ার ০৩ (তিন) বছরের মধ্যে চাকরিতে ইস্তফা দেন, তবে প্রশিক্ষণকালে তাকে প্রদত্ত বেতন-ভাতা, প্রশিক্ষণ উপলক্ষ্যে উত্তোলিত অগ্রিম/ভ্রমণভাতা/অন্যান্য ভাতাদি ও তার প্রশিক্ষণের জন্য ব্যয়িত সমুদয় অর্থ ফেরত দিতে তিনি বাধ্য থাকবেন। প্রশিক্ষণের জন্য কর্মস্থল হতে অব্যাহতি প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের নিকট এ বন্ড দাখিল করে তাকে প্রশিক্ষণে যেতে হবে;
(চ) তাঁর ইস্তফা সরকার কর্তৃক গৃহীত হওয়ার পূর্বে যদি তিনি তার কর্তব্য-কাজে অনুপস্থিত থাকেন, তবে উপানুচ্ছেদ (ঙ) অনুযায়ী তার নিকট সরকারের প্রাপ্য সমুদয় অর্থ পাবলিক ডিমান্ড রিকভারী এ্যাক্ট, ১৯১৩ এর বিধান অনুসারে আদায় করা হবে এবং সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ অনুযায়ী তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
(ছ) ৩৭তম বি.সি.এস, পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে প্রচলিত সরকারি বিধি-বিধান অনুযায়ী তার জ্যেষ্ঠতা নির্ধারিত হবে;
(জ) যদি তিনি কোন বিদেশি নাগরিককে বিবাহ করে থাকেন অথবা বিবাহ করার জন্য অঙ্গীকারাবদ্ধ হয়ে থাকেন তবে এ নিয়ােগপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে; (ঝ) চাকরিতে যােগদানকালে তাঁকে যােগদানপত্রের সাথে ৩০০/- (তিনশত) টাকা মূল্যের নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে এ মর্মে একটি বন্ড সম্পাদন করতে হবে যে, তিনি নিজের বা পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের জন্য কোন যৌতুক নিবেন না এবং কোন যৌতুক দিবেন না;
(ঞ) এ প্রজ্ঞাপনে সুনির্দিষ্টভাবে বর্ণিত হয়নি, এরূপ ক্ষেত্রে তাঁর চাকরি সংক্রান্ত বিষয়ে সরকারের প্রচলিত বিধি-বিধান ও আদেশ প্রযােজ্য হবে এবং সরকার কর্তৃক ভবিষ্যতে প্রণীতব্য বিধি-বিধান ও আদেশ অনুসারে তার চাকরি নিয়ন্ত্রিত হবে;
(ট) The Government Servants (Conduct} Rules, ১৯৭৯ এর ১৩(১) উপবিধি অনুযায়ী সকল স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তির বিবরণ সম্বলিত একটি ঘােষণাপত্র প্রার্থীকে চাকরিতে যােগদানের সময় সংশ্লিষ্ট ক্যাডার নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয়ে জমা দিতে হবে;
(ঠ) এ চাকরিতে যােগদানের জন্য তিনি কোন ভ্রমণ ভাতা/দৈনিক ভাতা পাবেন না;
(ড) মুক্তিযােদ্ধা কোটায় নিয়ােগপ্রাপ্তদের মুক্তিযােদ্ধার সনদ পরবর্তীতে যাচাইবাছাইকালে অসত্য বা জাল প্রমাণিত হলে তাৎক্ষনিকভাবে তার নিয়ােগ বাতিল হবে এবং তার বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা দায়ের করা হবে;
(ঢ) মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাময়িক প্রত্যয়নের ভিত্তিতে মুক্তিযােদ্ধা কোটায় নিয়ােগপ্রাপ্ত নিম্নলিখিত প্রার্থী যােগদান কালে যােগদান পত্রেরসাথে ৩০০/(তিনশত) টাকা মূল্যের নন-জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে এ মর্মে একটি অঙ্গীকারনামা প্রদান করবেন যে, চুড়ান্ত বাছাইয়ে মুক্তিযােদ্ধার সঠিকতা সম্পর্কে বিরুপ কোন তথ্য পাওয়া গেলে গৃহীত সমূদয় সুবিধাদি প্রত্যর্পণ করতে তিনি বাধ্য থাকবেন।
অনুচ্ছেদ ১ এ উল্লিখিত শর্তাবলী তাঁর নিকট গ্রহণযােগ্য বিবেচিত হলে আগামী ১৮ চৈত্র ১৪২৬ বঙ্গাব্দ/০১ এপ্রিল ২০২০ খ্রিস্টাব্দ পূর্বাহে ক্যাডার নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয় কর্তৃক নির্দেশিত/পদায়িত কার্যালয়ে যােগদানের জন্য তাকে অনুরােধ করা হলাে। ক্যাডার নিয়ন্ত্রণকারী মন্ত্রণালয় হতে পরবর্তী কোন নির্দেশ না পেলে উল্লিখিত তারিখেই তিনি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে যােগদান করবেন। নির্ধারিত তারিখে চাকরিতে যােগদান না করলে তিনি চাকরিতে যােগদান করতে সম্মত নন বলে ধরে নেয়া হবে এবং এ নিয়ােগপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে।
ক্যাডারের নাম: বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস (প্রশাসন)
পদের নাম: সহকারী কমিশনার
নিয়ােগপ্রাপ্ত: ০১ (এক) জন।
ক্রমিক | মেধাক্রম | রেজিস্ট্রেশন | নাম |
১ | ২৩২ | ০৫৯২৬১ | শামীমা আফরােজ মারলিজ |
৪। জনস্বার্থে এ নিয়ােগ আদেশ জারি করা হলাে।
রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে
(শেখ ইউসুফ রুন)
সচিব
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়
বিসিএস ক্যাডারের নিয়োগের প্রজ্ঞাপন: ডাউনলোড
উপরের প্রজ্ঞাপন থেকে জাতীয় বেতনস্কেল, ২০১৫ অনুসারে টাকা ২২০০০-৫৩০৬০/- বেতনক্রমে একজন বিসিএস কর্মকর্তার প্রাথমিক মূল বেতন ২২০০০ টাকা ধরা হয়েছে। তার বেতন ভাতাদি একই স্কেলে সর্বোচ্চ বেড়ে ৫৩০৬০ টাকা হতে পারবে। সিলিংয়ে পৌছে গেলে আর বেতন বাড়বে না। তবে পদোন্নতির সাথে সাথে তার গ্রেড ৯ থেকে ৩য় বা ৪র্থ গ্রেডেও চলে আসতে পারে। তো চলুন চাকরি জীবনের শুরুতে তিনি কত টাকা বেতন পেতে পারে তার একটি স্বারণি আমরা দেখে নিই।
ক্রমিক নং | বেতন ভাতাদি | টাকা | মন্তব্য |
১। | মাসিক মূল বেতন | ২২০০০/- | যোগদানকালে বেতন তবে ডাক্তার ও ইঞ্জিনিয়ারগণ ২টি ইনক্রিমেন্ট সহ যোগদান করেন। |
২। | মাসিক বাড়ি ভাড়া | ৮৮০০/- | উপজেলায় ৪০%, জেলায় ৫০% এবং ঢাকা সিটিতে ৫৫% হারে মূল বেতনের। উপজেলা ধরে: ২২০০০*৪০/১০০ = ৮৮০০/- (সরকারি বাসায় বসবাস করলে বাড়ি ভাড়া পাবেন না) |
৩। | মাসিক চিকিৎসা ভাতা | ১৫০০/- | |
সর্বমোট মাসিক বেতন ভাতাদি | ৩২,৩০০/- |
প্রতিবছর ৫% হারে মূল বেতন বৃদ্ধি পাবে।
সাধারণত ৫ বছর পরে পদোন্নতি হয়। পদোন্নতির ক্ষেত্রে অবশ্যই পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করতে হবে। অন্যদিকে পদোন্নতি না পাওয়া পর্যন্ত ৫ বছর পরে ৩২০০০ টাকার উপর ২৫% বেতন বৃদ্ধি পেলে মোট বেতন আনুমানিক ৮০০০ টাকা বেড়ে ৪০ হাজার টাকায় দাঁড়াবে।
বিসিএস কর্মকর্তার চাকরি ১৪ বছরের উর্ধ্বে পদোন্নতি পরীক্ষা নয় ।
সরকারি কর্মকর্তাদের বেতন ভাতাদি ও বিভিন্ন পদে অন্যান্য সুযোগ সুবিধা গুলো জানতে আপনি এই লিংকে ঘুরে আসতে পারেন: সরকারি চাকরির বেতন ভাতা ও অন্যান্য সুযোগ সুবিধাদি এক নজড়ে।
সচিব বা সমপর্যায়ের কর্মকর্তাদের বেতন ভাতাদি ও অন্যান্য সুবিধাদি।