ডাক জীবন বীমা সরকার কর্তৃক ১৮৮৪ সালে প্রবর্তিত একটি সঞ্চয় ও বীমা প্রকল্প। বীমা দলিল চুক্তিতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এর মহামান্য রাষ্ট্রপতির পক্ষে সহি প্রদান পূর্বক সর্বোচ্চ রাষ্ট্রীয় গ্যারান্টি প্রদান করা হয়ে থাকে।
এক নজরে ডাক জীবন বীমা:
১। ডাক জীবন বীমা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার কর্তৃক পরিচালিত এবং বাংলাদেশ ডাক বিভাগের অন্যতম একটি এজেন্সী সার্ভিস।
২। অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীন সম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে কেবলমাত্র বাংলাদেশ ডাক বিভাগ এ সার্ভিসটি পরিচালনা করে থাকে।
৩। অর্জিত বীমা তহবিল থেকে সরকার লাভ বা লোকসানের কোন অংশই গ্রহণ করে না।
৪। এই তহবিলের সমস্ত টাকা সরকার আপন জিম্মায় রাখেন এবং শুধুমাত্র বীমা কারীদের উপকারার্থে এর তহিবল ব্যবহার করা হয়। ইহা না লাভ, না লোকসানের ভিত্তিতে সরকার কর্তৃক পরিচালিত হয়।
যেভাবে ডাক জীবন বীমা করতে হয়
১। ডাক জীবন বীমা পলিসি গ্রহণ করা অত্যন্ত সহজ।
২। ডাক জীবন বীমার যে কোন এজেন্ট সুপার/ পরিদর্শক।
৩। ফিল্ড গণের কাছ থেকে ফরম সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট পোস্ট অফিসে যোগাযোগ করুন।
৪। প্রথমে প্রাথমিক কিস্তি পরিমাণ টাকা জমা দিয়ে বীমা পলিসি গ্রহণের সূচনা করতে হয়।
ডাক জীবন বীমার সুবিধাবলী
১। ডাক জীবন বীমার বীমা দলিল চুক্তিতে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার এর মহামান্য রাষ্ট্রপতি এর পক্ষে সহি প্রদান পূর্বক সর্বোচ্চ রাষ্ট্রী গ্যারান্টি প্রদান করা হয়ে থাকে।
২। বীমাকারীর সুবিধা অনুযায়ী মাসি, ত্রৈমাসিক, ষান্মাসিক কিংবা বাৎসরিক ভিত্তিতে বাংলাদেশের যে কোন ডাকঘরে প্রিমিয়ামের টাকা জমা প্রদান করা মাত্র তার প্রিমিয়াম জমার বিপরীতে তাৎক্ষনিক SMS পেয়ে থাকেন।
৩। প্রিমিয়ামের হার অত্যন্ত কম কিন্তু বোনাসের হার বেশী। পেইডআপ পলিসিতেও বোনাস প্রদান করা হয়।
৪। যে কোন অংকের পলিসি গ্রহণ করা যায় (পলিসির উর্ধ্ব সীমা নাই)।
৫। যে কোন বীমার সহিত আকস্মিক দূর্ঘটনা বা চিরঅক্ষমতা জনিত অতিরিক্ত চুক্তি করা যায়।
৬। Void বীমা পুনরুজ্জীবিতকরণের সুবিধা আছে।
৭। পলিসি থেকে ঋণ প্রদান করা হয়।
৮। অগ্রিম প্রিমিয়াম প্রদান রিবেট সুবিধা পাওয়া যায়।
৯। বেতন থেকে কর্তনের মাধ্যমে প্রিমিয়াম পরিশোধ করা যায়।
১০। বাংলাদেশের যে কোন ডাকঘরে প্রিমিয়ামের টাকা জমা দেয়া যায় ও টাকা উত্তোলন করা যায়।
১১। সংশ্লিষ্ট বীমাটির কিস্তি কমপক্ষে ২৪ মাস নিয়মিত প্রদান করলে জমাকৃত টাকার বিপরীতে ৮০% ঋণমঞ্জুরী পাওয়া যায়।
১২। মেয়াদ শেষে আজীবন বীমার ক্ষেত্রে বছরে প্রতি ১ লক্ষ টাকায় ৪,২০০/- টাকা এবং মেয়াদী বীমার ক্ষেত্রে বছরে প্রতি ০১ লক্ষ টাকায় ৩৩০০/- টাকা হারে বোনাসপ্রদান করা হয়।
বর্তমানে একজন বীমা গ্রাহক যে সকল সুবিধা ভোগ করে থাকেন
১। প্রসেস অটোমেশনের মাধ্যমে বর্তমানে ডাক জীবন বীমার সকল সার্ভিস পরিচালিত হচ্ছে।
২। প্রস্তাবপত্র পূরণ করে যেকোন পোস্ট অফিসে ১ম কিস্তি বাবদ টাকা জমা করলেই সাথে সাথে একটি SMS এর মাধ্যমে বীমা নম্বরসহ বীমা গ্রাহক টাকা জমার তথ্য পেয়ে থাকেন। তবে SMS টি যাতে ইংরেজীর পাশাপাশি বাংলায়ও প্রদান করা হয়, সে ব্যাপারে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
৩। প্রস্তাবপত্রটি গ্রহণ করার পর “Acceptance Letter” টি কম্পিউটারে প্রিন্ট আকারে গ্রাহক-কে জানানো হয়।
৪। বর্তমানে বীমাকারী যে কোন পোস্ট অফিসে বীমা কিস্তির টাকা জমা দিতে পারেন। যা পূর্বে অনুমতি সাপেক্ষে জমা দিতে হতো।
পলিসি গ্রহণ করতে কি কি প্রয়োজন হয়
ডাক জীবন বীমায় বীমা পলিসি গ্রহণে বীমা প্রস্তাব কারীর বয়সের প্রমাণক, প্রস্তাবক ও নমিমি’র পাসপোর্ট সাইজ ছটি, বায়োমেট্রিক করা মোবাইল নম্বর। উচ্চ মূল্যের বীমা প্রস্তাবের ক্ষেত্রে প্রস্তাবকের আয়ের উৎস।
স্বাস্থ্য পরীক্ষা
বীমা কারীর বয়স ৪০ উর্ধ্বে অথবা বীমা মূল্য ১ লক্ষ টাকার অধিক হলে বীমা প্রস্তাবকারীর নির্ধারিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা (Health Test) করতে হয়। তবে ৩০,০০০/- টাকা পর্যন্ত ডাক্তারী পরীক্ষা ছাড়া গ্রহণ করার বিধান আছে।
কারা ডাক জীবন বীমা করতে পারেন
১। উপার্জনক্ষম বাংলাদেশের সকল স্থায়ী নাগরিক।
২। বে-সরকারি, সরকারি, আধা-সরকারি ও স্বায়ত্ত্ব শাসিত সংস্থার কর্মচারিগণ।
৩। পদাতিক, নৌ এবং বিমানবাহিনীর সৈন্যগণ।
৪। বেসামরিক সশস্ত্র বাহিনী, যেমন-বাংলাদেশ রাইফেলস, কোস্টগার্ড, আনসার, পুলিশ ইত্যাদি।
৫। বর্তমানে প্রচলিত ডাক জীবন বীমার প্রকারভেদ / পলিসিসমূহ
১। জীবন চুক্তি/ আজীবন বীমা:
৫০-৭০ বছর বয়স অথবা মৃত্যু, যাহা আগে ঘটে। তবে প্রাপ্য টাকার তার উত্তরাধিকারীগণ বীমাকারীর মৃত্যুর পর প্রাপ্য হবেন।
২। মেয়াদী বীমা:
নির্দিষ্ট বয়স ভিত্তিক বীমা-নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত বীমা যেমন, 35, 40, 45, 50, 55, 60 বছর। এক্ষেত্রে মেয়াদ পূর্তির পূর্বে বীমা কারী মৃত্যুবরণ করলে তার উত্তরাধিকারীগণ টাকা প্রাপ্য হবেন। আবার বীমাকারী বেঁচে থাকলেও মেয়াদপূর্তিতে নিজেই টাকা প্রাপ্য হবেন।
৩। মেয়াদী শিক্ষা ও বিবাহ বীমা:
বীমাকারীর সন্তানের শিক্ষা বা বিবাহের ব্যয় নির্বাহের জন্য এই বীমা গ্রহণ করা যেতে পারে।
৪। প্রতিরক্ষা বীমা:
বাংলাদেশ সশস্ত্র/ প্রতিরক্ষা বাহিনীর সদস্যগণ (যেমন: সেনাবাহিনী, নৌ ও বিমান বাহিনী) ৫, ১০, ১৫, ২০, ২৫, ৩০ এবং ৪০ বছরের নির্দিষ্ট সময়ের জন্য এই বীমা গ্রহণ করতে পারেন।
৫। আকস্মিক মৃত্যু এবং চির অক্ষমতার মঙ্গল বিধান চুক্তি:
নৌ, পদাতিক ও বিমান বাহিনীর কর্মচারী এবং অতিরিক্ত জীবনাশংকাযুক্ত পেশাধারী ছাড়া অন্য সমস্ত পলিসিধারীরা তাদের বীমায় এই অতিরিক্ত চুক্তি যোগ করতে পারেন। বীমাকারী আকস্মিক দূর্ঘটনায় প্রাণ ত্যাগ করলে অথবা তজ্জন্য দু’টি অংগ অথবা দু’টি চক্ষু অথবা একটি অংগ একটি চক্ষু হারালে এই শর্ত অনুযায়ী তাকে বীমাকৃত টাকার অতিরিক্ত টাকা দেওয়ার ব্যবস্থা আছে।
৬। ডাক্তারী পরীক্ষা ছাড়া পলিসি:
ডাক জীবন বীমায় ডাক্তারী পরীক্ষা ছাড়াও পলিসি কেনার ব্যবস্থা আছে। ৩০,০০০ টাকা পর্যন্ত পলিসি ডাক্তারী পরীক্ষা ছাড়া গ্রহণ করার বিধান আছে।
এক নজরে ডাক জীবন বীমা: ডাউনলোড
আমার ওয়াইফ এর নামে আমি 15 বছর মেয়াদী একটি ডাক বীমা করি। আগামী বছর আমার ওয়াইফের ডাক বীমার মেয়াদ শেষ হবে। আমি শেষ কিস্তি ও দিয়ে দিছি।মেয়াদপূর্তি পরে, আমি কিভাবে টাকাটা পেতে পারি।
প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ সংশ্লিষ্ট অফিসে আবেদন করুন মেয়াদপূর্তির পূর্বেই।
ডাক জীবন বীমা পলিসি জমা দিয়েছি সেটা কিভাবে দেখব ইন্টারনেটে বা ওয়েবসাইটে
ডাক জীবন বীমা এখনও ডিজিটালাইজেশন হয়নি। http://www.idra.org.bd/ হতে প্রিমিয়াম জমা হলে মেসেজ পাবেন।