জীবন বীমা ও অন্যান্য বীমার সুবিধা

বঙ্গবন্ধু সার্বজনীন পেনশন বীমা পলিসি ২০২০

বঙ্গবন্ধু সার্বজনীন পেনশন বীমা আর্থিক নিরাপত্তা ও ভাবনাহীন অবসর জীবন। বার্ধর্কে স্বচ্ছলতা একজন মানুষকে ভাবনাহীন, নিরুদ্বেগ ও নিশ্চিন্ত রাখে। আয়বিহীন জীবনে অন্যের উপর নির্ভরশীল না হয়ে আর্থিক স্বচ্ছলতা নিশ্চিত করে। আপনার জন্য অন্যতম সেরা সুবিধাযুক্ত পলিসি হচ্ছে বঙ্গবন্ধু সার্বজনীন পেনশন বীমা পলিসি (লাভসহ)। এ পলিসি গ্রহণের মাধ্যমে আপনি ভাবনাহীন, স্বাচ্ছন্দ্য ও স্বচ্ছল অবসর জীবন কাটাতে সক্ষম হবেন।

স্বাধীনতার পর যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের মানুষের জীবন ও সম্পদের নিরাপত্তা বিধানের লক্ষ্যে রাষ্ট্রতির আদেশ বলে ১৯৭২ সনে বাংলাদেশের বীমা শিল্প জাতীয়করণ করা হয। অত:পর, জীবন বীমার সুফল দেশের আপামর জনসাধারণের কল্যাণে তাদের দৌরগোড়ায় পৌছে দেয়ার উদ্দেশ্যে ইন্সুরেন্স কর্পোরেশন এ্যাক্ট এর মাধ্যমে ১৯৭৩ সনের ১৪ ই মে সকল জীবন বীমা প্রতিষ্ঠানকে একত্র করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান জীবন বীমা কর্পোরেশন প্রতিষ্ঠা করেন। জীবন বীমা কর্পোরেশন দারিদ্র্য বিমোচন, জীবনমানের উন্নয়ন এবং জনগণের জীবনের ঝুঁকির নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কাজ করে যাচ্ছে। এমনকি, উত্তম বিনিয়োগ হিসেবেও এর সর্বজনবিদিত সুনাম রয়েছে। জীবন বীমা কর্পোরেশন জীবনে, জীবনান্তে ও আহত গ্রাহকের পাশে থাকার অঙ্গীকারাবদ্ধ।

বাংলাদেশের প্রায় ১৭ কোটি মানুষের মধ্যে ২০-৬৫ বছর বয়সের জনসংখ্যার প্রায় ১১ কোটি। জনসংখ্যার প্রাপ্ত তথ্য থেকে দেখা যায়, বাংলাাদেশে দ্রুত গতিতে বয়স্ক লোকের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ বয়স্ক লোকের অবসর জীবন নিরুদ্বেগ, স্বচ্ছলতা ও শান্তিময় করার জন্য স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী ” মুজিববর্ষ” পালন উপলক্ষে জীবন বীমা কর্পোরেশন নতুন স্কিম “বঙ্গবন্ধু সার্বজনীন পেনশন বীমা পলিসি (লাভসহ)” চালু করেছে।

বৈশিষ্ট্যাবলী:

  • কমপক্ষে ১০ (দশ) বৎসরের পেনশন লাভের গ্যারান্টিযুক্ত। তবে বীমা গ্রাহক ইচ্ছে করলে ১৫ অথবা ২০ বছর পর্যন্ত পেনশন নিতে পারেন।
  • পেনশন প্রদান শুরুর নির্ধারিত তারিখের পূর্বে বীমাগ্রাহকের মৃত্যু হলে নমিনি পূর্ণ বীমা অংক বোনাসসহ প্রাপ্ত হবে।
  • পেনশন প্রদান শুরুর পর বীমাগ্রাহকের মৃত্যু হলে নমিনি অবশিষ্ট সময়ের জন্য পেনশন প্রাপ্ত হবে।
  • বীমা গ্রহণকালীন বয়স সর্বনিম্ন ২০ বছর ও সর্বোচ্চ বয়স ৬০ বছর।
  • পেনশন প্রাপ্তি শুরু বয়স ৫৫-৬০ বছর।
  • বীমার মেয়াদ সর্বনিম্ন ৫ (পাঁচ) বছর।
  • সর্বনিম্ন বীমা অংক ৫০,০০০.০০ (পঞ্চাশ হাজার টাকা)।
  • সর্বোচ্চ বীমা অংক বীমাগ্রাহকের আর্থিক সামর্থ্য অনুযায়ী।
  • মেয়াদপূর্তিতে পেনশনের টাকা আংশিক /সম্পূর্ণ সমর্পণ (কম্যুটেশন) করে এককালীন টাকা পাওয়া সুবিধা। অর্থাৎ পেনশনের ৫০% বা ১০০% পর্যন্ত সমর্পণ করা যাবে।
  • বীমার মেয়াদে শর্তানুযায়ী বীমাগ্রাহক পরিশোধিত মূল্য, সমর্পণ ও ঋণ গ্রহণ করার সুবিধা প্রাপ্য হবেন।
  • প্রদত্ত প্রিমিয়ামের উপর আয়কর রেয়াত পাওয়া যাবে।
  • বীমা অংক এবং দেয় পদ্ধতির উপর এ বীমায় কোন রিবেট প্রযোজ্য নয়।
  • দুই বছর প্রিমিয়াম দেয়ার পর পরিশোধিত মূল্য অর্জন করবে অর্থাৎ অপশন “সি” প্রযোজ্য হবে।
  • প্রিমিয়াম ষান্মাসিক ও বার্ষিক কিস্তিতে পরিশোধযোগ্য।
  • এই বীমায় অতিরিক্ত সুবিধা হিসেবে দূর্ঘটনাজনিত মৃত্যু (DIAB) গ্রহণ করা যায়।

 

এ বীমার সুবিধা ও প্রদেয় বীমা অংক উদাহরণ হিসাবে দেখানো হল:

মনে করুন ৩৫ বছর বয়স্ক একজন ব্যক্তি তাঁর ৫৫ বছর বয়স পূর্তির পর মাসিক পেনশন গ্রহণ করবেন। তাঁর প্রদেয় প্রিমিয়াম, প্রাপ্য বীমা অংক ও বোনাস, মাসিক পেনশন, মোট প্রাপ্তি এবং সুবিধাবলী হবে নিম্নরূপ:

প্রিমিয়াম: বীমা অংক ১০,০০,০০০ টাকা। ১০০০ টাকা বীমা অংকের জন্য প্রিমিয়াম ৪৯.৬৫ টাকা হারে (টেবিল অনুযায়ী)। বার্ষিক প্রিমিয়াম দিবেন ৪৯.৬৫*১০০০ = ৪৯,৬৫০ টাকা। ৫৫ বছর পর্যন্ত মেয়াদে মোট জমা দিবেন ৪৯,৬৫০*২০ = ৯,৯৩,০০০/- (নয় লক্ষ তিরানব্বই হাজার) টাকা।

বীমা অংক ও বোনাস: বর্তমান বিদ্যমান বোনাস রেট অনুযায়ী বীমা অংকের সাথে বোনাস যোগ করে তাঁর প্রাপ্য বীমা অংক ও সম্ভাব্য বোনাস হবে = বীমা অংক+বোনাস = (১০,০০,০০০+১০,৪০,০০০ = ২০,৪০,০০০ (বিশ লক্ষ চল্লিশ হাজার) টাকা।

মাসিক পেনশন ও মোট প্রাপ্তি:

উক্ত বীমা অংক ও বোনাসের যোগফল ২০,৪০,০০০ টাকাকে নিম্নের ফ্যাক্টর দ্বারা ভাগ করলে পেনশন নির্ধারিত হবে (বিনিয়োগজনিত আয়ের ফলে ফ্যাক্টর পরিবর্তনযোগ্য):

১০ বছর মেয়াদে ৮৭.২৩ টাকা ফ্যাক্টরে প্রতিমাসে ২৩,৩৮৬ টাকা মোট ২৮,০৬,৩২০ টাকা।

১৫ বছর মেয়াদে ১১৩.১২ টাকা ফ্যাক্টরে প্রতিমাসে ১৮,০৩৪ টাকা মোট ৩২,৪৬,১২০ টাকা।

২০ বছর মেয়াদে ১৩১.৫৮ টাকা ফ্যাক্টরে প্রতিমাসে ১৫,৫০৪ টাকা মোট ৩৭,২০,৯৬০ টাকা।

সুবিধাবলী:

১। পেনশন প্রদান শুরুর হওয়ার পূর্বে অর্থাৎ বীমা চলাকালীন মেয়াদের মধ্যে যে কোন সময় অকাল মৃত্যুতে পূর্ণ বীমা অংক ও চালু মেয়াদের বোনাসসহ প্রাপ্তি।

২। (ক) মেয়াদ শেষে বোনাসসহ এককালীন ১০০% টাকা উত্তোলন। বা (খ) মেয়াদ শেষে বোনাসসহ এককালীন ৫০% বা অর্ধেক টাকা উত্তোলন এবং অবশিষ্ট অর্ধেক হারে মাসিক ভিত্তিতে ইচ্ছানুযায়ী বিভিন্ন মেয়াদ অর্থাৎ ১০/১৫/২০ বছর গ্যারান্টিকৃত পেনশন গ্রহণের সুযোগ। বা, (গ) মেয়াদ শেষে পূর্ণ হারে মাসিক ভিত্তিতে ইচ্ছানুযায়ী বিভিন্ন মেয়াদ অর্থাৎ ১০/১৫/২০ বছর গ্যারান্টিকৃত পেনশন গ্রহণের সুযোগ।

৩। গ্রাহকের সুবিধামত যে কোন অংকের মাসিক পেনশন গ্রহণের পরিমাণ নির্ধারণ করা যায়।

৪। স্কিম গ্রহণের বয়স সর্বোচ্চ ৬০ বছর।

৫। পেনশন শুরুর বয়স ৫৫ থেকে ৬৫ বছর।

 

বঙ্গবন্ধু সার্বজনীন পেনশন বীমা পলিসি ২০২০: ডাউনলোড

Alamin Mia

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ৮ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে বিস্তারিত জানতে admin@bdservicerules.info ঠিকানায় মেইল করতে পারেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *