গত বছর বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে উৎসব ভাতা পেয়েছেন প্রায় ২১ লাখ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী। বাংলা নববর্ষকে আরও আনন্দময় করে তুলতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ২০১৬ সালে প্রথমবারের মতো চালু হয় পয়লা বৈশাখের উৎসব ভাতা। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মূল বেতনের শতকরা ২০ ভাগ বৈশাখী ভাতা হিসেবে দেওয়া হয়। কর্মকর্তা ও কর্মচারীর বৈশাখী ভাতার মধ্যে ভারসাম্য নাই।
বতর্মানে প্রতি কেজি ইলিশের দাম ১২০০-১৫০০ টাকা কেজি। পরিবার পরিজন নিয়ে ইলিশ মাছ, পান্তা খেয়ে আনন্দ করার জন্য সরকার সরকারি কর্মকর্তা/ কর্মচারীদের জন্য পহেলা বৈশাখে বাংলা নববর্ষ ভাতা প্রদানের প্রচলন করেছে। ৬ জন সদস্য বিশিষ্ট একটি পরিবারের ১ কেজির দুটি ইলিশের জন্য ২৪০০-৩০০০ টাকা প্রয়োজন পড়ে। সরকারি কর্মচারীদের ২০ তম গ্রেডের একজন কর্মচারী ৮,২৫০ টাকার ২০% হিসাবে ১,৬৫০ টাকা পায়, সে হিসাবে ৬ সদস্য বিশিষ্ট একটি পরিবারের জন্য ১ কেজি ওজনের একটি ইলিশ মাছ বাজার থেকে কিনতে পারবেন।
কর্মচারীর বৈশাখী ভাতা
১১-২০ তম গ্রেডের একজন কর্মচারীর মূল বেতন যদি ১৫,০০০ হয় সে হিসাবে তিনি ৩০০০ টাকা বাংলা নববর্ষ ভাতা পাবেন, এক্ষেত্রে দুটি ইলিশ মাছ ক্রয় করতে পারবেন। তবে ১টি বা ২ টি ইলিশ মাছের জন্য আনুষাংগিক জিনিসপত্র কিনতে পারবেন না। যাহোক উপরোক্ত আলোচনা থেকে এটি সুষ্পষ্ট যে, ১,৫০০-৩,০০০ টাকা দিয়ে কোন ভাবে সাধারণ কোন উৎসবও আনন্দঘন করা সম্ভব নয়। তাই কর্মচারীগণ প্রাপ্ত এ বাংলা নববর্ষ ভাতা দিয়ে কোন ভাবেই অনুষ্ঠান আয়োজন করতে পারে না, কেউ হয়তো ছেলে-মেয়েদেরকে খুবই সাধারণ পোষাক পরিচ্ছেদ কিনে দিয়েই শেষ অথবা সাংসারিক ভর্তুকি। বাংলা নববর্ষ ভাতা ছাড়া যেভাবে কর্মচারীদের পরিবার অতীতে পহেলা বৈশাখ পালন করতো, মূলত বৈশাখী ভাতা পাওয়ার পরও একইভাবে পালন করে থাকে। মোট কথা ১১-২০ তম গ্রেডের কর্মচারীগণ ১,৫০০-৩,০০০ টাকা হাতে পেয়ে সেটি দিয়ে কি করবে তা নিয়েই দিশেহারা হয়ে যায়। আমার জানামতে ১০% কর্মচারীও পহেলা বৈশাখের ভাতা দিয়ে ১ কেজির একটি ইলিশ কিনে না। সাংসারিক ভর্তুকি দিয়েই টাকা শেষ। কিছু ক্ষেত্রে ছেলে মেয়েকে একটু খুশি করতেই বৈশাখী ভাতা শেষ, ১ কেজি ওজনের একটি ইলিশ একজন কর্মচারীর জন্য স্বপ্ন হয়েই থেকে যায়। এত কম পরিমাণ ভাতা নিয়ে কর্মচারীগণ কোন ভাবেই সন্তুষ্ট নয়।
কর্মকর্তার বৈশাখী ভাতা
১-৯ গ্রেডের কর্মকর্তাদের নিম্ন ৯ম গ্রেডের একজন কর্মচারী ২২-২৪ হাজার টাকা মূল বেতনে চাকরি করেন। চাকরির শুরুতে তিনি ২৪,০০০ টাকা মূল বেতন হলেও তিনি ৪,৮০০ টাকা বাংলা নববর্ষ ভাতা পেয়ে থাকেন। অন্য দিকে ৪র্থ গ্রেডের একজন কর্মকর্তা ৭১,২০০ টাকা মূল বেতন গ্রহণ করে থাকেন, সে হিসাবে ১৪,২৪০ টাকা বৈশাখী ভাতা পেয়ে থাকেন।
ঠিক সেই একই বাজার থেকে ১২-১৫শ টাকা কেজিতে ১১-১২টি ইলিশ মাছ ক্রয় করতে পারেন। মূলত ৬ সদস্য বিশিষ্ট একজন প্রথম শ্রেণীর কর্মকর্তা ১১টি ইলিশ মাছ ক্রয় করার ক্ষমতা রাখেন অন্য দিকে একজন কর্মচারী ২টি ইলিশ মাছ ক্রয়ে হিমশিম খায়। তাছাড়া একজন কর্মকর্তা পরিবারের জন্য দুটি ইলিশ ২,৪০০-৩,০০০ টাকা দিয়ে ক্রয় করে অবশিষ্ট ১১-১২ হাজার টাকা দিয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে আনন্দময় পহেলা বৈশাখ উদযাপন করতে পারেন। উপরোক্ত এই অবস্থ সৃষ্টি হয়েছে শুধুমাত্র বেতন বৈষম্যের কারণেই।
শতাংশে দেখলে বুঝা যায় বৈষম্যটা:
কর্মকর্তাদের জন্য ১২,৫০০ থেকে ৭৮ হাজার পর্যন্ত শুধুমাত্র মূল বেতনে ১০তম -১ম গ্রেডে প্রতি ধাপে প্রায় ২০.৪ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি পেয়েছে। মূল বেতনে ২০.০৪% বেতন প্রতি প্রমোশন এ বৃদ্ধি পায়। গ্রেডে বেতন বৃদ্ধি ২০% এর অধিক হওয়ায় বার্ষিক ৫% ইনক্রিমেন্ট বা যে কোন প্রকার ফিক্সেশনের তাদের আর্থিক সুবিধা বেশি হয়ে থাকে ফলে তারা প্রমোশনে অনুপ্রাণিত হন।
কর্মচারীদের জন্য ৮,২৫০ থেকে ১২,০০০ হাজার পর্যন্ত শুধুমাত্র মূল বেতনে ১১তম -২০তম গ্রেডে প্রতি ধাপে প্রায় গড়ে ৪.২৮ শতাংশ বেতন বৃদ্ধি পেয়েছে। মূল বেতনে ৪.২৮% বেতন প্রতি প্রমোশন এ বৃদ্ধি পায়। গ্রেডে বেতন বৃদ্ধি ৪.২৮% এর অধিক হওয়ায় বার্ষিক ৫% ইনক্রিমেন্ট বা যে কোন প্রকার ফিক্সেশনের তাদের আর্থিক সুবিধা খুবই নগন্য ফলে তারা প্রমোশনে অনুপ্রাণিত হন না বরং বদলিজনিত বিরম্বনায় পড়ে।
মূল বেতনের বৈষম্যের কারণেই পহেলা বৈশাখের নববর্ষ ভাতার ক্ষেত্রে বিরাট বৈষম্যের সৃষ্টি হয়েছে। কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে বেতন বৈষম্য তীব্রতর যা সকল ক্ষেত্রেই পার্থক্যের সৃষ্টি করছে। দেশনেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর-ই কেবল কর্মকর্তা ও কর্মচারী মধ্যে জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ সংশোধনের মাধ্যমে বৈষম্যমূলক সমস্যা সমাধান করতে পারে।
প্রথম যোগদানের তারিখ হতে উৎসবের দিন পর্যন্ত মূল বেতন উৎসব ভাতা পাবে।
১০ এপ্রিল চাকরি ছাড়লে বা চূড়ান্ত অবসরে গেলেও নববর্ষ ভাতা পাবেন।
প্রতি বছর মার্চ মাসের মূল বেতনের ২০% হারে বাংলা নববর্ষ ভাতা।
বাংলা নববর্ষ ভাতায় একজন কর্মকর্তা ১২-১৫টি ইলিশ ক্রয় করতে পারেন!
সাময়িক বারকাস্তকালীন সময় আমার মূলবেতন ১৯৪৬০, যার ১/২% হৈ ৯৭৩০. আমার প্রশ্ন – আমার বৈশাখী ভাতা কি ১৯৪৬০ এর 20%হবে, নাকি ৯৭৩০ এর 20% হবে?
বৈশাখী ভাতা সম্পর্কে কিছু বলা নাই। তবে উৎসব ভাতা অর্ধেক হওয়ায় বৈশাখী ভাতা অর্ধেক হবে।
পেনশন বাড়ানো খুবই প্রয়োজন। কারন বাড়ি ভাড়া, ইউটিলিটি বিল এতো পরিমাণে বেড়েছে যে, আমার মতো বিধবা পেনশনার রা মানবেতর জীবন কাটাতে বাধ্য হচ্ছে। আমি প্রধানমন্ত্রী র দৃষ্টি আকর্ষন করছি। হয় আমাকে একটি চাকরি দিন, নয়তো আমার জন্য একটি বাসস্থানের ব্যাবস্থা করে দিন দয়া করে। নয়তো আমার একটিমাত্র স্কুল পড়ুয়া সন্তানের লেখাপড়ার দায়িত্ব নিন। আমি একজন পঞ্চাশ উরধ বিধবা। আমি অনেক কষ্টের মাঝে আছি। অনুগ্রহ পূর্বক দয়া করে আমাকে এই অবস্থা থেকে উত্তরণের পথ বের করে দেওয়ার বিনীত নিবেদন জানাচ্ছি।
বুঝতে পারছি আপনার কষ্টটি। অনুগ্রহ করে অপেক্ষা করুন। সরকারি বিষয়টি নিয়ে একটি সিদ্ধান্ত নিবেই, ইনশাল্লাহ