( ২০০৯ সনের ৪০ নং আইন ) [ জুলাই ৯, ২০০৯ ]সরকারি অর্থের রক্ষণাবেক্ষণ,সংযুক্ত তহবিলে অর্থ প্রদান বা উহা হইতে অর্থ প্রত্যাহার অথবা প্রজাতন্ত্রের সরকারি হিসাবে অর্থ প্রদান বা উহা হইতে অর্থ প্রত্যাহার এবং তৎসংশ্লিষ্ট বিষয়াদি সম্পর্কে বিধানকল্পে প্রণীত
আইন যেহেতু গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ৮৫ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সরকারি অর্থের রক্ষণাবেক্ষণ, সংযুক্ত তহবিলে অর্থ প্রদান বা উহা হইতে অর্থ প্রত্যাহার অথবা প্রজাতন্ত্রের সরকারি হিসাবে অর্থ প্রদান বা উহা হইতে অর্থ প্রত্যাহার, বাজেট ঘাটতি ও সরকারি ঋণ ধারণযোগ্য পর্যায়ে রাখা, আন্তঃপ্রজন্ম সমতা নিশ্চিত করা, সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার উন্নয়ন এবং বাজেট প্রণয়নে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা এবং তদ্সংশ্লিষ্ট বিষয়াদি সম্পর্কে বিধান করা সমীচীন ও প্রয়োজনীয়; সেহেতু এতদ্দ্বারা নিম্নরূপ আইন করা হইলঃ-
প্রথম অধ্যায়
প্রারম্ভিকসংক্ষিপ্ত শিরোনাম ও প্রবর্তন১। (১) এই আইন সরকারি অর্থ ও বাজেট ব্যবস্থাপনা আইন, ২০০৯ নামে অভিহিত হইবে।
(২) ইহা অবিলম্বে কার্যকর হইবে।
সংজ্ঞা
২। বিষয় বা প্রসঙ্গের পরিপন্থী কোন কিছু না থাকিলে, এই আইনে-
(১) “অর্থ বৎসর” অর্থ সংবিধানের ১৫২ অনুচ্ছেদের উল্লিখিত অর্থ বৎসর;
(২) “অর্থ বিভাগ” অর্থ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ;
(৩) “অন্যান্য প্রতিষ্ঠান” অর্থ সংবিধানের ৮৮ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সংযুক্ত তহবিলের উপর দায়যুক্ত ব্যয়ের সহিত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান;
(৪) “অপচয়” অর্থ বার্ষিক বাজেটে যে উদ্দেশ্যে (Purpose) অর্থ বরাদ্দ প্রদান করা হইয়াছে সে উদ্দেশ্যে অর্থ ব্যয় অথবা ব্যবহার না করিয়া অন্য কোন উদ্দেশ্যে অর্থ ব্যয় অথবা ব্যবহার করা;
(৫) “ঋণ গ্রহণ” অর্থ সরকার কর্তৃক বাংলাদেশের অভ্যন্তর অথবা বাহির হইতে অর্থ সংগ্রহ, যাহা ফেরত প্রদানের বাধ্যবাধকতা রহিয়াছে;
(৬) “ঋণ প্রদান” অর্থ সরকার কর্তৃক কোন স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান অথবা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান অথবা কোন সরকারি কর্মচারী অথবা কোন ব্যক্তিকে সুদযুক্ত অথবা সুদমুক্তভাবে নির্দিষ্ট মেয়াদে অর্থ প্রদান, যাহা গ্রহীতার নিকট হইতে আদায়ের বাধ্যবাধকতা রহিয়াছে;
(৭) “গ্যারান্টি” অর্থ কোন স্বায়ত্ত্বশাসিত প্রতিষ্ঠান অথবা রাষ্ট্রায়ত্ত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান অথবা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান অথবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক অভ্যন্তরীণ অথবা বহিঃউৎস হইতে গৃহীত ঋণের আসল ও সুদ এবং এতদ্সংক্রান্ত অন্য কোন চার্জ আংশিক অথবা সম্পূর্ণরূপে পরিশোধে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান অসমর্থ হইলে সরকার কতৃর্ক তাহা পরিশোধের নিশ্চয়তা প্রদান, এবং সরকার কর্তৃক প্রদত্ত কাউন্টার গ্যারান্টিও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(৮) “দপ্তর” অর্থ কোন মন্ত্রণালয় অথবা বিভাগের অধীন কোন সংযুক্ত দপ্তর বা পরিদপ্তর বা অধিদপ্তর;
(৯) “দায়যুক্ত ব্যয়” অর্থ সংবিধানের ৮৮ অনুচ্ছেদের বিধান অনুযায়ী সংযুক্ত তহবিলের উপর দায়যুক্ত ব্যয়;
(১০) “নির্ধারিত” অর্থ বিধি দ্বারা নির্ধারিত, তবে বিধি প্রণীত না হওয়া পর্যন্ত সরকার কর্তৃক লিখিত আদেশ দ্বারা নির্ধারিত;
(১১) “নির্বাহী কর্তৃপক্ষ” অর্থ প্রধানমন্ত্রী, ক্ষেত্রমত, প্রধান উপদেষ্টা অথবা কোন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত মন্ত্রী, ক্ষেত্রমত, উপদেষ্টা অথবা প্রতিমন্ত্রী অথবা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের প্রধান;
(১২) “প্রচ্ছন্ন দায়” অর্থ কোন সংস্থা অথবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক সংগৃহীত ঋণের বিপরীতে সরকার কর্তৃক গ্যারান্টি প্রদান করা হইয়াছে এমন ক্ষেত্রে সংশিষ্ট সংস্থা অথবা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ঋণ পরিশোধে ব্যর্থতাজনিত কারণে সরকারের উপর আরোপিত হইতে পারে এমন সম্ভাব্য দায়;
(১৩) “প্রজাতন্ত্রের সরকারি হিসাব” অর্থ সংবিধানের ৮৬ অনুচ্ছেদে উল্লিখিত প্রজাতন্ত্রের সরকারি হিসাব;
(১৪) “প্রধান খাত” অর্থ কোন মন্ত্রণালয়, বিভাগ বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সমুদয় আয় অথবা ব্যয় বরাদ্দ সম্বলিত খাত, এবং কোন বিশেষ প্রকৃতির ব্যয় বরাদ্দ সম্বলিত খাতও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(১৫) “বাজেট ঘাটতি” অর্থ সংযুক্ত তহবিলে ঋণ বাবদ প্রাপ্তি ব্যতীত মোট প্রাপ্তি অপেক্ষা উক্ত তহবিল হইতে ঋণের আসল বাবদ পরিশোধ ব্যতীত মোট পরিশোধ বেশী হইবার কারণে উদ্ভূত ঘাটতি;
(১৬) “বার্ষিক বাজেট” অর্থ সংবিধানের ৮৭ অনুচ্ছেদে উল্লিখিত বার্ষিক আর্থিক বিবৃতি; এবং সংবিধানের ৮৯ অনুচ্ছেদে উল্লিখিত মঞ্জুরী দাবীসহ অন্যান্য বাজেট দলিলও ইহার অন্তর্ভুক্ত হইবে;
(১৭) “বাংলাদেশ ব্যাংক” অর্থ Bangladesh Bank Order, 1972 (President Order No. 127 of 1972) এর ধারা ৩ এর অধীন প্রতিষ্ঠিত বাংলাদেশ ব্যাংক;
(১৮) “মধ্যমেয়াদি বাজেট” অর্থ সরকারের নীতি ও উদ্দেশ্যের সঙ্গে বাজেট বরাদ্দের এবং বাজেট বরাদ্দের সঙ্গে কর্মকৃতির (Performance) যোগসূত্র প্রতিষ্ঠার ব্যবস্থা সম্বলিত তিন অর্থ বৎসর মেয়াদি বাজেট যাহাতে সরকারের আয় ও ব্যয়ের বাজেট বৎসরের প্রাক্কলন এবং তৎপরবর্তী দুই বৎসরের প্রক্ষেপণ অন্তর্ভুক্ত থাকিবে;
(১৯) “মূলধন ব্যয়” অর্থ এমন কোন ব্যয় অথবা বিনিয়োগ, যাহা হইতে এক বৎসরের অধিককাল উপকার অথবা সেবা পাওয়া যাইবে;
(২০) “রাজস্ব আয়” অর্থ কর, লেভী বা শুল্ক অথবা এতদ্সম্পর্কিত অন্য কোন চার্জ এবং কর বহির্ভূত অন্যান্য খাত হইতে সংগৃহীত অর্থ যাহা সংযুক্ত তহবিলে জমা করিতে হইবে;
(২১) “রাজস্ব ব্যয়” অর্থ সরকারের আবর্তক প্রকৃতির চলতি ব্যয়; (২২) “সংবিধান” অর্থ গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান;
(২৩) “সংস্থা” অর্থ আইনের অধীন প্রতিষ্ঠিত কোন সংবিধিবদ্ধ কর্তৃপক্ষ, স্বায়ত্তশাসিত অথবা রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান অথবা স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান;
(২৪) “সংযুক্ত তহবিল” অর্থ সংবিধানের ৮৪ অনুচ্ছেদে বর্ণিত সংযুক্ত তহবিল;
(২৫) “সরকারি ঋণ” অর্থ সরকার কর্তৃক অভ্যন্তরীণ এবং বহিঃখাত হইতে গৃহীত ঋণ ও ঋণের স্থিতি;
(২৬) “হিসাব রক্ষণ কার্যালয়” অর্থ হিসাব মহানিয়ন্ত্রক এর কার্যালয়, কন্ট্রোলার জেনারেল অব ডিফেন্স ফাইন্যান্স এর কার্যালয়, মন্ত্রণালয় বা বিভাগ বা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয়, জেলা হিসাব রক্ষণ কার্যালয় এবং উপজেলা হিসাব রক্ষণ কার্যালয়।
দ্বিতীয় অধ্যায়
আর্থিক ব্যবস্থাপনাআর্থিক ব্যবস্থাপনা
৩। (১) সরকার সামষ্টিক অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতার উন্নতি সাধন এবং বার্ষিক বাজেট ঘাটতি ধারণযোগ্য পর্যায়ে রাখার জন্য কার্যকর সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে।
(২) সরকার সুষ্ঠু আর্থিক ও সরকারি ঋণ ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসরণ করিবে এবং ঋণের স্থিতি পরিশোধযোগ্য সীমার মধ্যে রাখিবার উদ্দেশ্যে নিম্নবর্ণিত ব্যবস্থাপনাসমূহ গ্রহণ করিবে, যথা :- (ক) অভ্যন্তরীণ উৎস হইতে সংগৃহীত ঋণের পরিমাণ ক্রমান্বয়ে হ্রাস করা এবং উক্ত উৎস হইতে সংগৃহীত বার্ষিক ঋণের পরিমাণ সহনীয় পর্যায়ে রাখা; (খ) সরকার কতৃর্ক প্রদত্ত গ্যারান্টিজনিত প্রচ্ছন্ন দায় (contingent liability) ধারণযোগ্য পর্যায়ে রাখা; এবং (গ) অভ্যন্তরীণ ও বহিঃউৎস হইতে গৃহীত সরকারি ঋণের স্থিতির পরিমাণ মোট দেশজ উৎপাদের শতকরা অংশ হিসাবে প্রতি বৎসর ক্রমান্বয়ে হ্রাস করা।
(৩) দৈনন্দিন নগদ অর্থের চাহিদা পূরণ করিবার জন্য সরকার বাংলাদেশ ব্যাংক হইতে নির্ধারিত সীমার মধ্যে উপায়-উপকরণ অগ্রিম গ্রহণ করিতে পারিবে এবং উপায়-উপকরণ অগ্রিম গ্রহণের ক্ষেত্রে নির্ধারিত সীমা অতিক্রম করিলে, বাংলাদেশ ব্যাংক হইতে অতিরিক্ত অর্থ ওভার ড্রাফ্ট হিসাবে গ্রহণ ব্যতিত সরকার বাংলাদেশ ব্যাংক হইতে কোন ঋণ গ্রহণ করিতে পারিবে না।
(৪) উপ-ধারা (৩) এ যাহা কিছুই থাকুক না কেন, বাংলাদেশ ব্যাংক, নির্ধারিত সময়সীমা পর্যন্ত, সরকার কর্তৃক জারীকৃত প্রাইমারী সিকিউরিটিসমূহ যেমন, ট্রেজারী বিল, বণ্ড প্রভৃতি ক্রয় করিতে পারিবে।
(৫) সরকার, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, বাজেট ঘাটতি, অভ্যন্তরীণ উৎস ও বহিঃউৎস হইতে গৃহীত ঋণ এবং গ্যারান্টিজনিত প্রচ্ছন্ন দায় ইত্যাদির বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রা, অভ্যন্তরীণ ও বহিঃউৎস হইতে গৃহীত ঋণের স্থিতি-সীমা এবং বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক প্রাইমারী সিকিউরিটি ক্রয়ের সময়সীমা নির্ধারণ করিবে।অর্থ বরাদ্দে সমতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিতকরণ৪। সরকার, জনস্বার্থে, অর্থ বরাদ্দের ক্ষেত্রে অধিকতর সমতা ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করিবে এবং উক্ত উদ্দেশ্যে সুনির্দিষ্টভাবে নিম্নবর্ণিত কার্যব্যবস্থা গ্রহণ করিবেঃ-
(ক) আঞ্চলিক সমতা নিশ্চিতকরণ;
(খ) নারী-পুরুষের সমতা নিশ্চিতকরণ;
(গ) দারিদ্র্য নিরসন সংক্রান্ত কার্যক্রমে ক্রমান্বয়ে অধিক অর্থ বরাদ্দ প্রদান;
(ঘ) সংস্থাসমূহকে অনুদান, ভর্তুকি, ঋণ ইক্যুইটি ইত্যাদি বাবদ প্রদত্ত অর্থ বাজেটে যথাসম্ভব সুস্পষ্টভাবে প্রদর্শন ; এবং
(ঙ) অর্থ বরাদ্দ ও ব্যবহার সংক্রান্ত তথ্যাদি সকল মন্ত্রণালয় বা বিভাগ কতৃর্ক তাহাদের ওয়েবসাইটে নিয়মিত প্রকাশ করা।আর্থিক ব্যবস্থাপনায় সক্ষমতা বৃদ্ধি৫। সরকার, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, সুষ্ঠু ও কার্যকর আর্থিক ব্যবস্থাপনা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে এবং উক্তরূপে শিক্ষিত এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত জনবলের দক্ষতা, অভিজ্ঞতা ও সেবার সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করিবে।
তৃতীয় অধ্যায়
সংযুক্ত তহবিল ও প্রজাতন্ত্রের সরকারি হিসাবসংযুক্ত তহবিল এবং প্রজাতন্ত্রের সরকারি হিসাব রক্ষণাবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণ
৬। অর্থ বিভাগ সংযুক্ত তহবিল এবং প্রজাতন্ত্রের সরকারি হিসাব রক্ষণাবেক্ষণ ও নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব পালন করিবে।সংযুক্ত তহবিলে অর্থ জমা ও প্রত্যাহার
৭। (১) সংযুক্ত তহবিলে নিম্নবর্ণিত অর্থ সংগৃহীত পদ্ধতিতে জমা করিতে হইবে, যথা :-
(ক) সংবিধানের ৮৪(১) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী সরকার কর্তৃক প্রাপ্ত সকল রাজস্ব, সংগৃহীত সকল ঋণ, ঋণ পরিশোধ হইতে প্রাপ্ত সকল অর্থ ; এবং
(খ) সরকার কর্তৃক প্রাপ্ত সকল অনুদান।
(২) অর্থ বিভাগ সংযুক্ত তহবিলের জন্য একটি উপযুক্ত ও কার্যকর ব্যবস্থাপনা এবং ব্যাংকিং হিসাব পদ্ধতি প্রতিষ্ঠা করিবে।সংযুক্ত তহবিল হইতে প্রত্যর্পণ ও ফেরতযোগ্য অর্থ উত্তোলন
৮। রাজস্ব আহরণকারী কোন দপ্তর কর্তৃক কর, লেভী, শুল্ক অথবা এতদ্সম্পর্কিত অন্য কোন চার্জ বাবদ প্রাপ্ত অর্থ সংযুক্ত তহবিলে জমা করিবার পর সংশ্লিষ্ট দপ্তর উক্ত তহবিল হইতে আইনগতভাবে প্রত্যর্পণ ও ফেরতযোগ্য প্রয়োজনীয় অর্থ সংযুক্ত তহবিল হইতে উত্তোলন করিতে পারিবে।প্রজাতন্ত্রের সরকারি হিসাবে অর্থ জমা ও উক্ত হিসাব হইতে অর্থ পরিশোধ
৯। (১) সংযুক্ত তহবিলে জমাকৃত অর্থ ব্যতীত সরকার কতৃর্ক বা সরকারের পক্ষে প্রাপ্ত অন্য সকল অর্থ সংবিধানের ৮৪(২) অনুচ্ছেদের এর বিধান অনুযায়ী প্রজাতন্ত্রের সরকারি হিসাবে জমা হইবে। (২) অর্থ বিভাগ প্রজাতন্ত্রের সরকারি হিসাব অর্থ জমা ও পরিশোধের বাৎসরিক প্রাক্কলন প্রস্তুত করিবে এবং উক্ত হিসাবে অর্থ জমা বা উক্ত হিসাব হইতে অর্থ পরিশোধ নির্ধারিত পদ্ধতিতে পরিবীক্ষণ করিবে।
চতুর্থ অধ্যায়
বাজেট ব্যবস্থাপনা বাজেট ১০। (১) অর্থ মন্ত্রী, প্রত্যেক অর্থ বৎসর আরম্ভ হইবার পূর্বে বার্ষিক বাজেট সংসদে পেশ করিবেন।
(২) বার্ষিক বাজেটে দায়যুক্ত ব্যয় হইতে অন্যান্য ব্যয় পৃথকভাবে প্রদর্শন করিতে হইবে।
(৩) বার্ষিক বাজেটে অন্যান্য ব্যয় হইতে রাজস্ব খাতের ব্যয় পৃথকভাবে প্রদর্শন করিতে হইবে।
(৪) অর্থ মন্ত্রী বার্ষিক বাজেটের সঙ্গে একটি মধ্যমেয়াদি বাজেট সংসদে পেশ করিবেন এবং মধ্যমেয়াদি বাজেটে সরকারের আয় ও ব্যয়ের বাজেট-বৎসরের প্রাক্কলন ছাড়াও তদপরবর্তী দুই বৎসরের প্রক্ষেপন অন্তর্ভুক্ত থাকিবে।
(৫) মধ্যমেয়াদি বাজেটে সরকারের নীতি ও উদ্দেশ্যের সঙ্গে অর্থ বরাদ্দ এবং অর্থ বরাদ্দের সঙ্গে মন্ত্রণালয় বা বিভাগসমূহের কর্মকৃতির (Performance) যোগসূত্র প্রদর্শন করিতে হইবে।নীতি বিবৃতি(Policy Statement)
১১। সরকার, প্রতি বৎসর বার্ষিক বাজেটের সঙ্গে সামষ্টিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উপর একটি নীতি বিবৃতি সংসদে পেশ করিবে, যাহাতে নিম্নবর্ণিত বিষয়সমূহ অন্তর্ভুক্ত থাকিবে-
(ক) অন্তর্নিহিত অনুমানসমূহের (underlying assumptions) বিশ্লেষণসহ অর্থনীতির প্রবৃদ্ধি-সম্ভাবনার পর্যালোচনা এবং সামষ্টিক অর্থনৈতিক সূচকসমূহের মধ্যমেয়াদি লক্ষ্যমাত্রা;
(খ) সরকারের কৌশলগত অগ্রাধিকারসমূহ, আর্থিক নীতি (Fiscal Policy) অনুদানসহ (যদি প্রযোজ্য হয়) রাজস্ব আয়, ব্যয়, বাজেট ঘাটতি ও বাজেট ঘাটতির অর্থায়ন;
(গ) অভ্যন্তরীণ ও বহিঃউৎস হইতে ঋণ সংগ্রহ কৌশলের মূল্যায়ন, অভ্যন্তরীণ ও বহিঃউৎস হইতে ঋণ গ্রহণের লক্ষ্যমাত্রা, পদ্ধতি ও মাধ্যম, বহিঃঋণের বিপরীতে বৈদেশিক মুদ্রার বিনিময় ঝুঁকি, সংস্থাসমূহের জন্য প্রদত্ত ঋণ বা গ্যারান্টির পরিমাণ এবং বেসরকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের জন্য গ্যারান্টির পরিমাণ ইত্যাদি।সংশোধিত বাজেট
১২। (১) অর্থ মন্ত্রী, প্রয়োজনে, প্রত্যেক অর্থ বৎসরে একটি সংশোধিত বাজেট সংসদে পেশ করিবেন।
(২) সংশোধিত বাজেট, যথাসম্ভব, প্রত্যেক বৎসরের মার্চ মাসের মধ্যে পেশ করিতে হইবে।
(৩) সংশোধিত বাজেট পেশ করিবার ক্ষেত্রে সংবিধানের ৮৭, ৮৮, ৮৯ ও ৯০ অনুচ্ছেদের বিধানাবলী অনুসরণ করিতে হইবে এবং, প্রযোজ্য ক্ষেত্রে, সংবিধানের ৯১ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী একটি সম্পূরক আর্থিক বিবৃতি বা অতিরিক্ত আর্থিক বিবৃতিও সংসদে পেশ করিতে হইবে।বাজেট বরাদ্দ সম্পর্কে অবহিতকরণ ও অর্থ ছাড়
১৩। (১) বার্ষিক বা সংশোধিত বাজেট অনুমোদিত হইবার পর অর্থ বিভাগ, দায়যুক্ত ব্যয়সহ অনুমোদিত বরাদ্দ সম্পর্কে প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় বা বিভাগ এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানসমূহ এবং সংশ্লিষ্ট হিসাব রক্ষণ কার্যালয়সমূকে সত্বর অবহিত করিবে।
(২) প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় বা বিভাগ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানসমূহ উহাদের অনুকূলে বরাদ্দকৃত অর্থ অধীনস্থ নিয়ন্ত্রণকারী অথবা ব্যয়ন কর্মকর্তাগণের মধ্যে, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, পুনঃবরাদ্দের ব্যবস্থা করিবে।
(৩) প্রশাসনিক মন্ত্রণালয় বা বিভাগ ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানসমূহ নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসরণে বাজেট বা, ক্ষেত্রমত, সংশোধিত বাজেট অনুযায়ী অর্থ অবমুক্ত অথবা ছাড় করিবে।অর্থ স্থানান্তর ও পুনঃউপযোজন
১৪। (১) সংসদের পূর্বানুমোদন ব্যতিরেকে অপ্রত্যাশিত ব্যয় খাত ব্যতীত এক মঞ্জুরী হইতে অন্য কোন মঞ্জুরীর বিপরীতে এবং দায়যুক্ত ব্যয় হইতে অন্যান্য ব্যয়ে অর্থ স্থানান্তর অথবা পুনঃউপযোজন করা যাইবে না।
(২) অর্থ বিভাগের সম্মতি ব্যতিরেকে কোন প্রধান খাতের অন্তর্ভুক্ত রাজস্ব ব্যয় হইতে মূলধন ব্যয়ে অথবা মূলধন ব্যয় হইতে রাজস্ব ব্যয়ে অথবা বেতন ও ভাতা শ্রেণী হইতে অন্য কোন শ্রেণীতে কোন অর্থ পুনঃউপযোজন করা যাইবে না”।বাজেট পরিবীক্ষণ
১৫। (১) সরকার, বাজেট বাস্তবায়নের অগ্রগতি নিয়মিত পরিবীক্ষণের লক্ষ্যে নির্দেশমালা প্রণয়ন করিতে পারিবে।
(২) সকল মন্ত্রণালয় বা বিভাগ এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, উহাদের অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করিবে।
(৩) সকল মন্ত্রণালয় বা বিভাগ এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠান, নির্ধারিত পদ্ধতিতে, উহাদের আর্থিক ও অ-আর্থিক কর্মসম্পাদনের উপর বার্ষিক প্রতিবেদন প্রণয়ন এবং প্রকাশ করিবে।
(৪) অর্থ মন্ত্রী, বাজেটে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে রাজস্ব সংগ্রহ এবং ব্যয়ের গতিধারা ত্রৈমাসিক ভিত্তিক পর্যালোচনা করিবেন এবং উক্ত পর্যালোচনার ফলাফল এবং করণীয় সস্পর্কিত প্রতিবেদন সংসদের পরবর্তী অধিবেশনে উপস্থাপন করিবেন।বাজেট ব্যবস্থাপনা কমিটি
১৬। (১) বাজেট ব্যবস্থপনার লক্ষ্যে সকল মন্ত্রণালয় বা বিভাগ এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে প্রধান হিসাবদানকারী অফিসারের (Principal Accounting Officer) সভাপতিত্বে একটি বাজেট ব্যবস্থাপনা কমিটি থাকিবে এবং উক্ত কমিটির কার্যক্রমে সহায়তা করিবার জন্য এক বা একাধিক ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা যাইবে।
(২) সরকারের কৌশলগত উদ্দেশ্য ও নীতি বিশ্লেষণ ও মন্ত্রণালয় বা বিভাগভিত্তিক নীতি প্রণয়ন এবং বাস্তবায়নের জন্য প্রকল্প বা কর্মসূচি গ্রহণ এবং বাজেট প্রণয়ন, বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষণ কাজে প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা এবং দক্ষতা অর্জনের লক্ষ্যে সরকার সকল মন্ত্রণালয় বা বিভাগ এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে একটি বাজেট ব্যবস্থাপনা অনুবিভাগ বা অধিশাখা বা শাখা প্রতিষ্ঠা করিবে।আর্থিক হিসাব সংরক্ষণ ও প্রতিবেদন প্রণয়ন
১৭। (১) সকল প্রধান হিসাবদানকারী অফিসার নির্ধারিত পদ্ধতিতে স্ব স্ব মন্ত্রণালয় বা বিভাগ অথবা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের হিসাব সংরক্ষণ করিবেন এবং উক্ত হিসাব সংশ্লিষ্ট হিসাব রক্ষণ কার্যালয় কর্তৃক রক্ষিত হিসাবের সহিত নিয়মিতভাবে সংগতিসাধন করিবেন।
(২) প্রধান হিসাবদানকারী অফিসার অর্থ বৎসর শেষ হইবার পর বার্ষিক উপযোজন হিসাব প্রণয়ন করিবেন এবং নিরীক্ষা প্রত্যয়নের জন্য উহা মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক বরাবরে প্রেরণ করিবেন।
(৩) সুষ্ঠু পরিবীক্ষণ নিশ্চিত করিবার জন্য হিসাব রক্ষণ কার্যালয় মাসিক এবং ত্রৈমাসিক আর্থিক তথ্য ও উপাত্ত সম্বলিত প্রতিবেদন প্রণয়ন করিয়া অর্থ বিভাগে প্রেরণ করিবে এবং অর্থ বিভাগ উক্ত প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করিয়া প্রয়োজনে বিশ্লেষণ সম্বলিত প্রতিবেদন প্রকাশ করিবে।
(৪) হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কার্যালয়, সরকারের সাংবৎসরিক প্রাপ্তি, পরিশোধ এবং বিভিন্ন প্রকারের স্থিতি সম্বলিত বার্ষিক আর্থিক হিসাব প্রণয়নপূর্বক নিরীক্ষা প্রত্যয়নের জন্য মহা-হিসাব নিরীক্ষক ও নিয়ন্ত্রক এর নিকট উপস্থাপন করিবেন।
পঞ্চম অধ্যায়
প্রধান হিসাবদানকারী অফিসার এবং নির্বাহী কর্তৃপক্ষপ্রধান হিসাবদানকারী অফিসার (Principal Accounting Officer)
১৮। (১) প্রত্যেক মন্ত্রণালয় বা বিভাগ এবং অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে একজন প্রধান হিসাবদানকারী অফিসার থাকিবে।
(২) মন্ত্রণালয় বা বিভাগের সচিব সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগের প্রধান হিসাবদানকারী অফিসারের দায়িত্ব পালন করিবেন।
(৩) অন্যান্য প্রতিষ্ঠান, অর্থ বিভাগের সহিত পরামর্শক্রমে, উহার একজন কর্মকর্তাকে উক্ত প্রতিষ্ঠানের প্রধান হিসাবদানকারী অফিসার হিসাবে দায়িত্ব প্রদান করিবেন।প্রধান হিসাবদানকারী অফিসারের দায়িত্ব ও কর্তব্য
১৯। প্রধান হিসাবদানকারী অফিসারের দায়িত্ব ও কর্তব্য হইবে নিম্নরূপ, যথা :-
(ক) সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগ অথবা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে দক্ষ ও স্বচ্ছ আর্থিক ব্যবস্থাপনা,অভ্যন্তরীণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা নিশ্চিতকরণ;
(খ) সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগ অথবা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের সম্পদের কার্যকর ও সুষ্ঠু ব্যবহার নিশ্চিতকরণ;
(গ) সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগ অথবা অন্যান্য প্রতিষ্ঠান এবং অধীনস্থ দপ্তর ও সরকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের সকল আর্থিক ব্যয় নির্বাহের ক্ষেত্রে ইহার যথার্থতা (bonafide) এবং সংশ্লিষ্ট আইন ও বিধি-বিধান প্রতিপালন করা হইয়াছে কিনা উহা নিশ্চিতকরণ;
(ঘ) সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় বা বিভাগ অথবা অন্যান্য প্রতিষ্ঠান কর্তৃক আহরণযোগ্য সকল রাজস্ব সংগ্রহের এবং অননুমোদিত ও অপচয়মূলক ব্যয় প্রতিরোধের লক্ষ্যে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ;
(ঙ) নির্ধারিত পদ্ধতি অনুসরণপূর্বক বাজেট প্রণয়ন করা হইয়াছে কিনা এবং সরকারের কৌশলগত উদ্দেশ্য পূরণকল্পে এবং মন্ত্রণালয় বা বিভাগ অথবা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের নীতি বাস্তবায়নে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে যথাযথ বরাদ্দ প্রদান করা হইয়াছে কিনা উহা নিশ্চিতকরণ;
(চ) সরকারি হিসাব সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সিদ্ধান্তসমূহ দ্রুত বাস্তবায়নের নিমিত্ত যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ।নির্বাহী কর্তৃপক্ষের আর্থিক দায়িত্ব
২০। (১) নির্বাহী কর্তৃপক্ষ তাহার নিয়ন্ত্রণাধীন মন্ত্রণালয় বা বিভাগ বা অন্যান্য ও প্রতিষ্ঠানসমূহ কর্তৃক এই আইনের বিধানসমূহ এবং অন্যান্য আর্থিক বিধি প্রতিপালন নিশ্চিত করিবার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করিবেন।
(২) নির্বাহী কর্তৃপক্ষ আর্থিক সংশ্লেষ রহিয়াছে এইরূপ যে কোন সিদ্ধান্ত প্রচলিত সকল বিধি-বিধান পালনপূর্বক অবশ্যই লিখিতভাবে গ্রহণ নিশ্চিত করিবেন।
ষষ্ঠ অধ্যায়
ঋণ ও গ্যারান্টিঋণ সংগ্রহ
২১। (১) সরকার, দেশের অভ্যন্তর অথবা বহিঃউৎস হইতে ঋণ সংগ্রহ করিতে পারিবে।
(২) সরকারের পক্ষে ঋণ সংগ্রহের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রণালয় বা বিভাগ অথবা অন্যান্য প্রতিষ্ঠানসমূহ ব্যতীত অন্য কোন মন্ত্রণালয়, বিভাগ, দপ্তর বা সংস্থা কোন প্রকার ঋণ সংগ্রহ করিতে পারিবে না।
(৩) সরকার নিম্নবর্ণিত উদ্দেশ্য পূরণকল্পে ঋণ সংগ্রহ করিতে পারিবে, যথা :-
(ক) বাজেট ঘাটতির অর্থায়ন;
(খ) কোন প্রকল্প বা কর্মসূচী বাস্তবায়ন;
(গ) কোন সংস্থায় পুনঃলগ্নী;
(ঘ) পূর্বে গৃহীত ঋণের পরিশোধ অথবা মেয়াদ উত্তীর্ণের কারণে কোন ঋণের অর্থায়ন; এবং
(ঙ) সংসদ কতৃর্ক অনুমোদিত অন্য যে কোন উদ্দেশ্যে।গ্যারান্টি
২২। সরকারের পক্ষে অর্থ বিভাগ ব্যতীত অন্য কোন মন্ত্রণালয় বা বিভাগ কোন প্রকার গ্যারান্টি প্রদান করিতে পারিবে না।
সপ্তম অধ্যায়
আর্থিক অসদাচরণআর্থিক অসদাচরণ
২৩। (১) কোন সরকারি কর্মকর্তা অথবা কর্মচারী এই আইনের অধীন তাহার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে-
(ক) ইচ্ছাকৃতভাবে অথবা অবহেলাজনিত কারণে ব্যর্থ হইলে, অথবা
(খ) কোন অননুমোদিত বা অপচয়মূলক ব্যয় নির্বাহ বা ব্যয় নির্বাহের আদেশ প্রদান করিলে, অথবা কোন আর্থিক ব্যয় নির্বাহের ক্ষেত্রে ইহার যথার্থতা (bonafide) এবং সংশ্লিষ্ট আইন বিধি-বিধান যথাযথ অনুসরণ করা হইয়াছে কিনা তাহা নিশ্চিত করিতে ব্যর্থ হইলে তিনি আর্থিক অসদাচরণ করিয়াছেন বলিয়া গণ্য হইবে।
(২) উপ-ধারা (১) এর অধীন আর্থিক অসদাচরণের জন্য অভিযুক্ত সরকারি কর্মকর্তা বা কর্মচারীর বিরুদ্ধে সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য প্রযোজ্য আইন বা প্রযোজ্য বিধি অনুযায়ী শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা যাইবে।
অষ্টম অধ্যায়
বিবিধবিধি প্রণয়নের ক্ষমতা
২৪। এই আইনের উদ্দেশ্য পূরণকল্পে, সরকার, সরকারি গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা, বিধি প্রণয়ন করিতে পারিবে।জটিলতা নিরসনে সরকারের ক্ষমতা
২৫। এই আইনের কোন বিধানের অস্পষ্টতার কারণে উহা কার্যকর করিবার ক্ষেত্রে কোন অসুবিধা দেখা দিলে, সরকার অন্যান্য বিধানের সহিত সামঞ্জস্য রাখিয়া, সরকারী গেজেটে প্রজ্ঞাপন দ্বারা উক্ত বিধানের স্পষ্টিকরণ বা ব্যাখ্যা প্রদানপূর্বক উক্ত বিষয়ে করণীয় সম্পর্কে দিক নির্দেশনা দিতে পারিবে।বিদ্যমান বিধি ও আদেশসমূহের প্রয়োগ
২৬। এই আইনের কোন বিধানের সহিত অসঙ্গতিপূর্ণ না হওয়া সাপেক্ষে, সরকারি অর্থ ও বাজেট ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিদ্যমান বিধি, প্রবিধান, ম্যানুয়েল, কোড ও আদেশ, এই আইনের অধীন নতুন বিধি, প্রবিধান, ম্যানুয়েল, কোড প্রণয়ন বা আদেশ জারী না হওয়া পর্যন্ত, বলবৎ থাকিবে।মূল পাঠ এবং ইংরেজী পাঠ২৭। এই আইনের মূল পাঠ বাংলাতে হইবে এবং ইংরেজীতে অনূদিত উহার একটি নির্ভরযোগ্য পাঠ থাকিবে: তবে শর্ত থাকে যে, বাংলা ও ইংরেজী পাঠের মধ্যে বিরোধের ক্ষেত্রে বাংলা পাঠ প্রধান্য পাইবে।
সরকারি অর্থ ও বাজেট ব্যবস্থাপনা আইন, ২০০৯ : ডাউনলোড