বৈষম্য । দাবীর খতিয়ান । পুন:বিবেচনা

৯ম পে স্কেলের আবশ্যকতা ২০২৪ । সরকারি নিম্ন গ্রেডের কর্মচারীগণ কি অতি কষ্টে দিন কাটাচ্ছে?

সরকারি কর্মচারীগণ যদিও গ্রেড ভিত্তিক হিসাবে পরিচিত হওয়ার কথা জাতীয় বেতন স্কেল ২০১৫ জারি হওয়ার পরে কিন্তু বিভিন্ন আদেশে এখনও ১ম, ২য়, ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণী হিসাবে উল্লেখ করা হচ্ছে। অন্য দিকে বেতন স্কেলের দিকে তাকালে দুটি শ্রেণীতে বিভাজন ও বৈষম্য আকারে রাখা হয়েছে-৯ম পে স্কেলের আবশ্যকতা ২০২৪

বড় বৈষম্যটা কোথায়? ১১-২০ গ্রেড কর্মচারী ও ১-১০ গ্রেড কর্মকর্তা হিসাবে সকল ক্ষেত্রেই বিভাজন ও বৈষম্য পরিস্কার ভাবে তুলে ধরা হয়েছে। ১১-২০ গ্রেডে প্রতি গ্রেডের গড়ে ২-৩% হারে ব্যবধান এবং ১-১০ গ্রেডে গড়ে ২০ শতাংশ ব্যবধান রাখা হয়েছে ফলে ব্যাপক ভাবে আর্থিক বৈষম্যের শিকার হয়েছে ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীগণ। যে কোন আদেশ জারির মাধ্যমে এই বৈষম্য ব্যাপক আকার ধারণ করে যখন মূল বেতন অনুসারে কোন সুযোগ বা সুবিধা প্রদান করা হয়। গ্রেড অনুসারে কোন আর্থিক সুবিধা দেওয়া হলে ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীদের সতীনের ছেলের মত অবস্থায় রাখা হয়।

বেতনে কি মাস চলে? সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে সবচেয়ে কম বেতনে চাকরি করেন ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীগণ। বর্তমান বাজারে মাসিক বেতনের টাকা দিয়ে তাদের টিকে থাকা কষ্টকর হয়ে পড়েছে। মাস শেষে ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীগণ যে বেতন পান তা দিয়ে বাসা ভাড়া, পরিবারের ৬ জন সদস্যের মাসের বাজার সদাই, ছেলে মেয়েদের পড়াশুনায় ব্যয় করে আর কিছু অবশিষ্ট থাকে না। মাস শেষ হওয়া আগেই তাকে ঋণ করে সংসার চালাতে হয়। নবম পে স্কেলের সর্বশেষ খবর । কবে দিবে পে স্কেল?

সামাজিক জীবনে কর্মচারীরা কেন অসুখী? পরিবার না পারে তাদের চিকিৎসা করতে, না পারে সামাজিকতা রক্ষা করে আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে দাওয়াত খেতে যেতে, শপিং করা তো অনেক দূরের কথা। কোন মাসে পরিবারের কেউ অসুস্থ্য হলে ধার দেনা করে পরের মাসে বাজার টান পড়ে যায়। ছেলে মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ, চিকিৎসা, সংসার খরচ ও সামাজিক ব্যয় মেটাতে তাদের হিমশিম খেতে হচ্ছে। কেউ কেউ তো মৌলিক চাহিদা পূরণে অক্ষম হয়ে পড়ছে। কোন কোন কর্মচারী সারা জীবন ভাড়া বাসায় থাকার পর চাকুরী শেষে একটি মাথাগুজার ঠাইও ব্যবস্থা করতে পারে না।

৯ম পে স্কেল নাকি মহার্ঘ ভাতা । অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে অন্তর্বর্তীকালীন মহার্ঘ ভাতা ঘোষণা করতে হবে

পে কমিশন গঠন করে প্রস্তাব এবং বৈষম্যগুলো চিহ্নিত করে সমাধান করতে হবে। এ সময় পর্যন্ত মহার্ঘ ভাতা জারি রাখতে হবে। পরবর্তী পে স্কেল জারি হলে মহার্ঘ ভাতা সমন্বয় করবে।

ফোরাম লিংক

পে স্কেলের সমস্যা ও সমাধান ২০২৪ । নিম্নবেতন ভোগী কর্মচারীদের দাবী গুলো কি কি?

  • নবম পে-স্কেল ঘোষনার মাধ্যমে বিদ্যমান বেতন নিরসন করে গ্রেড অনুযায়ী বেতন স্কেলের পার্থক্য সমহারে নির্ধারণ ও গ্রেড সংখ্যা কমাতে হবে। (যৌক্তিক হারে বেতন নির্ধারণ করতে হবে)
  • এক ও অভিন্ন নিয়োগ বিধি বাস্তবায়ন করতে হবে।
  • সকল পদে পদোন্নতি বা ০৫(পাঁচ) বছর পর পর উচ্চতর গ্রেড প্রদান করতে হবে(ব্লক পোষ্ট নিয়মিতকরণ করতে হবে)।
  • টাইমস্কেল সিলেকশন গ্রেড পুণঃবহাল সহ জেষ্ঠতা বজায় রাখতে হবে।
  • সচিবালয়ে ন্যায় পদবী ও গ্রেড পরিবর্তন করতে হবে।
  • সকল ভাতা বাজার চাহিদা অনুযায়ী সমন্বয় করতে হবে।
  • নিম্ন বেতন ভোগীদের জন্য রেশন ও ১০০% পেনশন চালু সহ পেনশন গ্রাচুইটি হার ১টাকা = ৫০০ টাকা করতে হবে। ৱ
  • কাজের ধরণ অনুযায়ী পদ, নাম ও গ্রেড একিভূত করতে হবে।

আজকের বাজারে ১৫ হাজার টাকায় কি হয়?

আজকের বাজারে ১৫-২০ বাজার টাকায় বাঁচারমত বাঁচা যায় না, মরার মত বেঁচে থাকতে হচ্ছে তাদের। ১১-২০ তম গ্রেডের সরকারি চাকুরিজীবীদের সম্মিলিত অধিকার আদায়ের ফরম দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে থাকলেও কোন সুরাহাই হচ্ছে না। তাদের দাবি দাওয়া বাস্তবায়নে কোন প্রকার অগ্রগতি দেখা যাচ্ছে না। সরকারের কাছে বার বার দাবীসমূহ তুলে ধরা হলেও কোন প্রকার সাড়া মিলছে না। এমতাবস্থায় দিশেহারা কর্মচারীগণ কোন কুল কিনা খুজে পাচ্ছে না। জননেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজে এ ব্যাপারে কোন উদ্যোগ গ্রহণ বা হস্তক্ষেপ না করলে অসহায় এসব কর্মচারীদের ভাগ্য সহায় হবে না। মহার্ঘ ভাতা ২০২২ । এটি পে স্কেল অন্তবর্তীকালীন সময়ে প্রদান করা হয়

জাতীয় বেতন স্কেলের ১১-২০ গ্রেডের সরকারি চাকুরীজীবীদের বেতন বৈষম্য নিরসনসহ বিভিন্ন ধরনের দাবি নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাস ধারণ করে “১১-২০ গ্রেডের সরকারি চাকুরীজীবীদের সম্মিলিত অধিকার আদায় ফোরাম” সকল সরকারি চাকুরীজীবীদের বেতন ভাতাদির মধ্যে একটি যৌক্তিক ভারসাম্য স্থাপনের চেষ্টা অব্যাহত রাখবে, সেই সাথে যুগোপযোগী করার মাধ্যমে সরকারি চাকুরিতে একটা শৃংখলা তৈরির লক্ষ্যে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে যোগাযোগের মাধ্যমে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে জোরালো ভূমিকা রাখবে।

যে কারণে মহার্ঘ ভাতা বা পে স্কেল জরুরি হয়ে পড়েছে

ঊর্ধ্বমুখী দ্রব্যমূল্যের বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে দেশের মানুষকে। নিম্নবিত্ত থেকে মধ্যবিত্ত সবাই অর্থনৈতিক সংকটে। করোনা মহামারির ধাক্কা সামাল দিতে না দিতে জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি, আন্তর্জাতিক বাজারের মূল্যবৃদ্ধি ও ডলারের দাম বেড়ে যাওয়া নতুন সংকট তৈরি করেছে। বাড়তি বাজার দরের এই পরিস্থিতিতে দিশেহারা সাধারণ মানুষ।

জ্বালানি তেলের দাম বাড়ার পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ২ বছর তিন মাসের বাজার দর বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, এই তিন মাসে কোনো পণ্যের দাম কমেনি। বরং ক্রমাগত বেড়েই চলছে। চাল, ডাল, শাক-সবজি, মাছ, মাংস, ডিমসহ নিত্যপণ্যের দাম বেড়েছে ২০ থেকে ৯০ শতাংশ।

ফার্মগেট, কারওয়ান বাজার, কাটাবন, কলাবাগান, কাঁঠাল বাগানসহ রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে যে আটাশ চাল জুলাই মাসে প্রতি কেজি ৫২ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হতো, সেই চাল এখন ৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। জুলাইয়ের ৮০ টাকা কেজির নাজিরশাইল ৯৫ টাকা কেজি, ৬৫ থেকে ৬৮ টাকার মিনিকেট ৭৫ টাকা কেজি এখন। এই হিসাবে তিন মাসের ব্যবধানে আটাশ চালে কেজিপ্রতি আট টাকা বেড়েছে, নাজিরশাইল চালে ১০ থেকে ১৫ টাকা এবং মিনিকেট চালের কেজিপ্রতি ৮ থেকে ১০ টাকা বেড়েছে। সার্বিকভাবে চালের বাজারে ১০ থেকে ১৬ শতাংশ বেড়েছে।

এছাড়া জুলাই মাসে লম্বা বেগুন প্রতি কেজি ৫০ টাকা থেকে ৭০ টাকা ছিল। সেই বেগুন এখন কেজিপ্রতি ৬০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৫০ থেকে ৬০ টাকার গোল বেগুন ৭০ থেকে ৯০ টাকা, ৫০-৬০ টাকার টমেটো ৮০ টাকা, ৩০ টাকার পটল ৫০ টাকা, ৩০ টাকার শসা ৫০ টাকা, ৪০-৫০ টাকার ঢেঁড়স কেজিপ্রতি ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এই হিসাবে তিন মাসের ব্যবধানে সবজির দাম ১০ থেকে ৩০ শতাংশ বেড়েছে।

মাছের বাজারেও প্রায় একই চিত্র। জুলাই মাসে শিং মাছ আকার ভেদে ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি হয়, সেই মাছ এখন ৫২০-৭০০ টাকা। ১৫০ টাকার পাঙ্গাশ মাছ ১৮০ থেকে ২০০ টাকায় কেজি বিক্রি হচ্ছে। ২ তিন মাসের ব্যবধানে মাছের মূল্য ১০ থেকে ২০ শতাংশ বেড়েছে।

অন্যদিকে একটি ডিম কিনতে ক্রেতাকে গুণতে হচ্ছে ১৩ টাকা। এক হালি ৫০ টাকা। আর এক ডজন ১৫০ টাকায় কিনতে হচ্ছে। তবে জুলাই মাসে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় প্রতি হালি ডিম বিক্রি হয়েছে। ডজন ছিল ১২০ টাকা। তিন মাস আগে প্রতিটি ডিম কেনা যেত ১০ টাকায়। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে নিম্ন গ্রেডের কর্মচারীদের, আশায় আছেন, বর্তমান সরকার এই বৈষম্যের একটি সুরাহা করবেন। জনদরদী নেত্রী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনাই পারে এ বৈষম্যের কোন গতি করতে।

Alamin Mia

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ৮ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে বিস্তারিত জানতে admin@bdservicerules.info ঠিকানায় মেইল করতে পারেন।

2 thoughts on “৯ম পে স্কেলের আবশ্যকতা ২০২৪ । সরকারি নিম্ন গ্রেডের কর্মচারীগণ কি অতি কষ্টে দিন কাটাচ্ছে?

  • আমি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে কুক পদে চাকরী করি আমার পদ সমন্বয় করা যাবে কি?

  • কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের নিয়োগ বিধি সংশোধন করলেই কেবল সমন্বয় সম্ভব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *