সরকারি কর্মচারীদের জন্য নবম পে কমিশন ২০২৫ । নতুন পে কমিশনের কাছে কর্মচারীদের প্রত্যাশা কি?
আজ, ২৪ জুলাই, ২০২৫ তারিখে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সভায় এই কমিশন গঠনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সাবেক অর্থসচিব জাকির আহমেদ খানকে এই কমিশনের প্রধান করা হয়েছে এবং কমিশনকে আগামী ছয় মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। বর্তমানে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ২০১৫ সালের পে স্কেল অনুযায়ী বেতন-ভাতা পাচ্ছেন। দেশে দীর্ঘ দিন ধরে চলা উচ্চ মূল্যস্ফীতির কারণে মানুষের প্রকৃত আয় কমে যাওয়ায় নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণের জন্য এই পে কমিশন গঠন করা হয়েছে-সরকারি কর্মচারীদের জন্য নবম পে কমিশন ২০২৫
পে স্কেল কেন দরকার? সরকারি কর্মচারীরা সাধারণত চাকরির নিরাপত্তা, ন্যায্য বেতন ও ভাতা, পদোন্নতি, কাজের উপযুক্ত পরিবেশ, প্রশিক্ষণ এবং অবসরকালীন সুযোগ-সুবিধা চেয়ে থাকেন। এছাড়াও, তারা কাজের স্বীকৃতি, সম্মানজনক জীবনযাপন এবং পরিবারের জন্য সুযোগ-সুবিধা প্রত্যাশা করেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে নিম্ন আয়ের কর্মচারীরা বিশেষভাবে উপকৃত হওয়ার জন্য বেতন-ভাতা বৃদ্ধি এবং জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে কার্যকর পদক্ষেপ দেখতে চান। পে স্কেল (Pay Scale) দরকার কারণ এটি সরকারি ও বেসরকারি উভয় খাতেই কর্মীদের বেতন কাঠামো নির্ধারণ করে, যা তাদের কাজের ধরন, অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতার উপর ভিত্তি করে হয়ে থাকে। এটি কর্মীদের একটি নির্দিষ্ট বেতন কাঠামোতে আনতে সাহায্য করে, যা তাদের কাজের প্রতি আগ্রহ বাড়াতে এবং কাজের মান উন্নয়নে সহায়তা করে। এছাড়া, পে স্কেল কর্মীদের জীবনযাত্রার ব্যয় নির্বাহ এবং বাজারের সাথে সঙ্গতি রেখে তাদের বেতন নির্ধারণে সহায়তা করে।
সরকারি কর্মচারীরা পে কমিশনের নিকট কি চায়? দ্রব্যমূল্যের সাথে সঙ্গতি রেখে বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করা, বিশেষ করে নিম্ন গ্রেডের কর্মচারীদের জন্য এটি তাদের প্রথম চাওয়া হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে। চিকিৎসা ভাতা, আবাসন ভাতা, পরিবহন ভাতা ইত্যাদি ২০১৫ সালের অষ্টম পে স্কেল জারির পর আর পুন:নির্ধারণ করা হয়নি এসব বৃদ্ধি শুধু তাদের দাবী নয় বরং সময়ের দাবী হয়ে দাঁড়িয়েছে। ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারীদের পদোন্নত জটিলতা এড়াতে সারা দেশে একক পদোন্নতি বিধিমালা প্রনয়নের মাধ্যমে পদোন্নতির সুযোগ বৃদ্ধি করা এবং স্বচ্ছ পদোন্নতি প্রক্রিয়া নিশ্চিত করার জন্য পদক্ষেপ চায়। সরকারি অফিসে নারীদের কাজের পরিবেশের উন্নয়ন দীর্ঘদিনের দাবী তাই কাজের উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করা, যেখানে কর্মচারী হয়রানির শিকার না হন এমন পদক্ষেপ চায়। অবসরকালীন সুযোগ-সুবিধা: অবসর গ্রহণের পর পেনশন এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি করতে ১ টাকা পরিবর্তে ৫০০ টাকা আনুতোষিক নির্ধারণ এবং শতভাগ পেনশন সুবিধা চায়। সচিবালয় সহ বেশ কিছু দপ্তরের কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধা যেমন- রেশন ব্যবস্থা চালু হোক। উন্নত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা, যা কর্মচারীদের জন্য সহজলভ্য হয় সে বিষয় স্বাস্থ্য সেবাকে বীমা সুবিধায় আওতায় চায়। গত পে স্কেলেই এটি কার্যকরের আলোচনা আসলেও শেষ পর্যন্ত সেটি আলোর মুখ দেখেনি। সরকারি কর্মচারীদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা চায় নিম্নগ্রেডের কর্মচারীগন। নবম পে কমিশন গঠনের মূল উদ্দেশ্য হল সরকারি কর্মচারীদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করা এবং তাদের কাজের প্রতি উৎসাহিত করা। তাই, কর্মচারীদের প্রত্যাশা হল, এই কমিশন তাদের চাহিদা ও আকাঙ্খার প্রতিফলন ঘটাবে এবং একটি বাস্তবসম্মত বেতন কাঠামো ও সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করবে।
পে কমিশনে কতজন সদস্য থাকে? পে কমিশনের সদস্য সংখ্যা নির্দিষ্ট নয়, এটি প্রয়োজন অনুযায়ী ভিন্ন হতে পারে। তবে, সাধারণত একটি পে কমিশনে একজন প্রধান / চেয়ারম্যান এবং বেশ কয়েকজন সদস্য থাকেন। এই সদস্যরা পূর্ণকালীন বা খন্ডকালীন হতে পারেন। উদাহরণস্বরূপ, ২০১৫ সালের অষ্টম জাতীয় বেতন ও চাকরি কমিশন গঠিত হয়েছিল একজন চেয়ারম্যান (আপীল বিভাগের বিচারপতির পদমর্যাদায়), তিনজন পূর্ণকালীন সদস্য এবং একজন সদস্য সচিব সমন্বয়ে একটি পূর্ণকালীন কমিশন। এর পাশাপাশি ১৪ জন খন্ডকালীন সদস্যও ছিলেন।২৪ জুলাই, ২০২৫ তারিখে যে নতুন পে কমিশন গঠন করা হয়েছে, তার প্রধান হিসেবে সাবেক অর্থসচিব জাকির আহমেদ খানকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। তবে, এই কমিশনের মোট সদস্য সংখ্যা এবং অন্যান্য সদস্যদের পরিচয় এখনো বিস্তারিতভাবে জানা যায়নি। কমিশনের কাজের পরিধি এবং সরকারের সিদ্ধান্তের ওপর ভিত্তি করে সদস্য সংখ্যা নির্ধারিত হয়।
৯ম পে কমিশন ২০২৫ / পে স্কেল কর্মীদের বেতন, গ্রেড এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা নির্ধারণ করে। এটি কর্মীদের মধ্যে বেতন বৈষম্য কমাতে এবং একটি সুশৃঙ্খল বেতন কাঠামো তৈরি করতে সহায়তা করে।
একটি সঠিক পে স্কেল কর্মীদের সন্তুষ্টি বাড়াতে সাহায্য করে, কারণ তারা জানে যে তাদের কাজের জন্য একটি নির্দিষ্ট বেতন এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। পে স্কেল কর্মীদের তাদের কাজের প্রতি আরও বেশি মনোযোগ দিতে উৎসাহিত করে, কারণ তারা জানে যে তাদের কাজের মূল্যায়ন করা হবে এবং সেই অনুযায়ী তাদের বেতনও বৃদ্ধি পাবে। পে স্কেল কর্মীদের জীবনযাত্রার ব্যয় নির্বাহে সহায়তা করে। মূল্যস্ফীতি এবং অন্যান্য অর্থনৈতিক বিষয় বিবেচনা করে পে স্কেল নির্ধারণ করা হয়, যা কর্মীদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে সহায়তা করে।
Caption: Govt. Staff Proclamation Bangladesh
সরকারি চাকুরিজীবীদের দাবী সমূহ ২০২৫ । যে দাবী নিয়ে আন্দোলন সংগ্রাম করা হলেও তা পূরণ করা হয়নি
- পে-কমিশন গঠন পূর্বক ৯ম পে স্কেল বাস্তবায়ন করতে হবে। পে-স্কেল বাস্তবায়নের পূর্বে অন্তবর্তীকালীন কর্মচারীদের জন্য ৫০% মহার্ঘ্য ভাতা প্রদান করত হবে। সরকার চাপের মুখে পড়ে ১০-১৫% বিশেষ সুবিধা দিয়েছে যা কর্মচারীদের বৈষম্য বাড়িয়েছে।
- ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা অনুযায়ী ১০ ধাপে বেতন স্কেল নির্ধারণসহ পে-কমিশনে কর্মচারী প্রতিনিধি রাখতে হবে।
- সচিবালয়ের ন্যায় সকল দপ্তর, অধিদপ্তরের পদনাম পরিবর্তনসহ ১০ম গ্রেডে উন্নীত করণ এবং এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি প্রনয়ণ করতে হবে।
- টাইম স্কেল সিলেকশন গ্রেড পূণর্বহাল সহ বেতন জ্যেষ্ঠতা পূনঃবহল, বিদ্যমান গ্রাচুইটি/আনুতোষিকের হার ৯০% এর স্থলে ১০০% নির্ধারণ ও পেনশন গ্রাচুইটি ১ টাকার সমান ৫০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে।
- সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের আপীল বিভাগের রায় বাস্তবায়নসহ সহকারী শিক্ষকদের বেতন নিয়োগ বিধি-২০১৯ এর ভিত্তিতে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণ ও অধঃস্তন আদালতের কর্মচারিদের বিচার বিভাগীয় সহায়ক কর্মচারি হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে।
- আউট সোর্সিং পদ্ধতি বাতিল পূর্বক উক্ত পদ্ধতিতে নিয়োগকৃত ও উন্নয়ন খাতের কর্মচারীদের রাজস্বখাতে স্থানান্তর করতে হবে। ব্লক পোষ্টে কর্মরত কর্মচারীসহ সকল পদে কর্মরতদের পদোন্নতি বা ৫ বছর পর পর বেতন স্কেলের উচ্চতর গ্রেড প্রদান করতে হবে।
- বাজারমূল্যের উর্দ্ধগতি ও জীবন যাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সাথে সমন্বয় পূর্বক সকল ভাতাদি পুনঃনির্ধারণ করতে হবে। চাকুরীতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর ও অবসরের বয়স সীমা ৬২ বছর নির্ধারণ করতে হবে।
এবারের পে কমিশন কি কর্মচারী বান্ধব হবে?
হ্যাঁ, এবারের পে কমিশন কর্মচারী বান্ধব হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ, সরকার একটি নতুন পে কমিশন গঠন করেছে, যা সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন কাঠামো পর্যালোচনা করবে এবং প্রয়োজনে নতুন বেতন কাঠামো সুপারিশ করবে। এই পে কমিশন গঠনের মূল উদ্দেশ্য হল, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ায় সরকারি কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পর্যালোচনা করা এবং তাদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে সহায়তা করে থাকে। পে কমিশন গঠনের সিদ্ধান্তটি এসেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক থেকে, যেখানে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস সভাপতিত্ব করেন। প্রাক্তন অর্থসচিব জাকির আহমেদ খানকে এই পে কমিশনের প্রধান করা হয়েছে, এবং কমিশনকে ছয় মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, নতুন পে কমিশন সরকারি কর্মচারীদের জন্য একটি ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসতে পারে। বেতন বৃদ্ধির পাশাপাশি, অন্যান্য ভাতা এবং সুযোগ-সুবিধাগুলিও পর্যালোচনা করা উচিত। বেতন কাঠামো এমনভাবে নির্ধারণ করা উচিত যাতে তা জীবনযাত্রার ব্যয় মেটাতে পারে। কর্মচারীদের কাজের পরিবেশ এবং সুযোগ-সুবিধা উন্নত করার দিকেও মনোযোগ দেওয়া উচিত। যদি পে কমিশন এই বিষয়গুলো বিবেচনা করে, তাহলে এবারের পে কমিশন কর্মচারী বান্ধব হতে পারে।
এবারের পে কমিশনে কি কর্মচারী প্রতিনিধি থাকবে? হ্যাঁ, এবারের পে কমিশনে কর্মচারী প্রতিনিধি থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। নতুন বেতন কাঠামো নির্ধারণের জন্য গঠিত পে কমিশনে কর্মচারী প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে আলোচনা চলছে। পে কমিশন মূলত সরকারি কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা পর্যালোচনা করে নতুন বেতন কাঠামো সুপারিশ করে। যেহেতু কর্মচারীদের স্বার্থও এই বেতন কাঠামোর সাথে সরাসরি যুক্ত, তাই তাদের প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়টি যৌক্তিক। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের খবর অনুযায়ী, পে কমিশনে কর্মচারী প্রতিনিধি অন্তর্ভুক্ত করার বিষয়ে আলোচনা চলছে এবং এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। বিশেষ করে, নিম্ন গ্রেডের কর্মচারীদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি এবং গ্রেড সংখ্যা কমানোর বিষয়ে কর্মচারীদের মধ্যে দাবি রয়েছে। এই কারণে, পে কমিশনে কর্মচারী প্রতিনিধি থাকলে তাদের মতামত ও দাবিগুলো সরাসরি কমিশনে উপস্থাপন করা সম্ভব হবে, যা একটি ন্যায্য বেতন কাঠামো তৈরিতে সহায়ক হবে।
পে স্কেল একটি সুস্পষ্ট বেতন কাঠামো তৈরি করে, যা নতুন কর্মচারী নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করে। | একটি ভালো পে স্কেল কর্মীদের কাজে ধরে রাখতে সহায়তা করে। যখন কর্মীরা তাদের কাজের স্বীকৃতি পায় এবং উপযুক্ত বেতন পায়, তখন তারা চাকরি পরিবর্তন করার সম্ভাবনা কম থাকে। | একটি সুষম পে স্কেল কর্মীদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহায়তা করে এবং সামগ্রিকভাবে দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। |
কর্মকর্তার শুধু পেট আছে আর কর্মচারীদের পেট নাই
সরকারী চাকুরীর কি অবসরের ক্ষেত্রে বয়স বাড়ার সম্ভাবনা আছে?
১=২৩০ টাকার পরিবর্তে ৫০০ টাকা করতে হবে এবং পেনশন ঐচ্ছিক করতে হবে,জার ইচ্ছে ফুল বিক্রি করবে নতুন হাপ রেখে দিবে এটা তার এ্যাকান্ত ব্যক্তিগত ব্যাপার
আপাতত নাই।
সহমত।
পে কমিশন এমন একটি পে স্কেল প্রদান করুক,যাতে সকল কর্মচারী স্বাভাবিক জীবন যাপন করতে পারে।বেতন বৈষম্য কমাতে হবে।পে স্কেল ১-২০ এর পরিবর্তে ১-১৫ করা উচিত।
প্রত্যাশিত ৯ম পে-স্কেলঃ
১। দীর্ঘদিন প্রতিক্ষার পর সরকারি (কর্মরত ও অবসরপ্রাপ্ত) কর্মচারীরা তাদের কাংখিত বৈষম্যহীন ও সচ্ছল একটি বেতন কাঠামো পেতে যাচ্ছে মনে হয়। বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকার পে-কমিশন গঠন করে সদিচ্ছার বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন।
আমরা আশা করি, পে-কমিশন একটি বৈষম্যহীন সচ্ছল বেতন কাঠামো উপহার দিয়ে কর্মচারীদের জন্য দুশ্চিন্তাহীন ও দুর্নীতিমুক্ত কর্ম পরিবেশ নিশ্চিত করতে সচেষ্ট হবেন।
কথায় আছে, পেটে খেলে পিটে সয়। একটি বৈষম্যহীন ও সচ্ছল বেতন কাঠামো কর্মচারীদের দুর্নীতিমুক্ত পরিবেশে কাজ করতে উদ্বুদ্ধ ও শতভাগ জবাবদিহিতা নিশ্চিত করতে পারে।
কর্মরত কর্মচারীদের জন্য একটি বৈষম্যহীন, সচ্ছল ও মানসম্মত বেতন কাঠামো নির্ণয়ে নুন্যতম বেতন স্কেল ৩০,০০০/- টাকা ও অন্যান্য ভাতা সমূহ যুক্তিসংগত হারে বৃদ্ধি করা উচিত। এছাড়া কর্মচারীদের জন্য রেশনিং কিংবা রেশনিং ভাতা প্রবর্তন করা যেতে পারে।
২। অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারী (সিনিয়র সিটিজেন)ঃ
যারা আজীবন সরকারি দায়িত্বে থেকে দেশ জাতির জন্য সেবা দিয়ে পরবর্তীদের জন্য একটি সুদুরপ্রসারি ও সহজ পন্থায় কাজ করার পটভূমি তৈরী করে গিয়েছেন, অবসরপ্রাপ্ত (সিনিয়র সিটিজেন) কর্মচারীদের পেনশনের পরিমাণ এমনিতেই কম। অবসরে যাওয়ার সময় যে পরিমাণ আনুতোষিকের টাকা পাওয়া যায়, তা সন্তানদের লেখাপড়ার ব্যয় নির্বাহ, সন্তানদের বিয়ে শাদী, দেনা কর্জ পরিশোধ, সন্তানদের প্রতিষ্ঠিত করতে, মাথা গুজার মত একটি বাড়ি তৈরী ইত্যাদি অপরিহার্য বিষয়ে ব্যয় হয়ে যায়। ফলে তাদের আয় দ্রুত কমে যায়।
তদুপরি স্বামী স্ত্রী অবিবাহিত ও বেকার ছেলে মেয়েদের ব্যয় নির্বাহ সহ স্বামী স্ত্রী দু’জনের খাওয়া পরা, চিকিৎসা ইত্যাদি অপরিহার্য ব্যয় নির্বাহ করতে হিমশিম খেতে হয়।
অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীদেরও দিন দিন আয় কমে যাওয়ায় তাদের অত্যন্ত মানবেতর জীবন যাপন করতে হয়। এঅবস্থায়, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীদের বৈষম্যহীন ও সচ্ছল জীবন যাপনের প্রতিও সরকারের আবশ্যকীয় ও মানবিক দায়িত্ব রয়েছে।
তাই অবসরপ্রাপ্ত (সিনিয়র সিটিজেন) সরকারি কর্মচারীদের জন্য নিম্নোক্ত হারে ভাতাদি নির্ধারণ করা প্রয়োজন, যা পেনশন ভোগরত কর্মচারীদের জন্যও প্রযোজ্য হবেঃ
ক) অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীদের জন্য অবসর ভাতা বর্তমান হারের দ্বিগুণকরন অথবা পি এল আর এ গমণের প্রাক্কালে সর্বশেষ মূল বেতনের সমপরিমাণ অর্থ অবসর ভাতা হিসেবে নির্ধারণ করা ;
খ) ৬০% হারে চিকিৎসা ভাতা নির্ধারণ করা ;
গ) মানুষ হিসেবে বয়স, দুশ্চিন্তা, রোগেশোকে শারিরীক ও মানষিক ভাবে বিপর্যস্ত অবসরভোগীদের জন্য একটু বিনোদনের প্রয়োজনে প্রচলিত নিয়মানুযায়ী মাসিক পেনশনের সম পরিমাণ অর্থ বিনোদন ভাতা হিসেবে প্রবর্তন করা ;
ঘ) ৮০% হারে রেশনিং ভাতা প্রবর্তন করা ;
চ) পেনশনভোগী ও স্ত্রী (বেঁচে থাকলে) পেনশনের সাথে ৬০% হারে পারিবারিক ভাতা নির্ধারণ করা ;
ছ) বার্ষিক ইনক্রিমেন্ট, উৎসব ভাতা ও নববর্ষ ভাতা প্রচলিত নিয়মানুযায়ী বহাল রাখা ;
জ) অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মচারীদের উচ্চতর শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়নরত সন্তানদের প্রতিজনের জন্য ন্যুনতম ৫০০০/- টাকা হারে শিক্ষা সহায়ক ভাতা নির্ধারণ করা।