বৈষম্য । দাবীর খতিয়ান । পুন:বিবেচনা

৯ম পে স্কেলসহ ০৭ দফা দাবি ২০২৪ । সরকারি কর্মচারীদের জন্য ৯ম পে স্কেল কেন জরুরি?

বিগত সরকার পে স্কেল নিয়ে আন্দোলন ও মানববন্ধন করা হলেও তাতে কোন কর্ণপাত করেনি- অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ইতোমধ্যে বিষয়টি নিয়ে মিডিয়াতে মুখ খুলেছে এবং তারা পে স্কেল এবং বৈষম্য নিয়ে ভাবছে-৯ম পে স্কেলসহ ০৭ দফা দাবি ২০২৪ 

নিম্ন গ্রেডে সব মিলিয়ে কত পাওয়া যায়? মূলত বেতন বৃদ্ধির থেকে বেতন বৈষম্য নিরসনের বার বারই তাগিদ দেওয়া হচ্ছিল কিন্তু বিগত সরকার তা আমলে নেয়নি। সর্বনিম্ন বেতন গ্রেড ২০তম গ্রেডের মূল বেতন ৮,২৫০/- ২০ তম গ্রেডের বেতন-ভাতা সব মিলিয়ে মোট ১৪,৪৫০/- দিয়ে মাসে ৬ (ছয়) সদস্যের পরিবারের যোগান দেওয়া খুবই কষ্টকর। এতে করে কর্মচারীগণ সংসার চালাতে ব্যক্তিগত ঋণের বোঝা বাড়িয়ে চলেছে। একই বাজারে দ্রব্যাদি ক্রয় করি সবার জন্য দ্রব্য/ পণ্য মূল্যের দাম সমান বেতন এত বৈষম্য থাকবে কেন? সরকারি চাকুরিজীবিদের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন মূল বেতনের চরম বৈষম্য বিরাজ করছে। বর্তমান মূল্যস্ফিতির সময়ে কর্মচারীদের বেতনের টাকা দিয়ে মাস চালানো অসম্ভব হয়ে পড়ছে।

গ্রেড বৈষম্য কোথায় জানেন? একটু মাথাটা খাটান প্লিজ। ১ম গ্রেডে ৭৮,০০০ টাকা কিন্তু ২০ তম গ্রেডে মাত্র ৮,২৫০ টাকা। এছাড়াও ১ম গ্রেডের উপরে আরও দুটি গ্রেড রয়েছে। গ্রেড ১- ১০ নং এর মোট পার্থক্য- ৬৫,৫০০ টাকা অপরদিকে গ্রেড ১১-২০ নং এর পার্থক্য মাত্র- ৪,২৫০ টাকা, বৈষম্য ৬৫,৫০০- ৪,২৫০= ৬১,২৫০ টাকা। সকল ডিপার্টমেন্টের সকল পদের কর্মচারীদের পদন্নোতি থাকতে হবে, পদোন্নতির পদ না থাকলে ৫ (পাঁচ) বছর পর পর উচ্চতর গ্রেড প্রদান করতে হবে। ২০টা গ্রেড সংখ্যা কমিয়ে ১২ টা গ্রেড করা হোক। টিফিন ভাতা উল্লেখ করে মাসে ২০০/- টাকা পেয়ে থাকি, ২০০/- টাকায় কয়দিন টিফিন খাওয়া যায়? প্রশ্নটি রইল নীতি নির্ধারকদের কাছে।

কোন অগ্রগতি কি হচ্ছে? নবম জাতীয় পে-স্কেল ঘোষণা, পূর্বের ন্যায় টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেড পুনর্বহাল, মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ন্যায় সচিবালয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে টিপটপ ভাতা প্রদান, ১০০ ভাগ পেনশন পুনবহাল এবং পেনশন গ্র্যাচুইটির হার ১:৫০০ টাকা নির্ধারণের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্মকর্তা-কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবেদন করেছেন। দাবিসমূহ নিষ্পত্তির প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদনের অনুলিপি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় হতে অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হয়েছে।

নবম পে স্কেল কেন জরুরি? । শুধু বেতন বৃদ্ধি নয় বরং বৈষম্য দূর করণেও ৯ম পে স্কেল ঘোষনা প্রয়োজন

নতুন চাকরিজীবীদের কেউ কেউ চাকরি ছেড়ে দিচ্ছে এই কারণে যে নিচের গ্রেডে অর্থাৎ ১১-২০ গ্রেডে চাকরি করে সংসার চালাতে পারছে না। বর্তমানে বাজারের সাথে সঙ্গতি রেখে বেতন ভাতাদি প্রদান করা না হলে অনেক সরকারি কর্মচারী অর্ধাহারে থাকবে আবার কেউ কেউ আত্ম হননের পথও বেছে নিবে। এমতাবস্থাও সরকার বর্তমান পরিস্থিতি বিবেচনায় জাতীয় পে স্কেল ঘোষণার ইঙ্গিত দিয়েছে। সম্প্রতি প্রেস কার্যালয়ের সামনে মানবন্ধন হয়ে গেল এবং সামনে আরও কর্মসূচী ঘোষণা করা হচ্ছে।

সরকারি কর্মচারীদের বৈষম্য নিরসনে দাবী ২০২৪ । ১১-২০ গ্রেডের সরকারি চাকুরিজীবীদের সম্মিলিত অধিকার আদায় ফোরামের দাবী সমূহ

  1. পে-কমিশন গঠন পূর্বক ৯ম পে স্কেল বাস্তবায়ন করতে হবে।  পে-স্কেল বাস্তবায়নের পূর্বে অন্তবর্তীকালীন কর্মচারীদের জন্য ৫০% মহার্ঘ্য ভাতা প্রদান করত হবে।
  2. ১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর ঘোষণা অনুযায়ী ১০ ধাপে বেতন স্কেল নির্ধারণসহ পে-কমিশনে কর্মচারী প্রতিনিধি রাখতে হবে।
  3. সচিবালয়ের ন্যায় সকল দপ্তর, অধিদপ্তরের পদনাম পরিবর্তনসহ ১০ম গ্রেডে উন্নীত করণ এবং এক ও অভিন্ন নিয়োগবিধি প্রনয়ণ করতে হবে।
  4. টাইম স্কেল সিলেকশন গ্রেড পূণর্বহাল সহ বেতন জ্যেষ্ঠতা পূনঃবহল, বিদ্যমান গ্রাচুইটি/আনুতোষিকের হার ৯০% এর স্থলে ১০০% নির্ধারণ ও পেনশন গ্রাচুইটি ১ টাকার সমান ৫০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে।
  5. সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকদের আপীল বিভাগের রায় বাস্তবায়নসহ সহকারী শিক্ষকদের বেতন নিয়োগ বিধি-২০১৯ এর ভিত্তিতে ১০ম গ্রেডে উন্নীতকরণ ও অধঃস্তন আদালতের কর্মচারিদের বিচার বিভাগীয় সহায়ক কর্মচারি হিসেবে অন্তর্ভূক্ত করতে হবে।
  6. আউট সোর্সিং পদ্ধতি বাতিল পূর্বক উক্ত পদ্ধতিতে নিয়োগকৃত ও উন্নয়ন খাতের কর্মচারীদের রাজস্বখাতে স্থানান্তর করতে হবে। ব্লক পোষ্টে কর্মরত কর্মচারীসহ সকল পদে কর্মরতদের পদোন্নতি বা ৫ বছর পর পর বেতন স্কেলের উচ্চতর গ্রেড প্রদান করতে হবে।
  7. বাজারমূল্যের উর্দ্ধগতি ও জীবন যাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির সাথে সমন্বয় পূর্বক সকল ভাতাদি পুনঃনির্ধারণ করতে হবে। চাকুরীতে প্রবেশের বয়সসীমা ৩৫ বছর ও অবসরের বয়স সীমা ৬২ বছর নির্ধারণ করতে হবে।

নতুন পে স্কেল কবে হবে? 

নতুন পে স্কেল ২০২৪ আপতদৃষ্টিতে হতে পারে বলে মনে হচ্ছে। সরকারের আলোচনা ও দৃষ্টি ভঙ্গি এমনটিই ইঙ্গিত দিচ্ছে। তাই নতুন পে স্কেল ২০২৪ না বলে ২০২৫ বলাই উত্তম। ১৯৭৩ সাল হতে পে স্কেল পর্যালোচনা করলে দেখা যায় যে ২০২০ সালেই পে স্কেল ঘোষণা করা উচিৎ ছিল কিন্তু করোনা পরিস্থিতি ও অন্যান্য বিষয়াদি বিবেচনা করে বৈরাচারী সরকার পে স্কেল ঘোষনা করেনি। পে স্কেল ঘোষণা করা হলেও কিছু সময় নিয়ে সে কাজ সম্পন্ন করবে বলে সরকার মনে হচ্ছে তবে মহার্ঘ ভাতা ছাড়া সরকারি কর্মচারীদের জীবন দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে নাজেহাল।

বেতন বৈষম্য নিরসন, ৭ দফা দাবিতে সকল গ্রেডের সকল ডিপার্টমেন্টের ১১-২০ গ্রেডের কর্মচারী ভাই-বোনে’রা দলে দলে যোগ দিন।

সূত্র: ১১-২০ গ্রেডের সরকারি চাকুরিজীবীদের সম্মিলিত অধিকার আদায় ফোরাম: ফেসবুক গ্রুপ লিংক

সরকারি কর্মচারী মহাসমাবেশ । ০৭ দফা দাবি আদায়ে আগামী ২৬ মে ২০২৩ তারিখে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হইবে

Alamin Mia

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ৮ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে বিস্তারিত জানতে admin@bdservicerules.info ঠিকানায় মেইল করতে পারেন।

4 thoughts on “৯ম পে স্কেলসহ ০৭ দফা দাবি ২০২৪ । সরকারি কর্মচারীদের জন্য ৯ম পে স্কেল কেন জরুরি?

  • সঠিক দাবি করছে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *