বেতন । বাড়ি ভাড়া । অন্যান্য ভাতাদি

সরকারি কর্মচারীদের সন্তানদের জন্য ‘শিক্ষা সহায়ক ভাতা’ ২০২৫ । এক সন্তানের জন্য ৫০০, দুই বা ততোধিক সন্তানের জন্য ১০০০ টাকা?

সরকারি কর্মচারীদের সন্তানদের শিক্ষার ব্যয় নির্বাহে সহায়তার জন্য সরকার কর্তৃক প্রবর্তিত ‘শিক্ষা সহায়ক ভাতা’ প্রদানের নিয়মাবলী ও শর্তাবলী আবারো আলোচনায় এসেছে। অর্থ মন্ত্রণালয়, অর্থ বিভাগ কর্তৃক ২০১৫ সালের ১৪ অক্টোবর জারি করা প্রজ্ঞাপন (নং-০৭.১৭৩.০৩১.০২.০০.০৩০.২০১০-৭৯) এবং পরবর্তীতে ২০১৮ সালের সংশোধনী অনুযায়ী সরকারি, স্ব-শাসিত এবং রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা এই সুবিধা পাচ্ছেন।

💰 ভাতার পরিমাণ ও প্রাপ্যতা:

সকল কর্মচারীর জন্য সন্তান প্রতি মাসিক ৫০০/- (পাঁচ শত) টাকা হারে এবং অনধিক ০২ (দুই) সন্তানের জন্য সর্ব্বোচ্চ ১০০০/- (এক হাজার) টাকা শিক্ষা সহায়ক ভাতা প্রদেয় হবে।

✅ ভাতা প্রাপ্তির মূল শর্তাবলী:

ভাতা প্রাপ্তির জন্য কর্মচারীকে নিম্নলিখিত শর্তাবলী পূরণ করতে হবে:

  • সন্তান সংখ্যা: কর্মচারীর এক বা একাধিক সন্তান থাকতে হবে।

  • বয়সসীমা: পূর্বে এই ভাতার বয়সসীমা ২১ বছর থাকলেও, ২৯ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখের এস,আর,ও নং ৪০-আইন/২০১৮ অনুযায়ী, বর্তমানে জন্ম নিবন্ধন সনদ মোতাবেক ২৩ (তেইশ) বছর পর্যন্ত বয়সী সন্তানেরা এই ভাতা প্রাপ্য হবেন। বিদেশে বাংলাদেশ মিশনে কর্মরতদের ক্ষেত্রে সন্তানের সর্বনিম্ন বয়স ৫ বছর সংক্রান্ত একটি বিধান (অর্থ বিভাগের ২০.০২.২০১৯ তারিখের স্মারক নং ০৭.১৫২.০০০০.১৯.০০.০০০(অংশ-৩).২০০৫-২৬৭) বিদ্যমান রয়েছে।

  • দম্পতিদের ক্ষেত্রে: স্বামী ও স্ত্রী উভয়ই চাকরিজীবী হলে, সন্তান সংখ্যা যে কোনো একজনের ক্ষেত্রেই গণনা করে ভাতার পরিমাণ নির্ধারণ করতে হবে।

  • সর্বনিম্ন বয়স: সন্তানের সর্বনিম্ন বয়স প্রথম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত হতে হবে।

📄 প্রয়োজনীয় কাগজপত্র:

এই ভাতা প্রাপ্তির জন্য কর্মচারীকে তার দপ্তরে নিম্নলিখিত দলিলাদি দাখিল করতে হবে:

  • শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানের প্রত্যয়ন পত্র (Enrolement certificate from the Head of the Institute)।

  • জন্ম নিবন্ধন সনদ এর কপি (copy of Birth certificate)।

এই সংক্রান্ত সর্বশেষ সংশোধনীতে (এস,আর,ও নং ৪০-আইন/২০১৮) ভাতার বয়সসীমা ২১ থেকে ২৩ বছরে উন্নীত হওয়ায় সরকারি কর্মচারীদের মধ্যে সন্তুষ্টি দেখা দিয়েছে, যা উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত সন্তানদের সহায়তার পথ উন্মুক্ত করেছে।


📥 শিক্ষা সহায়ক ভাতা সংক্রান্ত মূল পত্রসমূহ:

আপনার অনুরোধে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে এবং অনুসন্ধানে পাওয়া মূল প্রজ্ঞাপন ও সংশোধনী নিচে উল্লেখ করা হলো। এই পত্রসমূহই হলো ‘শিক্ষা সহায়ক ভাতা’ প্রদানের মূল ভিত্তি:

  1. প্রজ্ঞাপন নং-০৭.১৭৩.০৩১.০২.০০.০৩০.২০১০-৭৯

    • তারিখ: ১৪/১০/২০১৫ খ্রিঃ

    • বিষয়: জাতীয় বেতনস্কেল, ২০১৫ মোতাবেক ‘শিক্ষা সহায়ক ভাতা’ প্রবর্তন সংক্রান্ত। (এই প্রজ্ঞাপনে বয়সসীমা ২১ বছর ছিল এবং ০১/০৭/২০১৬ তারিখ হতে কার্যকর হওয়ার কথা বলা হয়েছে)।

  2. এস,আর,ও নং ৪০-আইন/২০১৮

    • তারিখ: ২৯ জানুয়ারি ২০১৮ খ্রিঃ

    • বিষয়: চাকরি [স্ব-শাসিত (Public bodies) এবং রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠানসমূহ] (বেতন ও ভাতাদি) আদেশ, ২০১৫ এর সংশোধনক্রমে শিক্ষা সহায়ক ভাতার বয়সসীমা ২১ বছর থেকে ২৩ (তেইশ) বছর পর্যন্ত নির্ধারণ।

  3. স্মারক নং ০৭.১৫২.০০০০.১৯.০০.০০০(অংশ-৩).২০০৫-২৬৭

    • তারিখ: ২০/০২/২০১৯ খ্রিঃ

    • বিষয়: (এটি আপনার মন্তব্যে উল্লেখিত, যা বিদেশে বাংলাদেশ মিশনে কর্মরতদের ক্ষেত্রে সন্তানের সর্বনিম্ন বয়স ৫ বছর সংক্রান্ত)।

শিক্ষা ভাতা পেতে কি স্কুলে ভর্তির সার্টিফিকেট লাগে?

হ্যাঁ, শিক্ষা সহায়ক ভাতা পাওয়ার জন্য স্কুলে ভর্তির সার্টিফিকেট (অথবা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির প্রত্যয়ন পত্র) অবশ্যই প্রয়োজন। প্রজ্ঞাপনের ছবিতে (অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন নং-০৭.১৭৩.০৩১.০২.০০.০৩০.২০১০-৭৯, তারিখ ১৪/১০/২০১৫ খ্রিঃ) স্পষ্টভাবে এই শর্তটি উল্লেখ করা হয়েছে:

“(ঘ) শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানের প্রত্যয়ন পত্র (Enrolement certificate from the Head of the Institute) এবং জন্ম নিবন্ধন সনদ এর কপি (copy of Birth certificate) দাখিল সাপেক্ষে এ ভাতা প্রদেয় হবে।”

সুতরাং, ‘শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানের প্রত্যয়ন পত্র’ (Enrolment certificate) বলতে আপনার সন্তানের যে কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে (স্কুল, কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়) ভর্তির/অধ্যয়নের একটি আনুষ্ঠানিক প্রমাণপত্র বা সার্টিফিকেট বোঝায়, যা ভাতা প্রাপ্তির জন্য আবশ্যিক।

Alamin Mia

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে প্রশ্ন থাকলে বা ব্যাখ্যা জানতে পোস্টের নিচে কমেন্ট করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *