পেনশন । লাম্পগ্র্যান্ট I পিআরএল

পেনশন হিসাব করার পদ্ধতি ২০২৫ । সরকারি চাকরিজীবীদের পেনশন ও এককালীন হিসাব কিভাবে করে জেনে নিন

বাংলাদেশে সরকারি কর্মচারীদের পেনশন নির্ধারণের পদ্ধতি, আনুতোষিক গণনা, এবং অন্যান্য প্রাসঙ্গিক নিয়মাবলী একটি নির্দিষ্ট পদ্ধতির উপর ভিত্তি করে পরিচালিত হয় । এই নিয়মগুলো বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ উভয় ধরনের পেনশনারদের জন্যই প্রযোজ্য – পেনশন হিসাব করার পদ্ধতি ২০২৫

পেনশন নির্ধারণের পদ্ধতি বা সূত্র কি?  পেনশন নির্ধারণের মূল সূত্রটি হলো: মূল বেতন × মোট চাকরির জন্য নির্ধারিত হার (%) ÷ ২ = মোট টাকা । আনুতোষিক নির্ধারণের পদ্ধতি আনুতোষিক (Gratuity) নির্ধারণের পদ্ধতি হলো: মূল বেতন × মোট চাকরির জন্য নির্ধারিত হার (%) ÷ ২ × আনুতোষিক হার = মোট টাকা । একটি উদাহরণ হিসাবে, একজন সরকারি কর্মচারী যার মূল বেতন ৩৪,০১০ টাকা এবং যিনি ২৭ বছর ৫ মাস ১৭ দিন চাকরি করেছেন, তিনি মাসিক পেনশন এবং আনুতোষিক নিম্নোক্ত হারে প্রাপ্য হবেন: মাসিক পেনশন: ৩৪,০১০ টাকা × ৯০% ÷ ২ = ১৫,৩০৪.৫০ টাকা । এর সাথে ১৫০০ টাকা চিকিৎসা ভাতা যুক্ত হবে, ফলে মোট মাসিক প্রাপ্তি হবে ১৬,৮০৪.৫০ টাকা । আনুতোষিক: ৩৪,০১০ টাকা × ৯০% ÷ ২ = ১৫,৩০৪.৫০ টাকা । আনুতোষিক হার ২৩০ ধরে মোট আনুতোষিক হবে ১৫,৩০৪.৫০ টাকা× ২৩০ = ৩৫,২০,০৩৫ টাকা ।

পেনশনের হার আবার কি?  চাকরির মেয়াদ অনুযায়ী পেনশনের হার পরিবর্তিত হয় । কিছু উদাহরণ নিচে দেওয়া হলো: ১০ বছর চাকরি করলে পেনশনের বর্তমান হার ৩৬% । ১৫ বছর চাকরি করলে পেনশনের বর্তমান হার ৫৪% । ২০ বছর চাকরি করলে পেনশনের বর্তমান হার ৭২% । ২৫ বছর এবং তদুর্ধ্ব চাকরি করলে পেনশনের বর্তমান হার ৯০% । বিশেষ ক্ষেত্রে পেনশন প্রাপ্তি- ৫-২৪ বছরের পেনশনযোগ্য চাকরির ক্ষেত্রে কেবল কিছু বিশেষ পরিস্থিতিতে পেনশন পাওয়া যাবে । এই পরিস্থিতিগুলো হলো: কোন সরকারি কর্মচারী মৃত্যুবরণ করলে অথবা সরকার গঠিত মেডিকেল বোর্ড দ্বারা স্থায়ীভাবে অক্ষম (Invalid) ঘোষিত হলে । স্থায়ী পদ বিলুপ্তির কারণে চাকরি থেকে ছাঁটাই হলে ।

পেনশন বৃদ্ধি ও সর্বনিম্ন পেনশন কত?  ২০১৫-১৬ অর্থবছর থেকে অবসরভোগীদের পেনশন বৃদ্ধি করা হয়েছে । ৬৫ বছরের কম বয়সী অবসরভোগীদের জন্য পেনশন বৃদ্ধির হার ৪০% । ৬৫ বছর বা তদুর্ধ্ব বয়সী অবসরভোগীদের জন্য পেনশন বৃদ্ধির হার ৫০% । ৩১-০৭-২০১৫ তারিখ থেকে একজন পেনশনারের মাসিক পেনশন যাই হোক না কেন, তিনি সর্বনিম্ন ৩,০০০ টাকা পেনশন প্রাপ্য হবেন । এছাড়া, ৬৫ বছর বা তদুর্ধ্ব বয়সী পেনশনারগণ ১ জুলাই ২০০৯ থেকে ৫০% হারে মাসিক পেনশন, ১ জুলাই ২০১০ থেকে ১০০০ টাকা হারে চিকিৎসা ভাতা এবং জাতীয় বেতন স্কেল/২০১৫ অনুযায়ী ১ জুলাই ২০১৬ তারিখ থেকে ২৫০০ টাকা হারে চিকিৎসা ভাতা পাবেন ।

পেনশন হিসাব ক্যালকুলেটর দিয়েও হিসাব বের করা যায় তবে আপনি সূত্র ব্যবহার করেও  সরকারি চাকরিজীবীদের পেনশন হিসাব করতে পারেন।  পেনশন হিসাব ২০২৫ এখনও পূর্বের নিয়মে আছে পেনশন ও আনুতোষিক হিসাব কত বছরে কত পেনশন আসবে তাও বের করতে পারবেন।

জন্ম তারিখ থেকে ৫৯ বছর পূর্ণ হওয়ার পরের দিন অর্থাৎ পরবর্তী জন্ম তারিখে পিআরএল (PRL) শুরু হয় এবং তার পরবর্তী জন্ম তারিখে পেনশন শুরু হয় । এই নিয়মগুলো উপজেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার কার্যালয়, ভাণ্ডারিয়া, পিরোজপুর থেকে প্রকাশিত তথ্যের উপর ভিত্তি করে তৈরি ।

Caption: Pension Calculator Bangladesh

১৫ বছর চাকরি শেষে ১৫০০০ টাকা বেসিক হলে কত টাকা পেনশন এবং এককালীন বা আনুতোষিক পাওয়া যাবে?

  1. ১৫ বছর চাকরি শেষে ১৫,০০০ টাকা বেসিক হলে, পেনশনের হার হবে ৫৪% । মাসিক পেনশন হিসাব: মূলবেতন (15,000) × পেনশনের হার (54%) ÷ ২ = 4,050 টাকা । এককালীন আনুতোষিক হিসাব: মূলবেতন ( 15,000) × পেনশনের হার (54%) ÷ ২ = 4,050 টাকা । আনুতোষিক (4,050) × আনুতোষিক হার (230) = 9,31,500 টাকা । সুতরাং, ১৫,০০০ টাকা মূল বেতনের ক্ষেত্রে মাসিক পেনশন হবে ৪,০৫০ টাকা এবং আনুতোষিক (এককালীন) পাওয়া যাবে ৯,৩১,৫০০ টাকা ।

১০ বছর চাকরি হলে কি পেনশনে বা অবসরে যাওয়া যায়?

না, শুধু ১০ বছর চাকরি হলেই পেনশনে যাওয়া যায় না। বাংলাদেশে সরকারি চাকরিজীবীদের পেনশন সুবিধা সহ স্বেচ্ছায় অবসরে যেতে সাধারণত ২৫ বছর চাকরি করার প্রয়োজন হয়। তবে, গুরুতর অসুস্থতার কারণে বা মৃত্যুবরণ করলে সর্বনিম্ন ৫ বছর চাকরি করার পরও পেনশন বা পারিবারিক পেনশন পাওয়ার যোগ্য বলে বিবেচিত হতে পারেন। সূত্র অনুযায়ী, একজন সরকারি কর্মচারী ১০ বছর চাকরি করলে পেনশনের জন্য যোগ্য হবেন ।

মূলবেতন x অর্জিত ছুটি (১৮ মাস) টাকা সুতরাং ল্যাম্পগ্রান্ট পাবেন = ৩৪০১০ x ১৮ টাকা= ৬,১২,১৮০ টাকা।বেসিকের ৪৫%x ২৩০= ১৫৩০৪.৫ x ২৩০ = ৩৫,২০,০৩৫ টাকা (এককালীন)।বেসিক বেতন x শতকরা হার) ÷ ২ + চিকিৎসা ভাতা = মাসিক পেনশন অর্থাৎ ১৫৩০৪.৫ + ১৫০০ টাকা= ১৬৮০৪.৫ টাকা (প্রতিমাস প্রাপ্য)।

Alamin Mia

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে প্রশ্ন থাকলে বা ব্যাখ্যা জানতে পোস্টের নিচে কমেন্ট করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *