সার্ভিস রুলস । নীতি । পদ্ধতি । বিধি

ট্রেজারি রুলস বাংলাদেশ ২০২৫ । কোন বিধি মোতাবেক দপ্তর প্রধান বেতন বিল পাশ করে?

ট্রেজারি রুলস (Treasury Rules) এবং এর অধীনে প্রণীত সাবসিডিয়ারি রুলস (Subsidiary Rules) অনুযায়ী, একজন দপ্তর প্রধান বা Drawing and Disbursing Officer (DDO) বেতন বিল পাশ করার জন্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত– ট্রেজারি রুলস বাংলাদেশ ২০২৫

ডিডিও বিল পাশ করবে? হ্যাঁ। কর্মচারীদের ক্ষেত্রে একজন দপ্তর প্রধান বা Drawing and Disbursing Officer (DDO) বেতন বিল পাশ করার জন্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয়ে থাকে। বিশেষ করে, ট্রেজারি রুলস এর সাবসিডিয়ারি রুলস (এস.আর.) ৯৬ এবং ১৫৮ নম্বর বিধিগুলো এই বিষয়ে সরাসরি সম্পর্কিত। এস.আর. ৯৬: এই বিধি অনুসারে, দপ্তর প্রধান তার আওতাধীন কর্মচারীদের বেতন-ভাতাদি, ভ্রমণ ভাতা, এবং অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিল দাখিল ও পাশ করার জন্য ক্ষমতাপ্রাপ্ত। এস.আর. ১৫৮: এই বিধি অনুযায়ী, সরকারি কর্মচারীদের মাসিক বেতন ও ভাতার বিল যে মাসের জন্য প্রাপ্য, সেই মাসের শেষ কার্যদিবসে স্বাক্ষর করা হয় এবং পরবর্তী কার্যদিবসে তা প্রদানের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়। এছাড়াও, সরকারি বেতন বিল পাসের ক্ষেত্রে জেনারেল ফিন্যান্সিয়াল রুলস (GFR) এবং বিভিন্ন সময়ে অর্থ মন্ত্রণালয় কর্তৃক জারিকৃত আদেশ ও পরিপত্র অনুসরণ করতে হয়।

বাংলাদেশ ট্রেজারি রুলস ৯৭ তে কি আছে? এস. আর. ৯৭। বিল, চেক ইত্যাদি যেদিন পাস করিয়া ব্যাংকে পাঠানো হয়, সেইদিনই যাহাতে ব্যাংক পরিশোধ করে এবং হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তার লিখিত পরিশোধ আদেশ অথবা তাঁহার অবর্তমানে হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা কর্তৃক ক্ষমতাপ্রাপ্ত কোন কর্মকর্তার আদেশ ব্যতীত কোন অর্থ পরিশোধ যাহাতে না হয়। সেদিকে বিশেষ যত্নবান হইতে হইবে।

ট্রেজারি রুলস মোতাবেক বকেয়া বিল কিভাবে পরিশোধ হবে? এস. আর. ১৫৮। বকেয়া বেতন, বাঁধা ভাতাদি অথবা ছুটিকালীন বেতন নিয়মিত মাসিক বিলে উত্তোলন না করিয়া পৃথক বিলে উত্তোলন করিতে হইবে । উক্ত বকেয়া বিলে প্রত্যেক মাসের দাবি পৃথকভাবে অন্তর্ভুক্ত করিতে হইবে। যে বিল হইতে দাবিটির বাদ পড়িয়াছিল কিংবা যে বিলে দাবিটি অন্তর্ভুক্তি স্থগিত রাখা হইয়াছিল কিংবা যে বিলে কর্তনের মাধ্যমে তাহা ফেরত দেওয়া হইয়াছিল উক্ত বিলের উল্লেখ বকেয়া বিলে করিতে হইবে। ইহাছাড়া নূতন ভাতা বা বেতন বৃদ্ধির কারণে বকেয়া হইলে উক্ত নূতন ভাতা বা বেতনবৃদ্ধির মঞ্জুরকারী উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের বিশেষ আদেশের উল্লেখ বকেয়া বিলে করিতে হইবে। পুনঃ পুনঃ বকেয়া দাবির ঝুঁকি এড়াইতে উক্ত দাবির সহিত সংশ্লিষ্ট সকল বিলের অফিস কপিতে অবশ্যই বকেয়া বিল সম্পর্কে বিল উত্তোলনকারীর তারিখসহ অনুস্বাক্ষরে নোট রাখিতে হইবে। এস. আর. ৬১-তে বর্ণিত শর্ত সাপেক্ষে এইরূপ বিল যে কোন সময় পেশ করা যাইবে এবং ইহাতে যতগুলি দফা প্রয়োজন অন্তর্ভুক্ত করা যাইবে ।

সরকারি মাসিক বেতন বিল বলতে সরকারি কর্মচারীদের প্রতি মাসের বেতন পরিশোধের জন্য যে হিসাব বিবরণী প্রস্তুত করা হয়, তাকে বোঝায়। এটি মূলত একটি বিল যা কর্মচারীর সংশ্লিষ্ট মাসের কাজের জন্য প্রাপ্য বেতন, ভাতা, এবং অন্যান্য আর্থিক সুবিধা তুলে ধরে। এই বিলটি সাধারণত হিসাবরক্ষণ অফিসে জমা দেওয়া হয় এবং এর মাধ্যমেই কর্মচারীর ব্যাংক হিসাবে বেতন স্থানান্তর করা হয়।

সরকারি মাসিক বেতন বিলের মধ্যে যা যা অন্তর্ভুক্ত থাকে বেতনের বিবরণ: কর্মচারীর মূল বেতন, গ্রেড, এবং অন্যান্য ভাতা (যেমন বাড়িভাড়া ভাতা, চিকিৎসা ভাতা, ইত্যাদি)। মোট বেতন মূল বেতন ও অন্যান্য ভাতার যোগফল। বিভিন্ন কর্তন: যেমন ভবিষ্য তহবিল (পিপিএফ), ইনকাম ট্যাক্স, জীবন বীমা প্রিমিয়াম ইত্যাদি। নিট বেতন মোট বেতন থেকে কর্তন বাদ দিয়ে যা অবশিষ্ট থাকে, অর্থাৎ যা কর্মচারী actualy পান। অন্যান্য তথ্য কর্মচারীর নাম, পদবি, আইডি নম্বর, ইত্যাদি। এই বিলটি সরকারি কর্মচারীর বেতন পরিশোধের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং এটি accurately প্রস্তুত করা এবং সময়মতো জমা দেওয়া জরুরি। iBAS++ সিস্টেম ব্যবহার করে অনলাইনেও বেতন বিল দাখিল করা যায়।

Caption: Bangladesh Trasury Rules pdf

আপনার প্রশ্নের সরাসরি উত্তর: “দপ্তর প্রধান বেতন বিল পাশ করেন” এর ব্যাপারে ট্রেজারি রুলসের (ট্রেজারি অ্যান্ড সাবসিডিয়ারী রুলস) S.R-96 শর্তসাপেক্ষ:

“অফিস প্রধান তার অধীনস্থ ঘোষিত কর্মকর্তাকে বিল স্বাক্ষরের ক্ষমতা দিতে পারেন, তবে দায়িত্ব তারই থাকবে।” চাকরির বিধানাবলী অর্থাৎ, যদি দপ্তর প্রধান নিজে বেতন বিল স্বাক্ষর না করেন, তিনি অবশ্যই নিজের অধীনস্থ যে কর্মকর্তাকে সে কাজের অনুমতি দিয়েছেন, সেই নিয়োগ ও দায়িত্বের জন্য তাকে দায়ী থাকবেন।

সারসংক্ষেপে:

  • মূল স্বাক্ষরকারী: দপ্তর প্রধান

  • প্রতি দায়িত্ব: দপ্তর প্রধান, যদি তিনি অন্য কাউকে বিল স্বাক্ষর করার ক্ষমতা দিয়ে থাকেন

  • নিয়মটি: S.R-96 অনুযায়ী

1️⃣ কোন নিয়মে বেতন বিল পাশ হয়

বাংলাদেশে সরকারি বেতন বিল প্রস্তুত ও পাশ করার ক্ষেত্রে “ট্রেজারি রুলস অ্যান্ড সাবসিডিয়ারি রুলস” এবং “ফিনান্সিয়াল রুলস” অনুসরণ করতে হয়।
এর মধ্যে প্রধান নিয়ম হলো —

📜 Subsidiary Rule (S.R.) 96

“Head of the Office shall sign the pay bill. If he delegates the signing power to any subordinate officer, the responsibility for accuracy and legality shall still rest with him.”
(অফিস প্রধান বেতন বিল স্বাক্ষর করবেন। তিনি যদি অধীনস্থ কোনো কর্মকর্তাকে স্বাক্ষরের ক্ষমতা দেন, তবে সঠিকতা ও বৈধতার দায়ভার তার উপরই থাকবে।)


2️⃣ দায়িত্ব ও প্রক্রিয়া

দপ্তর প্রধানের বেতন বিল পাশের ক্ষেত্রে ৩টি ধাপ থাকে:

  1. বিল প্রস্তুত — বিল প্রস্তুত করেন ড্রইং অ্যান্ড ডিসবার্সিং অফিসার (DDO) বা অফিসের হিসাব শাখা।

  2. পরীক্ষা ও মিলানো — সকল নাম, পদবী, স্কেল, ভাতা, কর্তন, সই ইত্যাদি পরীক্ষা করা হয়।

  3. স্বাক্ষর ও অনুমোদন — দপ্তর প্রধান (বা অনুমোদিত কর্মকর্তা) বেতন বিল স্বাক্ষর করেন, এরপর ট্রেজারি/অ্যাকাউন্টস অফিসে পাঠানো হয়।

সরকারি কর্মচারীদের বেতন কত তারিখে হয়?

সরকারি কর্মচারীদের বেতন সাধারণত মাসের শেষ তারিখে বা মাসের পরবর্তী মাসের ১-৩ তারিখের মধ্যে দেওয়া হয়। এটি সাধারণত মাসের কাজের হিসাব (অডিট) সম্পন্ন হওয়ার উপর নির্ভর করে। কিছু ক্ষেত্রে, মাসের বেতন মাসের শেষ তারিখে বা তার পরের মাসের ১-৩ তারিখের মধ্যে দেওয়া হয়। তবে, এটি নির্দিষ্ট নয় এবং কিছু সরকারি প্রতিষ্ঠানে বেতন দেওয়ার তারিখে ভিন্নতা দেখা যেতে পারে। সরকারি কর্মচারীদের বেতন সাধারণত ব্যাংকের মাধ্যমে দেওয়া হয়, তাই বেতন দেওয়ার তারিখ ব্যাংকের কার্যক্রমের উপরও নির্ভরশীল হতে পারে।

ইএফটি (EFT) বা ইলেকট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফার-এর মাধ্যমে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন সরাসরি তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হয়। এই প্রক্রিয়ার পর ব্যাংক থেকে সাধারণত একটি এসএমএস বা মেসেজ আসে, যা নিশ্চিত করে যে বেতন অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছে।

মেসেজের বিষয়বস্তু: ব্যাংক থেকে আসা মেসেজটি সাধারণত একটি সাধারণ লেনদেনের মেসেজ হয়। এতে সাধারণত বলা হয় যে, একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ টাকা আপনার অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছে। যেমন: “Your A/C XXXX has been credited with BDT [Amount] on [Date] by EFT transaction.”

 

 

 

মেসেজ না পাওয়ার কারণ: অনেক সময় বিভিন্ন কারণে কর্মচারীরা ইএফটির মেসেজ পেতে বিলম্ব হতে পারে বা নাও পেতে পারেন। যেমন: iBAS++ সিস্টেম থেকে মেসেজ প্রেরণে বিলম্ব। ব্যাংকের সার্ভারে সমস্যা বা প্রযুক্তিগত ত্রুটি। মোবাইল নম্বরে কোনো ভুল থাকলে। SMS লোড বেশি থাকায় টেলিকম অপারেটরের মাধ্যমে মেসেজ প্রেরণে বিলম্ব।ইএফটির সুবিধা: ইএফটির ফলে বেতন-ভাতা দ্রুত ও ঝামেলামুক্তভাবে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হয়। এর মাধ্যমে বেতন বিল পাসের দীর্ঘসূত্রিতা ও হয়রানি কমে যায়। এটি সরকারি আর্থিক ব্যবস্থাপনাকে আরও স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক করে তুলেছে।
ইএফটির মেসেজ পাওয়ার ১ দিনের মধ্যে অথবা পরবর্তী কার্যদিবসেসাধারণত টাকা ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হয়। যদি মেসেজ আসার পরেও টাকাজমা না হয়, তবে সংশ্লিষ্ট হিসাবরক্ষণ অফিসে যোগাযোগ করা যেতে পারে।

Alamin Mia

আমি একজন সরকারী চাকরিজীবি। দীর্ঘ ১০ বছর যাবৎ চাকুরির সুবাদে সরকারি চাকরি বিধি বিধান নিয়ে পড়াশুনা করছি। বিএসআর ব্লগে সরকারি আদেশ, গেজেট, প্রজ্ঞাপন ও পরিপত্র পোস্ট করা হয়। এ ব্লগের কোন পোস্ট নিয়ে প্রশ্ন থাকলে বা ব্যাখ্যা জানতে পোস্টের নিচে কমেন্ট করুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *